1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৮:১৫ অপরাহ্ন

শার্টের বোতাম ### শব্দের বিন্যাস–সেলিনা হোসেন

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২৯৩ বার
আজ বাজারে গিয়েছিলাম একটি সুঁই কিনবো বলে।কারণ ছেলের স্কুলের শার্টের বুতামটা ছিঁড়ে ফেলেছে তার কিছু দুষ্ট বন্ধু মিলে।বাসায় এসে ছেলের সেই কি কান্না। তাকে শান্ত করে সংসারে সকল ঝামেলা শেষ করে দোকানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমার সময় লেগে যায়।ততক্ষণে দোকান পার্ট সব বন্ধ করে ফেলেছে।
আমি খুব মন খারাপ করে বাসায় ফিরছিলাম এখন কি হবে। আগামীকাল ছেলে স্কুলে কি করে যাবে ওরতো শার্ট একটি।হঠাৎ করে আমার পাশের বাসার ভাইয়ার সাথে দেখা। আমার সাথে আগে কোন দিন কথা হয়নি।
আমার দিকে এগিয়ে এসে জানতে চাইলো এতো রাতে বাহিরে আর এতো চিন্তিতো কেন।তখন আমি বাধ্য হয়ে ঘটনা খুলে বললাম। ভাইয়া খুব শান্ত ভাবে বললো ভাবি আপনি বাসায় চলে যান আমি দেখছি।
ভাইসাহেবের বাসায় ফিরবার সময় হয়ে গেল।
আমি খুব তাড়াহুরো করে বাসায় চলে আসলাম।এসেই রাতের খাবার বানাতে ছুটাছুটি করছি।কারণ যথাসময়ে খাবার না পেলে সে রেগে যাবে।থাকতো বাসায় কয়টা ভাতও ফুঁটাতে পারনা। তোমায় দিয়ে কি হবে।সারাদিন করোটা কি।এই ভয়ে প্রতিবেশি কারো সাথে আমার তেমন আলাপ নেই।
খাবার বানানো শেষ হঠাৎ দরজার করা নারার শব্দ। ধুকপুক বুক নিয়ে দরজাটা খুলে দেই।পাশের বাসার কাজের মেয়ে হাতে একটি মিষ্টির পেলেট দিয়ে বললো এটা বাবুদের জন্যে সাহেব দিছে আপনারে বলছে এখোনেই বাবুদের খাওয়াতে।এই বলে মেয়েটি চলে গেল। মিষ্টির পেলেটে চোখ আটকে যায়।কি এমন আছে যে বাবুদের এখোনেই খাওয়াতে বললো।
এদিকে চিন্তায় আমার শরীর ঘামে ভিজে চুপ চুপ। মিষ্টির পেলেটটি হাতে নিয়ে বাবুদের দিতে গিয়ে দেখি যে মিষ্টির নিচে পেলেটে ছোট কাগজ খুলে দেখি সুঁই আর লেখা ভাইসাবের আসতে আজ একটু দেরি হবে আপনি ততক্ষণে শার্টের বোতামটি লাগিয়ে ফেলুন।ভালো থাকবেন।কাগজটা পুরিয়ে ফেলবেন।
আরেক দিন রাস্তায় ঐ ভদ্রলোকের সাথে দেখা।কেমন আছেন ভাবি।আমি হাসি মুখে বললাম ভাই সাহেব আপনার সেদিনকার উপকার আমি আজীবন মনে রাখবো।আমারতো নিজের ভাই নাই আপনারেই আমার আপন ভাই বলে মানি।আসি আজ।এই বলে বিদায় নিলাম।
কিছু দিন পরে প্রতিবেশি ভাবিদের কানাগুসা। দেখলে মনে হয় ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না। অথচো গতোকাল দেখলাম শিশির ভাই সাহেবের সাথে হেসে হেসে ঢলাঢলি করে কথা বলছে।এরাই পারে বুঝতে পেরেছেন ভাবি।এই বলে চলে গেল।
আগের ইতিহাসটা কাউকেই বলতে পারলাম না।
সংসারের দায়িত্বগুলো থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারবো না বলে।কারণ আমারতো যাওয়া মতো কোন জায়গা নাই।
সকলে শুধু পেরেকে ঠুঁকে থাকা সুন্দর ছবিটা দেখে কিন্তু পেরেকটা যে কতো কষ্ট করে পরম মমতায় ছবিটাকে মাসের পরে মাস আর বছরের পর বছর আগলিয়ে রেখেছে সেটা কারো চোখেই পরে না। সব সময় আমরা খালি চোখে যা দেখি সব সঠিক না।
কাউকে না বুঝতে পেরে কথা বলাটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
কাউকে খুশি করতে না পারি অন্ততো পক্ষে কারো
কষ্টের কারণ হতে চাই না।
সকলে যার যার অবস্থানে খুশি থাকুন। পরিবারের সকলের সাথে হাসি খুশিতে আনন্দে থাকুন।অনেক অনেক দোয়া আর ভালোবাসা আজীবন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..