1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

নীতুল জান্নাত নীতি ম্যাম হোন্ডা এক্সিডেন্ট হয়ে অসুস্থ্য সকলেই তার জন্য দোয়া করবেন

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৬০৮ বার
তার স্কুল+কলেজ এর সব বন্ধুদের নিয়ে তাদের ব্যাচ ০৬-০৮ এর একটা গেট টুগেদার অনুষ্ঠান ছিল আজ। সকাল সকাল রেডি হয়ে বের হয়েই বাইকে উঠলাম দুজন। যাবো যখন ঘুরতে, বাইকেই যাই। 😅
এদিকে ক্রমাগত ওর বন্ধুদের ফোন,
“কিরে নিরুপম, কই তোরা? নীতুল ভাবি কই?”
সেজেগুজে রেডি হয়ে দুজনেই আমাদের বাসার সামনে সেলফি নিচ্ছিলাম। তারপর রওনা দিলাম। সারা পথ ভালোয় ভালোয় পেরিয়ে গেলেও শেষরাস্তায় গিয়েই আমাকে এক্সিডেন্টটা ফেস করতে হলো। 🙂
বাইক হঠাৎ জাম্প দেয়ায় আমিও তাল হারিয়ে পরে যাই চলন্ত বাইক থেকে। পরে যাওয়ার পর পরই আশেপাশের লোকজন তাদের গাড়ি থামিয়ে অবাক হয়ে দেখতে থাকে আমাদের। আমার তখন কোন এক বিচিত্র কারণে মনে ভয়ও নেই, শরীরে ব্যথার কোন রকম অনুভবও নেই। হাত দিয়ে জাস্ট গলার কাছে টাচ করে বুঝেছিলাম হাড় ভেঙে গেছে কলার বোনের এবং ইমার্জেন্সী হসপিটালে যেতে হবে। বেচারা নিরুপম তখন আমাকে সবার সামনেই বুকে জড়িয়ে কাঁপতে কাঁপতে কান্না করে ফেললো। 😑 আর আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। রক্তে ওর কোটের এক অংশ ভিজে গেছে ততক্ষণে। আমার প্রচন্ড বমিও পাচ্ছিলো। আশপাশের মানুষদের কাছ থেকে জেনেই কাছের একটি প্রাইভেট হসপিটালে যাই এবং বেশ স্ট্রংভাবেই সব হ্যান্ডেল করি। 😊
আর সে ঘাবড়ে গিয়ে ফোন করে ওর বন্ধুদের এবং আমি সত্যিই ইমপ্রেস কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই ওর কয়েকজন বন্ধু অনুষ্ঠান ফেলেই হাজির হসপিটালে। ডক্টর এক্স-রে রিপোর্ট দেখে আমাদের কাকা কে (নিরুপমের সেইম এইজ যিনি) ডেকে নিয়ে যায় এবং দুঃসংবাদটা দেয়, যদিও আমি আগেই জানতাম আমার খারাপ কিছুই একটা হয়ে গেছে। আমি হাসিমুখে তখন নিরুপমের দিকে তাকিয়ে আছি। নার্স ইঞ্জেকশন দিচ্ছে, আরেকজন নার্স পায়ে, গালের, হাতের আঙুলের ক্ষততে ড্রেসিং করছে এবং আমার কোন কিছুতেই কিছু যায় আসছিলো না। কেন আসছিলো না? আমি কি মুগ্ধ হয়ে ওর কান্নাটুকু দেখছিলাম? অথচ সারাজীবন শুনে এসেছি পুরুষমানুষরা নাকি কাঁদে না। প্রায় দুই তিন ঘন্টা হসপিটালে কাটানোর পর আচমকা ডক্টরকে প্রশ্ন করে বসি,
“ডক্টর, আমি কি এই অবস্থায় কোথাও যাওয়ার মত উপযুক্ত? আমি জানি আমার ১ মাস রেস্ট। কিন্তু আজকে আমাকে এক জায়গায় যেতেই হবে। প্লিজ ডক্টর, বলেন একটু।”
ডাক্তার কিছুক্ষণ প্রচণ্ড মাত্রায় অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর বললেন,
“নার্স, এই মেয়েটাকে পেইন কিলারের ইঞ্জেকশনটা দাও। ইমিডিয়েটলি।”
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “শুধু আজকের জন্য এলাউড। এছাড়া আর কোথাও যাওয়া যাবে না ১ মাস। নড়াচড়াও নিষেধ।”
নিরুপম তখনও তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ও বুঝতে পারছিলো না কি হচ্ছে এসব। বের হয়েই বললাম,
“আমি চাইনা তোমার আজকের দিনটা মাটি হোক। আমি বাসায় যেতে রাজি না। আমরা আমাদের গন্তব্যেই যাবো। আমি জানি আজকের দিনটার জন্যে অনেক অপেক্ষা ছিলো তোমার।”
সে প্রচণ্ড অবাক, প্রচণ্ড কান্নায় ভেজা একটি মুখ নিয়ে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে। যেখানে আমি নিজেই কাঁদিনি, সেখানে ওর কান্না আমাকে বারবার অবাক করছিলো। আবার সেই বাইকে করেই রওনা দিলাম ওর গেট টুগেদারে। আমি জানিনা আবার কবে না কবে ওদের গেট টুগেদার হবে, কবে সব বন্ধুরা আবার এক হবে কে জানে!
নীরবে চোখ মুছতে মুছতে আমরা মোটামুটি রিসোর্টে পৌছাই। সেখানে আগেই জানাজানি হয়ে গেছিলো আমার অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার কথা। 😴
যাই হোক, ওই ভাঙা হাড় নিয়ে নাচানাচি করে, জোর করে ওকে ওর বন্ধুদের সাথে ভিড়িয়ে দিয়ে নিজের মেকাপ ঠিক করলাম এক হাতেই। 😜
তারপর সন্ধ্যার দিকে ফিরলাম গায়ে চাদর জড়িয়ে যাতে কেউ বুঝতে না পারে এবং দুর্ভাগ্যক্রমে তাও ধরা খেলাম। 😑
এবার তাদের টেনশনের পালা শুরু। 😅
আর আমি গোটা দশেক ট্যাবলেট খেয়ে এখন শুয়ে আছি এক্স-রে রিপোর্ট হাতে নিয়ে। কি নিখুঁতভাবেই না ভেঙেছে হাড়টা! আর গায়ে আকাশপাতাল জ্বর তো আছেই। 🙂 আহারে! সুস্থ্য হওয়ার অপেক্ষা এবার। ❤
Please pray for me everyone. ⭐

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..