1. press.sumon@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন

#গল্প *************** ঝড়ের পরে……*************** ফাহমিদা রিআ ****************

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০২১
  • ১৮১ বার
চোঁয়াল শক্ত করে মুখ নামিয়ে বসে থাকে রনক ওর পড়ার টেবিলে।
না, মুখ তুলবে না সে। কিছুতেই না। এই মহিলা দিব্যি তার মার আসনে গেড়ে বসেছে। এতদিন ধরে তিলে তিলে বুকের মাঝে যে আশাটুকু লালন করতো রনক মা ফিরে আসার, সে আশায় গুড়েবালি। মায়ের ঘর,মায়ের বাগান, মায়ের কিচেন সব দখল করে নিতে এসেছেন মহিলা নিশ্চয়ই।
রনক তখন অনেকটাই ছোট, মা বাবার নিত্য নৈমিত্তিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে সেদিন যখন মা ওর হাত ধরে বললেন,
—– রনক চলে আয়।
বাবা এক হ্যাঁচকায় রনককে টেনে চিৎকার করে বলেছিলেন,
—– রনক যাবে না, যেতে হয় তুমি যাও”
মা আর প্রতিবাদ করেন নি। ছোট্ট ট্রাভেল ব্যাগটা নিয়ে ঘরের বাইরে চলে গিয়েছিলেন সে মুহুর্তেই। পিছু পিছু রনকও ছুটে এসে মার আঁচল চেপে ধরেছিলো।
মা অথৈ সাগরে খড় কুটোর অবলম্বন পেয়ে রণকের হাতটা সজোরে চেপে ধরেছিলেন।
কিন্তু তক্ষুনি বাবা এক ঝটকায় রনককে টেনে নিয়ে মাকে ঘরের বাইরে রেখেই সশব্দে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
রনক ভেবেছিলো মা হয়তো সারারাত বারান্দাতেই ঘুমিয়ে আছেন। বাবা সকালে অফিস চলে গেলেই টুপ করে বাসায় ঢুকে পড়বেন। রনককে হাতে তুলে খাওয়াবেন,স্কুল ব্যাগ খুলে ডাইরিতে নির্দেশিত হোমওয়ার্ক করিয়ে দিবেন।
কিন্তু না, অমন দিন আর কখনোই ফিরে নি রনকের।
প্রায় ছমাস ধরে আত্মীয় স্বজনদের আসা যাওয়া, বাদানুবাদ, যুক্তি, তর্ক শেষে সাঙ্গ হলো অধ্যায়। মা বিহীন বাড়ি। বড় মামা সাফ জানিয়ে দিলেন, রনককে আবেগের বশে ওর মা এখন নিয়ে যেতে বললেও তারা নিয়ে যাবেন না। কারন বোনের সারাটা জীবন পড়ে আছে সামনে। সন্তানের মায়ায় জড়িয়ে নিজেকে নিঃশেষ হতে দিবেন না। নতুন করে সংসারী করাবেন বোনকে।
বাবার দৃঢ় মনোভাব আরও দৃঢ় হলো। জমিলার মা য়ের ঝাড় মোছার কাজ থেকে রাঁধুনিতে পদোন্নতি হলো। তিন বেলা আহারের সমাধান হলো বটে পিতা পুত্রের। কিন্তু বাসায় নেমে এলো সীমাহীন নিস্তব্ধতা।
নিরবে নিঃশব্দে অভ্যস্ত হয়ে বড় হতে থাকলো রনক।
সেই যে মা গেলেন,একবারের জন্যও ওর কাছে এলেন না। স্কুল ছুটির পর মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়েছে অনেক দিনের নিত্য চেনা চৌরাস্তার মোড়ের হলুদ রঙা দোতলা বাড়িটায় ছুটে চলে যেতে। নানা নানী বড় মামা মেজো মামা ছোট মামা আর মা মিলে কত মজা নাজানি করছেন আগের মত।
ঠিক তখুনি ওর সামনে ড্রাইভার রমিজ ভাই এসে গাড়ি দাঁড় করায়। পেছনের দরজা খুলে এক গাল হেসে ডাকে,
—- রনক ভাইয়া, গাড়িত উইঠ্যা বহেন। যা জ্যাম লাগছে আজ রাস্তায়।
রনক মনের ইচ্ছাকে নিরবে চাপা দিয়ে গাড়িতে ওঠে বসে। তারপর এক সময় ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেয় ইচ্ছেগুলোকে। একসময় অভ্যস্তও হয়ে যায় একার জগতটায়।
বছরের পর বছর গড়ায় সময়ের গতিতে। রনক ক্লাশ টু পেরিয়ে ফাইভে ওঠে। একদিন হুট করেই রমিজ ভাই ইয়া বড় একটা কালো ঢাউস সুটকেশ নিয়ে সোজা বাবার বেডরুমে রেখে আসেন।
বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই দরজা ঠেলে বাবার পিছে পিছে ড্রয়িং রুমে এসে দাঁড়ান অপরিচিত এক মহিলা। লম্বা ছিপছিপে গড়ন, পিঠে পড়ে থাকা লম্বা বিনুনি। পরনে পাথর বসানো ঝলমলে থ্রি পিস, মাথায় কারুকাজময় ওড়না। ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে রনককে দেখেন গভীর আগ্রহ নিয়ে। সোফায় বসে পাশের আসন দেখিয়ে ইশারায় ডাকেন। বাবা ততক্ষনে রমিজ ভাইকে খাবারের অর্ডার বুঝিয়ে দিয়ে ড্রয়িং রুমে ফিরেছেন।
রনকের ইতস্তত দাঁড়ানোর ভংগি দেখে খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বলেন বাবা,
—– বড়রা ডাকলে শুনতে হয়, রনক। উনি তোমাকে ডাকছেন।
আগুন্তুক মহিলা এসে রনকের পাশে দাঁড়ান। ওর ঘন কোঁকড়ানো চুলগুলো কপাল থেকে একপাশে সরিয়ে দিতে দিতে বলেন,
—–পরিচয়ইতো হয়নি রনক বাবুর সাথে আমার।
হাসিটি ঝুলিয়ে রেখে আবারো বলেন,
—– আমি শায়লা, তোমার মা হতে এসেছি। এখন থেকে এ বাড়িতেই থাকবো। তোমার সাথে পড়বো, খেলবো, টিভি দেখবো।
রনক ওঠে দাঁড়ায় কথার মাঝেই। লম্বা লম্বা পা ফেলে ওর পড়ার ঘরের দিকে যেতে যেতে বলে,
—– আমার কোন মা লাগবে না, দরকারও নেই।
শায়লার হাসিটা ম্লান হলো একটু। পরক্ষনেই রনকের বাবার দিকে তাকিয়ে বললেন,
—– এসব ক্ষেত্রে প্রথমে বাচ্চাকে জানিয়ে রাখা উচিত। জানানো হয়নি বলে প্রথম আঘাতটা সইতে হলো ছোট্ট মনটায়। যাহোক, তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও। আমি রনককে নিয়ে খাবার টেবিলে আসছি।
দীর্ঘ সময় ধরে নিরব নিঃশ্চুপ রনকের সময়গুলো শায়লা একতরফাভাবেই ভরিয়ে দিতে শুরু করলো পাশে পাশে থেকে। বাবার ঘর থেকে ঢাউস সুটকেশটার চাকা গড়িয়ে রনকের পড়ার ঘর লাগোয়া গেস্ট রুমে শায়লা গুছিয়ে নিলো নিজের অবস্হান।
রনকের বাবার জিজ্ঞাসু দৃষ্টির জবাবে গলা নামিয়ে বললো,
—– রনক যতদিন না স্বেচ্ছায় ওর মায়ের জায়গাটা দিচ্ছে ততদিন এ ব্যবস্হাই থাক।
কিন্তু রনক আপন জগতে অনড়। চোখ তুলে তাকায় না পর্যন্ত শায়লা কিংবা ওর বাবার দিকেও। শায়লাও নির্বিকার ভঙ্গিতে ওর পড়ার টেবিল গোছায়, ওয়ারড্রোবে ঝকঝকে তকতকে কাপড়গুলো সাজিয়ে রাখে, মশারি টাঙিয়ে টান টান করে গুঁজে দেয়, ভোরের দিকে ঘুম ভেঙে গেলে রনক ঠিক টের পায়, গায়ের কাঁথাটা শায়লা প্রতিরাতেই গায়ে দিয়ে যান কখন যেন।
শায়লা প্রায়ই পুরনো এ্যালবাম দেখেন। দেখেন রনকের আনন্দ উচ্ছল ছোটবেলা। বাবামায়ের মাঝখানটিতে বসা রনক কি প্রাণবন্ত। কি ভীষন অনিন্দ্য সুন্দরী রনকের মা। টিপটপ অতি যত্নে সাজানো সুন্দর মুখচ্ছবি। মেরুন, লাল আর ময়ুরকন্ঠি রঙের শাড়িতে ধবধবে ফর্সা রঙে অপরূপ মোহনীয় চেহারা। চওড়া কপালে যত্নে আঁকা মস্ত টিপ আর খোঁপায় গোঁজা ফুল প্রায় প্রতিটি ছবিতেই। ঝকঝকে দাঁতের সারিতে রোদ ঝলমল হাসি। শায়লার বুকের ভেতরে কি জানি কেন একটু চিনচিন ব্যাথা অনুভুত হয়। বেচারি মা।
রনকের বাবা শায়লার সাথে বিয়ের কথার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, অহেতুক কৌতুহল তিনি পছন্দ করেন না। আগে ভাগে নিজে থেকে যত রকম অনুসন্ধান করার প্রয়োজন, শায়লা করতে পারেন। আপত্তিকর কিছু মনে হলে এগোবার দরকার নেই।
শায়লাও যেটুকু সম্ভব জেনেছে শুনেছে। পিছু হটবার মত তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু পায় নি। সন্তান সংসার সমেত পুরুষ যেমন হবার তেমনি মনে হয়েছে রনকের বাবাকে। বরং খানিকটা বেশি ব্যক্তিত্ববানই মনে হয়েছে।
শায়লা এখানে এসে বুঝেছে রনকও ঠিক তাই। বাবার গাম্ভীর্যের পুরোটাই রপ্ত করে ফেলেছে এরই মাঝে।
প্রতিরাতের মত সেদিনও শায়লা দুধের গ্লাসটা রনকের টেবিলে রাখতেই রনক চমকে ওঠলো শায়লার হাতের চুড়ির দিকে চোখ পড়তেই। নিরাভরন শায়লার দুহাত জুড়ে আজ ক’ গাছি চিকন চুড়ির রিনিঝিনি। ঠিক ওর মায়ের মতই। রনক কিছুটা ধাতস্হ হয়ে বইয়ের দিকে স্হির করলো দৃষ্টি।
শায়লা সবটুকুই বুঝলেন। ছোট্ট রনকের মায়ের স্মৃতি জাগা মরুভুমি মনটাকে অনুভব করলেন পুরোপুরি নিজের মাতৃসত্বা দিয়ে।
খানিক আগের রনকের বিস্মিত দৃষ্টির জবাবে বললেন,
—–দুধটুকু খেয়ে শুয়ে পড়ো বাবা। চোখ ভরা ঘুম তোমার।
স্বভাব সুলভভাবে মাথা নাড়লো রনক না তাকিয়েই।শায়লা বুঝলো মনোযোগ নেই সামনে খোলা বইয়ের পাতায়।
শায়লার ঠোঁটের কোনে স্বস্তির হাসিটা খেলে গেলো, পাশের চেয়ারটা টেনে বসতে বসতে বললেন
—– রনক, জগতটা কি অদ্ভুত দেখো। আমার দুদুটো সন্তান জন্মের পর পরই মারা গেলো বলে ও বাড়ি থেকে আমাকে বের করে দিলো অপয়া বলে। আর তাইতো তোমার কাছে মা নেই জেনে চলেও এলাম তোমার মা হবার লোভে।
রনক ঝপ করে বইটা বন্ধ করে বললো,
—–কিন্তু আমারতো মা আছেন নানুবাড়িতে।
রনকের কাছে আসার পর থেকেই শায়লার নিজের বাচ্চা দুটির কথা মনে পড়ে খুব। ওদের বয়সের হিসেব করে। কত বড়টি হতো, কেমন করে মা ডাকতো ভেবে উতলা হয় মন বড্ড বেশি। হয়তো রনকও একদিন এমন ব্যাকুল হয়ে ওকে মা ডেকে বসবে। আশার সলতেটা মনের মাঝে উস্কে দিতে দিতে ঘুমের অতলে তলিয়ে যান শায়লা।
কিন্তু ফলাফল ভাবনার মতো হয় না। রনক স্কুল থেকে ফিরলো একদিন গায়ে জ্বর নিয়ে। কপালে হাত দিয়েই চমকে ওঠলো শায়লা। রনক অস্ফুটে কি যেন একটা বলতে থাকলো, অস্পষ্টতায় বোঝা গেলো না।
কপালে পানিপট্টি লাগাতে থাকলেন শায়লা গভীর উদ্বেগে।
পুরোদিনেও যখন জ্বরের ঘোরটা কাটলো না, ডাক্তারের পরামর্শে ক্লিনিকে ভর্তি করতে হলো রনককে। রনকের বাবা গাম্ভীর্যের খোলস খুলে বেরিয়ে এলেন জল ছলছল দৃষ্টিতে। পুরনো টেলিফোন ইনডেক্সের পাতা উল্টে বের করলেন বহু পুরনো নাম্বারটি।
—- হ্যালো আমি রনকের বাবা বলছি রনকের রোগশয্যার পাশে থেকে…… ডাক্তার বলেছেন রনকের মাকে এ মুহুর্তে রনকের সুস্হতার জন্য খুব জরুরী।
ও প্রান্তে কেউ একজন এক ফুৎকারে সব ব্যকুলতায় জল ঢেলে বললেন,
—–হুম, কদিন আগে স্কুল ছুটির পর রনক এসেছিলো রমিজ ড্রাইভারকে নিয়ে, মায়ের কাছে থাকবে বলে। শুনলাম নতুন করে সংসার পেতেছেন। রনক এখন বাড়তি হয়ে গেলো, তাইতো। কিন্তু ওর মাওতো বছর দুই আগে সংসার পেতেছে অন্য শহরে। রনকের মা এখন বুল্টিরও মা। বছরখানেকের একটি কন্যাও আছে তার।
বাকি কথাটুকু শুনবার প্রয়োজন মনে হলো না আর। ফোনটা রেখে শ্রান্ত ক্লান্ত অবসন্ন দেহটাকে কোনমতে টেনে ওঠে দাঁড়ালেন রনকের বাবা। শায়লার আকুল চোখ দুটিতে চোখ রেখে শুধু বললেন,
—– রনককে বোধ হয় আর ধরে রাখতে পারলাম না শায়লা।
শায়লা এগিয়ে এসে কন্ঠের সবটুকু আশ্বাস ঢেলে বললেন,
—– অত ভেঙ্গে পড়বার মত কিছু হয় নি রনকের বাবা। ওরতো মায়ের দরকার। মাকে পেলেইতো হলো।
—– ওর মাতো এখন নতুন সংসারের বুল্টির মা। আসবে কি?
—– আসবে। রনকের কাছে গিয়ে বসি চলো। ঘুম ভেঙ্গে কাউকে না দেখলে অস্হির করবে আবার।
আধো চেতন, আধো অবচেতনে নিঃসাড় হয়ে শুয়ে থাকে রনক দিনের পর দিন। কচি হাতটায় ক্যানোলা ফুঁড়ে ফুঁড়ে ফুলে ওঠেছে জায়গায় জায়গায়।
কখনওবা চোখ মেলে চারপাশে খুঁজে ফিরে আবারও চোখ বুঁজে ঘুমিয়ে পড়ে নিস্তেজ হয়ে।
ডাক্তারদের চেষ্টায় ওষুধ ইনজেকশন যোগ হতে থাকে উত্তরোত্তর। পুরনো ওষুধ পাল্টে নতুন ওষুধ আসে।
সাঁঝবেলাতে বেশ কিছুটা অস্হিরতার পর নতুন ইনজেকশনের সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে রনক। শায়লা বেরিয়ে যায় ক্লিনিক থেকে। ঘন্টা খানেকের মধ্যে ফিরে আসে আবারো। রনকের বাবা বিস্ময়াভিভুত হয়ে শায়লার বদলে যাওয়া রূপ দেখে।
শায়লা ইশারায় ঠোঁটে তর্জনি চেপে কথা বলতে বারন করে। রনকের শিয়রের পাশে সন্তর্পনে টুলটা টেনে বসে। চোখ বুলায় রনকের ক্যানোলাযুক্ত হাতটায়। বেডে পড়ে থাকা নিস্তজ অন্য হাতটি নিজের কোলে তুলে নিয়ে একদৃষ্টিতে রনকের মায়াময় মুখটিতে তাকিয়ে থাকে।
একটু একটু করে নড়াচড়া করে রনক। অস্হির মুখভঙ্গি করে রোজকার মত। চোখ খুলে আবার বন্ধ করে। শায়লা ঝুঁকে পড়েন রনকের মুখের উপর, ডাকেন
—– রনক……দেখ বাবা এইতো আমি।
রনক চোখ খুলে। মুখের উপর ঝুঁকে থাকা অপলকে শায়লাকে দেখে। ওর রাঙা শাড়ির আঁচল ছুঁয়ে দেয় দূর্বল আঙুলে, কাজল আঁকা চোখ দেখে বিস্ময়ে, কপালে সূর্য ওঠা টকটকে লাল টিপও দেখে দৃষ্টি সরিয়ে, খোঁপায় গোঁজা ফুল দেখে ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসিও ফুটে ওঠে। ধীরে ধীরে
শায়লার কোলে পড়ে থাকা দূর্বল হাত নাড়িয়ে শাড়ির একাংশ আঁকড়ে ধরে,ক্ষীন কন্ঠে উচ্চারিত হয় কাঙ্খিত ডাক
—– মা আ আ আ…..
—– এইতো আমি তোর খুব কাছেই বাবা।
রনকের দুচোখ বেয়ে আনন্দাশ্রু নামে। ভিজে ওঠে শায়লার চোখও।
রনকের বাবা এগিয়ে এসে রনকের কপালে চুমু দিয়ে বলেন,
—– খুব ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি বাবা।
রনক কদিনের কষ্টে ভোগা শুকনো পাংশুটে মুখটায় অভিমানি ঠোঁটজোড়া ফুলিয়ে বলে,
—– তুমি কিন্তু আমার এই মার সাথে কক্ষনো ঝগড়া করবে না। আমি ছাড়া মা ডাকার কেউ নেই যে আর।
চমকে তাকালো শায়লা রনকের মুখের দিকে। তার মানে, রনক ঘোরের মাঝে নয়। জেনে বুঝে মেনে নিয়েই শায়লাকে সর্ব্বোচ্চ আসনটায় বসিয়েছে। আর তাইতো মানসিক প্রস্তুতিটা নিতে রনকের ছোট্ট মনটার উপর দিয়ে একটা বিশাল ঝড়ের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..