1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৬:৩৪ অপরাহ্ন

## সন্ধিক্ষণে একটি গোলাপ # # কাওসারী

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১
  • ২৩২ বার
অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সানি আর রোদেলা বাড়ি ফিরছিল। পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিল ওরা দু’জন। শুধু এ বছরই নয় প্রতি বছরই সব ধরনের অনুষ্ঠান গুলো উপস্থাপনার ভার পড়ত ওদের উপর। এতটা সুন্দর আর চমৎকার করে প্রতিটি অনুষ্ঠান ওরা করত যে পুরো স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে অভিভাবক মহল পর্যন্ত তাদের অন্য রকম একটা সুনাম ছিল। শুরুর দিকে স্যার আপারা কিছুটা গাইড করলেও পরবর্তীতে ওরা নিজেরাই সব কিছু গুছিয়ে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করত। অসাধারণ হত প্রতিটা অনুষ্ঠান। শুধু উপস্থাপনাই নয়, পড়াশোনায়ও ওরা ছিল বেশ ভালো। উপস্থাপনার পাশাপাশি অনেক পুরষ্কারও ওদের হাতে এসে জমা হত। ওদের মাঝে বন্ধুত্বটাও ছিল অসাধারণ।
সানি ” পাঁচ মিনিট কি আমার জন্য অপেক্ষা করবে?”
রোদেলা ” হা, কেন নয়, তুমি কাজ শেষ করে আসো, আমি এখানে আছি”
সানি দৌড়ে কাজ শেষ করে স্কুলের গেটে চলে আসল।
রোদেলা ” হা, বল, কি বলবে”
সানি ” একটু দম নিতে দাও”
রোদেলা “আচ্ছা আচ্ছা “
বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে, বাড়ি যাবার তাড়া রোদেলার একটু বেশি।
সানি ” আচ্ছা, কিভাবে বলব, বুঝতে পারছি না, তুমি আবার রাগ করবে না তো?”
রোদেলা “কি বলছো, রাগ করব কেন, একটু তাড়াতাড়ি বল, সন্ধ্যাে হয়ে যাচ্ছে, বাবা মা আবার চিন্তা করবে”
সানি ” আমরা তো খুব ভালো বন্ধু, আমরা কি…” কথা শেষ করার আগেই
রোদেলা “আচ্ছা, আজ ওসব বাদ দাও, অন্য দিন বল, আজ আসি, বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে, ভালো থেকো”
সানি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রোদেলার চলে যাওয়া দেখল। ও রিকশা নিল, তারপর সানি গাড়িতে উঠে বসল। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। আজও সে কথা বলা হল না। আজ অনেক প্ল্যান করে রেখেছিল।
এত ক্লান্ত কিন্তু ঘুম আসছিল না, অন্য দিন গাড়িতে বসেই ঘুমিয়ে নেয় কিছুক্ষন। নিজের উপর একটু রাগ হল। স্যারের সাথে কাল কথা বললেও হত। আসলেই ওর বাসা বেশ দূর, অনুষ্ঠানের কারণে যেতে যেতে রাত অনেক রাত হবে ওর। কিন্তু কাল থেকে স্কুল বন্ধ। এর মধ্যে ও তো আর স্কুলে আসবে না রোদেলা। আগামি বছর মানে আরও বারো দিন। কিভাবে কাটাবে। ফোনে কি ওসব বলা যায়? একটু ঘুম আসতেই বাড়ি পৌঁছে গেল।
বাসায় এসে খেয়ে দেয়ে ঘুম।
এ বারো দিনের মধ্যে আর কথা হয়নি রোদেলার সাথে। দেখাও হয়নি। ও গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবে বলেছিল। বারো দিন কেটে গেল। বছরের প্রথম দিন সবাই স্কুলে। নতুন ক্লাস, নতুন কিছু বন্ধু, নতুন কিছু স্যার আপা সব কিছু মিলিয়ে সানির খুব ভালো লাগছিল। আজই স্কুল ছুটির পর রোদেলাকে সব বলবে।
প্রথম দিন সবাই একটু চুপচাপ। তার মধ্যে রোদেলাকে বেশ চুপচাপ মনে হল।
স্কুল ছুটির পর…
সানি ” আমাকে কি একটু সময় দেবে? বেশি সময় নেব না।”
রোদেলা “আজই কি বলতে হবে, অন্য দিন না হয়”
সানি ” না না, প্লিজ আজই, আধ ঘণ্টা, বেশি না”
রোদেলা ” আমি জানি তুমি কি বলবে?”
সানি ” কিভাবে?”
রোদেলা ” আমাকে ভালোবাস, এটা বলবে তো”
সানি একেবারে চুপ।
সানি ” কিভাবে জানলে?”
রোদেলা ” আমি জানি, কিন্তু বন্ধু, তোমার আর আমার মাঝে যে অনেক ফারাক, সেটা কি তুমি বুঝতে পার না? এতে আমাদের কষ্ট বাড়বে, আর কিছু নয়, এর চাইতে এভাবে আমরা বেশ আছি, বন্ধু হয়ে।”
সানি ” কিন্তু আমি যে তোমায় ভালোবাসি “
রোদেলা ” আমাদের ভালোবাসাটা শুধু বন্ধুত্বের মাঝেই রেখে দাও, আমরা ভালো থাকব। তা না হলে সামনে অনেক কষ্ট পেতে হবে দুজনকে”
সানি ” এটা কেমন করে হয়, আমি তোমার মাঝে আমার সব কিছু খুঁজে পেয়েছি। ভালো বন্ধু সেই সাথে একজন ভালো মানুষও তুমি “
রোদেলা ” আমিও তোমাকে অনেক পছন্দ করি কিন্তু এর চাইতে বেশি কিছু ভাবতে চাই না। এতে করে আগামীতে তোমার চাইতে আমারই খারাপ লাগবে বেশি। তুমি বাসায় গিয়ে একটু চিন্তা কর। আমায় ভুল বুঝো না। তুমি আমার সারাজীবন অনেক ভালো বন্ধু হয়ে থাকবে।”
রোদেলা আর কিছু না বলে চলে যায় ।
সানির মন খুব খারাপ হয়ে গেল।
সানির বাবা বড় ব্যবসায়ী। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। আর রোদেলা নিম্ন মধ্যবিত্ত। বাবা ২য় শ্রেণির সরকারি কর্মচারি। ছোট ভাই আছে। মা একটা স্কুলে কাজ করেন। স্বপ্নটা শুধু পড়াশোনা নিয়েই। অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে চায় না রোদেলা। বাবামায়ের এ শিক্ষাটা ছোট বেলা থেকেই পেয়েছে।
এর পর থেকে স্কুলে সানি চুপচাপ থাকে। কারও সাথেই তেমন কথা বলে না। রোদেলার সাথেও না। রোদেলা বেশ বুঝতে পারে পুরো বিষয়টা। মনে মনে ভাবে সানি এসব কেন করছে? এ ভালোবাসা দুঃখ ছাড়া আর কিছুই দেবে না। ওকে বুঝাতে হবে। আমরা তো ভালো বন্ধু ছিলাম, সেটাও কম কিসের।
ভাবনা গুলো মনের মাঝেই থেকে যায় রোদেলার।
একদিন,
তুমি কি আমার সাথে কথা বলবে না??
সানি কথার উত্তর দেয় না।
ধীরে ধীরে সানির মাঝে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখে রোদেলা। পড়াশোনা ঠিক মতো করছে না। স্কুলের অনুষ্ঠান গুলোতে রোদেলাকে এড়িয়ে যায়।
বেশ কিছু দিন পর,
রোদেলা “তোমার সাথে আমার কথা আছে, প্লিজ পাঁচ মিনিট দাও”
সানি দাঁড়াল।
রোদেলা ” তুমি এমন কেন করছো ? আমার খুব খারাপ লাগে। আমরা তো খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। এ সম্পর্কটাকে কেন নষ্ট করছো? আমি তো অনেক কষ্ট পাচ্ছি “
সানি ” তুমি কষ্ট পাচ্ছ আর আমি মনে হয় খুব ভালো আছি?? আমি তোমার চাইতেও অনেক কষ্ট পাচ্ছি, সেটা তুমি কোন দিনও বুঝতে পারবে না, পারলে আমাকে এত কষ্ট দিতে না।”
রোদেলা ” তুমি কি একবারও চিন্তা করছো না যে তোমার আর আমার মাঝে বিস্তৃত ব্যবধান। তোমার বাবা-মা কোন দিন এ সম্পর্ক মেনে নেবে না। আর আমিও এভাবে তোমাদের মাঝে যাব না। এটা আসলে ঠিক না। প্লিজ আমাকে ভুল বুঝ না। আমাদের পরিবার দুটো কোন দিন এক হবে না।”
সানি ” ভালোবাসা কি অবস্থান, পারিপার্শ্বিকতা, সামাজিক প্রক্ষাপট এসব দেখে হয়?? টাকা কি সব কিছু? তুমি একটা অসাধারণ মেধাবী মেয়ে, দেখতে ভালো, সব দিক থেকে স্কুলের সেরা, এটাই কি যথেষ্ট নয়??”
রোদেলা ” বাস্তবতা একটু ভেবে দেখ। মেধাবী দেখতেন ভালো, স্কুলের সেরা এসব কিছুই ম্লান, সামাজিক অবস্থানের কাছে। সব সময়ই এটা হয়ে এসেছে। ঠান্ডা মাথায় একটু ভেবে দেখ।”
সানি ” আমি ওসব ভাবতে চাই না, তুমি আমার পাশে থাকবে কিনা সেটা বল”
রোদেলা ” এটা একেবারেই অসম্ভব, সমাজই আমাদের এ সম্পর্ককে মেনে নেবে না আর আমরা এর বাইরে গিয়েও কিছু করতে পারব না, এটা ঠিকও হবে না “
সানি আর একটা কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে গিয়ে বসল।
রোদেলা পিছ থেকে ডাকল “সানি সানি”
সানি সে কথার উত্তর দিল না।
রাতে বাসায় এসে রোদেলা অনেক কেঁদেলো। সানির ভালোবাসার চাইতেও ওর ভালোবাসা কোন অংশে কম ছিল না। কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে বলে অনেক কিছুই ছার দিতে হল রোদেলাকে। এত উচুতে উঠার স্বপ্ন দেখে না রোদেলা। নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করে। এক সময় সময়ের কাছে নিজেকে সপে দেয়।
এর পর অনেক সময় গড়িয়ে গেল।
স্কুল শেষ করে কলেজ। সানি চলে গেল অন্য কলেজে আর রোদেলা অন্য কলেজে। এর পর আর তেমন যোগাযোগ হয়নি। অনেকটা রাগ সানির মাথায় চেপে বসে ছিল। ভালোবাসার কাছে কিসের সামাজিক অবস্থান??? মনের মাঝে সব সময় এ প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াত সানির।
সানি কলেজ শেষ করলে ওর বাবা ওকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। বাইরে থেকে পড়াশোনা শেষ করে আবার দেশে ফিরে এসে বাবার ব্যবসায়ে মন দেয়। কিছু দিনের মধ্যে ওর বাবা চলে যায় পৃথিবী ছেড়ে।
অন্য দিকে রোদেলা কলেজ শেষ করে। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। পড়াশোনা শেষ করে।বিয়ের কথা চলছিল আর এর মধ্যেই রোদেলা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদিকে ওর বাবারও অবসরে যাবার সময় এসে পড়েছে। বাবা রোদেলার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করে। কিন্তু কিছুতেই রোদেলা সুস্থ হয়ে উঠে না। পুরো বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। মাও তার সবটুকু মেয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করে। লিভারের বড় ধরনের সমস্যা। এ ধরনের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। রোদেলার বাবা-মা এতটুকু অবহেলা করেননি। সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
রোদেলার খুব কাছের এক স্কুল বন্ধু রোদেলার অসুস্থতার কথা জানতে পারে। মাঝে মাঝে দেখতে আসে ওকে। এভাবেই চলছিল কিছু দিন। রোদেলার অসুস্থতার কথা বন্ধু মহলে ছড়িয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে রোদেলার চিকিৎসা ওর বাবামায়ের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। কাছের আত্নীয়রাও যতটুকু পেরেছে, এগিয়ে এসেছে। কিন্তু শেষ পযর্ন্ত কাছের বন্ধুরা এগিয়ে এল। এক এক করে সবাই জানতে পারল রোদেলা বিষয়টা।
সবশেষে জানল সানি।
সানি এখন অনেক বড় ব্যবসায়ি। খবরটা পেয়েই ওর ঠিকানায় পৌঁছে গেল খুব তাড়াতাড়ি।
বাসায় ডুকা মাত্র রোদেলাকে একদম চিনতে পারছিল না। একি দেখছে সানি। এ কি সেই রোদেলা।
মনের ও শরীরের সবটুকু কষ্ট মনের মাঝে রেখে রোদেলা সানিকে বসতে বলল।
সানি ” কি থেকে কি হয়ে গেল, আমি কিছু জানতে পারলাম না “
রোদেলা ” সবটা আমার ভাগ্য। তোমার ভালোবাসাও আমার কপালে নেই আবার স্বাভাবিক যে একটা জীবন থাকে, আজ সেটা থেকেও আমি বঞ্চিত। জীবন আমায় কোথায় নিয়ে এসেছে দেখ। আমায় ক্ষমা করেছিলে তো? তোমায় অনেক কষ্ট দিয়েছিলাম সেদিন। সেই শাস্তি আমি মনে হয় এখন পাচ্ছি “
সানি ” আজ কেন এসব বলছো, এভাবে বল না”
রোদেলা ” আমারও অনেক কষ্ট ছিল, তোমাকে ফিরিয়ে দেবার কষ্ট, কত রাত যে আমি ঘুমাইনি, সে কথা তো তুমি জান না, তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতেই আমি চলে যাব। ইনশাআল্লাহ ওপাড়ে আমাদের আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই। আমি ওপারে গিয়ে তোমার অপেক্ষায় থাকব, কত চিঠি লিখেছি কিন্তু তুমি তার উত্তর দেওনি, এত অভিমান তোমার?”
চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল পানি।
সানি কি করবে বুঝতে পারছি না। খুব খারাপ লাগছিল। এতদিন পর রোদেলাকে দেখে সেই স্কুলের দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেল। আজ এত দিন পর এভাবে ওকে দেখবে কোন দিন ভাবেনি।
রোদেলার খুব কাছে এসে বসল সানি। হাতটা ধরল।
সানি ” আমি তো এখনও বেঁচে আছি, দেখা না হলে দুঃখ ছিল না কিন্তু দেখা যেহেতু হয়েই গেছে সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”
রোদেলা ” কি করবে? ডাক্তার বলেছে কোন আশা নেই। আর ক’টা দিন মাত্র। দুঃখ নেই। তোমার সাথে দেখা তো হল। এখন আর কোন কষ্ট থাকবে না”
কি সুন্দর ছিল রোদেলা। আজ কি অবস্থা। সানি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এমন কেন হল?? একটা মানুষকে ভালোবেসেই কি পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া যায়? কিন্তু সানি তো তাই করল। জীবনের প্রথম ভালোবাসা, তাই আজও মনে দাগ কেটে আছে। রোদেলাকে না পেলেও এভাবে দেখবে এর জন্য একদম তৈরি ছিল না সানি।
আর বসে থাকবে না। ভালো ডাক্তার দেখাতে হবে, দরকার হলে দেশের বাইরেও নিয়ে যাবে সানি। একদিন ফিরিয়ে দিলেও আজ নিশ্চয়ই রোদেলা ওকে ফিরিয়ে দেবে না।
শক্ত করে রোদেলার হাতটা ধরল।
সানি ” আমার উপর একটু আস্হা রাখ। সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। “
রোদেলা ” কিভাবে সব ঠিক হবে? আমি তো ফিরে যাচ্ছি আসল ঠিকানায়। তুমি কিভাবে আমাকে ঠেকাবে আজ।”
সানি ” এভাবে আর বলবে না। তোমার আসল ঠিকানা এই আমার মাঝে আর এখান থেকে আর কোন দিন তুমি ফিরে যাবে না “
রোদেলা কাঁদতে শুরু করল।
রোদেলা “আমি বাঁচতে চাই, তোমার মাঝে। আজ বলতে কোন দ্বিধা নেই আমি তোমাকেই ভালোবাসতাম শুধু তোমাকে।”
সানি ওর হাতটা শক্ত করে ধরল। কিছুটা সময় এভাবেই দুজনের চোখের পানি এক হল।
যাবার সময় ওর চিকিৎসার সব কাগজ গুলো নিয়ে গেল। বলে গেল খুব শীগ্রই আবার দেখা হচ্ছে।
খুব অল্প দিনের মধ্যেই বাইরে যাবার সব কিছু ঠিক করে নিল সানি। সাথে নিল রোদেলার ছোট ভাইকে।
এয়ারপোর্টে হুইলচেয়ারে বসা রোদেলা। সানি একটি লাল গোলাপ হাতে দিয়ে বলল,
” আমি তোমার খুব কাছে আজ, একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলে কিন্তু আজ আর পারবে না। আমার সবটুকু ভালোবাসা দিয়েই তোমায় ফিরিয়ে আনব, তুমি দেখে নিও প্রিয়”
রোদেলা অনেকটা নির্বাক। গোলাপটাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরল। সত্যি আজ সানি ওর এত কাছাকাছি, স্বপ্ন দেখছে না তো?
শেষ চেষ্টা করছে সানি। একটা সময় রোদেলা ফিরিয়ে দিয়েছিল আর সানিও ফিরে গেছিল, আজ কোন বাঁধাকে সানি তোয়াক্কা করে না। নিজের পায়ের উপর শক্ত করে দাঁড়িয়ে। ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে আনবেই।
চিকিৎসা চলেছে রোদেলার। হয়ত ফিরে আসবে আর না ফিরলেও ওরা দু’জন দুজনের জন্য অপেক্ষায় থাকবে শেষ ঠিকানায়।
সানির মত কিছু মানুষ পৃথিবীতে আছে বলে আজও রোদেলারা স্বপ্ন দেখে বাঁচার, নতুন দিনের, নতুন প্রভাতের। কিছু মানুষ কখনোই বদলায় না, বদলায় তাদের সামাজিক অবস্থান, সামাজিক প্রেক্ষাপট, আর তারাই বোধ হয় সত্যিকারের মানুষ।।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..