কে কূলি প্রজা রাজা মহারাজা ক্ষণিকের খেলাঘর ।ভেঙ্গেচূড়ে গড়ে কোন কূলে তীরে আপনে বাধিলে ডোরে অচেনা যে পর।
– মা অ মা। শোনতে পাচ্ছ না।
– কেনো রে ?
– কেনো আবার।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রোগে ভুগে মাথাটা একদম নষ্ট,কি যেনো ভাবনা এসে সব এলোমেলো হয়ে যায়।আর তোমাকে বলা হয় নি। এখন মনে পড়েছে,।তোমাকে না বললে শান্তি পাবো না। এতো সুন্দর একটা স্বপ্নের কথা তোমাকে শুনতেই হবে।
– ঠিক আছে,কি বলবে,বলো।
– স্বপ্নে দেখি,একখন্ড সাদা মেঘের ভেলা কোত্থেকে উড়ে এসে আমাকে আকাশে তোলে নিয়ে যায়। আমার কোনো ইচ্ছা শক্তি কাজ করছে না।
শতচেষ্টা করেও নিচে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছিনা। আমার মধ্যে এক অজানা অনুভূতি কাজ করছে ।কি অদ্ভুত, আমার শরীরের ধবধবে সাদা পোশাক।
শূন্য থেকে শূন্যে ভেসে চলিছি। এক অজানা আলোর রশ্মি দিকে,আস্তে আস্তে পিছনে আমার সব অতীত ভুলে যাচ্ছি,। ভূলে যাচ্ছি মা মাটি মানুষ।
– স্বপ্নে তো মানুষ কতো কি দেখে। তাই কি সত্যি হয়? স্বপ্ন তো স্বপ্নই।
এই নে, সিরাপটুকু খেয়ে নে।
-তিতো , একদম খেতে ইচ্ছে করছে না।বুক চিরে বের হয়ে আসতে চায়।
– গাছ তিতা হলেও ফল মিষ্টি । ঔষধ তিতা হলেও রোগের সেফা।
সুস্থতা আল্লাহ এক বড় নিয়ামক। রোগব্যাধি না হলে আমারা বুঝতে পারিনা। আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া আদায় করিনা।
আর সময় নষ্ট না করে খেয়ে নে।
– মা তুমি নাছোড়বান্দা। দাও-
নাক চেপে ধরে গলদ করণ।
শিরীন শেফালী কে দেখে-
-কি রে, তোরা বুঝি রাস্তা ভূলে এদিকে চলে এসেছিস,তাই না।
– তা হবে কেন,।ঐতো সেদিন সারাবেলা, তোর কাছে থেকে, সন্ধ্যা বেলা বাসায় ফিরেছি।
– ঝরা ফুলের মালা গাঁথা রায় কিন্তু
বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষটাকে মনে রাখা যায়না।
-যাক বাবা,চন্দন স্যারের কথা কেনো যেনো বারবার মনে হচ্ছে।
স্যারের কথা তোদের মনে হয় না?
শোন-
চন্দন কাঠ আর চন্দন স্যার , উভয়ই দামি।
একটি মানে আর অন্যজন জ্ঞানে।
জেনে রাখা ভালো-
_ভিক্ষুক আর কৃপণের মধ্যে তফাৎ নেই-
ভিক্ষুকের কাছে টাকা থাকলে ও সে ভিক্ষা করে আর
কৃপণের কাছে যতই টাকা থাকুক সে কৃপণতা করে।
– অ হ্যা, ভূলে যাবো। আগেই বলে রাখি। দীপের সাথে দেখা হলে আসতে বলিস তো। বলবি, মহারাজ- আপনার যদি সদয় সময় হয় তবে
নিশো নামের মেয়েটি কে একটু দেখে আসবেন।এখনো বেঁচে আছে।
– বাহ্, চমৎকার। দেখছি তুই আস্ত একটা কবি। দীপকেও ছাড়িয়ে যাবি।
– আরে না। বেঁচে থাকলে মস্তবড় ডাক্তার হবো। আর
মরে গেলে মাটি, বুঝলি।
– মেঘ – বৃষ্টি ঈশ্বরের আশীর্বাদ। পত্র পল্লবে খুশির ঝিলিক, অনাবিল শান্তি সুখের পরশ।এক পা দু পা করে দীপ বৃষ্টির ছোঁয়ায় চকচকে রাস্তায় হেঁটে চলেছে। নিশোর শরীর অবস্থা আগেই কিছুটা জেনেছে। তবে এতো বেশি খারাপ তা জানা ছিলো না। লেখাপড়া, দু-একটি টিউশনি কিছুটা প্রয়োজনে দীপকে চালিয়ে যেতে হয়। তার দায়িত্ববোধ, সময়ের হিসাবে সচেতন। নিশোর চঞ্চলতা, সরলতা সুন্দর ব্যবহার, মনে
রাখার মতো মেয়ে।
ভাবনার মাঝে চলতে চলতে নিশোর বাসার গেটের সামনে।লক করতেই নিশোর মা গেট খুলে দেয়।দীপের নাম নিশোর কাছ থেকে আগেই জেনেছেন। কিন্তু সামনাসামনি এই প্রথম দেখা।
– আমি, দীপ ।
– অ- হ্যা, ভিতরে এসো। তোমার কথা নিশো অনেক বলেছে।
সত্যি, মায়াবী। নিশো ভূল বলে নি। প্রথম দেখায় নিশোর মায়ের বুঝতে অসুবিধা হয় নি।সে ভালো ছেলে।
– কে মা?
– দীপ এসেছে।
– দীপ,!
-হ্যা।
– দীপ কে সোজা নিশোর কক্ষে নিয়ে যায়। নিশোর মা বললেন,নিশো
তোমারা কথা বলো আমি তোমাদের জন্যে কিছু ফল নিয়ে আসছি।
আবেগ আর উচ্ছাসে নিশোর কথা থমকে আছে।
– শিরীন বলেছে?
– না। আমি আগেই কিছুটা শোনেছি।
– তাহলে এতো পরে কেনো ?
– ভাবছিলাম আসবো,সময় করে উঠতে পারিনি।
-কেমন আছো?
– যেমনটা দেখছো।
– ঠিকঠাক ঔষধ খেয়ে নিও , একদম দিব্যি ভালো হয়ে যাবে।
Leave a Reply