1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

# প্রতিশোধ # লেখনীতে_ # হুমায়রা_হাসিব_ঋতু (১০),(১১), [১ ২ ],[১ ৩ ],[১ ৪ ],[ ১৫ ], [১ ৬ ],(১ ৭ ),[ ১৮ ] , [ ১৯ ] এবং (২০) পর্ব

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০২৩
  • ৩৩৫ বার

 

 

[ ১০+১১ ]

৩ বছর আগে_______

আম্মুঃ আয়াত এই আয়াত…. পড়ে পড়ে আর কতো ফোন ঘাটবি নিচে আয় বলছি….( চিৎকার করে করে বলতে লাগলো)

আয়াতঃ ইসসস কি হলো? দাঁড়াও আসছি(ফোনটা হাতে নিয়ে)

আম্মুঃ আমি দাঁড়াতে পারবোনা তুই এখনি আসবি

আয়াতঃ Ok তাহলে বসে থাকো….

আম্মুঃ তুই আসবি না আমি যাবো?(রেগে গিয়ে)

আয়াতঃ আমিই আসছি। দূর ভালো লাগেনা ( ফোনটা হাত থেকে রেখে দিয়ে চললাম মায়ের কাছে)

গিয়ে দেখি আমার মাতাজি.. জামা-কাপড়ের বাজার দিয়ে বসে আছে…। আর আমার বাবা তার পাশেই রকিং চেয়ারে বসে বই পড়ছে…।

আয়াতঃ বাবাই…. তুমি কি অফিস বাদ দিয়েছো? বা তোমার কি বর্তমানে টাকার অভাব চলে?( বাবাকে উদ্দেশ্য করে)

বাবাইঃ হঠাৎ এমন প্রশ্ন?( বই থেকে মুখ সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে)

আয়াতঃ নাহ মানে আম্মু এতো জামা-কাপড় নিয়ে দোকানদারের মতো বসে আছেতো তাই….

আম্মুঃ বেশী কথা না বললে হয়না তাইনা?

আয়াতঃ আমি কি করলাম? যা দেখেছি তাইতো বললাম…

আম্মুঃ এগুলো আয়ানদের বাসা থেকে এসেছে

আয়াতঃ কেনো তোমার কাপড়ের অভাব পড়ছে?

আম্মুঃ তোমার মেয়েকে চুপ থাকতে বলবা? (বাবাকে উদ্দেশ্যে করে)

বাবাইঃ আহ! আয়াত এমন কেনো করছো মায়ের সাথে?

আয়াতঃ আচ্ছা সরি সরি মজা করছিলাম। ওরা এগুলো কেনো পাঠালো?

আম্মুঃ আজ ওদের বাসায় পার্টি মনে নেই?

আয়াতঃ ওহ হ্যাঁ তো?

আম্মুঃ তাই সবার জন্য এগুলো পাঠিয়েছে। এই দেখ তোর জন্যে কতো সুন্দর গর্জিয়াস গ্রাউন পাঠিয়েছে।

আয়াতঃ ওহ ভালো তো। তয় আমি যাবোনা(মুখ গোমরা করে)

আম্মুঃ কেনো?

আয়াতঃ নাহ যাবোনা ওই হনুমানটা শুধু আমার পেছনে লাগে জ্বালাতন করে।

আম্মুঃ আর আপনি খুব ভালো মানুষ তাইনা?

আয়াতঃ আম্মু…..

বাবাইঃ কোনো কথা না যেতে হবে…

আমি নিরুপায় হয়ে বাধ্য হলাম আরিয়ান আয়ান চৌধুরীর বাড়ীতে যেতে। এরপর আমি আমার ঘরে চলে আসলাম আমার জিনিসগুলো নিয়ে। তারপর সন্ধ্যায় ওদের বাসায় উপস্থিতি হলাম।

ভিতরে ঢুকতেই মামুনি এবং চাচ্চু(আয়ানের বাবাকে চাচ্চুই বলি) এগিয়ে আসলো।

আয়ানের বাবাঃ আরে…. আরাফাত চৌধুরী যে আসুন আসুন

বাবাইঃ কি খবর আতিক… (চাচ্চুকে উদ্দেশ্য করে)

মামুনিঃ ভালো আছেন ভাইয়া, ভাবি?

আম্মুঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

বাবাইঃ হ্যাঁ ভালো ভালো।

মামুনিঃ কিরে ওভাবে কি খুজছিস আয়াত..?

আমিঃ ক..কই কিছুনাতো। তুমি কেমন আছো মামুনি?( জড়িয়ে ধরে)

মামুনিঃ ভালো। তা আমাদের কি ভুলে গেলি নাকি? বাসায় আসিসইনা…

আয়াতঃ তোমার যে ছেলে জ্বালাতন করে আর আসবো কেমনে( মনে মনে)। এমনি…. চাচ্চু তুমি কেমন আছো..?

আয়ানের বাবাঃ ভালো ভালো তা তোমার পড়াশোনার কি খবর? কেমন চলছে?

আয়াতঃ আ..

আম্মুঃ ও বাসায় পড়ে নাকি আমিতো দেখিনি..( আমায় থামিয়ে দিয়ে)

এখন আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই আমার হিরোর এন্ট্রি….

আয়ানঃ পেত্নীরা পড়েনা তারা এমনিই সব পারে…

আমিঃ কিহ…( রেগে গিয়ে)

আয়ানঃ জ্বিহ

আয়ানের কথা শুনে সবাই হেসে কুটিকুটি। কেনোনা আমাদের এই ঝগড়া নতুন না একসাথে হলেই এই ঝগড়া লাগে।আর সবাই এতে মজাই নেয়। আমার বাবা এবং আয়ানের বাবা ২ জন কলেজ কালের বন্ধু এবং ২জন একই বিজনেসের পার্টনারশীপে আছে। সেই সূএে ছোট থেকেই আমার এবং আয়ানের ২ জনের পরিবারের সাথে পরিচয়। আমার আর আয়ানের বয়সের পার্থক্য ৪ বছরের। যদিও জীবনে তারে ভাইয়া বলে ডাকিনি….।

আমরা ২জন দা মাছ যাকে বলে ঠিক তাই। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারিনা।

আয়ানের একটা বোন আছে আরিয়া খুব ভালো মেয়ে এবং মিশুক।

এছাড়াও ওর ১টা ফুপি আছে এবং তার ২টা জমজ মেয়ে আছে রিয়া প্রিয়া। তবে ওরা যখন খুব ছোট তখন ওদের বাবা মারা যায়।সেই তখন থেকেই ফুপি আয়ানদের সাথেই থাকে। মূলত আয়ানের বাবাই নিয়ে আসে। ফুপি খুব ভালো আমায় মেয়ের মতো ভালোবাসে।কখনো মনেই হয়নি নিজের ফুপি না।

এই হলো আয়ানের পরিবারের সদস্যরা।

আর আমার পরিবারে আমি, আম্মু বাবাই। আমি তাদের Only one আদরে বাদর হওয়া Daughter।

যাহ আসল কাহিনী থেকেইতো সরে যাচ্ছি……

আয়াতঃ শোনো আমায় জ্বালাতন করবানা একদম। আমি কিন্তুু রেগে যাবো ..

আয়ানঃ ওরে বাবা ভয় পেলাম। পেত্নীরা রাগলেতো ঘাড় মটকে দেবে….হাহাহা

আয়াতঃ মামুনি….(নেকি কান্না দিয়ে)

মামুনিঃ আয়ান যাবি এখান থেকে

আয়ানঃ হু…

আয়াতঃ আমি আরিয়ার কাছে গেলাম।

এরপর আমরা সবাই পার্টিতে অনেক Enjoy করি।

নাচ-গান হয়। আয়ান ভালো গান গায় তাই সেও গান গাইলো। অবশেষে চাচ্চু এবং বাবাই ২ জন একসাথে সবার থেকে একটু দূরে গিয়ে দাড়ালো ঠিক মাঝখানে।তারপর সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো….

চাচ্চুঃ Ladies and gentleman. Today i am very happy। আপনারা সবাই আমার এই ছোট্ট আয়োজনে এসেছেন তাই। আজ এই পার্টির মূল উদ্দেশ্য হলো একটা ঘোষণা দেয়া এবং শুভ কাজ সম্পন্ন করা…।

(একটু থেমে আবার বললো) ঘোষণাটি হলো আমার বন্ধুর মেয়ে #আফনান_আয়াত এর সাথে আমার একমাএ পুএ আরিয়ান আয়ান চৌধুরীর বিয়ে।

আমরা সবাই এতক্ষণ মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছিলাম। তবে হঠাৎ-ই এমন কথা শুনে আমি এবং আয়ান পুরো শক্ট…।আমরা ২ জন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকায় চাচ্চুর বলা দেরি হলেও আমাদের ২জনের দিকে তাকানো দেরি হলোনা। আমরাতো বলেই দিলাম,,

আয়াতঃ চাচ্চু আমি এই হনুমানকে বিয়ে করবোনা..

আয়ানঃ আব্বু আমিও এই পেত্নীকে বিয়ে করবোনা

আয়াতঃ কিহ আমি পেত্নী? তুমি কি? তুমি পচা গন্ধওয়ালা কুমির…

আয়ানঃ তোহ কি আমি হনুমান? কোন দিক দিয়ে আমায় হনুমান মনে হয়?

আয়াতঃ সবদিক দিয়েই।

আমাদের কথার মাঝে বাবাই ধমক দিয়ে উঠলো,,

বাবাইঃ চুপ!!!! একদম কথা বলবিনা তোরা। এতো ঝগড়া লাগে কেনো।

আমরা কোনো কথা শুনতে চাইনা আজই তোমাদের এংগেইজমেন্ট…. আর আমরা সবদিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আয়াতঃ বাবাই,,,,(কেঁদে ফেলে)

বাবাইঃ আর কিছু শুনতে চাইনা…

আমাদের কথা কেউ শুনলোনা সেদিনই আংটি পড়িয়ে রাখা হলো। আমি গাড়ীতে আসতে আসতে একটা কথাও বলিনি আম্মু,বাবাই-এর সাথে। কেনোনা আমার কাছে মনে হয়েছে তারা বিয়ে নিয়ে আমায় কিছু না বলে অপরাধ করেছে। বাসায় এসেও সোজা রুমে চলে গেলাম এবং লম্বা….শাওয়ার নিলাম এবং কান্না করলাম কেনো কান্না করলাম জানিনা হয়তো হঠাৎ করে সবকিছু হয়েগেলো তাই…।

এক প্রকার অভিমান থেকেই টানা ৩ দিন বাসায় কারো সাথে কথা বলিনি। বাবাই,আম্মু কিছু জিগ্যেস করলেও শুধু উওরটা দিয়েছি।এভাবে তারা আমায় দেখে একদিন রাতে আমি পড়ছিলাম তখন বাবাই ডাক দেয় আমিও যাই গিয়ে দেখি আম্মুও বসে আছে

আয়াতঃ বলো..(মনমরা হয়ে মাথা নিচু করে)

বাবাইঃ এদিকে এসে বসো

আয়াতঃ না এখানেই ঠিক আছি তুমি বলো শুনছি

বাবাইঃ হ্যাঁ বলবো তবে আগে এখানে আসো তারপর বলছি।

আমি আর কথা না বাড়িয়ে তাদের পাশে গিয়ে বসলাম।

আয়াতঃ এবার বলো

বাবাইঃ রাগ করেছো?

আয়াতঃ রাগ করার মতো কাজতো তোমরা করোনি রাগ করবো কেনো?

বাবাইঃ তাহলে অভিমান?

আয়াতঃ যেখানে অভিমানের কোনো মূল্য নেই সেখানে অভিমান করাটাও ঠুনকো

বাবাইঃ মা আমি জানি তোমার মনে অনেক কথা জমে আছে, অনেক অভিমান জমা সব বলে মন হালকা করো।

আয়াতঃ কিচ্ছু বলার নেই

বাবাইঃ দেখো তোমার জন্যে আমাদের যা ভালো মনে হয়েছে তাই করেছি।

আয়াতঃ আমি জানি তোমরা আমার বাবা-মা আর তোমাদের চেয়ে আমার ভালো আর কেউ বুঝবেনা।আমি এটাও জানি মা বাবার কাছে সন্তান কখনোই বড় হয়না। তবে তোমাদের কি একটাবার উচিত ছিলোনা এতো বড় সিদ্ধান্তটা নেয়ার আগে আমায় বলা? আমারওতো মত,অমত থাকতে পারে নাকি তোমাদের আমার কথার, ইচ্ছের দাম নেই?(কাঁদতে কাঁদতে)

বাবাইঃ সব বাবা, মা-ই চায় মেয়েকে ভালো, সুপুএের হাতে তুলে দিতে আর এখানে আমাদের আয়ানকেই তোমার জন্যে ভালো মনে হয়েছে তাই কাজটা করা।

আয়াতঃ বাবাই আমি কি তোমাদের কাছে এতোই বোঝা হয়ে গেছি যে বিয়ে দিয়ে পর করছো?আমার আর কাউকে দরকার নেই তোমরা ছাড়া।(সোজা বাবার হাত ধরে বললাম)

বাবাইঃ এটা সমাজের নীতি।বিয়ে সমাজে থাকতে হলে করতেই হবে।

আয়াতঃ ঠিক আছে।তোমরা যা চাও তাই হবে( হাতটা ছেড়ে দিয়ে)

বাবাইঃ আয়ানকে আমি দেখছি ও জন্মানোর পর থেকেই। ওর বেড়ে ওঠাও আমার সামনেই। ওর চালচলন ওর শিক্ষা সবকিছু আছে যেমনটা একজন পুরুষের হওয়া দরকার। ওর পরিবার এবং আমরা আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম তোমাদের বিয়ে তবে এটা শুধু ভাবি, ভাই আর আমরা জানতাম।তাদেরও তোমায় সঠিক পাএী মনে হয়েছে তাদের ছেলের জন্য।

শোনো আংটিদান শেষ। আমাদের ভুল তোমাদের না জানানো।এখন দেখো কি করবে বিয়েটা করবে নাকি না।

কোনো কথা না বলে ঘরে থেকে বেরিয়ে আসতে নিলাম তখনি থেমে গিয়ে বাবাই এর বলা কথাগুলো শুনে থমকে গেলাম।

বাবাইঃ তবে আমি চাই তুমি একটা বার আয়ানের সাথে কথা বলো। কাল সকাল ১০টায় তোমার পছন্দের বিজ”টায় চলে যেও।

আমি কথাগুলো শুনে দেরী না করে চলে গেলাম ঘরে।গিয়েই শুয়ে পড়লাম এবং কান্না করতে লাগলাম।

সকালে,,,,,,

কোনো রকম কথা না বলে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম তার সাথে সাক্ষাৎ-এর উদ্দেশ্য। আমার পরণে ছিলো সাদা লং কামিজ,লাল ওড়না, পাজামা এবং চুলগুলো পুরো ছাড়া।যেহেতু বিজে বাতাস অনেক তাই সামনের চুলগুলে ক্লিপ দিয়ে লাগানো ছিল।

আমি বিজটায় গিয়ে দেখি সে একটা বড় পাথরের ওপর বসে আনমনা হয়ে আছে।

তার পরিহিত ছিলো কালো টি-শার্ট এবং জিন্স।

আমি গিয়ে পাশে দাঁড়ালাম। তখনি সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,

আয়ানঃ বসো (হাত দিয়ে তার পাশে বসতে বললো)

আয়াতঃ( বসলাম)

আয়ানঃ অভিমান হয়েছে তাইনা?(সামনের দিকে তাকিয়ে)

আয়াতঃ (নিশ্চুপ)

আয়ানঃ আমারও মামুনি, বাবার ওপর খুব রাগ, অভিমান হয়েছিলো তবে যখন বাবা এসে কথা বললো বুঝালো আমায় তখন রাগ, অভিমান উধাও হয়ে যায়।

জানোতো মাঝে মাঝে আমাদেরও উচিত মা-বাবাদের খুশির জন্যে কিছু কিছু জিনিস মেনে নেয়া। আর তোমার পরিবার এবং আমার পরিবারের মধ্যে যে এতোদিনের পরিচয়,আত্নীয়তা তা আরো দৃঢ় করার দায়িত্বটা হয়তো আজ আমাদের। মাঝে মাঝে সকলের খুশির জন্যে একটু Sacrifice করতে হয় আয়াত।

আমি এতক্ষণ চুপ ছিলাম। মনোযোগ দিয়ে আয়ানের কথাগুলো শুনছিলাম।তবে আমার নাম ধরে ডাকায় বুকের মধ্যে কম্পন হলো সাথে অবাকও।কেনোনা সে কখনোই আমায় আয়াত বলে ডাকেনা। পেত্নী, চুন্নি, ডাইনী, আয়ু এগুলো বলেই ডাকে। এতক্ষণ এগুলো ভাবতে ভাবতে সে আমার ভাবণার অবসান ঘটিয়ে আবার বলা শুরু করলো,,,

আয়ানঃ এতগুলো কথা বললাম হয়তো সব বুঝেছো তবুও বলছি এখনো বিয়েটা হয়ে যায়নি শুধু আংটি বদলই হয়েছে। আমি চাইনা জোর করে কেউ কিছু করুক। আর চাচ্চুর ভয় তুমি পেয়োনা আমি বলবো আমিই রাজি না। এখন ভেবে দেখো কি করবে তুমি।

আয়াতঃ সবকিছু এতো সহজভাবে মেনে নিলে?

আয়ানঃ নাতো আমারও রাগ ছিলো তবে ক্ষণিকের।পরিস্থিতি বুঝতে হবে আয়াত। আর আমি আমার পরিবারের জন্য সব করতে পারি।

আয়াতঃ যাকে বিয়ে করবে তাকে কি তোমার পছন্দ? নাকি সেটাও শুধু পরিবারের জন্যেই পছন্দ নিজে কোনো চয়েজ নেই?

আয়ানঃ পছন্দ না হওয়ার কি আছে? যে আমার হবু বউ সে যথেস্ট ভালো,মার্জিত শুধু ঝগড়ুটে একটু

আয়াতঃ হু(মুচকি হাসলাম ওর দিকে তাকিয়ে, কেনোনা নিজের সুনাম এভাবে শুনবো তাও আমার শএুর থেকে ভাবিনি)

আয়ানঃ Soo Miss Ayat তুমি কি রাজি?( উঠে দাঁড়িয়ে)

আয়াতঃ (চুপ করে আছে দাড়িয়ে)

আয়ানঃ আচ্ছা কিছু বলতে হবে না। যদি রাজি হও তো একটা পাথর তুলে ওই ভরা পানিতে ছুড়ে মারো, আর যদি রাজি না হও তো এখান থেকে একবারও ফিরে না তাকিয়ে চলে যাও।

আয়াতঃ(কোনো কথা না বলে ফিরে চলে গেলো)

এটা দেখে আয়াত হতাশ হলো আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে তবে,,,,

আয়াতঃ( কিছুদূর গিয়ে থেমে পাথর তুলে পানিতে দিল ঢেল দিয়ে আবার হাঁটতে লাগলাম

আমার কান্ড দেখে আয়াত মুচকি হেঁসে জোরে চিৎকার দিয়ে বললো,,,

আয়ানঃএটা কিসের সংকেত Yes or No??

আয়াতঃ[ থেমে ( ) হাতটা এমন করে চলে গেলো]

আয়ান তার উওর পেয়ে গেছে সেও চলে গেলো।

এরপর বাসায় এসে আমরা ২জনই সম্মতি দেই এবং শুনে সবাই খুশি হয়। সবাই ঠিক করে আগামী ১ মাসেই আমাদের বিয়ে হবে। তবে কোনো এক কারণে বিয়ের এই আয়োজনে প্রিয়া দেশের বাইরে চলে যায় কেনো যায় কেউ জানিনা আর জানারও চেস্টা করেনি কেউ।তবে সে বলছিলো তার অফিসের কাজে সবাই তাই বিলিভ করেছিলাম।

অতপর একদিন বিকেলে আমি,আম্মু,বাবাই যাই কয়েকজনকে দাওয়াত দিতে এবং কেনাকাটা করতে শহরের থেকে একটু দূরে। তোহ সব কাজ শেষ করে আসতে আসতে আমাদের রাত হয়ে যায়। তো আমরা যখন হাই ব্রিজের ওপর তখন কয়েকটা গাড়ী এসে আমাদের গাড়ীর সামনে দাড়ায়।ড্রাইবারও অনাকাঙ্ক্ষিত হওয়ায় ব্রেক করে।

তারপর কিছু লোক এসে আমাদের নামায়। তাদের মুখ দেখা যাচ্ছিলনা কারণ তারা হেলমেট পড়েছিল এবং সবাই কালো জ্যকেট পড়েছিলো।

অতপর তারা আমাদের অনেক মা/র/তে থাকে হঠাৎ কেউ একজন আমায় পেছন থেকে আঘাত করে তখন আমার সবকিছু ঝাপসা লাগছিল শুধু এইটুকু মনে আছে আমি যখন শুয়ে পড়ি তখন একটা মেয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে হাসছিল এবং আমার মা বাবাকে তখনও মা/রা হচ্ছিল আমি হাত দিয়ে থামতে বলে ইশারা করে জ্ঞান হারাই।

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকাগণ এর পরের কাহিনী সবারই জানা। তবুও কেউ না জানলে ১ম পর্ব পড়ে আসতে পারেন)

বর্তমানে,,,,,,

আমি আমাদের কাজ শেষ করে যথারীতি বাসায় ফিরে আসি এবং আমার বাসার কাজ করি ,আপু হসপিটালে যায় এবং আয়ান অফিসে চলে যায় কেনোনা ২জন একসাথে বাসায় গেলে সবাই সন্দেহ করবে তাই।

আয়ান আমার আসার ২/৩ ঘন্টাপর চলে আসে।

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা প্রতিদিন গল্প পোস্ট করা হবে ৭:০০টা থেকে ৭:৩০ এর মধ্যে আজকের পর্বটা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেননা)

 

 

 

 

 

 

[ ১২ ]

ফিরে আসি এবং আমার বাসার কাজ করি ,আপু হসপিটালে যায় এবং আয়ান অফিসে চলে যায় কেনোনা ২জন একসাথে বাসায় গেলে সবাই সন্দেহ করবে তাই।

আয়ান আমার আসার ২/৩ ঘন্টাপর চলে আসে।[ আগের পর্বের শেষ অংশ]

প্রিয়াঃ আয়না এই আয়না..(জোরে জোরে ডাকতে

থাকে)

আয়াতঃ হ্যাঁ আপামনি কন( শাড়ীর আচঁলে

হাত মুছতে মুছতে)

প্রিয়াঃ আর কয়েকদিন আছে কুরবানি ইদের তাই

আমায় কিছু একটা ফেইসপ্যাক বানিয়ে দে।

এই দেখ আমার মুখটা কেমন হয়ে গেছে।

আয়াতঃ এমন ভাব করছে মনে হয় কুরবানিটা

ওরে দেয়া হবে তাই সব প্রস্তুুতি নিচ্ছে(মনে

মনে)

প্রিয়াঃ এই কথা বলছিস না কেনো?

আয়াতঃ ও হ্যাঁ ভাবতেছি। আচ্ছা দিমুনি। আমার

এহুন মেলা কাম গেলাম আমি( বলেই চলে

যায়)

আয়াতঃ সারাটাদিন এগুলো নিয়ে পড়ে থাকে আর

কোনো কাজ নাই নাকি? (হাঁটতে লাগলাম)

এসব বলতে বলতে হঠাৎ-ই কেউ একজন

হে/চ/কা টান দিলো। টান দিয়েই দেয়ালের

সাথে চেপে ধরলো। আমি কিছু বুঝতে না

পেরে শুধু চোখটা বন্ধ করে আছি। হঠাৎ

কারো হাতের স্পর্শ আমার গালে অনুভব

করলাম। তাকিয়ে দেখি আয়ান।

আয়াতঃ একি তুমি? আর এমন ব্যবহারের মানে কি?

ছাড়ো কেউ দেখে ফেলবে( নিজেকে ছা/ড়া/

নোর চেস্টা করছি)

আয়ান কেউ দেখবে না। ইস কতদিন পরে

রোমান্সের সুযোগ পেয়েছি বলো? 𝑷𝒍𝒛 নস্ট

করো না।

আয়াতঃ𝑺𝒐𝒓𝒓𝒚 𝑺𝒊𝒓 এমন সুযোগ বহু পাবেন তবে

একবার যদি কেউ জেনে যায় তাহলে

আমাদের সব প্ল্যান শেষ।

আয়ানঃ 𝑶𝑲 𝒇𝒊𝒏𝒆 ছে/ড়ে দিলাম।

আয়াতঃ ঠিক আছে আমিও গেলাম।

আয়ানঃ কথাও কি বলা যাবেনা?

আমাদের কথার মাঝে হঠাৎ-ই

প্রিয়াঃ আরে আয়ান তুমি এখানে কেনো?

আয়াতঃ( আমি তাড়াতাড়ি ঘোমটা ঠিক করে নেই।

আয়ানঃ ইয়ে মানে ওইতো.. হাটছিলাম….

( তোতলাতে তোতলাতে)

প্রিয়াঃ তাতো বুঝলাম তা আয়না তুই এখানে কি

করছিস? তুই তো আমার ঘর থেকে অনেক

আগেই বেরিয়ে গেলি?

আয়াতঃ ইয়ে মানে আপামনি আম…

আয়ানঃ আমিই ওকে থামিয়ে দিয়েছিলাম। পরিবার

সম্পর্কে শুনছিলাম। (আমাকে থামিয়ে দিয়ে

বললো)

প্রিয়াঃ ওহ আচ্ছা(চলে গেলো)

প্রিয়ার চলে যাওয়ায় আমরা কিছুটা দম ছে/ড়ে শ্বাস নিলাম। মাএ কয়েক সেকেন্ডের কম- বেশীতেই ধ/রা পড়ে যেতাম।

আয়াতঃ শোনো রাতে একবার আমার রুমে এসো

তো…

আয়ানঃ কেনো? কিছু হবে নাকি?( শয়তানি হাসি

দিয়ে)

আয়াতঃ ধ্যাত সবসময় 𝑵𝒆𝒈𝒂𝒕𝒊𝒗𝒆 ভাবে। ( আয়ানের

হাতে একটা চিমটি দিয়ে হাসতে হাসতে চলে

গেলাম)

আয়ানও সেখানে আর দাঁড়িয়ে রইলোনা।

রাতে,,,,,

সবাই বসার রুমে বসে আছে। সবাই বলতে আরিয়া, প্রিয়া, ফুপি, মামুনি, বাবা। আর আয়ান বাইরে গেছে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। এতো বছর পর সে আমায় ফিরে পেয়ে আগের মতো হতে চাইছে।জীবনটাকে গুছিয়ে নিতে চাইছে।

ফুপিঃ ভাইজান একটা কথা বলতাম

বাবাঃ হ্যাঁ বল।

ফুপিঃ আমাদের আয়ানতো এখন স্বাভাবিক হয়েছে।

দেখো কি সুন্দর অফিস যায়, আবার বন্ধুদের

সাথে আগের মতো আড্ডা দিতে,ঘুরতে যায়।

আর তুমিইতো বলেছিলে স্বাভাবিক হোক

তারপর ভেবে দেখা যাবে।

মামুনিঃ তুমি কিসের কথা বলছো ঠিক বুঝতে

পারছিনা।

ফুপিঃ ওই আয়ান আর প্রিয়ার বিয়ে…..(বলেই থেমে

গেলো)

আমি এতক্ষণ রান্না ঘর থেকে সবার কথা শুনছিলাম।তবে ফুপির এই কথাটা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। আয়ান প্রিয়াকে সবসময় বোনের চোখে দেখতো আর ফুপি কিনা…..

বাবাঃ দেখ তুই এর আগেও বলেছিলি আমি ১মেই না

করে দিয়েছিলাম তবে তুই জোরাজোরি করায়

বলেছিলাম পরে দেখা যাবে আয়ান স্বাভাবিক

হোক।

আমি জানি ও মোটেও রাজি হবে না আর

এগুলো শুনলে রেগেই যাবে।

ফুপিঃ আরে তোমরা বোঝাও তাকে তোমাদের

জন্যতো ও সব করতে পারে। তোমাদের ১

কথাতেইতো আয়াতকে বিয়ে করতে রাজি হয়।

এবারও বলো?

বাবাঃ আয়াত আর প্রিয়া এক নয়…( কিছুটা বিরক্ত

হয়ে)

ফুপিঃ কেনো আমার মেয়ে কিসে কম?

আরে আয়াততো আর বেঁচে নেই অনেক

আগেই ম/রে গেছে। আর ছেলেটা শুধু শুধু

কস্ট পাবে মনে করে। এর চেয়ে ভালো বিয়ে

দিয়ে দাও সংসার করলে সব ঠিক হবে।

বাবাঃ চুপ… এগুলো বলিস না খারাপ লাগে শুনতে।

আর আমি যখন একবার বলেছি বিয়ে হবে না

তো হবে না। ( বলেই চলে গেলো)

মামুনিঃ দেখলে রাগিয়ে দিলে তোমার ভাইয়াকে। কি

যে করো না?( বলে সেও চলে গেলো)

আরিয়াঃ এগুলো না বললেও পারতে। সবার মন

খারাপ হলো( চলে গেলো)

ফুপি আর প্রিয়া দুজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে তারপর দাঁত কিটমিট করতে করতে চলে গেলো।

আমিও আর সেদিকে মন দিলামনা নিজের কাজ করলাম।

রাতে সবাই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। সবাই যখন গভীর ঘুমে মগ্ন তখন আয়ান এসে দরজায় কড়া নাড়লো,,

আয়াতঃ একি এতে রাতে আপনি আমার ঘরে কেনো?

অন্যের জামাই আমার ঘরে এতো রাতে ছিঃ

ছিঃ ছিঃ

আয়ানঃ কি সব আবোল-তাবোল বলছো? তুমিই তো

বললা রাতে আসতে আর জামাই মানে কার

জামাই?

আয়াতঃ কেনো প্রিয়ার জামাই। ওর সাথে তো তোমার

বিয়ের কথা চলছে হু….

আয়ানঃ 𝑨𝒓𝒆 𝒚𝒐𝒖 𝒎𝒂𝒅 𝑨𝒚𝒂𝒕? তুমি কি বলছো

এগুলো? (১ হাত দিয়ে বিরক্ত হয়ে কপালে

হাত এবং আরেক হাত কোমড়ে)

আয়াতঃ (মুখ টিপে টিপে হাসতে লাগলো)

আয়ানঃ 𝑾𝒉𝑦 𝒂𝒓𝒆 𝒚𝒐𝒖 𝒍𝒂𝒖𝒈𝒉𝒊𝒏𝒈?( ভ্রু কুঁচকে

তাকালো)

আয়াতঃ মেয়ে মানুষের মতো কোমড়ে হাত দিয়ে

আছো কেনো হাহাহা

আয়ানঃ ( রেগে গেলো)

আয়াতঃ ওরে বাবারে বাবুটা রাগ করেছে নাকি?

আয়ানঃ হু কেনো ডাকছো বলো?

আয়াতঃ শোনো কাল আমাদের একবার আমায় যে

কিডন্যাপ করে রাখা হয়েছিলো সেখানে

যেতে হবে। আশা করি সেখানে কিছু পাবো।

আয়ানঃ তোমার মনে আছে কোথায় রাখা হয়েছিলো?

আয়াতঃ হ্যাঁ

আয়ানঃ আচ্ছা তাহলে কাল আমি অফিসে চলে

যাওয়ার কিছু পরে চলে এসো তুমি।

আয়াতঃ ঠিক আছে এখন যাও তুমি।

আয়ানঃ 𝑶𝑲 (চলে গেলো)

পরেরদিন সকালে মিথ্যা অজুহাতে বাড়ী থেকে বের হই। তারপর আয়ান আর আমি সেই জায়গাটায় যাই।তবে গিয়ে ২জনেই অবাক,,,,,,,

আয়ানঃ কি কোথায় নিয়ে এসেছো? এখানেতো কিছুই

নেই।

আয়াতঃ কিন্তুু তুমি বিশ্বাস করো আমি শেষবার এখান

থেকেই পালিয়েছিলাম। আমার পুরো মনে

আছে।

আয়ানঃ তা বুঝলাম তবে এটাতো লাইব্রেরি মনে

হচ্ছে। আর দেখে বোঝাও যাচ্ছেনা এখানে

কাউকে কিডন্যাপ করে রাখা হয়েছে।

আয়াতঃ ইসস কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা। আচ্ছা

চারদিকে তাও একটু খুজে দেখি কিছু পাই

কিনা চলো(বলেই সবকিছু নেড়ে চেড়ে দেখা

শুরু করলো)

আমি আর আয়ান মিলে পুরো রুমটা ঘেটে দেখতে লাগলাম। তবে কিছুই পেলামনা।

আয়ানঃ আয়ু দেখো একটা লকেট

আয়াতঃ কই দেখি?

বলেই লকেটটা হাতে নিলাম।তবে চেনা মনে হলোনা। তবে আয়ানকে বললাম,,,

আয়াতঃ লকেটটা আমার কাছেই রেখে দেই। দেখি কি

হয়।

তারপর আমরা চলে এলাম বাসায়। কিন্তুু কিছুতেই বুঝতে পারলামনা এত তাড়াতাড়ি কিভাবে ওখানে আস্ত লাইব্রেরী হয়ে গেলো। আর দেখেও মনে হলো অনেক বছর আগের। তবে কি আমি ভুল…

——————————————–

রাতে নিজের ঘরে বসে লকেটটা হাতে নিয়ে ভাবছি এটা কার তা কিভাবে জানবো। তবে কোনোভাবেই বুঝতে পারছিনা কিভাবে পাবো খুজে?

(পাঠক /পাঠিকা কেমন লাগলো তা গঠনমূলক বাক্যে জানাবেন। কেনোনা আপনাদের সুন্দর সুন্দর কমেন্ট লেখার আগ্রহ বাড়ীয়ে দেয়)

 

 

 

 

 

 

[ ১৩ ]

তবে কোনোভাবেই বুঝতে পারছিনা কিভাবে পাবো খুজে? (আগের পর্বের শেষ কিছু অংশ)

পরেরদিন সকালে,,

সবাই নাস্তার পর্ব শেষ করে নিজের কাজে চলে গেলো। এর মধ্যে আমার আর আয়ানের সাথে কোনো কথা হয়নি।

বেলা ১১টার দিকে আয়রার ঘরের সামনে দিয়ে আসতেই দেখতে পেলাম কিছু একটা দেখছে 𝑨𝒍𝒃𝒖𝒎-এ। আমিও অনুমতি নিয়ে ঘরে ঢুকে গেলাম।

আয়না/আয়াতঃ ছোট আপামনি কিসের ছবি দেখেন?

আয়রাঃ আমার ভাইয়া আর ভাবির আকোদের ছবি।

আয়না/আয়াতঃ ও আচ্ছা। আমারেও দেখান একটু

আয়রাঃ হুম এই যে দেখো

এরপর দুজনে ছবিগুলো দেখতে দেখতে লাগলাম।আমার আর আয়ানের কিছু ছবি দেখে এতো হাসি পাচ্ছে। এদিকে হাসতেও পারছিনা। ঠিক সেই সময়,,,,

প্রিয়াঃ কিরে তোরা কি করিস?

আয়রাঃ এইতো ছবি দেখি।

প্রিয়াঃ চল আমিও দেখি একটু (বসে পড়লো)

তিনজন মিলে ছবি দেখছিলাম। হঠাৎই-আমি ভয়ে আতকে উঠে বলে ফেলি,”নাহ”

আয়রাঃ কি হলো?

প্রিয়াঃ না বললি কেন আয়না?

আয়না/আয়াতঃ নাহ মানে বড় মেডাম কাজ দিছে একটা তা করতে ভুলে গেছি।(কিছুটা থতমত খেয়ে)

আয়রাঃ ওহ এই ব্যাপার? সমস্যা নেই মামুনি কিছু বলবেনা।

আয়না/আয়াতঃ আপনারা ছবি দেখেন আমি গেলাম। (বলেই দৌড়)

এরপর ওরা আর কোনো কথা বলেনি ছবি দেখায় মন দিলো।

আমি সেখান থেকে চলে এসে নিজেকে সামলে নেই এবং আয়ান আসার অপেক্ষা করি।

_________________________________

রাতে সবার খাবারের পর্ব শেষে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে তখন আয়ান আমার রুমে আসে।

আয়ানঃ কি বলছো এসব? তাহলেতো সবাই জেনে যাবে।

আয়াতঃ হ্যাঁ এবার সময় এসেছে সবার সামনে নিজের আসল পরিচয়টা উপস্থাপন করা।

আয়ানঃ তুমি যা বলছো ভেবে বলছোতো?

আয়াতঃ হুমম।তুমি শুধু আমি যা যা বলছি এই কাজগুলো করে দাও।

আয়ানঃ হুম বলো কি করতে হবে?

আয়াতঃ_______________________________

আয়ানঃ ঠিক আছে।

আয়াতঃ শুধুমাএ কালকের দিনটা তাই তোমাদের সব খেলা শেষ…..( কাঁদতে কাঁদতে)

______________________________

সকালে খাবার টেবিলে,,,

আয়রাঃ মামুনি আজ আমার ফিরতে দেরী হবে

মামুনি কেনো?

আয়রাঃ আমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাবো।

মামুনিঃ এই কয়েকদিন আগে না ঘুরে আসলি আবার এখন কিসের ঘোরাঘুরি?

আয়রাঃ মামুনি ওটাতো কলেজ থেকে ট্রিপ ছিলো আর এটায় আমরা ৪/৫ জন যাবো।

ফুপিঃ আচ্ছা যেতে চাইছেতো যেতে দাওনা। এখন ঘুরবে না তো কবে ঘুরবে?

মামুনিঃ হ্যাঁ এই তোমার কারণেই এই মেয়ে মাথায় উঠেছে। তা কয় বছরের জন্যে যাবেন শুনি?

আয়রাঃ কি বলো বছর কেন এই যে বের হবো বিকেলে বা রাতে আসবো।

ফুপিঃ হইছে যাতো তুই।

মামুনিঃ হ্যাঁ আরো মাথায় তোলো। এই শোন সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরবি। যদি রাত হয় তো খবর আছে।যা।

আয়রাঃ ঠিক আছে।(চলে গেলো)

প্রিয়াঃ আমারও বাইরে যেতে হবে আজ আর আমারও দেরী হবে আসতে

মামুনিঃ কেনো তুমি আবার কই যাবা?

প্রিয়াঃ আরে মামানি আমিতো অফিসের কাজে যাবো।ঠিক আছে গেলাম(উঠে গেলো)

আয়ানঃ মামুনি আমি গেলাম বাই।(তাড়াতাড়ী উঠে চলে গেলো)

তারপর একেএকে বাকি সবাই যার যার কাজে চলে গেলাম। এক ফাঁকে আমিও বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম অরিন আপুর বাসায়। সেখানে গিয়ে আপুকে সব বললাম এবং আপুর সাহায্য লাগবে আমার তাও বললাম। প্রায় ২ ঘন্টার মতো প্ল্যান করলাম তারপর বাসায় চলে গেলাম।

বাসায় ঢুকতেই,,,

ফুপিঃ এই মেয়ে দাঁড়াও

আয়না/আয়াতঃ (কিছুটা থতমত খেয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে গেলাম)

ফুপিঃ কি হলো কথা বলছোনা কেনো কোথায় গিয়েছিলে?

আয়না/আয়াতঃ ইয়ে মানে আগে যে বাড়ীতে কাজ করছি ওইখানে।

মামুনিঃ কি ব্যাপার এতো চেঁচামেচি করছো কেনো? আর আয়না তুমি কোথায় গিয়েছিলে না বলে?

আয়নাঃ আসলে মেডাম আগের যে বাড়ীতে কাজ করছি সেই বাড়ীর আপার মা অনেক অসুস্থ ছিলো তাই কাউরে কিছু না জানায়া যাই।

মামুনিঃ গিয়েছো ভালো কথা তবে বলে যাবে তো। বললে কি মানা করতাম নাকি এমন দুশ্চিন্তা হয়তো।এরপর থেকে এমনটা আর করবানা ঠিক আছে?

আয়নাঃ আচ্ছা( মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে আসি)

———————————

সন্ধ্যায়,,

আয়রাঃ মামুনি দেখো আমি আমার কথা রেখেছি (মেইন দরজা দিয়ে ঘরে এলো)

মামুনিঃ বেঁচে গেলি নয় আজ তোর কপালে শনি ছিলো

আয়রাঃ সেই জন্যেই তো আসলাম এত তাড়াতাড়ী

মামুনিঃ তাতো বুঝলাম তবে তোমার মেয়ে কই এখনোতো আসলো না( ফুপিকে উদ্দেশ্য করে)

ফুপিঃ ও সকালে বললোনা অফিসের কাজে আছে? ঠিক এসে যাবে টেনশন নিওনা।

মামুনিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। এই তুই গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে যা। সারাদিন কি না কি খেয়েছিস এসে খেয়ে নে।

আয়রাঃ নাহ মামুনি এখন আর ভারি কিছু খাবোনা। একেবারে রাতে সবার সাথে খাবো।

মামুনিঃ আচ্ছা।

আয়রাঃ আর পারলে এক কাপ 𝑪𝒐𝒇𝒇𝒊𝒆 পাঠায়া দিও আমার রুমে।

মামুনিঃ আচ্ছা। এই আয়না একটু বানিয়ে দাও

আয়না/আয়াতঃ জ্বিহ এখুনি দিতেছি(বলেই চলে গেলাম)

________________________________

রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রিয়া বাসায় এলো, কারো সাথে তেমন কথা না বলে নিজের রুমে চলে গেলো।

৯ টার দিকে বাবা ফিরলো। বাবাকে দেখে মামুনি বললো,,,,

মামুনিঃ কি ব্যাপার তুমি এলে তোমার ছেলে কই?

আয়ানের বাবাঃ কেনো ও এখনো ফেরেনি? ওতো আজ সারাদিন অফিসে ছিলোনা।

মামুনিঃ অফিসে ছিলোনা? অফিসে ছিলোনাতো কোথায় গিয়েছিলো?

বাবাঃ জানিনা কল করলাম বললো একটা 𝑰𝒎𝒑𝒐𝒓𝒕𝒂𝒏𝒕 কাজে বাইরে আছি পরে বলবো।

মামুনিঃ ওইতো এসে গেছে।

বাবাঃ (পেছনে ঘুরে তাকালো)

মামুনিঃ এই তুই সারাদিন কইছিলি?

আয়ানঃ আরে আমার এক বন্ধুর বাবা অসুস্থ হয়ে যায় তাই সেখানে যাই।(মাথা নিচু করে)

মামুনিঃ ওহ তা সে এখন কেমন আছে?

আয়ানঃ ভালো। আমার ভালো লাগছেনা অনেক ক্লান্তি অনুভব করছি উপরে গেলাম ফ্রেস হতে।(বলেই দ্রুতগতিতে চলে গেলো)

মামুনিঃ আয়না এই আয়না সবাইতো এসে পড়লো একটুপর সবাই খেতে আসবে সব ঠিকঠাকা করো।

আয়না/আয়াতঃ আচ্ছা( রান্নাঘর থেকে আওয়াজ করে বললো)

__________________________________________

_______________

রাত ১০টার দিকে সবাই খাবার টেবিলে আসলো এবং খেতে খেতে টুকটাক কথা বলে খাবারের পর্ব শেষ করলো। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন আয়ান এসে আমার রুমের দড়জায় কড়া নাড়ে। দরজা খোলার সাথে সাথেই সে আমায় এসে জড়িয়ে ধরে আমি কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ওকে জিজ্ঞেস করলাম,,,

আয়াতঃ কি হয়েছে? যে কাজে গিয়েছিলে সেখানে কি কিছু হয়েছে?

আয়ানঃ ______________( পুরো ঘটনা খুলে বললো)

আয়াতঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আজ অরিন আপুদের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তবে ______(সারাদিনের সব কথা বললো)

আয়ানঃ কি বলো?

আয়াতঃ হুম তবে আর বলছি কি। আচ্ছা শোনো প্ল্যানে ফিরে আসি।

___________________________________

______________

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আগামী পর্বে আপনাদের জন্য থাকছে ধামাকা। আশা করি সেই পর্যন্ত সাথে থাকবেন)

 

 

 

 

[ ১৪ ]

আয়াতঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আজ অরিন আপুদের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। তবে ______(সারাদিনের সব কথা বললো)

আয়ানঃ কি বলো?

আয়াতঃ হুম তবে আর বলছি কি। আচ্ছা শোনো প্ল্যানে ফিরে আসি। (আগের পর্বের শেষের কিছু অংশ)

টিং টিং টিং টিং( কলিংবেলের আওয়াজ)

মামুনিঃ আয়না দেখোতো কে আসলো এই সন্ধ্যায়?

দরজা খোলার পর কামিজ পড়া, চুলগুলো ছেড়ে দেয়া একটা মেয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। তাকে দেখে সবার চোখ ছানাবড়া, একসাথে সবাই দাঁড়িয়ে গেলো।

মামুনিঃ আয়াত তুই……( অবাক,ভয়, কাঁদো কাঁদো গলায়)

বাবাঃ একি কি হচ্ছে এগুলো? এই মেয়ে কে তুমি? আমাদের মেয়ের মতো রুপ নিয়ে এসেছো কেনো?

আয়াতঃ( শব্দ করে হাসলো একটু)

ফুপিঃ এই মেয়ে নিশ্চিত বহুরুপী ভাইজান তাড়াতাড়ী পুলিশ ডাকো।

৩ বছর আগে বিয়ের শপিং থেকে ফিরছিলাম তখন ব্রিজের ওপর কয়েকজন এসে দাড়ায় আমাদের গাড়ীটাকে থেকে নামায় আর আমায় কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ৩ টা বছর আমায় ড্রাক্স দিয়ে রাখা হয় একটা বদ্ধঘরে যেখানে কোনো আলো-বাতাস কিচ্ছু ছিলোনা। কয়েকবার পালাতে নিয়েও পারিনি।

এরপর হঠাৎই একদিন সুযোগ হয় মুক্তি পাবার সেদিন খুব কস্ট করে মেইন রাস্তায় আসি তারপর….( ১ম পর্ব থেকে পড়লে বুঝতে পারবেন।কথাগুলো রিপিট করতে চাচ্ছিনা)_________________________

দুনিয়ার সকলের কাছে আজ আমি মৃত..। ৩ বছর আগে দূর্ঘটনায় #আফনান_আয়াত -সহ তার পুরো পরিবার এক নির্মম রোড এক্সিডেন্টে মা/রা যায়।

আয়রাঃ হ্যাঁ তাইতো আমরা লাশ দেখেছিতো

আয়াতঃ হাহাহা।সত্যি দেখেছো?

মামুনিঃ হ্যাঁ সবাই দেখি।

আয়াতঃ হ্যাঁ তোমরা লাশ দেখেছো তবে লাশের মুখটা দেখোনি। সেখানে মোটেও আমি ছিলামনা।সেখানে ছিলো অন্যজন।

আয়রাঃ তাহলে ওখানে কে ছিলো? আর তুমিই বা এতদিন কোথায় ছিলে?

আয়াতঃ সেটা কে তা পরে বলছি। আর আমি কেনো এখানেই ছিলাম।(কিছুটা হেসে)

ফুপিঃ এখানে ছিলে মানে?

আয়াতঃ আমার ১ম উদ্দেশ্য ছিলো এই বাড়ীতে প্রবেশ করা আর সকলের প্রতিক্রিয়া বোঝা। আর আমি যদি সরাসরি সেদিনই আসতাম তাহলে কোনোদিনই জানতে পারতামনা আমার জীবন নস্ট করার আসল কারণ বা কে কাজটা করেছে। তাই আমায় বাধ্য হয়ে বাড়ীর কাজের মেয়ে আয়না হয়ে আসতে হয়।

প্রিয়াঃ আয়না মানে? তাহলে ও কে?

অরিন আপু নিজের ঘোমটা সকলের সামনে খুলে ফেলে।

আয়ানঃ তোমাদের এই প্ল্যানের কথাতো জানতামনা?

আয়াতঃ এটা আমার আর আপুর মধ্যেই ছিলো বলতে পারো তোমায় কিছুটা সারপ্রাইজ দিলাম (হাসতে হাসতে বললো)

মামুনিঃ আয়ান তুই এসব জানতি?

আয়ানঃ হ্যাঁ

মামুনিঃ আমাদেরতো কিছু বলতে পারতি

আয়ানঃ সবাই জানাজানি হলে ওর বিপদ হতো।

মামুনিঃ তুই কিভাবে চিনলি ওকে?

আয়ানঃ সেদিন জেনেছি যেদিন পার্টিতে ঝারবাতি আমার ওপর পড়া থেকে আয়াত আমায় বাঁচায় আর আমার ওপর পড়ে যায়।সেদিন ও মেকাপ করতে ভুলে যায় যার ফলে আমি চিনে ফেলি। তবে তোমার জায়গায় অরিন আপু আসলো কিভাবে?(আয়াতকে উদ্দেশ্য করে)

আয়াতঃ সবাই হয়তো জানো আমার রুমে ২ টা দরজা একটা বাড়ীর ভেতরের।আর আরেকটা বাগানের দিকে। যদিও ওটা ব্যবহার হয়না একটা টেবিল দেয়া ছিলো।তো আমি কাল রাতে সেখান দিয়েই আপু আনি। কারণ দিনের বেলায় সম্ভব ছিলোনা।

এবার আসি পরের কথায়,,, আয়ান আমায় চিনে ফেলার পর আমরা একসাথে কিডন্যাপারকে খুজি। তবে মজার বিষয় হলো আমায় যেখানে ৩টা বছর রাখা হয় সেটা বর্তমানে পুরনো লাইব্রেরি হয়ে গেছে। মানে সব প্রমাণ উধাও। তবে একটা কথা আছে চোরের ৩দিন তো গেরোস্তের ১ দিন। আর খুনি, চোর,ডাকাত কোনো না কোনো প্রমাণ ফেলে যাবেই।

কিডন্যাপার আমার সাথে ৩ বছর খেলেছে আর আমি,,,, (হা হা হা)।এবার বলছি লাশটা কার?

লাশটা কার সেটা আমি বলবো নাকি তুমি বলবে প্রিয়া?( প্রিয়াকে উদ্দেশ্য করে)

প্রিয়াঃ কি আমি জানবো কিভাবে? কি বলছো? মামু এই মেয়ে বহুরুপী পুলিশ ডাকো( ভয়ে বলতে লাগলো)

আয়াতঃ এই লকেটটা চিনতে পারছো? ( প্রিয়াকে বললাম)

প্রিয়াঃ নাতো কি.. কা,কার এটা?( তোতলাতে তোতলাতে)

আয়াতঃ আচ্ছা চলো আমি চেনাচ্ছি। আয়রা তোমার ভাইয়া আর আমার আকদের ছবির অ্যালবামটা যে আছে তা নিয়ে এসো?

আয়রাঃ( কথা না বাড়িয়ে অ্যালবামটা এনে আমার হাতে দিলো)

আয়াতঃ দেখোতো ছবিতে পড়ে থাকা লকেট আর আমার হাতের লকেটটা এক কিনা?

প্রিয়াঃ দুনিয়াতে কি এই একটা লকেট আছে নাকি আরো অনেক আছে। হয়তো কিডন্যাপারেরও আছে।

আয়াতঃ বাহ এতো মিল। আচ্ছা তা বলি কি তোমার লকেটরা কোথায় আনোতো।

প্রিয়াঃ নেই হারিয়ে গেছে।

আয়াতঃ হাহাহা। হ্যাঁ হারিয়েতো গেছে যখন সব প্রমাণ উধাও করছিলে তখন হারিয়ে গেছে।

মামুনিঃ এরমানে সবকিছুর পেছনে প্রিয়া ছিলো?

আয়াতঃ হ্যাঁ। আমাদের আকোদের কয়েকদিন পর প্রিয়া চলে যায় দেশের বাইরে সবাই জানি। তবে না সে দেশেই ছিলো এইসব ঘটনা ঘটানোর জন্যে প্রস্তুুত হচ্ছিল। আর সেদিন যে আয়ানের ওপর আক্রমণ হয় তা ছিলো ওকে শেষ করার পরিকল্পণা। কারণ প্রিয়া বুঝে গিয়েছিলো আয়ান কোনোদিনই ওর হবেনা। আার সেই রাগে…… ছিঃ।

আর ওই লাশটা ছিলো রিয়ার।যে কিনা প্রিয়ার সব সত্য জেনে যায় এবং তোমাদের সবাইকে বলে দেয়ার হুমকি দিয়ে এখানে আসছিলো তবে প্রিয়া এতোটা নিচে নেমে গিয়েছিলো যে নিজের বোনকেই এক্সিডেন্ট করে মে/রে ফেলে। আর ওর মুখ একেবারে থেতলে দেয় যেনো কেউ না চিনতে পারে। এদিকে ডাক্তারকে ঘুষ দিয়ে লাশটা যে আমার তার রিপোর্ট বানানো হলো। ব্যাস… ২-এ ২-এ ৪। সারাজীবনের মতো দুনিয়ার সবাই জানলো আমি মৃত।আর যদিও আমি কোনোদিন দুনিয়ার কারো কাছে আসি তাহলে সবাই ভাববে আমি বহুরুপী কাটণ সবাইতো লাশ দেখেছে। তারপর আর কি আমায় মিথ্যা অভিযোগে হয় সারাজীবন জেল খাটতে হবে নয় ফাঁশি। এতে সাপও মরলো আর লাঠিও ভাঙলোনা।

প্রিয়াঃ মিথ্যা সব মিথ্যা। আমি কিছুই করিনি।

আয়াতঃ ওকে চলো তাহলে একটা ভিডিও দেখি লাইট Off…………

“এতোটা বছর তোমাদের বাঁচিয়ে রেখেছি শুধু একটু একটু করে মরতে দেখবো বলে। নিজের মনের জ্বালা মেটাবো বলে। তোমাদের মেয়েতো খাচা ছেড়ে পালিয়েছে তবে টেনশন নেই ওকে যেদিন পাবো সেদিন একেবারে দুনিয়া থেকে উধাও করে দেবো হাহাহাহাহ। ”

লাইট জ্বলে উঠলো আয়াত আবার বলা শুরু করলো,,”কালকে আয়ান কোনো বন্ধুর কাছে যায়নি সে প্রিয়াকে ফলো করেছে। আর ভিডিওটা ওরই করা।কারণ আমরা অনেক আগেই জেনে গিয়েছিলাম শুধু আমার মা-বাবাকে উদ্দার করার জন্যেই এতো কিছু।”

আমি আয়ানকে ইশারা করলাম এবং ও বললো,,,

“আপনারা ভিতরে আসুন?”

৩ বছর পর মা-বাবাকে দেখলাম দেখামাএই দৌড়ে তাদের জড়িয়ে ধরলাম। আয়ানের মা-বাবা এসেও আমায় জড়িয়ে ধরলো। এবার সবার কাছ থেকে কিছুটা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে প্রিয়ার কাছে গেলাম এবং বলতে শুরু করলাম,,,,,

এই থাপ্পড়টা আমায় এতোটা কস্ট দেয়ার জন্যে ঠাস,,,,,,

এই থাপ্পড়টা আমার জীবন থেকে ৩ টা বছর কেড়ে নেয়ার জন্যে ঠাস,,,,,,,,,,,,

এই থাপ্পড়টা আমার বাবা-মাকে এতোটা কস্ট দেয়ার জন্য ঠাস,,,,,,,,,,,,,

এই থাপ্পড়টা রিয়ার মতো নির্দোষ মেয়ের জীবন নেয়ার জন্য ঠাস,,,,,,,,

এই থাপ্পড়টা আমার ২ পরিবারকে এতোটা কস্ট দেয়ার জন্য ঠাস,,,,,,

এই থাপ্পড়টা আমার ভালোবাসার মানুষকে এতোটা কস্ট দেয়ার জন্য।

আজ আমি যদি পারতাম তো তোকে মে/রে ফেলতাম।তবে না আইন নিজেট হাতে তুলে নেবোনা। অফিসার ওকে নিয়ে যান।””

পুলিশ এসে প্রিয়াকে নিয়ে গেলো। আর অন্যদিকে ফুপি কান্না করছে আর সবাই বলছে,” তোরা আমায় বিষ এনে দে এমন মেয়ে থাকার চেয়ে না থাকা ভালো”

মামুনি,আম্মুসহ সবাই বোঝাচ্ছে এতেতো তার কোনো দোস নেই।

আজ নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে খুশি মানুষ মনে হচ্ছে সেই আগের পরিবারকে ফিরে পেয়েছি।

আমায় এককোণায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে আয়ান পাশে দাড়ালো আর ইশারায় বললো,”কি হয়েছে”

আমিও মাথা নেঁড়ে বললাম কিছুনা।”

তারপর ২জনেই মুচকি হাসলাম।

১মাসপর,,,,

এরপর এভাবেই দেখতে দেখতে আমাদের সুখের দিনগুলো চলছে। চাচ্চু আমাদের একা রাখতে চায় না আর তার ধারণা বিপদ হতে পারে তাই সবাই একসাথেই থাকি। এদিকে আমার আর আয়ানের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছে সামনেই বিয়ে। অন্যদিকে প্রিয়াসহ ওকে যারা সাহায্য করেছে তাদের সবারই সারাজীবনের জেল হয়েছে।

বুঝতেই পারছেন আমাদের জীবনের গাড়ী গড়গড় করে চলছে,,,,,,,

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা কেমন লাগলো আজকের পর্ব? বিশেষ করে প্রিয়ার থাপ্পড়ের মুহুর্তগুলো? আচ্ছা বলুনতো ও মোট কয়টা থাপ্পড় খায়?)

 

 

 

 

 

 

[ ১৫ ]

সবারই সারাজীবনের জেল হয়েছে।

বুঝতেই পারছেন আমাদের জীবনের গাড়ী গড়গড় করে চলছে,,,,,,, (আগের পর্বের শেষ কিছু অংশ)

সকাল খাবার পর্ব শেষে পার্লারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রেডি হয়ে আমি আয়রার কাছে গেলাম। আয়রার ঘরে গিয়ে ওকে ডাকতে ডাকতেই শুনতে পেলাম,,,,,

আয়রাঃ কি সত্যি দেশে আসবে? আচ্ছা ঠিক আছে তাড়াতাড়ি চলে এসো।

এইটুকু বলেই আমি ডাক দেয়ায় সে ফোনটা কান থেকে নামিয়ে নিলো আর বললো,,,

আয়রাঃ ভাবি কিছু বলবা? (কিছুটা থতমত খেয়ে)

আয়াতঃ আমি রেডি তাই তোমায় ডাকতে আসছিলাম যাওয়ার জন্য।( নিচু স্বরে বললাম)

আয়রাঃ ওহ হ্যাঁ ভুলেই গিয়েছিলাম চলো চলো আমিও রেডি।

আমায় আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো। এরপর আমরা পার্লারের উদ্দেশ্যে রওনা হই। গাড়ীতে একবার আয়রাকে বললাম,,,,

আয়াতঃ আচ্ছা দেশের বাইরে থেকে কি কেউ আসবে?

আয়রাঃ মানে?( কিছুটা হতভম্ব হয়ে)

আয়াতঃ না মানে তোমায় ডাকতে এসে শুনতে পাই একটু যে, কাউকে বলছো সত্যি দেশে আসবে কিনা?তাই বললাম আর কি

আয়রাঃ ওহ,,, আমার এক বন্ধু আসবে দেশের বাইরে থেকে। ওর সাথেই কথা বলছিলাম।

আয়াতঃ ওহ আচ্ছা।

দুজনে আরো অনেক বিষয়ে টুকটাক কথা বললাম।তারপর কথা বলতে বলতে ১ঘন্টার মধ্যে পার্লারে পৌছে গেলাম। তবে গিয়ে দেখি, যে 𝑶𝒘𝒏𝒆𝒓 সেই আপুটি অন্য একজন কনে’কে সাজাচ্ছে।মূলত সে শুধু কনেদের সাজায় আর তার কর্মচারীরা বাকি সবাইকে। অতএব, আমাদের ২ ঘন্টার মতো সেখানে বসে থাকতে হলো। তারপর সে এলে আমরা কথা বলে নেই। কখন, কোথায় যেতে হবে বাসার ঠিকানা দিয়ে দেই। যখন পার্লার থেকে বের হবো তখন হঠাৎ-ই একটা মেয়ে ঢুকতে গিয়ে আয়রার সাথে ধাক্কা খায়। আর আয়রাসহ সে পড়ে যায়। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে আয়রাকে তুলি এবং মেয়েটাকে তুলতে যাবো ঠিক তখনি ও নিজেই উঠে যায়। এদিকে আমি আয়রাকে সামলাতে ব্যস্ত আয়রা আগুনের মতো ফুলছে খালি।একটুপর মেয়েটা বললো,”আপু আপনার পার্সটা পড়ে গেছে”(বলেই হাতে দিলো)। আমিও “ধন্যবাদ” বলে বিদায় নিলাম।

বের হয়ে আমি আয়রাকে বললাম,,,

আয়াতঃ আয়রা আমার না কিছু জিনিস কেনার আছে এরপরতো আর বের হতে পারবোনা আর বাসা লোকজনও আসা শুরু হবে তো বের যখন হয়েছি চলো শপিং-এ যাই।

আয়রাঃ আচ্ছা চলো। আমারও কিছু জিনিস কেনার আছে। ভালোই হবে।

আমি আর আয়রা চলে গেলাম শপিং-এর উদ্দেশ্যে।

গাড়ী তার আপন মনে চলছে। হঠাৎ-ই আয়রা ড্রাইবার কাকাকে বললো,,,

আয়রাঃ কাকু কাকু গাড়ী থামাও তাড়াতাড়ি।

আয়াতঃ কি হলো এমন করছো কেনো?( আয়রার ব্যবহারে অবাক হলাম)

এতক্ষণে গাড়িও থেমে গেলো। আয়রা আবার বলতে শুরু করলো,,

আয়রাঃ ভাবি ওই দেখো ফুসকা চলো না খাই প্লিজ?(নেকামি করে)

আয়াতঃ ওহ এই ব্যাপার হুম চলো চলো দেখেইতো আমার জিহ্বায় পানি চলে এলো(খুশিতে বললাম)

আয়রাঃ তাহলে চলো তাড়াতাড়ি কতদিন হলো খাইনা।তুমি চলে যাওয়ার পর তেমন আর খাইনা খেতে গেলেই তোমার কথা মনে পড়তো কারণ ফুসকাতো তোমার প্রাণভম্বরা ছিলো।

আয়াতঃ হইছে আর মন খারাপি কথা বলতে হবে না। আর এখনতো আমি সাথেই আছি চলো মজা করে খাই।

আয়রাঃ চলো (বলেই গাড়ী থেকে নেমে পড়ে)

আমিও নামতে যাবো তখনি ব্যাগ থেকে কিছু টাকা বের করে ড্রাইবার কাকাকে দিলাম,,,

আয়াতঃ কাকা এটা নাও,তুমিতো আর ফুসকা খাবে না তো নিজের ইচ্ছেমতো কিছু কিনে খাও গিয়ে।

ড্রাইবার কাকাঃ বুড়ী মা লাগবে না।যাও তোমরা খেয়ে এসো আমি গাড়ীতেই আছি।

আয়াতঃ আমি না তোমার বুড়ি মা? তোহ আমার কথা শোনো আর নাও।

আয়রাঃ কাকা নাও তাড়াতাড়ি দেখো আর থাকতে পারছিনা মুখে পানি চলে এসেছে। ফুসকা হাত বাড়ীয়ে আমায় শুধু ডাকছে

আয়রার কথা শুনে আমার ৩ জন হেসে ফেললাম।তারপর কাকা টাকাটা নিলে আর আমরা চলে গেলাম খেতে। ইচ্ছেমতো যে যে কয়টা পারি খেলাম। তবে টাকাটা দেয়ার জন্যে যেই পার্সটা খুললাম দেখলাম একটা কাগজ। বড় ব্যাগ থেকে ড্রাইবার কাকাকে টাকা দেয়ায় পার্স আর খোলা হয়নি। আমি কৌতুহলে কাগজটা বের করে খুলে দেখি বড় করে লেখা,,,,

I WILL COME BACK… BABY

আমি কিছু না বুঝে আয়রাকে বললাম,”এই দেখো পার্স থেকে এটা পেলাম।” দেখে আয়রা হেসে বললো,,

“এটা নির্ঘাত ভাইয়ার কাজ। ও তোমায় ভয় দেখাতে এমন করছে।”

আমি ওর উত্তরে একটু হেসে টাকা দিলাম দোকানদারকে। সেখান থেকে আমরা শপিং-এ চলে যাই এবং প্রযোজনীয় কিছু জিনিস কিনে সোজা চলে আসি বাড়ীতে। বাড়ীতে আসার সময় বাসার সকলের জন্যে কিছু খাবার নিয়ে যাই। আমাদের ফিরতে প্রায় ২ টার মতো বেজে যায়। গিয়ে দেখি সবাই বসে আছে। কারণ ফোন করে বলা হয়েছিলো বাইরে থেকে খাবার আনবো। খাবারের প্যাকেটগুলো মামুনির হাতে দিয়ে আমরা ফ্রেশ হতে উপরে চলে যাই এবং ফিরে এসে সবাই একসাথে খাওয়া শুরু করি।

মামুনিঃ তোদের এতো দেরি হলো কেনো? সেই কোন সকালে বের হয়েছিলি

আয়াতঃ আর বলোনা পার্লারে গিয়েইতো ২ ঘন্টার মতো বসেছিলাম তারপর………..(পুরো কাহিনি বললাম)

আয়রাঃ জানো আজ কতো দিনপর মজা করে ফুসকা খে…..( আয়াতের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে যায়)

মূলত আমি আয়রাকে ফুসকা খাওয়ার কথা বলতে ইশারায় মাথা নেড়ে মানা করছি কারণ সবাই আমাদের এই বাইরের খাবার খাওয়া পছন্দ করে না আর বকা দেয় অনেক।

মামুনিঃ কি থেমে গেলি কেনো? তোদের কি কখনো লজ্জা হবেনা? কতবার বলেছি বাইরের খাবার খাবিনা বিশেষ করে ফুসকা তাও তোরা এগুলো খাস?

আয়রাঃ একটু খেলে কি হয়?(খাবার খেতে খেতে)

আয়ানঃ আপনারাতো একটু খাননা ৩০ টার ওপরে খান। আর পারলেতো পুরো দোকানই খালি করে করে আসবি( খোঁচা দিয়ে কথাটা আমায় বললো কারন একবার সবাই ঘুরতে গিয়ে আমি খেয়েছিলাম)

আয়াতঃ আয়রা শোনো যারা ফুসকা হেটার্স তারা কখনোই ফুসকার মূল্য বুঝবেনা তোহ চুপচাপ খাবার খাও।

আয়রাঃ একদম ঠিক।(হাসতে হাসতে)

আয়ানঃ কোথা থেকে এলো এই জ্ঞানদিদি..? যে আমাদের ফুসকার মূল্য বোঝাচ্ছে?(হাসতে হাসতে বলে)

আয়াতঃ(রাগি চোখে তাকিয়ে আছি আয়ানের দিকে)

আম্মুঃ হইছে হইছে এবার খাবার খা সবাই। এদের বলে কোনো লাভ নাই জীবনে শুনবো না কথা এই দুইজন।

আম্মুঃ তা শপিং-এ গিয়েছিলি কেনো?(আয়াতকে উদ্দ্যেশ্য করে)

আয়াতঃ ওই কিছু দরকারি জিনিস কেনার ছিলো আমাদের তাই

আম্মুঃ ওহ আচ্ছা।

সবাই আরো অনেকক্ষণ কথা বললাম তারপর যে যে যার যার রুমে চলে গেলাম। শুধু আয়ান,চাচ্চু আর আব্বু অফিসে গেলো।

এতদিন আমার বাবার অনুপস্থিতিতে বিজনেসটা চাচ্চুই সামলায় সাথে সাথে আমাদের নিজেদের যে আরো অফিসগুলো আছে ওগুলোর দায়িত্বও সে নেয়। তবে ১মাস হলো চাচ্চু আব্বুকে সব বুঝিয়ে দিয়েছে।

আমি রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ার সাথে সাথেই রাজ্যের ঘুম আমার চেখে এসে হানা দেয়। এরপর যখন ঘুম ভাঙে তখন ৫টার বাজে। আমি তাড়াতাড়ী ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে সকলের জন্য চা এবং পাকোড়া বানালাম। সবকিছু তৈরী হলে সবাইকে নিচে ডাকলাম। তারপর আমি, আম্মু,মামুনি,আয়রা বসে জমিয়ে আড্ডা দিলাম। ফুপিকে ডাকা হয়েছিলো তবে সে আমাদের আড্ডায় অংশ নিতে রাজি নয়। মন-মেজাজ ভালো না ভেবে আয়রাকে দিয়ে তার খাবার আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।

আর অন্যদিকে আমরা আড্ডায় মেতে ছিলাম,,,,,

মামুনিঃ ভাবি আমাদের কিন্তুু আর বেশী সময় নেই কাল দিন পরেই তো গায়ে হলুদ এবং তারপরইতো বিয়ের আমেজ শুরু। তোহ আমাদের, আপনাদের প্রায় সবাইকেতো দাওয়াত দেয়া হয়েছে আপনি তবুও একবার লিস্ট দেখে নিন আর ভেবে বলুন কেউ বাকি আছে কিনা? নয়তো কাল গিয়ে ইনভাইট করতে হবে।

আম্মুঃ না না সবাইকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে।

মামুনিঃ আচ্ছা তাহলে তো ভালোই। আয়াত,আয়রা কাল গ্রামের বাড়ী থেকে তোমার বাবার চাচাতো ভাইসহ পুরো পরিবার আসবে তোমরাতো গ্রামের বাড়ীতে যাওনি কখনো আর অনেক ছোট থাকতে তাদের দেখেছো তাই তোমাদের মনে নাও থাকতে পারে। আমি চাই তোমরা তাদের ভালো করে আপ্পায়ন করো। কেউ যেনো চৌধুরী বাড়ীর বউয়ের কোনো খুত ধরতে না পারে।

আয়াতঃ আচ্ছা মামুনি সমস্যা নাই। তারা কখন আসবে কাল?

মামুনিঃ রাত নয়টা/দশটা বাজবে হয়তো দিনাজপুর থেকে আসছেতো।

আয়রাঃ বাহ মজা হবেতো তাইলে। আর আমাদেরতো দাদুবাড়ীর তেমন কোনো আত্নীয়ই নেই। ওরা আসলে তাও দাদুবাড়ীর সবাই আছে বলে মনে হবে।

মামুনিঃ আচ্ছা হইছে এবার কাজের কথায় আসি।আয়াত বিয়ে,গায়ে হলুদের জিনিস আজ-কালকের মধ্যেই সবকিছু গুছিয়ে রাখবি বুঝতে পেরেছিস? সব ভাগ ভাগ করে রাখবি, কোন কোন জিনিস গায়ে হলুদে এবং বিয়েতে ব্যবহার করা হবে বুঝলি?

আয়াতঃ আচ্ছা

মামুনিঃ আর দরকার হলে আয়রাকে সাথে নিয়ে সব কাজ করবি।এই ওকে সাহায্য করিস (আয়রাকে উদ্দেশ্য করে)

আয়রাঃ আচ্ছা।তাহলে ভাবি আজ আমি তোমার সাথে শুই?

আয়াতঃ এটা জিজ্ঞেস করতে হয়? চলে এসো।

আমাদের আড্ডা চলাকালীনই আয়ান,চাচ্চু,আব্বু চলে এলো। তারপর তারাও কিছুক্ষণ আমাদের সাথে বসে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হলো এবং তারপর রাতের খাবারের পর্ব শেষ করলাম। এরপর আয়রা আমার সাথে চলে এলো আমার রুমে।আমরা দুজনে মিলে কিছু কাজ করে শুয়ে পড়লাম।

আয়রাঃআচ্ছা ভাবি কাউকে ভালোবাসলে তাকে ছাড়া থাকতে অনেক কস্ট হয় তাইনা?

আয়াতঃ হ্যাঁ, তাতো অবশ্যই।

আয়রাঃ আচ্ছা তুমি ভাইয়াকে ঠিক কতটুকু ভালোবাসো?

আয়াতঃ দূর পাগলী ভালোবাসা পরিমাপ করা যায় নাকি?ভালোবাসা উপলদ্ধির বিষয় বনু..

আয়রাঃ হুম তা ঠিক। জানো আমি কখনো ভাবিইনি যে তোমাদের বিয়ে হবে বা তোমরা দুজন দুজনকে এতটা ভালোবাসবে।আমিতো ভেবেছি তোমরা রাজিই হবেনা। কারন ছোট থেকে দেখছি তোমরা কেউ কাউকে সহ্য করতে পারোনা। তবে এটা কিন্তুু সত্যি তোমায় ভাবি হিসেবে পেয়ে খুব খুব খুব খুশি আমি।

আয়াতঃ জানোতো মাঝে মাঝে কিছু কাজ মনের বিরুদ্ধে গিয়ে পরিবারের খুশির জন্য করতে হয়।আর আরেকটা সত্য কথা কি জানো?

আয়রাঃ কি?

আয়াতঃ তোমার ভাইয়া আর আমার ঝগড়াগুলোর মাঝেই হয়তো ভালোবাসা ছিলো যা আমরা কখনো বুঝতেই পারিনি।তবে পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে ঠিকই বুঝতে পারি। তো মাঝে মাঝে ভুল কিছু হওয়া বা বাধ্য হয়ে কিছু করাও ঠিক। আর ভালোবাসার মূল অংশই হলো রাগ,অভিমান,ঝগড়া।

আয়রাঃ ভালোবাসাগুলো মনে হয় এমনই হয় তাইনা?

আয়াতঃ হ্যাঁ। তবে একটা কথা বলোতো?

আয়রাঃ কি?

আয়াতঃ এতো ভালোবাসার কথা বলছো কেনো? কারো প্রেমে পড়লে নাকি?(হাসতে হাসতে)

আয়রাঃ আরে না কি যে বলো।

আয়াতঃ হাহাহা! হইছে অনেক কথা বলছি চলো ঘুমাই এখন। বিয়ের আগে বেশী রাত জাগবো না তাইলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যাবে।পরে দেখা যাবে তোমার ভাইয়া বিয়ের দিনই আমায় দেখে পালাবে হাহাহা

আয়রাঃ ভাবি এতো রাতে আর হাসিওনা জোরে জোরে হাসতেও পারবোনা মামুনি বকা দিবে হাহাহা।

আয়াতঃআচ্ছা চলো ঘুমাই

আয়রাঃ হুম

এরপর দুজনে কয়েকমিনিটের মধ্যেই গভীর ঘুমে মগ্ন।তবে রাত যখন গভীর এবং আমি গভীর ঘুমে তখন ঘুমের মধ্যই মনে হলো কেউ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমায় ডাকছে।আমি মোটামুটি ঘুমেই কনফিউজে চলে গেছি ঘুমের মধ্যেই। বুঝতে পারছিনা আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি সত্যি কেউ ডাকছে। অবশেষে কারো স্পর্শ করায় এবং ডাকে উঠে ভয়ে হা হয়ে যাই। কারণ আমার সামনে একজন ছায়ামানব দাড়িঁয়ে। যেই মুহুর্তে আমি চিৎকার দিব তখনি ছায়ামানব আমার মুখ চেপে ধরে।আমার কানের কাছে এসে বলে,,,,,,

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা দুঃখিত দেরি করে গল্প আপলোড দেয়ায়। অন্য কাজে বিজি ছিলামতো তাই। আচ্ছা বলুনতো কে এই ছায়ামানব? আজকের পর্ব কেমন হলো জানাতে ভুলবেননা)

(চলবে)

 

 

 

 

[ ১৬ ]

আমার সামনে একজন ছায়ামানব দাড়িঁয়ে। যেই মুহুর্তে আমি চিৎকার দিব তখনি ছায়ামানব আমার মুখ চেপে ধরে।আমার কানের কাছে এসে বললো,,,,,,(আগের পর্বের শেষ কিছু অংশ)

“চুপ চুপ একদম চুপ আমি আয়ান।চলো ছাদে যাই।”

আয়াতঃ না আমি এতো রাতে যাবোনা(মুখ থেকে হাত সরিয়ে)

আয়ানঃ যা বলেছি তাই হবে

কথাটা বলেই আয়ান আমায় পাজো করে কোলে তুলে সোজা নিয়ে গেলো ছাদে। তারপর আমায় নামিয়ে দিলো আমি বললাম,,,,

আয়াতঃএতো রাতে এভাবে এখানে নিয়ে আসার মানে কি?

আয়ানঃ প্রেম করার জন্য(আয়াতের কোমড় জড়িয়ে ধরে)

আয়াতঃ ইসস ঢং কতো। যাও সরো আমার ঘুমে চোখ ঢুলুঢুলু( আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে সরিয়ে চোখ ডলতে ডলতে)

আয়ানঃ দেখো চাঁদটা কি সুন্দর আর কতো আলো চারদিকে।যদিও এই শহরের লাইট, ল্যাম্পের আলোয় তেমন চাঁদের আলো বুঝা যায়না তবে গ্রামে কখনো গেলে বুঝতে এত্ত এত্ত সুন্দর।

আয়াতঃ তাই? তাহলে আমায় তোমার দাদুবাড়ী নিয়ে যেও। আমারতো দাদুবাড়ী, নানুবাড়ী সব শহরেই।

আয়ানঃ আচ্ছা নিয়ে যাবো।

আয়াতঃ ওহ ভালো কথা,,

আয়ানঃ কি?

আয়াতঃ আপনি আমার পার্সে কখন ওই কাগজটা দিয়েছেন শুনি…?

আয়ানঃ কাগজ? কিসের কাগজ?

আয়াতঃ এহ এমন ভাব ধরছে যেনো কিচ্ছু জানেনা। এই তুমি ওই কাগজটা দাওনি? বলো?

আয়ানঃ আরে কিসের কাগজ তাইতো জানিনা। আর তোমার পার্স আমি কই পাবো?

নিমেশেই আমার হাসি হাসি মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,,

আয়াতঃ তাহলে আজ দোকানদারকে টাকা দেয়ার সময় যে কাগজটা পেলাম? যেখানে লেখা ছিলো বড় করে,,,

I WIll COME BACK BABY

আয়ানঃ কি Baby? এই ডাড্ডি বুড়িকে কে Baby বলে?( শব্দ করে হাসতে লাগলো)

আয়াতঃ বেশী হয়না?(কিছুটা গাল ফুলিয়ে)

আয়ানঃ আরে আরে রাগ করছো কেনো? 𝑶𝑲 𝒐𝒌 𝒔𝒐𝒓𝒓𝒚 𝒃𝒂𝒃𝒚….(বলে আবার হাসি শুরু করলো)

আয়াতঃ আবার? আমি গেলাম(বলেই সিঁড়ির দিকে যাওয়া শুরু)

আয়ানঃ এই এই আর বলবোনা সত্যি(হাত ধরলো)

আয়াতঃ হু(মুখ ঘুরিয়ে)

আমি আর আয়ান আরো অনেক্ষণ টুকিটাকি কথা বললাম। তারপর যে যে যার যার রুমে চলে গেলাম।

আমি যেই রুমে পা বাড়ালাম তখনি দেখি আয়রা বিছানায় বসে আছে। আর আমায় দেখেই হেসে কুটিকুটি।

আয়রাঃ বুঝলাম এই কারণেই আমায় তাড়াতাড়ী ঘুমোতে বলা হলো।

আয়াতঃ আসলে তুমি যা ভাবছো তা না সত্যি( কিছুটা লজ্জা পেয়ে)

আয়রাঃ হুম জানি জানি। চলো আমার ঘুম পেয়েছে ঘুমাই(হাসতে হাসতে শুয়ে পড়লো)

এদিকে আমি আয়ানকে মনে মনে কথা শোনাতে লাগলাম। ওর কারণে এমন লজ্জা পেতে হলো। ইস কি ভাবলো আয়রা। যদি কাল সবাইকে বলে দেয় ইস আমি শেষ। আবল-তাবল ভাবতে ভাবতে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

সকালে খাবার টেবিলে,,,,

চাচ্চুঃ খাগড়াছড়ি থেকে আজিজুলরা রওনা হয়েছে। বিকেলের মধ্যেই পৌছে যাবে হয়তো।

মামুনিঃ ওরা কি ওদের গাড়ীতে আসছে নাকি বড় গাড়ী ভাড়া করে আসছে?

চাচ্চুঃ ওদের গাড়ীসহ আরেকটা মাইক্রো ভাড়া করে আসছে। এতো লোকতো এক গাড়ীতে হবেনা।

মামুনিঃ হুম তা ঠিক। কাকি আসছেতো?

চাচ্চুঃ তা শোনা হয়নিতো।তবে আমি বারবার বলেছি তার কথা। কারণ সেইতো একমাএ মুরুব্বি আমাদের।

মামুনিঃ আয়াত তারা আসার আগে গাড়ী পড়ে নিস।বুঝতেইতো পারছিস কাকি আগের যুগের মানুষ কি না কি মনে করে।

আয়াতঃ আচ্ছা সমস্যা নাই।

মামুনিঃ ও ভালো কথা ২ মেডাম আপনাদের বলছি লোকজন দেখলেতো আপনাদের পা বড় হয়। বেশী লাফালাফি যেনো করতে না দেখি। তাহলে সবার সামনেই খুব করে বকা দিবো।(আয়াত এবং আয়রাকে উদ্দেশ্যে করে)

মামুনির কথা শুনে আমি এবং আয়রা মিটিমিটি হাসছিলাম একে অপরের দিকে তাকিয়ে। খাবার শেষ করে একে একে সবাই টেবিল থেকে উঠে গেলাম যেহেতু আজ বাদে কালই বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু তাই হাতে তেমন সময় না থাকায় সবাই যে যার যার মতো কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়।

আমি আর আয়রা রুমে এসে গল্প করতে লাগলাম। আয়রা বললো আজ যারা আসছে তারা নাকি আমি যখন ছিলাম না মানে আমার মৃত্যুর সংবাদে তারা এসেছিলো। এছাড়াও এই ৩ বছরে ২/৩ বার তারা বেড়াতে এসেছে।

আয়রাঃ দেখবা ওরা যখন আসবে পুরো বাড়ী আনন্দের আমেজে ভরে উঠবে।

আয়াতঃ তাই নাকি?

আয়রাঃ হ্যাঁ। ওরা সবাই অনেক মিশুক। আর অনেক হইহুল্লুর করতে পারে।

আয়াতঃ বাহ তাহলেতো ভালোই। আমাদের বিয়ের এই কয়েকদিন অনেক মজা করে কাটাবো।

আয়রাঃ হ্যাঁ আমিও অনেককিছু ভেবে রাখছি।

এরপর আমরা দুজনে আরো অনেকক্ষণ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললাম।

_________________________________________________________

বিকেল ৪টার দিকে সবাই চলে এলো,,,

গাড়ীর শব্দেই আয়ান,চাচ্চু আর আমার বাবা তাদের রিসিভ করতে এগিয়ে গেলো। আমরাও তখন ড্রইং রুমে সবাই। আমি আগেই শাড়ী পড়ে রেডি হয়ে নিয়েছি।

অবশেষে সবার দেখা মিললো। সবাই দরজা দিয়ে ঢুকতেই মামুনি,ফুপি,আম্মু, আয়রা এগিয়ে গেলো পিছু পিছু আমিও গেলাম।সবাইকে সালাম দিলাম।ভালো -মন্দ জিগ্যেস করলাম। তখনই দাদু মানে মামুনির চাচি শাশুড়ী একটা ছেলের হাত ধরে সবার পরে ঘরে ঢুকে বলে উঠলো,,,,

দাদুঃ দেখি সবাই সঁড়ে দাড়াঁতো আগে আমি নাতনী বউয়ের মুখ দেখে নেই। (সবাইকে সঁড়িয়ে আমার কাছে এলো)

আয়াতঃ আসসালামু আলাইকুম।

দাদুঃ ওয়ালাইকুম সালাম।

আয়াতঃ কেমন আছেন দাদু মা?

দাদুঃ ভালো ভালো। বাহ বেশ তো হয়েছে তোর ছেলের বউ। পুরো জেনো মায়াবতী ( আমার থুতনিতে হাত দিয়ে মামুনিকে উদ্দেশ্য করে)

আয়াতঃ(মাথা নিচু করে একটু হাসলাম)

দাদুঃ আহাগো এই মেয়েকে নাকি এতোগুলো বছর আটকিয়ে রাখছে তোর মেয়ে..(ফুপিকে উদ্দেশ্য করে)

মামুনিঃ চাচি বাদ দেন এগুলো কথা আসুনতো বসেন এখানে( সোফা দেখিয়ে)

দাদুঃ মাগো এমনি এমনি কি এগুলো বলি। শুনেই তো সেদিন বুকের মধ্যে কু করে উঠছিলো। আমিতো ভাবিই নাই। এই মেয়েরে আবার সামনে থেকে দেখমু। জিগা বড় বউ আমার বউরে কত নাতনী বউয়ের কথা বলছি।

কাকিঃ হ্যাঁ ভাবি মা শুধু ওর কথা বলছে ( আয়াতকে উদ্দেশ্য করে)

পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে আয়ান বলে উঠলো,,,,

আয়ানঃ ও বুড়ী তুমিতো আমার দিকে তাকাও না ভুলে গেলে নাকি?

দাদুঃ আহাগো আমার নাতিন তুমিতো আমার সতীন আনতেছো তাই রাগ করিছি তোমার সাথে।( হাসতে হাসতে নেকামী করে বললো)

আয়ানঃ ওরে বাবা রাগ করছো নাকি?(দাদুর গাল টেনে দিয়ে)

চাচ্চুঃ অনেক কথা বলার সময় পাবে এতো দূর থেকে সবাই এসেছো রেস্ট করে নাও।

এরপর সবাইকে আয়রা গেস্ট রুমে নিয়ে গেলো। সেখানে সবার জন্যে আলাদা আলাদা রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সবাই যখন হাটছিলাম তখন আয়ান আমার কাছে এসে বললো,”৩ বছর পর শাড়ীতে দেখলাম। চোখ ফেরাতে পারছিনা।”বলেই দৌড়।আমি যে বিপরীতে কিছু বলবো তা আর হলো না।

খাগড়াছড়ি চাচ্চুর পৈতৃক নিবাস। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চাচ্চুরা ঢাকায় চলে আসে। আজ সেখান থেকে চাচ্চুর কাকী তার ছেলে,ছেলের বউমা এবং তাদের ২মেয়ে সুপ্তি, দিপ্তি ১ছেলে তীব্র আসে। আরো অনেকেই আসবে তবে গায়ে হলুদের রাতে। চাচ্চুর মূল আপনজন এরাই তাছাড়া বাকিরা দূরের ঘুরানো ফেরানো আত্নীয়। মামুনি ঢাকার মেয়ে তাই তার পরিবারসহ তার আত্নীয়দের কিছু আজকে আর কিছুজন কাল আসবে। আমার খালাতো,মামাতো ভাইবোন আজ রাতে চলে আসবে তবে বড়রা কাল আসবে। আম্মু মূলত এভাবেই বলছে কারণ যতই হোক মেয়ের শশুড়বাড়ী এটা।

অবশেষে রাতে আমার মামাতো,খালাতো ভাই-বোনরা চলে আসে। এর আগে সবার সাথে দেখা হয়েছিলো যখন তারা জানতে পারে আমি জীবিত তখন এসেছিলো আর আজ আসলো আমার বিয়ে উপলক্ষ্যে। আমার দুই মামা বড় মামার ১মে ১ছেলে এবং পরে ১ মেয়ে। পিয়াস, পূর্ণা। ছোট মামার ১মে ২ মেয়ে এবং পরে ২ ছেলে। রুপন্তি,রুপসা এবং রাফি,রিহান। আমার খালামনির ১টাই মেয়ে মিরা। আমার বাবা আমার দাদা -দাদির একমাএ ছেলে ছিলো তাই দাদুবাড়ীর তেমন কোনো আত্নীয় নেই আর যা আছে তারা দূরের আত্নীয়।

অন্যদিকে আয়ানের নানুবাড়ী থেকে শুধু মামুনির একটা বড় ভাইয়ের পরিবার আর ছোট বোন ও তার স্বামী আসবে আসবে। তাদের কোনো সন্তান নেই।

সকলে ফ্রেস হয়ে হালকা নাস্তা খেয়ে যার যার মতো রেস্ট নিয়ে নিলো আবার কেউ কেউ ঘুমিয়েও পড়েছে। বর্তমানে বাড়ীটা বিয়ের বাড়ী মনে হচ্ছে,,,,,

রাত ৯টার দিকে সবাই রাতের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে ছাদে চলে গেলাম ভাই-বোনরা,,,,,

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা দেরি করে গল্প দেয়ার জন্য দুঃখিত। আজকের পর্ব কেমন লাগবে আপনাদের নিজেও জানিনা। অসুস্থ অবস্থায় লিখছি মনে যা আসছে তাই লিখছি। তবুও জানাবেন কেমন হলো। আর ভুল হলে ক্ষমা করবেন।

সকলকে আমাদের নায়ক-নায়িকার বিয়ের দাওয়াত রইলো সবাই আসবেন কিন্তুু)

 

 

 

 

[ ১৭ ]

রাত ৯টার দিকে সবাই রাতের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে ছাদে চলে গেলাম ভাই-বোনরা,,,,,( আগের পর্বের শেষ কিছু অংশ)। ছাদে মাদুর বিছিয়ে সবাই বসে পড়লাম। কিছুক্ষণপর মামুনি সকলের জন্যে কফি দিয়ে গেলো।

আহ কি সুন্দর সেই মুহুর্ত। চারদিকে হালকা বাতাস,আকাশ কিছুটা মেঘলা।সেই মেঘলা আকাশে মেঘেদের সাথে লুকোচুরি খেলছে চাঁদ মামা। সব মিলিয়ে সবার মনই খুব সুন্দর মেজাজে আছে।

রুপন্তিঃ আচ্ছা আর কতক্ষণ সবাই শুধু গল্পই করবো? চলো না আমরা কিছু খেলি।

সুপ্তিঃ কি খেলা যায়? সবাই ভাবো

দীপ্তিঃ চোর, পুলিশ?

তীব্রঃ দূর এটা কোনো খেলা নাকি? চুপ থাক তুই

দীপ্তিঃ এই তুই আমায় চুপ করতে বললি কেন? আয়াতাপু ও এমন করলে কিন্তুু খেলবো না আমি

তীব্রঃ তুই না খেললে কার কি? যা ভাগ..

আয়াতঃ তীব্র চুপ করবি তুই?

এতক্ষণ ওদের ভাই বোনের এমন কান্ড দেখে সবাই হেঁসে কুটি কুটি। এই কাহিনী নতুন না এই দুইজনের সারাটাদিন এমন চলে।

রুপসাঃ হইছে হইছে। আমি একটা নাম বলি?

আয়াতঃহুম বল

রুপসাঃ Truth or Dare খেলি?খুব মজা হবে।

রুপন্তিঃ হুমম এটা খেলা যায়।

পিয়াসঃ হুম খেলা যায়।এতে সকলের গোপন তথ্য ফাঁস হবে। কার কয়টা বয়ফ্রেন্ড আছে জানা যাবে।

রুপন্তিঃ ভাইয়া সবাইকে তোমার মতো ভাবো কেনো? বুঝছি তুমি অনেকগুলো প্রেম করো।

আয়াতঃ পিয়াস সত্যি?

আয়ানঃ কিগো শা/লাবাবু পেটে পেটে এতো?

পিয়াসঃ আরে আরে আয়াতাপু,ভাইয়া সত্যি আমি এগুলো কিছু করিনা।

পূর্ণাঃ আয়াতাপু ও আমাদের এই বোনরা বাদে অন্য মেয়েদের দেখলেই লজ্জা পায় আর ও করবে প্রেম? হাহাহা।

সবাই একসাথে হেঁসে উঠলাম।

আয়রাঃ আচ্ছা তাহলে আমরা খেলা শুরি করি? এই দেখো তোমাদের কথা বলার সময়ই আমি গিয়ে বোতল নিয়ে আসছি।

আয়াতঃ বাহ এই না হলে আমার ননদিনী

রাফিঃ বোতল কে আগে ঘুরাবে?

পিয়াসঃ যাদের বিয়ে তারা। ভাইয়া আপনি আগে।

আয়ানঃ No No ladies first. So….

আয়াতঃ আরে আমি না।

রুপসাঃ আপু শুরু করো।

আয়াতঃ( বোতলটা নিয়ে ঘুড়ালাম)

রুপসাঃ আমিই…..

আয়াতঃ নে ভালো হইছে আমায় দিতে বললি না? তোরে প্রশ্ন করবে রাফি।

রাফিঃ দূর ওরে কি জিগামু? সবইতো জানি।

আয়াতঃ আগে বল ও কি নেবে

রাফিঃ ও হ্যাঁ বল কি নিবি ট্রুথ না ডেয়ার?

রুপসাঃ ডেয়ার

রাফিঃ ওকে। বাইরে গিয়ে রাস্তার যেকোনো ছেলেকে বলবি How sweet…..

রুপসাঃ যাহ পাগল নাকি এটা বলা যাবে?

রাফিঃ এটাই করতে হবে।

পিয়াসঃ এটা খেলার নিয়ম যা বাইরে যা। আর যে ছেলেকে সামনে পাবি বলবি।

রুপসাঃ Ok fine.

এরপর রুপসা নিচে চলে গেলো। ওর পেছনে পেছনে আমরাও। রাস্তায় বের হতেই সামনে একটা পাগলকে দেখতে পেলো।পিয়াস বললো ওরে বল। রুপসা ১মে রাজি না হলেও পরে একটু কাছে গিয়ে বললো How Sweet. পাগললোকটা কি বুঝলো আমরা বুঝলামনা। সে রুপসাসহ আমাদের সবাইকে তার হাতে যে লাঠি ছিলো তা দিয়ে মা/রা/র জন্যে তাড়া করলো। আমরা দৌড়ে বাড়ীর ভেতরে আসলাম। এসে আবার ছাদে বসলাম।সে কি হাসি সকলের।

এরপর একে একে রুপন্তি,পিয়াস,রিহান,রাফি সবার সুযোগ এলো এবং সবারটাই খুব মজার মজার বিষয় ছিলো। এরপর এলো আয়ান আর সুপ্তির মানে আয়ানের কোনো এক বোন সুপ্তি,দীপ্তি আর তীব্র।

সুপ্তিঃ ভাইয়া কি নিবা?

আয়ানঃ সবাই যখন ডেয়ার নিলো আমিও নেই।

সুপ্তিঃ আচ্ছা। তুমি ভাবিকে love you না বলে যেকোনো ভাবে নিজের ভালোবাসার কথাগুলো বলো।

আয়ানঃ এই এটা কি না আমি কিছু বলবোনা।

সুপ্তিঃ বলতে হবেই।ডেয়ার নিছো তো

আয়ানঃ তাই সকলের সামনে ভালোবাসার কথা বলবো?

রাফিঃ ভাইয়া সমস্যা নাই বলেন।

এরপর সুপ্তি আমাকে আর আয়ানকে মুখোমুখি দাড় করালো,,,,,,,

আয়ানঃ

ওগো মায়াবতী

আমি চাই তুমি আমার হও

একবার হলেও আমায় ভালোবাসি বলো

পাখিরা, ফুলেরা,আকাশ, বাতাস সব কিছু

আমায় তোমার ভালোবাসা অনুভব করায়!!

লোকে আমাদের একে অপরের অস্তিত্ব

বলে জানুক।

দূর থেকে সবাই বলবে,ওই দেখো ভালোবাসার দুই পাখি একসাথে!

বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি বিলাস করবো আমরা

কোনো বাঁধা থাকবে না, শহর জুড়ে

সবাই বলবে, ওই দেখো ভালোবাসার

দুই পাখি ভিজছে একসাথে!

জানো মায়াবতী,,,

যখন তুমি ছিলে না তখন আমার

রাত্রি যেতো, দিন যেতো তোমার বিরহে ।।

অন্ধকারের মাঝে একা হয়ে যাই আমি,

বাহিরের কোলাহল, ভেতরে নিস্তব্ধ আমি ।।

মায়াবতী শুধুই তোমার আগমনে

ঘুচিয়ে গেছে কান্না, ফিরে পেয়েছি হাসি

এসো এসো সন্ধ্যা তারা ফুলের মতো

এসো তুমি, একবার হলেও আমার বাগানের

ফুল হয়ে ফুটো আমি অপেক্ষায় রবো তোমায় ছুয়ে দেওয়ার !!

এতোক্ষণ আমি আয়ানের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। কারণ আমাদের মধ্যে যতই ভালোবাসা থাকুক না কেনো, কাল বাদে পরশু আমাদের বিয়ে তবুও সে আজ পর্যন্ত আমায় ভালোবাসার কথা বলেনি। অবশ্য আমি নিজেও না।

হঠাৎ সকলের হৈ- এর শব্দে ভাবনা থেকে ফিরলাম।তারপর এসে বসলাম। সবাই মিটিমিটি হাসছে আর আয়ানের কবিতার প্রশংসা করছে।

এরপরের বারে ছিলো তীব্র আর আমার। তবে তীব্র ভেবে পায় না কি ডেয়ার দেবে। অবশেষে আয়রা বললো,”আচ্ছা যেহেতু আমার ভাই কখনো তার হবু বউয়ের মুখে ভালোবাসার কথা শোনেনি তো আমাদের কি উচিত না তাকে এই সুযোগটা করে দেয়া?” সবাই সহমত হলো এবং আবার দাড় করানো হলো।

আমি ভাবছি কিভাবে প্রপোজ করি। হঠাৎ দেখলাম আমাদের ছাদে গোলাপ গাছে সুন্দর গোলাপ ফুটে আমি সেখানে গিয়ে গোলাপটা এনে হাটু দিয়ে বসে আয়ানকে বললাম,I Love you Mr Ayan. Will you marry me?”

আয়ানঃ Yes কাল আমাদের হলুদ সন্ধ্যা।(সে সবার সামনে এভাবে বলবো ভাবেনি তাই কিছুটা থতমত খেয়ে ব্যাপারটা সামাল দিলো)

তারপর দীপ্তি,আয়রা,সুপ্তি, তীব্র সকলেরই সুযোগ এলো। এভাবে রাত প্রায় ৩ টার মতো আমরা ছিলাম।তারপর সবাই বললো অনেক খেলা হয়েছে এবার ঘুম প্রযোজন অবশেষে সবাই ঘুমোতে গেলাম।

পরেরদিন সকালে সবাই দেরিতে উঠলাম। কেউ ৯টায় কেউ কেউ ১০টায়। আমি ঠিক ১২ টায় উঠলাম।উঠে মামুনি কিছু না বললেও আম্মুর সে কি বকা। তারপর তাড়াতাড়ি খেয়ে গোসল করে মেহেদী দিতে যে আপু আসছিলো উনি আমায় মেহেদী দিয়ে দিলো। আপুটার সাথে আরো ২ জন আসছিলো তারা বাকি বোনদের সহ আয়ানকেও দিয়ে দিলো। আয়ান ১মে নিতে না চাইলেও আমি জোর করায় নিয়েছে।। তারপর দুুপুর ৩ টায় আমিসহ আমার বোন,ননদরা চলে গেলাম পার্লারে সেখান থেকে সন্ধ্যার পরপর বাসায় চলে এলাম। যেহেতু আয়ানদের বাড়ী রাজবাড়ীর মতোই সুন্দর বড় তাই এখানেই সব আয়োজন করা হয়েছে।

আমাকে টেজে বসানো হলো। আমি অপেক্ষা করছি কখন আয়ান আসবে। অবশেষে সাহেব এলো।আমিতো দেখে পুরো হা,,,, এমনিতে সে দুধ ফর্সা তারপর আবার আমার শাড়ীর সাথে মিল করে হালকা সবুজ, হলুদ মিশিয়ে কারুকাজ করা একটা পান্জাবি আর জিন্স। এই লোকের জিন্স না পড়লে হয়ইনা। চুলগুলো স্পাইক করা। আর চোখে সানগ্লাস নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হিরোর এন্টি হলো।

সে এসে সোজা টেজে আমার পাশে বসলো। তবে আমি পাগলের মতো সে তারদিকেই তাকিয়ে ছিলাম। অবশেষে তার হাতের তুরিতে আমার ভাবণা ভাঙলো।

তারপর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। দাদুমা সবার বড় তাই সে শুরু করলো তারপর একে একে সবাই এসে হলুদ দিয়ে গেলো। এরপর আমার ভাই বোনরা নাচের আয়োজন করেছিলো যা আমরা জানতামনা। সবাই কি সুন্দর নাচলো। আয়রা আর সুপ্তি মিলে ডুয়েট করেছে। এই মেয়ে কি ফা/জি/ল আমায় একবারও বলেনি। অবশ্য আমি আর আয়ানও সবার জোরাজুরিতে নাচি। যদিও পরিকল্পণা ছিলোনা। তবে আমরা দুজন আগেও ২/১ বার নেচেছিলাম। একবার আব্বু এবং বাবার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে আর আরেকবার আয়ানের বন্ধুর বিয়েতে। যেখানে সে আমায় শুধুমাট পার্টনার হিসেবে নিয়ে যায়। দুইজনেরই নাচের দিকে জোক বেশী ছিলো তাই সমস্যা হয়নি।

অবশেষে আমাদের হলুদ সন্ধ্যা খুব মজা করে কেটে গেলো। সবাই লাফালাফি করায় ক্লান্ত তাই এসেই ঘুমিয়ে পড়ি।

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা গল্পের কমেন্টে শুধু Next Next করেন। এতে আমার মন কিছুটা খারাপ। আরে আপনারা বললেও দিবো না বললেও দিবো তো। তাই কমেন্ট করুন গঠনমূলক।কেমন হয়েছে গল্প তা জানান। Next next করবেননা)

 

 

 

 

[ ১৮ ]

অবশেষে আমাদের হলুদ সন্ধ্যা খুব মজা করে কেটে গেলো। সবাই লাফালাফি করায় ক্লান্ত তাই এসেই ঘুমিয়ে পড়ি। ( আগের পর্বের শেষ কিছু অংশ)

পরেরদিন সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে বাইরে গিয়ে দেখি সবাই যে যে যার যার মতো কাজে ব্যস্ত হয়ে আছে আম্মু আমায় দেখে বললো..

“কিরে এতক্ষণে তোর ওঠার সময় হলো? আজ যে তোর বিয়ে তা কি মনে আছে??”

আয়াতঃ ইসস এমন করছো কেনো কয়টা বাজে?

আম্মুঃ আট’টা বাজে

আয়াতঃ বাহ এতেই এমন করছো? আমিতো ভেবেছি ১২টা বা ১ টা বাজে।

আম্মুঃ দূর হ আমার সামনে থেকে বিয়ের দিন ও ১২টা ১টায় ঘুম থেকে উঠতে চায়?(বিরক্ত হয়ে)

আয়াতঃ আচ্ছা হইছে খাইতে দাও খুদা লাগছে।

আম্মুঃ যা টেবিলে কয়েকজন খাচ্ছে সাথে খেয়ে নে।

আয়াতঃ Ok.(চলে গেলাম খাবার টেবিলের কাছে)

আমি গিয়ে দেখি ওমা.. রুপসা,দীপ্তি,পিয়াস ওরাও খেতে বসেছে। আমি হাসতে হাসতে গিয়ে তাদের পাশে বসে পড়লাম।

আয়াতঃ কি ব্যাপার বাকি সব কোথায়? তোমরা কখন উঠছো?ওরা সবাই খেয়েছে?

রুপসাঃ হ্যাঁ ওরা মাএ খেয়ে চলে গেলো। আমরা মাএই উঠে ফ্রেস হয়ে খেতে আসলাম। ঘুম কি শেষ হয় আম্মুরা এসে বকাবকি করে তুলেছে।

আয়াতঃ আয়রা কোথায় ও খেয়েছে নাকি ঘুম ভাঙেনি?

দীপ্তিঃ ঘুমাচ্ছে।

আয়াতঃ আচ্ছা তোমরা খাও আমি ওকে নিয়ে আসি।(বলেই চলে গেলাম)

আমি গিয়ে দেখি আমার একমাএ ননদিনী মনের সুখে ঘুমোচ্ছে। আমি রুমে ঢুকে আয়রার কাছে গিয়ে বসে মাথায় হাত দিয়ে ডাকতে লাগলাম। ২/১ বার ডাকার পর সে আমায় জড়িয়ে ধরে বললো ভাবি ঘুম… (কি বললো বুঝলামনা) পরে আরো ডাকার পর যখন উঠলো না তখন দিলাম এক চিৎকার,,,

“আয়রা… উঠবি কিনা……”

আয়রা ভয়ে এক লাফে উঠতে উঠতে বললো “ও মাগো কে কে”

এদিকে ওর কান্ড দেখে আমি হাসতে হাসতে শেষ।পরে আয়রা এসে আমার গলায় দিয়ে বলে, “এই মহিলা এভাবে কেউ ডাকে? ভয় পাইছি ”

আয়াতঃ হ্যাঁ আমায় মে/রে ফেলো তোমার ভাইয়া বিয়ের আগেই বিধবা হবে(হাসতে হাসতে)

আয়রাঃ ছিঃ কিসব বলো? আমি নিজের জ্ঞানে কখনোই এমন কাজ করবোনা।

আয়াতঃ ওরে আমার কিউটিপাই(গাল টেনে ধরে)

আয়রাঃ উহ লাগছে..

আয়াতঃ হিহিহি হইছে চলো সবাই খাইতেছে তোমায় না দেখে চলে এলাম। আমার অনেক খুদা লাগছে তাড়াতাড়ী চলরে বইন…

আয়রাঃ ওকে ওয়েট আমি ইউ ফ্রেস হয়ে ইউ আসছি(বলেই দিলো দৌড়)

আমি আর আয়রা চলে গেলাম খাবার খেতে। আমরা গিয়ে দেখলাম বাকিরা সবাই খাবার খেয়ে চলে গেছে। আমি আর আয়রা তাড়াতাড়ী খাবার খেয়ে উঠে পড়লাম। যেহেতু বিয়ের অনুষ্টান রাতে তাই খুব একটা চাপ সকালে ছিলোনা।আমরা মেয়েরা সবাই আড্ডা দিলাম কে কি পড়বে আজ সবাই বললো। আমি আমার বিয়ের কিছু জিনিস ননদ,বোনদের দেখালাম। মূলতো এগুলো করেই সকালটা প্রায় শেষ হলো। এদিকে পুরো বাড়ী আত্নীয়-স্বজনের ভিড়ে ভরে গেছে।এতো বড় আলিশান বাড়ী তবুও সব ঘরেই মানুষের ভিড়। দুপুরের বিকেলের মাঝামাঝি মামুনি আমায় বললো আমি যেনো হালকা কিছু খেয়ে প্রস্তুুত থাকি কারণ পার্লার থেকে লোক আসছে আমায় সাজাতে। তখন খেতে পারবোনা কিছু, সেই রাতে খাবার পাবো।

আমি ১মে না না করলেও পরে আয়রা বললো,” ভাবি খেয়ে নাও পরে খুদা লাগলে বুঝবা কেমন লাগে”। আমিও ভয়ে খেয়ে নিলাম।

অবশেষে পার্লার থেকে লোক আসলো এবং আমায় টানা ৩ ঘন্টা সাজালো।

আমাকে খয়েরী রং-এর ওপর সোনালি কালারের স্টোনের কাজ করা শাড়ী পড়ানো হলো এবং সেম ডোপাট্টা।

তারপর আমায় ঘরেই বসিয়ে রাখা হলো।সবাই এসে এসে দেখে গেলো।

রাত ৮ টায় কাজী সাহেব এসে আমায় কবুল বলালো এবং সাইন করিয়ে নিলো। কবুল বলার সময় হলো আরেক কাহিনী,,,,

কবুল বলার সময় কেনো জেনো খুব কাপছিলাম আমি আর মনের ভেতর আলাদা অনুভূতি কাজ করছিলো। একসময় আমি কেঁদে ফেলি। আয়রাসহ আমার বোনরা,ননদরা এসে সান্তনা দেয়। তবুও কাঁদছিলাম। তারপর আস্তে করে কবুল বলে দেই। কাজী সাহেব শুনেই বলে,”আলহামদুলিল্লাহ ” তারপর সে চলে যায়।

এদিকে আয়রা আমায় জড়িয়ে ধরে বলে, “আজ অবশেষে তুমি আমার পার্মানেন্ট ভাবি। Love you.”

আমি আয়রার কথা শুনে কাঁদতে কাঁদতেও হেঁসে ফেলি।

তারপর সবাই চলে যায় খাবার খেতে। আয়রা আমার সাথে খাবে জোর করলেও আমি ওকে পাঠিয়ে দেই কারণ ও বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকতে পারেনা। আর আমি কখন খাবো তা তো নিজেই জানিনা।

বর্তমানে আমি একা ঘরে বসে আছি। আর ভাবছি ভাগ্যের কি লিখন এই বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো ৩ বছর আগে তা হলো আজ। আজ থেকে আমি আয়ানের বিবাহিতা স্ত্রী ভাবতেই লজ্জা করছে।

হঠাৎ-ই একটা জানালা দিয়ে কিছু একটা আসায় আমার ধ্যান ভাঙে আমি তাড়াতাড়ী উঠে জানালার ওখানে গিয়ে দাঁড়াই। গিয়ে কাউকেই দেখতে পেলামনা। ফিরে আসি বিছানার দিকে তখনই পায়ের সাথে কিছু একটা বাজে। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি পাথর কাগজে মোড়ানো আমি হাতে তুলে নিয়ে দেখি বড় করে লেখা,,,,

“সে যখন আসে কালবৈশাখীর মতো আসে

সে যখন যায় সব তছনছ করে দিয়ে যায়”

কথাগুলো পড়েই আমার বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো। আর তখনি পেছন থেকে আম্মু ডাক দিলো,”আয়াত এই নে খাবার এনেছি তাড়াতাড়ী খেয়ে নে।”

আয়াতঃ নাহ খেতে ইচ্ছে করছে না।( কাগজটা দেখে মন খারাপ হয়ে গেছে)

আম্মুঃ তাই বললে হবে এদিকে এসে বসে পড়।(আমায় টেনে সোফায় বসালো)

তারপর আম্মু আমায় খাবারটুকু খাইয়ে দিলো আর বললো,” জানিস আমার আর তোর বাবার কত বছরের ইচ্ছে আজ পূর্ণ হলো?আমাদের কতো ইচ্ছে ছিল আমাদের এই ছোট্ট মেয়েটাকে আমরা ধুমধাম করে বিয়ে দেবো। কখনো ভাবিইনি তোকে এভাবে দেখবো।ওরা যখন আমাদের বন্দি করে রেখেছিল তখন বারবার বলতাম আমাদের মে/রে ফেলো তবে ওকে ছেড়ে দাও। তোর জন্য ভয় হতো কেমন আছিস না আসিস।”

আয়াতঃ থাক বাদ দাও। খাইয়ে দাও তাড়াতাড়ী( কথা ঘুরিয়ে)

এরপর আম্মু চলে গেলো তার কিছুক্ষণপর মামুনি এবং আয়রা এসে আমায় টেজে নিয়ে বসালো। আয়ানকে যখন টেজে আনা হলো তখন দেখলাম সে একটা খয়েরী রং-এর ওপর কালো স্টোনের ডিজাইন করা শেরওয়ানী পড়েছে। আমি দেখে পুরাই ফিদা। আড়চোখে শুধু দেখছি তাকে। অতঃপর সে আমার পাশে এসে বসলো।আমি এখন মাথা নিচু করে বসে আছি। সে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,

“আড়চোখে দেখার দিকে আছে। আমিতো তোমারই জামাই।By the way তোমায় কিন্তুু খুব সুন্দর লাগছে” একটু থেমে, “I mean আমার পাশে বসে”বলেই হাসতে লাগলো।

আমি খুশী হয়ে আবার ওর এমন কথায় ভড়কে গেলাম।তখনই সবাই এলো ছবি তুলতে।পরিচয় করতে। এসব করতে করতে রাত ২টার মতো বাজলো। আমায় ঘরে রেখে সবাই উধাও। আমি একা ঘরে বসে আছি। হঠাৎ কারো দরজা খোলার আওয়াজে মনের ভেতর উতাল-পাতাল শুরু হয়।

আয়ান দরজা লাগিয়ে আমার মুখোমুখি বসে। ও কিছু বলবে তার আগেই আমি ভয়,অস্থিরতায় উঠে দাড়িয়ে ওকে দাঁড়াতে বলি, সে কথামতো দাড়াঁয় আমি সালাম করতে পায়ে হাত দিতেই সে একলাফে সরে যায়।

“এই তুমি আমার পায়ে হাত দিচ্ছো কেনো?”

আয়াতঃ এটা নিয়ম

আয়ানঃ ওহ আচ্চা( বলেই আমার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে নেয়)

আয়াতঃ এই কি করছো পাগল হলে নাকি?(তাড়াতাড়ী সরে গিয়ে)

আয়াতঃ কেনো বললেতো নিয়ম।তুমি আমায় সালাম করতে পারলে আমি কেনো পারবোনা? দুজনের জন্যই এক নিয়ম হওয়া দরকার। একজন মাথা নত করবে আর একজন করবে না এটা কেমন কথা? শোনো নিজের প্রভু ( ভিন্ন ধর্মের মানুষও আমার গল্প পড়তে পারেন তাই প্রভু বলে সম্মোধন করলাম) বাদে কারো সামনেই মাথা নত হওয়া ঠিক না।

আয়াতঃ আচ্ছা আমার ভুল হইছে মুখেতো সালাম দিতে পারি?

আয়ানঃ অবশ্যই

আয়াতঃ(সালাম দিলো)

আয়ানঃ (সালামের উত্তর নিলো) এবং বললো চলো তাহলে নামাজটা পড়ে নেই।

আয়াতঃ হুম।

দুজনে একসাথে সালাত আদায় করে নিলাম। তারপর আয়ানকে টেবিলে রাখা দুধ খেতে দিলাম।সে একটু খেয়ে আমায় দিলো আমি খেয়ে রেখে দিলাম এবং দুজনে বসে পড়লাম। তারপর দুজনে অনেক কথা বললাম। হঠাৎ আয়ান আমায় জড়িয়ে ধরে বললো,”আয়ু জানো এই দিনটার জন্যে কতোটা অপেক্ষায় ছিলাম? আজ থেকে তুমি শুধু আমার।”বলেই পাগলের মতো আমার গলায় কিস করতে লাগলো। আমিও আর তাকে বাধা দিলামনা।তারপর সে আমায় শুয়ে দিয়ে লাইট ওফ করে…. (কি ব্যাপার হুম… আরো পড়তে চান নাকি? যান টুকুস করে রিয়াক্ট,কমেন্ট করে বাড়ী চলে যান)

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আজকের পর্ব কেমন হলো তা অবশ্যই জানাবেন। আর আয়ান এবং আয়াতের জন্যে দোয়া করবেন যেনো তাদের বিবাহিত জীবন সুখের হয় )

 

 

 

 

[ ১৯ ]

সকালে চোখ বন্ধ অবস্থায় ঘুম ঘুম ভঙিমাতেই অনুভব করলাম কারো স্পর্শ। যে স্পর্শ আমায় আসটে পিসটে জড়িয়ে আছে। চোখ খুলতেই দেখি আয়ান আর আমার মাঝে এক সে.মি. দূরত্ব নেই। কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে ওর হাত সরিয়ে বসি। উঠে হলো আরেক কাহিনী।

আমি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার শরীরে ব্লাউজ আর পেটিকোট ছাড়া কিছুই নেই। আমি তাড়াতাড়ী উঠে দাড়িয়ে নিজের পোশাক নিয়ে ওয়াসরুম দৌড়।

_________________________

ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখি আয়ান এখনো ঘুমায়। আমি সেই সুযোগে শাড়ীটা পড়ে নিলাম। যতই হোক ওয়াসরুমে তো আর শাড়ী পড়া যায়না তাইনা?

যেহেতু ছোট থেকেই আমি প্রায় সব কাজেই পটু তাই শাড়ী পড়তে কোনো অসুবিধা হলো না।

আমি শাড়ী পড়া শেষে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে নিজের কোমড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়া ভেজা চুলগুলো যত্ন করে টাওয়াল দিয়ে মুচ্ছিলাম। একটুপর কারো হাতের স্পর্শ আমার কোমড়ে পড়লো। আমি চমকে গিয়ে চোখ খুলে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখি আয়ান আমায় জড়িয়ে ধরে আছে আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে।

আয়াতঃ বাহ ঘুম ভাঙলো তাহলে? আমিতো ভাবলাম আজ সারাদিন ঘুম থেকেই উঠবে না।

আয়ানঃ হু…

আয়াতঃ কি হু যাও ফ্রেস হয়ে নাও নিচে যেতে হবে।

আয়ানঃ আমিতো উঠছি সেই কখন… তোমার শাড়ী পড়া দেখলাম এতক্ষণ ( আমায় ছেড়ে দিয়ে নিজের পোশাক হাতে ওয়াসরুমের দরজা খুলে কথাটা বলেই হাসতে হাসতে দ্রুত ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো।)

আয়াতঃ আয়ান……( কথাটা শুনেই আমি চমকে উঠে জোর গলায় বলি আয়ানের দিকে তাকিয়ে)

_______________________________

এর মধ্যেই আয়রা একবার ডাকতে আসলে আমি তাকে বলে দেই একটুপর আসছি। তারপর আমি আর আয়ান নিচে চলে যাই। আমরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বাম দিকে খাবার টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখি সবাই আমাদের জন্যে বসে আছে। আসলে আমার জন্যে বসে আছে। মামুনির কাছে অনেক আগে শুনেছিলাম এই বাড়ীর নিয়ম বিয়ের পরেরদিন নতুন বউ সবাইকে খাবার পরিবেশন করে।

আমি কোনোমতে তাড়াতাড়ী সেখানে গিয়ে খাবার হাতে নিয়ে সবাইকে খাবার দিতে থাকি। এদিকে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি খেয়াল করে বললাম,,,,

“কি হলো সবাই এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? আমি কি কোনো ভুল করেছি? ওহ লেট হয়েছে আসতে তাই রাগ করেছো?

সবাই একসাথে হা হা শব্দ করে হেঁসে ফেলে। আর আমি অবাক হই। কারণ হাসির মতো কিছু কাজতো আমি করিনি….।

মামুনিঃ তুই পাগলের মতো এসে হন্তদন্ত হয়ে খাবার পরিবেশন করছিস কেনো? তোকে কে করতে বললো?

আয়াতঃ কেনো তুমিইতো বলেছিলে এটা বাড়ীর নিয়ম। নতুন বউরা বিয়ের পরেরদিন খাবার পরিবেশন করে। তাইতো আমি…

মামুনিঃ আপনি নতুন বউ না মা…. আপনি আমার মেয়ে…। আর আপনারে এতো পাকনামি করতে হবেনা। চুপচাপ এসে বসে পড়ুন। আর কথাটা বলেছিলাম কথায় কথায় এখন এগুলো কেউ মানে নাকি?

আয়াতঃ সমস্যা নাই আমি কাজটা করি।

মামুনিঃ নাহ। সবাই তোদের জন্যে বসে আছে একসাথে খাবার শুরু করবে বলে চলো তাড়াতাড়ী বসে পড়ো নয়তো খুব বকা দিবো ( হাত থেকে খাবারের বাটি নিয়ে আয়াতকে বসিয়ে দিলো)

আমি আর কি বলবো সবার সাথে বসে চুপচাপ খেয়েনিলাম। আজ আমাদের বৌভাত মানে আজ আমাদের বাড়ীতে যেতে হবে তবে বাবা মানে আমার শশুড় রাজি না সে চায় সবাই এখানে থাকুক। তবে আমার মা বাবা রাজি নয় যতই হোক তাদের একমাএ সন্তান আমি। আমায় ঘিরে তাদের অনেক স্বপ্ন। আমায় না জানিয়েই আমাদের বাসা সুন্দর করে সাজানো হয়। আমিতো গিয়ে পুরো অবাক।

এই ১০ দিন বিয়ের নিয়ম-কানুন করতে করতেই চলে গেলো। তারপর এর বাসায় দাওয়াত ওর বাসায় দাওয়াত এগুলো করতে করতে কেটে গেলো।

বিয়ের আমেজ শেষ। মেহমানরাতো চলেই গেছে বিয়ের ২/৩ দিন পর। বর্তমানে বাসায় মামুনি,বাবা,আয়রা,ফুপি,আয়ান এবং আমি আছি।

আমার মা -বাবা বাসায় চলে গেছে। মেয়ের শশুড়বাড়ীতে থাকা কেমন দেখায়। ওদিকে অরিনাপু, তার মা আমাদের গায়ে হলুদে না আসলেও বিয়ে,বৌভাতে এসেছিলো। ওর সাথে প্রায়ই কথা হয়।

_______________________________

সকালে খাবার টেবিলে,,,

বাবাঃ আয়ান অনেকদিনতো হলো প্রায় ১মাস হলো তোমাদের বিয়ের। অফিসের চাপে তো কোথাও ঘুরতে গেলে না। কয়েকদিনের জন্য কোথাও ঘুরে এসো যাও।

মামুনিঃ হ্যাঁ ঠিকইতো। তা তোদের কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে বল তোর বাবা সব ব্যবস্থা করে দেবে।

আয়ানঃ আমি জানিনা আয়াত যেখানে চায় সেখানেই।

আয়াতঃ বাবা কম-বেশীতো সব জায়গায় গিয়েছি শুধু গ্রাম তেমন কাছে থেকে দেখিনি। তোহ আমি গ্রামে যেতে চাই।

বাবাঃ গ্রামে? গ্রাম বলতোতো সেই খাগড়াছড়ি। তবে তা তো আর গ্রাম নেই পাকা রাস্তা বড় বড় দালানকোঠা হয়ে গেছে। এখনতো শহর আর গ্রামের মধ্যে পার্থক্য নেই।

আয়াতঃ তা হোক তবুও যাবো বাবা প্লিজ। আর একা গিয়ে মজা নেই সবাই যাবো।

মামুনিঃ না না সবাই কেনো তোরা দুজনে যাবি আর আয়রা যদি সাথে যায়তো ওকো নিতে পারিস কারণ ও সেই ছোটবেলায় গ্রাম দেখেছে আর দেখেনি। তবে আয়ান বহুবার গিয়েছেতো।

আয়াতঃ হুম আয়রাতো অবশ্যই যাবো তবে এভাবে যাবোনা। সবাই যাই প্লিজ।

বাবাঃ আচ্ছা আচ্ছা সবাই যাবে। তোর বাবা-মাকেও বলেদিস তাহলে।

আয়াতঃ মা বাবাও যাবে? না না থাক।আমি জানি তারা রাজি হবে না বলবে আমিই তোমাদের বলছি।

মামুনিঃ আরে এভাবে হয় নাকি আর বললে তাই কি? আমি কি ওই রকম শাশুড়ী নাকি? তারাও যাক দেখে আসবে গ্রাম।

আয়রাঃ হ্যাঁ মজা হবে অনেক। ভাবি তোমার ভাই-বোনদেরও বলো ওরা অনেক রসিক। অনেক হৈচৈ হবে।

কথাটা শুনে আমি বাবা আর মামুনির দিকে তাকাই।তারা হেসে বলে, “ভয় নেই বলতে পারিস। আর আমরাই বলতাম। ছেলে-মেয়েদের হইহুল্লুর দেখতেও ভালো লাগে।

খাবার টেবিলেই ঠিক করা হলো কবে যাওয়া হচ্ছে।আমরা এতো বেশী খুশী ছিলাম যে দেরী করতে নারাজ। অতঃপর খাওয়া শেষ করে সবাইকে জানানো হলো আমরা কাল সন্ধ্যায় গ্রামের উদ্দেশ্য বের হবো আগামী ৭ দিনের জন্যে।

আয়ান এবং বাবা অফিসে চলে গেলো। মামুনি পাশের বাসার আন্টির সাথে কথা বলছে। এদিকে আমি এবং আয়রা ঠিক করছি কে কি কি পড়বো এই ৭ দিন। ১মে আয়রার ঘরে গিয়ে ওকে সিলেক্ট করে দিলাম ও কি কি পড়বে তারপর আমার ঘরে এসে দুজনে গল্প করছি আর জামা সিলেক্ট করছি। ( আমাদের গল্পের ভিতর না যোগ দেয়াই ভালো এতে আপনারা বোরিং হবেন)

________________________________

রাতে আয়ান অফিস থেকে রুমে আসলো। আমি সোফায় বসে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছিলাম। ওকে দেখে উঠে হাতে রাখা ব্যাগ নিয়ে জায়গামতো রেখে দেই। তারপর টাওয়াল এগিয়ে দিয়ে বলি যাও ফ্রেস হয়ে এসো। সে বাধ্য ছেলের মতো ফ্রেশ হয়ে চলে আসে।

আয়াতঃ এখন কি হালকা কিছু খাবে নাকি একটুপর একেবারে রাতের খাবার খাবে?

আয়ানঃ নাহ এখন আর কিছু খাবোনা।

আয়াতঃ আচ্ছা তাহলে তোমার কি কি প্যাকিং করতে হবে বলো আমি এখুনি করে দেই।

আয়ানঃ এখুনি? যাবোতো কাল সন্ধ্যায়। বহু সময় আছে।

আয়াতঃ তাতে কি? সবকিছু একসাথে প্যাকিং করতে নিলে অনেক কিছুই মনে থাকেনা। তোহ প্যাকিং-এর পর টুকটাক যা মনে থাকবেনা ওগুলো নেবো। কালকের আশা করবো।তুমি দেখিয়ে দাও আমি প্যকিং করছি(বলেই আলমারি খুললো)

আয়ানও আর কথা না বাড়িয়ে আমার কাছে এসে দেখিয়ে দিলো আমি প্যাকিং করছিলাম সবকিছু।তখনি আয়রা এসে বললো, “ভাইয়া, ভাবি এসো মামুনি খেতে ডাকে”

আয়াতঃ হ্যাঁ যাও তুমি বসো এগুলো গুছিয়ে আসছি।

কয়েকমিনিট পর আমরা নিচে চলে গেলাম। এরপর রাতের খাবার শেষ করে এসে শুয়ে পড়লাম। যেহেতু কাল লং জার্নি তাই আজ একটু ভালমতো ঘুমানো দরকার।

______________________________________

আজ আমি সকালে তাড়াতাড়ীই ঘুম থেকে উঠলাম।উঠে,,,,,

(চলবে)

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আজকের পর্ব কেমন হলো তা জানাবেন। Next Next করবেননা দয়া করে। আপনাদের জন্যে একটা ফেসবুক গ্রুপ খুলতে চাই যেখানে শুধুমাএ আমার গল্প বিষয়ক আলোচনা-সমালোচনা করা হবে। এই বিষয়ে সকলের মতামত আশা করছি)

 

 

 

 

[ ২০ ]

আজ আমি সকালে তাড়াতাড়ীই ঘুম থেকে উঠলাম।উঠে ফ্রেস হয়ে সোজা চলে গেলাম রান্নাঘরে। সকলের জন্যে কফিসহ সকালের নাস্তা বানিয়ে ফেললাম। আমি জানি মামুনি এগুলো এসে দেখলে আমায় বকা দেবে,তবুও মাঝে মাঝেতো ইচ্ছে হয় রান্না করে সকলকে খাওয়াতে।

সবার আগে মামুনি প্রতিদিন নিচে নামে কারণ তিনিই নিজের হাতে সকালের নাস্তা বানান। আজও সে নিচে আসে এবং এসে দেখে আমি নাস্তা বানাচ্ছি। মামুনি এক দফায় আমায় বকে চলে গেলেন।

আয়ান,বাবা,আয়রাকে উঠিয়ে মামুনি নিচে নিয়ে আসে নাস্তা করার জন্য। মূলত এমন কাজ করে না সে। তবে আজ আমি সব করেছি বলে সে সবাইকে আগে আগে ডেকে তুলেছে। জেনো সবাই গরম গরম সবকিছু খেতে পারে। সবাই নিচে এসে দেখে খাবার টেবিলে সব সুন্দর করে পরিবেশন করা আছে। অতঃপর সবাই বসে নাস্তা খাওয়া শুরু করলো এবং আমার রান্নার প্রশংসা করলো।

আজকে আয়ান, বাবা কেউই অফিসে যায়নি। আয়ান যায়নি সারা রাস্তা ড্রাইভ করবে এজন্যে দিনের বেলা ঘুমোবে। আর অন্যদিকে বাবা যায়নি কারণ মামুনি যেতে মানা করেছে।

সকালের খাবার শেষ করেই মামুনি দুপুরের রান্না শুরু করে দেয়। কারণ রাতে সবাই গাড়ীতে খাবে এজন্যেও কিছু খাবার তৈরি করবে তাই আগে দুপুরের রান্নাটা শেষ করে নেয়। আমি এবং আয়রা মামুনিকে তার সব রান্নায় সাহায্য করলাম কারণ তার একার পক্ষে এতজনের এতগুলো রান্না তৈরি করা সম্ভব নয়।

অবশেষে সন্ধ্যার দিকে আমরা বাড়ী সবাই রেডী হয়ে নিলাম। যেহেতু রাতে কেউ দেখবেনা তেমন গাড়ীতেই থাকবো তাই নরমল আরামদায়ক কামিজ পড়লাম।

সকলের আসতে আসতে ৮টার মতো বেজে গেলো। মানে আমরা লেট করে ফেলছি। সবাই চলে আসার পর লাইন ধরে একে একে গাড়ীতে উঠলাম। যেহেতু আমাদেরই অনেকগুলো গাড়ী আছে তাই আর ভাড়া করতে হয়নি।

একটা বড় মাইক্রোতো আমরা সব ছেলে-মেয়েরা এবং অন্য একটা ছোট গাড়ীতে মামুনি,বাবা,আম্মু, আব্বু। ফুপি নাকি অসুস্থ তাই আসেনি বাসায় সে আর কাজের মেয়ে আছে।

আমরা গাড়ীতে সবাই অনেক হৈচৈ করলাম, অনেকে তাদের স্কুল, কলেজ লাইফের প্রেমের কথাও বললো।আমায় আয়রা যখন বললো, “ভাবি তোমার কোনো প্রেম ছিলোনা বিয়ের আগে?” তখন আয়ান হেঁসে বলে,”ও প্রেম করবে কি, কেউ ওকে প্রপোজ করলেই ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে আসে “(বলেই শব্দ করে হেঁসে দেয়)

আয়ানের কথা শুনে আমি কিছুটা লজ্জা পাই। বাকি সবাই কথাটা শুনেই কিছু না বুঝেই হাসতে থাকে পরে আয়ানকে প্রশ্ন করে এমন কেনো বললো কি হয়েছে?

আয়াতঃ নাহ কিছুনা। এই তুমি চুপচাপ গাড়ী চালাওনা এতো কথা বলো কেনো?

আয়ানঃ বাহ আমি কি করলাম? ওরা তোমায় প্রশ্ন করলো তাই আমি উত্তর দিয়ে দিলাম।

আয়াতঃহ্যাঁ খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন আপনি।

আয়রাঃ ভাবি বলোনা কি হয়েছিলো?

আয়াতঃ আরে কিছু না। কলেজে ভর্তি হওয়ার ২য় দিন যে গিয়েছিলাম সেদিন আমাদের ইয়ারেরই একজন আমায় প্রপোজ করে। আমি এমন ঘটনায় সেদিনের আগে আর কোনোদিন পরি নাই। তাই কিছুটা ভয় পেয়ে যাই আর বাড়ীতে কাঁদতে কাঁদতে চলে আসি। আসলে ওটাকে কান্না বলে কিনা জানিনা ভয়ে এমনি চোখ দিয়ে পানি চলে আসে মুখ ঘেমে যায় তাই।

আয়রাঃ ভাইয়া জানলো কিভাবে তাহলে? আর ও জানলে আমি জানলামনা কেনো?

আয়াতঃআমি বাসায় এসে দেখি তোমরা সবাই এসেছিলে। মূলত সেদিন দাওয়াত ছিলো তোমাদের। আমার ওমন ফেস দেখে সবাই জিগ্যেস করলে আমি বানিয়ে মিথ্যা বলে দিয়েছিলাম। তবে তোমার ভাইয়া বুঝেছিলো আমি মিথ্যা বলছি।

পিয়াসঃ তারপর….

আয়াতঃ তারপর আর কি যা হওয়ার তাই…..

পূর্ণাঃ কি হলো….

আয়াতঃ সেই ঘটনার কয়েকদিন আর ছেলেটা বিরক্ত করেনি তবে একদিন আমি বান্ধবিদের সাথে ফুসকা খাচ্ছিলাম আর এসে ছেলেটা আমার প্লেট থেকে নিয়ে ফুসকা খেলো।আমি যখন বললাম, “এগুলো কি ধরণের অসভ্যতামী?”তখন সে বললো,”কি বলো সুইটহার্ট? এটা অসভ্যতামী হবে কেনো? এটা তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা। জানোনা ১প্লেটে খেলে ভালোবাসা বাড়ে। আর তুমিতো এমনিতেই আনরোমান্টিক।” আমি যেই কথাটা বললাম তখনি সবাই শব্দ করে হেঁসে ফেললো।

আয়ানঃ আসলেই আনরোমান্টিক।

আয়াতঃ হু বলছেতো…( রাগি গলায়)

আয়রাঃ তারপর কি হলো?

আয়াতঃ আমি আর বলতে পারবোনা। যাও তোমরা আমায় নিয়া মজা করতেছো শুধু।

আয়ানঃ এই মহিলার সাহস না থাকতে পারে ভিতুর ডিম হতে পারে তবে কথায় কথায় রাগটা ঠিকই দেখতে পারে।

আয়াতঃ হুম ভালো। আমি রাগি তো আমায় বিয়ে করলা কেনো?

আয়ানঃ আমায়তো জোর করে বিয়ে দিলো আমি তো বিয়ে করবোইনা….

আয়াতঃ আমার মুখ খুলিও না চুপ থাকো। গাড়ী চালাও

আয়ানঃ হু…( শ/য়/তানি হাসি দিয়ে)

আয়রাঃ এই ভাবি তোমাদের ঝগড়া বন্ধ করে বলোনা তারপর।

আয়াতঃ তারপর আমি দোকানদার মামাকে টাকা দিয়ে আসতে নিছি আর ওই ছেলেটা আমায় পেছন থেকে হাত ধরছে। আর বলে,”উত্তরতো পেলামনা।” আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই তাকিয়ে আছে।আমি এখন কি করবো না বুঝে হাতটা কোনোমতে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়তে দৌড়তে বাসায় চলে আসি। বাসায় তখন শুধু আম্মু ছিলো আম্মু আমায় বললো কি হয়েছ আমি কিছু না বলে সোজা আমার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সোজা বিছানায় শুয়ে কান্না করতে থাকি। আম্মু অনেকবার ঢাকলেও আমি সাড়া দেইনি। তারপর রাতে আব্বু যখন ডাকতে আসে তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার কথার ফাকে আয়ান বললো,

আয়ানঃ এতো কস্টেও মানুষের ঘুম আসে কিভাবে?

আয়াতঃ ওমনেই। গাড়ি চালাও। তারপর আমি চলে যাই খাবার খেতে। আমি ১মে খেতে না চাইলেও আব্বুর ধমকে বসে যাই। খাওয়ার সময় অনেকবার জিগ্যেস করলেও আমি কিছু বলিনা। শুধু বলি কিছুনা ভয় পাইছি।

পরেরদিন কলেজও যাইনি সারাদিন নিজের রুমেই ছিলাম। আমার এইসব কাহিনী দেখে নাকি আম্মু তোমার ভাইয়াকে কল দিয়ে বলছে যে,” আয়ান আয়াতের কি যেনো হয়েছে বুঝতে পারছিনা। কাল কলেজ থেকে কান্না করতে করতে আসলো আবার আজ কলেজে যায়নি।সারাদিন চুপচাপ ছিলো। তুমি একটু ওর সাথে কথা বলে দেখোতো কলেজে কোনো সমস্য হইছে কিনা? হয়তো কোনো স্যরের কাছে পড়ার জন্যে বকুনি খাইছে তাই এমন করছ?”

আয়ানঃ আচ্ছা আমি দেখছি।

আয়াতঃ আমি সন্ধ্যায় রুমে বসে ভাবছিলাম কিভাবে কাল কলেজ কামাই দেয়া যায়। তখুনি তোমার ভাইয়া এসে এমন ভঙিমায় বললো যে, ওই কি হইছে কলেজে যাওনা কেনো? ভালোইতো পড়াচোর হইছো.”শুনেই মেজাজ খারাপ হয়া গেছিলো

আমি শান্ত গলায় তোমার ভাইয়াকে বললাম, আমি কি কিছু বলছি তোমায় যে আমার কিছু হইছে? আমার ভালো লাগে না তাই যাইনা।

তখনি বলে উঠলো,”আমায় কি বোকা মনে হয়? কলেজে কি হইছে তাইলো?” কলেজের কথা শুনেই ছেলেটার কথা মনে পরে গেলো আর ধুক করে উঠলো মনের মধ্যে। আমি থতমত খেয়ে বললাম,ক,,কই কিছুইনা। এবার তোমার ভাইয়াতো সেই রেগে যায় আমায় মা/র/তে আসবে এমন অবস্থা নিয়ে বললো,” আমারে বোকা মনে হয়? কিছুনা তো কাল কান্না করে বাড়ী ফিরছো কেন?

আমি ভয়ে সব বলে দেই। বলি, ওমনে সবাই তাকায়া ছিলো আমার অপমানবোধ হইছে। আমি আর কলেজ যাবোনা সবাই আমায় বাজে মেয়ে বলবে।

আয়ানঃ আরে তোমায় কেন বাজে মেয়ে বলবো?(এক হাত কোমড়ে আর অন্যহাত দিয়ে কপাল থা/বড়াইতে বললো)। আমি বললাম ওইযে সবার সামনে হাত ধরছে তাই। তোমার ভাইয়া আমায় জোরে ধমক দিয়ে ধুর পাগল,ছাগল বলে গেলো। আমি ও ভয়ে চুপ ছিলাম।

পরেরদিন সকালে কলেজ না যেতে চাইলেও আম্মু জোর করে যেতে তাই বাধ্য হয়ে যেতে হয়। বাসার বাইরে আয়ানকে দেখে অবাক হই বললাম এখানে কি হুম? ও বললো আমি কলেজে যাবো তোমার সাথে আর আমি তোমার থেকে দূরে থাকবো ও যদি আজ কিছু করতে আসে তো ঝামেলা করে ওরে খুব মা/র/বো। তয় কিছু না করলে করার নাই কিছু কারণ হঠাৎ করে গিয়ে মা/র/লে উল্টা আমিই ফেঁ/সে যাবো।আমি না করায় আবার ধমক দিয়ে বললো,” চুপ থাকো এই বিষয়টা আগে বললে এতোদূর আসতো না। জানো তোমার মা-বাবা তোমায় এমন দেখে কত ভয় পাইছে?

আমি ছোট করে বলি,”নাহ”। শুনে বলে, “তা জানবা কেনো শুধু পারো ধানিলঙ্কার মতো তেজ দেখাতে।

আয়রাঃ হাহাহা তারপর

আয়াতঃ তারপর আর কি ছেলেটার সেদিন কপাল খারাপ ছিলো তাই এসে আমার পথ আটকায় আর বলে উত্তর পাইনি আজ উত্তর না নিয়ে যাবোনা। তখন আমার পেছন থেকে তোমার ভাইয়া বলে উত্তর আমি দিচ্ছি।বলে এগিয়ে আসে। আর ওই ছেলেটা বলে আরে এটা আমার শা/লাবাবু নাকি আসো আসো কোলাকুলি করি যেই এগোবে তখনি দিলো এক ঘুষি।

আয়রাঃ কে?

আয়াতঃ আরে তোমার ভাই। তারপর ওর বন্ধুরা কোথা থেকে যেনো চলে এলো সবাই মা/রা/মা/রি করলো। আমিতো দেখে ভয় কান্না করছি। তার এক পর্যায় স্যার এসে থামালো। ছেলেটাকে ইভটিজিং এর জন্য কলেজ থেকে বের করে দেয়া হলো।

তারপর আমরা বাসায় চলে আসি।

আয়রাঃ হায় হায় এতকিছু হইছে আমি জানিনা?

আয়াতঃ তখনতো তুমি ছোট ছিলে। আমিইতো মাএ কলেজে।

আরো অনেক কথা আমরা বললাম। আবার গান,বাজনাও করলাম। অবশেষে রাত ৩ টায় আমরা খাগড়াছড়ি পৌছে গেলাম। সবাই আমাদের জন্য বসেছিলো।আমরা যাওয়ার পর সকলের সাথে দুই একটা কথা বলে ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। গাড়ীতে মামুনির বানানো খাবার খেয়েছি বলে আর খেলামনা অনেকেই খেলোনা আবার অনেকে খেলো।

পরেরদিন সকালে,,,,

পাখির কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে ফ্রেস হয়ে বাইরে গেলাম। রাতে তেমন একটা কিছু দেখতে পাইনি তবে এখন দেখছি চারপাশটা খুব সুন্দর।ঘরের বাইরে বড় একটা উঠান আছে বাম পাশে বড় পুকুর সেখানে বসার ব্যবস্থাও আছে। চারদিকে শুধু পাখির কিচিমিচি ডাক আর সবুজ গাছপালা যা আমাদের যান্ত্রিক শহরে এগুলোর কিছুই নেই। খুব শুনশান জায়গা একটু জোরে কথা বললেই মাইকের কথার মতো মনে হয়। আমি হাটতে হাটতে এগিয়ে গিয়ে দেখি সবাই রান্নাঘরের চারপাশে মানে উঠোনে বসেই খাবার খাচ্ছে আর কাকি মাটির চুলায় গরম ভুনা খিচুড়ি সাথে গরুর গোস্ত চুলায় থাকা অবস্থাতেই যে যে যাচ্ছে তাদের প্লেটে করে দিচ্ছে। এতে ঠান্ডা হবেনা। আমি দেখলাম সবাই উঠে গেছে শুধু আমিই দেরী করে ফেলেছি। আমি গিয়ে আয়ানের চেয়ারের পাশে গিয়ে দাড়ালাম।তখনি ও খেতে খেতে মাথা ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,”ও উঠেছো? এই দেখো কাকি কি মজা করে মাটির চুলায় খিচুড়ী রান্না করছে আমারতো মনে হচ্ছে পুরো পাতিল ধরে নিয়ে বসে পড়ি খেতে। যাও তুমি নিয়ে খাও।”

আমি বললাম,”হুম খাও খাচ্ছি। ” আমি গিয়ে প্লেট নিতে যাবো তখনি কাকি বললো বউমা এইযে নাও। আমি তোমায় দেখেই খাবার প্লেটে দেয়া শুরু করেছি নাও খাও”। আমি হাসিমুখে প্লেটটা নিয়ে বললাম,”আপনি খেয়েছেন? ” সে বললো,”হ্যাঁ এইতো খাচ্ছি আর যে যে আসছে তাকে দিচ্ছি।” আমি হাসিমুখে ওহ উত্তর দিয়ে আয়ানের কাছোকাছি একটা চেয়ার নিয়ে বসে খাওয়া শুরু করলাম।

(চলবে)

(কিছু কারণে গল্প দিতে দেরি হয়ে গেলো। কেমন হলো জানাবেন। আমার গল্প বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে আমার নতুন গ্রুপটাতে জয়েন হতে পারেন।আমায় বা আমার গল্প সম্পর্কে পোস্ট দিতে পারেন)

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..