1. press.sumon@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন

~নৃশংস দেওয়াল — ১ – – – অনু

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ জুন, ২০২২
  • ১৩৮ বার
কক্সবাজারের হিমছড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশের বিশিষ্ট লেখক আলী নেওয়াজ এর বস্তাবন্দি লাশ। থ্রিলার গল্পের অন্যতম পথিকৃৎ এর নিজের জীবনেই ঘটে গেল এই থ্রিল। কে-ই বা খুন করলেন আলী নেওয়াজ কে? কারাই বা আছে এই নির্মম হত্যাকান্ডের পেছনে? কি কারণেই বা খুন হতে হলো এই বিশিষ্ট ব্যাক্তিকে?
টেলিভিশনের হেডলাইনে ভেসে ওঠা এই খবরের দিকে তাকিয়ে থমকে আছে পুরো দেশ। আলী নেওয়াজ এর অকাল প্রয়াত মেনে নিতে পারছেন না কেউ’ই। সোস্যাল মিডিয়া জুড়ে কান্নার রোল পড়েছে, বিশেষ করে টিনেজার মেয়েদের কাছে আইডল ছিলেন আলী নেওয়াজ। দেশের একমাত্র লেখক যার থ্রিলার গল্পের মূখ্য চরিত্রে সবসময় দেখা যেত একজন নারীকে। নারীদের সম্মান, রুখে দাঁড়ানোর গল্প যেন প্রতিটা মেয়ের কাছেই আদর্শের মতো ছিল। সেই লেখককে এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে বিষয়টা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।
ওসি আশরাফ হিমছড়ির পাহাড়টলির নিচে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন আশেপাশে। পাশেই পড়ে আছে আলী নেওয়াজ এর লাশ। বস্তার মুখ খোলা শুধু, এখনও বের করা হয়নি পুরোটা। ঠিক কয়েক গজ দূরে দাঁড়িয়ে আছে কালো রঙের টুরিস্ট জিপ, জিপের সামনে দাঁড়ানো সাত আটজন ছেলেমেয়ে। আশরাফ জিপের কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেন
“আপনারা ঠিক কি দেখেছেন?”
“স্যার আমরা হিমছড়ি পাহাড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। মাঝপথেই এই দ্বীপটা দেখার জন্য গাড়ি থামানো হয়। হঠাৎ বস্তাটা আমাদের চোখে পড়ে। পাথরের নিচে।খুন সম্ভব পাহাড় থেকে এটা গড়াতে গড়াতে নিচে নেমে এসে পাথরটায় আটকে গেছে। প্রথমে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের খুব কৌতুহল হয়। আর সেজন্যই আমরা বস্তার মুখটা খুলি। আর তারপরেই এই দৃশ্য দেখে আপনাদেরকে ফোন করি।”
তাদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে জবাব দেয়।
আশরাফ কর্কশ গলায় বলে ওঠেন
“এভাবে আপনাদের হাত দেওয়াটা ঠিক হয়নি। আচ্ছা আপনারা আসতে পারেন। পরে দরকার হলে ডেকে নেব।”
আশরাফ রোদচশমা খুলে সামনের উঁচু পাহাড়টার দিকে ভালো করে তাকায়। এখান থেকে এমনি এমনি তো লাশ গড়িয়ে আসতে পারে না। কে বা কারা লাশ ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে তা না হলে এইভাবে গড়িয়ে আসার কোনো কারণ নেই। এর মধ্যেই ইন্সপেক্টর রাইদ এসে স্যলুট ঠুকে দাড়ান।
“লাশ পোস্টমর্টেম এ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে?” রাশভারী কন্ঠে আশরাফের প্রশ্ন।
“জ্বী স্যার, লাশ ফরেনসিকে পাঠানো হয়ে গেছে।”
“মিসেস নেওয়াজ আর ওনার ছেলে কতদূর?”
“স্যার ওনারা থানায় এসে গেছেন। আপনি গেলেই কথা বলা যাবে।”
আশরাফ আর কথা বাড়ান না। দ্রুত গাড়ি বের করতে বলেন। গাড়িতে বসে নিজের ফেসবুক একাউন্টে ঢোকেন আশরাফ। হোমপেজ জুড়ে আলী নেওয়াজ এর নিউজ। দেশজুড়ে আন্দোলনের হুমকি! কেসটা অনেক জটিল হবে মনে হচ্ছে।
হিমছড়ি পুলিশ স্টেশনের সামনে এসে গাড়ি দাড়ালো। গাড়ি থেকে নামলেন ওসি আশরাফ। থানাটা খুব ছোট হলেও কেসটা একজন বিশিষ্ট মানুষকে নিয়ে। তাই অন্যসব দিনের মতো পরিবেশ আজ নেই। থানার সামনে বিশাল এক লাইন জমে আছে মিডিয়ার। এই নিউজ সেই নিউজ থেকে লোকজন এসেছে। বড় বড় ক্যামেরা লাইট চারিদিকে ভো ভো করছে যেন হাজার কতক চোখ এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ওসি আশরাফ গাড়ি থেকে নামতেই তাকে ঘিরে ধরলেন সাংবাদিকরা। কে আগে কোন খবরটা বেশি রসকষ দিয়ে নিজেদের চ্যানেলে প্রচার করতে পারে সেই নিয়েই তোড়জোড় চলছে। ওসি আশরাফ ক্যামেরা ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, মুখে কিছু বলবেন তেমন কোনো পরিস্থিতিই নেই। তাকে অনুসরণ করে পেছন থেকে দুই পাশ ফাকা করার চেষ্টা করছেন ইন্সপেক্টর রাইদ । সাংবাদিকদেরকে খুব কষ্টে ভিঙিয়ে থানার মধ্যে প্রবেশ করলেন আশরাফ।
থানাটা বেশ পুরোনো। তার কেবিনে একটা নতুন পারটেক্স এর টেবিল আনা হয়েছে এইতো কছুদিন আগে। টেবিলের ওপর ছড়ানো ছিটানো ফাইল রয়েছে সামনে ত্রিভুজ আকৃতিতে বসানো নেমপ্লেটের ওপর লেখা ওসি আশরাফ মাহমুদ। টেবিলের সামনে দুটি চেয়ারে বসে আছে আলী নেওয়াজ সাহেবের স্ত্রী স্নেহা এবং আলী নেওয়াজ সাহেবের ছোট ছেলে নেহাল নেওয়াজ। কেবিনে ওসি আশরাফ প্রবেশ করতেই দাঁড়িয়ে গেলেন স্নেহা এবং নেহাল। আশরাফ তাদেরকে বসতে বললেন। স্নেহা ম্যাডামকে দেখে বোঝার উপায় নেই সদ্য তিনি স্বামীকে হারিয়েছেন। লোক দেখানোর জন্য হলেও মানুষ একটু কান্নাকাটি করে থাকেন। কিন্তু তার চোখেমুখে সেসবের ছিটেফোটাও নেই। বরং উলটো মনে হচ্ছে তিনি বেশ খুশিই হয়েছেন। নেহাল ও বাবার মৃত্যুতে খুব একটা অখুশি নন। আশরাফের কাছে এই বিষয়টা বেশ অবাক লাগে।
“আপনাদের কাউকে সন্দেহ হয় যে বা যারা উনাকে হত্যা করতে পারে?” আশরাফ স্নেহার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন
“আমার তেমন কাউকে সন্দেহ হয়না। ” সাবলীল ভাবে উত্তর দিলেন স্নেহা।
আশরাফ চোখ ইশারায় নেহালকেও একই প্রশ্ন করলেন। নেহাল ও মাথা নাড়িয়ে না জবাব দিল মায়ের মতো। আশরাফ আবার বললেন
“আপনি তো আলী নেওয়ার সাহেবের দ্বিতীয় স্ত্রী?”
স্নেহা একটু বিব্রত হয়ে বলেন
“জ্বী কিন্তু তাতে এই কেসের সাথে কি সম্পর্ক? “
আশরাফ ব্যাঙ্গ করে বলেন
“না না আমি কি বলেছি যে এই কেসের সাথে এর কোনো সম্পর্ক আছে? আচ্ছা একটা কথা বলুন লাস্ট কখন আলী নেওয়াজ সাহেবের সাথে আপনার দেখা হয়েছে?”
স্নেহা একটু ভেবে উত্তর দেন
“দুইদিন আগে। কক্সবাজারে আসার প্লান আমাদের সবারই ছিল। কিন্তু নেওয়াজ সেদিন বাসায় ফিরে বলে ওর একটা পারসোনাল কাজ আছে। তাই ও দুইদিন আগে যাবে। সেইমতোই আজ আমাদের আসার কথা ছিল।”
আশরাফ মাথায় হাত দিয়ে আবার বলেন
“উনি কোন হোটেল এ ছিলেন সে ব্যাপারে আপনাদের ধারণা আছে?”
“হোটেল রিভার গার্ডেন।”
কিছুটা সময় নিয়ে আশরাফ বলেন
“কিছু মনে করবেন না, আসলে আপনাকে দেখে কিন্তু মনে হচ্ছে না আপনি খুব একটা কষ্ট পেয়েছেন নেওয়াজ সাহেবের মৃত্যুতে। বরং আপনি প্রয়োজনের তুলনায় বেশিই স্বাভাবিক আছেন।”
স্নেহা হালকা হেসে জবাব দেন
“আসলেই আমি দুঃখ পায়নি অফিসার। লুকিয়ে রেখে লাভ নেই, খোলাখুলি বলতে আমি ভয় পায় না। নেওয়াজ এর সাথে আমার সম্পর্কটা বেশ কয়েকমাস ধরেই খারাপ যাচ্ছিল। আমরা ডিভোর্স এর এপ্লাই করেছিলাম। কোর্ট আমাদের ছয় মাস একসাথে টাইম স্পেন্ড করতে বলে, সেজন্যই আমরা কক্সবাজারের ট্রিপটা প্লান করেছিলাম। “
আশরাফ মাথার মধ্যে পেন্সিল গুজে বলে ওঠেন
“ওহ আচ্ছা, আপনাদের মধ্যে সম্পর্ক অবনতির কারণ জানতে পারি কি?”
“অনেক কারণ ছিল অফিসার, তার মধ্যে অন্যতম রুপসা।”
আশরাফ আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করেন
“রুপসা কে?”
“নেওয়াজ এর পারসোনাল এসিস্ট্যান্ট। “
স্নেহার এহেন কথায় আশরাফ যেন হাজার কতক প্রশ্নের সমাধান পেয়ে যায়।
“পোস্টমর্টেম এর পর লাশ আপনাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এখনও বোঝা যাচ্ছে না কিভাবে কি হয়েছে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে খুনটা বাইরে কোথাও হয়েছে।”
আশরাফের কথায় খুব একটা কালক্ষেপন করলেন না স্নেহা। হাতের মধ্যে রুবিক্স কিউব নিয়ে সলভ করছে আর ভেঙে দিচ্ছে নেহাল। একের পর এক টানা এই একই কাজ করে যাচ্ছে সে৷ আশরাফ খেয়াল করে অনেকক্ষণ ধরেই নেহালকে দেখছেন। চোদ্দ পনেরো বছরের ছেলেটা বাবার মৃত্যুর খবরে এক ফোটা চোখের পানি ফেলেনি। আশরাফ তার দিকে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন
“তোমার সাথে নেওয়াজ সাহেবের লাস্ট কবে কথা হয়েছে?”
নেহাল রুবিক্স কিউব এক হাতের মুঠোই নিয়ে অন্যভাত দিয়ে চোখের চশমাটা ঠিক করে বলে
“দুইমাস আগে।”
তার এহেন জবাবে আশরাফ ভীষণ অবাক হয়। আ্শরাফের অবাক হওয়াটা স্নেহা ম্যাডামের ও চোখে পড়েছে। তিনি বিষয়টা বুঝতে পেরে বলেন
“আসলে অফিসার নেহাল হোস্টেল থেকে গতকালই ফিরেছে। বাবার সাথে টাকা পয়সা ছাড়া ওর তেমন সখ্যতা নেই। ওদের মাঝে কথাও খুব কম হয়।”
আশরাফ আবারও অবাক হন। এই পরিবারেই সমস্যা আছে। কেমন যেন রহস্যের ঘোরপাক। তাদের কথাবার্তার মাঝখানেই ইন্সপেক্টর রাইদ দরজা নক করেন। আশরাফ তাকে ভেতরে আসার অনুমতি দেয়। রাইদ ভেতরে এসেই স্যালুট ঠুকে দাড়ান।
“কোনো খবর আছে? ” আশরাফ জিজ্ঞেস করেন।
রাইদের সোজাসাপটা জবাব
“স্যার হোটেল রিভার গার্ডেন এর দুইশ তিন নম্বর রুম থেকে একটা মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ হোটেল কতৃপক্ষের দাবি মেয়েটা রাতে সুইসাইড করেছে।”
আশরাফ একটু অবাক হয়ে বলেন
“হোটেল রিভার গার্ডেন! এখানেই তো আলী নেওয়াজ সাহেব ও উঠেছিলেন।”
তাদের কথার মাঝে স্নেহা জবাব দেয়
“রুম নম্বরটাও তো নেওয়াজের’ই।”
“আপনি সিউর মিসেস নেওয়াজ?” আশরাফ ভ্রু কুচকে বলে ওঠেন।
“নেওয়াজ যখন হোটেলে ওঠে তখনি আমাকে টেক্সট করে জানিয়েছিল ও কোন হোটেল এ কোন রুমে আছে যাতে আমাদের পরে আসতে সমস্যা না হয়।” সাবলীলভাবে উত্তর দেয় স্নেহা।
রাইদের দিকে তাকিয়ে আশরাফ বলেন
“গাড়ি বের করতে বলো, হোটেল রিভার গার্ডেন এ গিয়েই দেখতে হচ্ছে বিষয়টা কি?”
পাশ ফিরে স্নেহা আর নেহালকে উদ্দেশ্য করে বলেন
“আপনারাও আমাদের সাথে চলুন।”
স্নেহা ম্যাডাম কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কোনো এক অজানা কারণেই তিনি থেমে যান। আর তেমন কিছু বলেন না। নেহাল এতক্ষণ ধরে কিছু শুনেছে কিনা বোঝার উপায় নেই। মনপ্রাণ দিয়ে রুবিক্স কিউব সমাধান চলছে তার। মায়ের ডাকে সজাগ হয় সে। পুলিশ জিপে উঠে বসেন সবাই। গন্তব্য ‘হোটেল রিভার গার্ডেন।’
থানা থেকে হোটেলের দূরত্ব চল্লিশ মিনিটের পথ অথচ আধাঘন্টা যাবৎ গাড়িটা আটকে আছে জ্যামে। এই রাস্তায় সচারাচর এত বড় জ্যাম কখনো হয়না। আশরাফ বিরক্তির সুরে রাইদকে বলেন
“নেমে দেখোতো, আর কতক্ষণ লাগবে?”
তার কথামতো রাইদ গাড়ি থেকে নেমে সামনে গেলেন। একজন ট্রাফিক পুলিশ চার রাস্তার শত শত ছোট বড় গাড়িগুলোকে বের করতে হাপিয়ে উঠছেন। রাইদের পরনের খাকি পোশাক দেখে তাকে স্যালুট দিলেন ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশের সাথে রাইদ সহযোগীতা করে কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্যাম আস্তে আস্তে সরে গেল। আশরাফ রাইদকে সাধুবাদ জানালেন। গাড়িটা আবার চলতে শুরু করেছে।
রিভার গার্ডেন হোটেলের সামনে এসেই আশরাফ জিপ থেকে নেমে পড়েন। প্রথমেই তার চোখ যায় এক তলার মাথার ওপরে হা হয়ে চেয়ে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার দিকে। চারপাশে ভালো করে দেখে নেন আশরাফ। দশ তলার হোটেলটা বিচ থেকে কয়েক গজ দুরত্বেই রয়েছে। দক্ষিণ পাশের সবগুলো ফ্লাট থেকেই সকাল সন্ধ্যা বিচ দেখার মজা নেওয়া যায়। হোটেল এর রিসিপশনে ভীড় জমে আছে। ভীড় ঠেলে ওসি আশরাফ এগিয়ে যান সামনের দিকে। রিসিপশনের ডেস্কের সামনে আসতেই একজন লোক এসে বলে
“স্যার আসুন আপনাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। লোকটার পরনে কালো কোর্ট, কালো প্যান্ট ভেতরে সাদা শার্ট গলায় বাঁধা টাই, দেখে মনে হচ্ছে তিনি হোটেলের দায়িত্বরত কর্মচারী। আশরাফ তার সাথে কথা বলতে বলতে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন। দুই তলার দুইশ তিন নম্বর রুমের সামনে লম্বা একটা লাইন। মানুষ মুখিয়ে আছে ভেতরে কি হচ্ছে দেখার জন্য। এটা আমাদের মানুষদের একটা আজব স্বভাব, তাদের জীবনে কৌতুহলের কোনো শেষ নেই। ওসি আশরাফ এগিয়ে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলেন। রাইদের সাথে দু’জন কনস্টেবল গিয়ে রুমের ভেতর থেকে ডু নট এন্ট্রির ফিতা টাঙিয়ে দিলেন। ডাবল বেডের দুই কক্ষের রুম। নতুন সাদা কাপড়ের বেডসিট পাড়া বিছানাটার ওপর। পাশে একটা সোফা। সোফার ওপর এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে নিউজপেপার, একটা টাওয়াল আর কিছু ওষুধের পাতা। ঠিক তার সামনে বিছানার ওপর আঁধা কাত হয়ে মেয়েটার লাশ। বিছানা থেকে এক হাত নিচের দিকে ঝুলছে। হাত বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে, এখন অবশ্য থেমে গেছে। তাজা রক্তের একটা স্রোত হিয়ে দরজা অব্দি লম্বা খাল সৃষ্টি করেছে। সাদা বিছানায় লাল রক্তের স্পষ্ট দাগগুলো বিছানাকে রঙিন করে দিয়েছে। অপর হাতে একটা ফল কাটার ছুরি। কিছুটা রক্ত এখনও শক্ত হয়ে লেগে আছে। আশরাফ হাতে গ্লাভস পরে নেন। মেয়েটাকে উলটো থেকে নিজের দিকে ঘোরান। চোখে মুখে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। যতদূর মনে হচ্ছে কেসটা সুইসাইডের ই হবে। ওসি আশরাফ রুমের বাইরে বেরিয়ে আলী নেওয়াজ সাহেবের স্ত্রী স্নেহাকে ভেতরে ডাকলেন। লাশের দিকে হাত ইশারা করে বললেন
“দেখুন তো, মেয়েটাকে চিনেন কি না?”
স্নেহা একটু এগিয়ে গিয়ে আৎকে উঠল। এতটা আৎকে তিনি নেওয়াজ সাহেবের মৃত্যুর কথা শুনেও হননি। কাপা গলায় বলে উঠলেন
“এটা তো রুপসা।”
ওসি আশরাফ অবাক হয়ে বলে ওঠেন
“ও মাই গড! আলী নেওয়াজ সাহেবের এসিস্ট্যান্ট রুপসা?”
চলবে…..

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..