1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

গল্পের নাম: প্রিয়তম প্রাক্তন # পর্ব: ০১ ### লেখনীতে: -ইশু মণি

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১
  • ২০৫ বার
আজ তিন বছর নয় মাস পর আমার প্রাক্তনের সাথে দেখা। দেখা বলতে আমি তাকে দেখেছি কিন্তু সে এখনো আমাকে দেখে নি। টং এর দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছে, বরাবরই আমার কাছে মনে হতো তার এই চা খাওয়ার দৃশ্যটা অন্য সবার থেকে আলাদা। আমার কাছে সবথেকে ভয়ংকর সুন্দর দৃশ্য হলো আনাফের চা খাওয়ার দৃশ্য। অবশ্য এখনও আমার তাই ই মনে হচ্ছে, ওকে দেখার পর আমার পা চলছে না। নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে আছি আনাফের দিকে। আনাফ চা খাওয়া শেষে আমাকে খেয়াল করেছে, ছেলেটা যখন চা খায় তখন তার সমস্ত মনোযোগ সেদিকেই থাকে তাই সে আমাকে খেয়াল করে এতক্ষণ।
আমি এখনো সমস্ত লজ্জা বির্সজন দিয়ে দাড়িয়ে আছি টং এর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ওকে দেখছি।
– অদিতি?
আনাফের কথায় আমার হুশ ফিরল, এতদিন পর সেই চিরচেনা কন্ঠ কিন্তু আগের মতো মায়া নেই সেই ডাকে।তবুও শান্তি লাগছে আগের মতোই।
-এই যে?
-হ্যাঁ আনাফ, ভালো আছো?
-আলহামদুলিল্লাহ, তুমি যেমনটা খারাপ অবস্থা আমার দেখতে চেয়েছিলে তেমন খারাপ নেই এটা দুঃখজনক। ভালো আছি।
-ওহ্
-তারপর বলো? তোমার কি অবস্থা? রাস্তার মধ্যে এমন হ্যাংলার মতো দাঁড়িয়ে আছো৷ বিবাহিত হয়েও অন্য ছেলের দিকে তাকিয়ে আছো৷ ব্যাপার কি?
আনাফ যে আমাকে খোঁচা মেরে কথা বলল, তা আমার বুঝতে বাকি রইলো না৷ কিন্তু কিছু করার নেই কাজ ই করেছি এমন কথা শুনতেই হবে।
-উঁহু, তা নয়। আসলে এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ তোমাকে দেখলাম তাই ভাবলাম…
-তাই, কি ভাবলে? যে দেখি ওর অবস্থা এখন কতটা খারাপ শুনে যাই।
-তুমি এভাবে কেন বলছো আনাফ? তোমার খারাপ কেন আমি চাইব।
-ও তাও তো কথা । আচ্ছা, ভালো থেকো আমি গেলাম৷
-আনাফ? আমরা কি কোথাও বসে দু’মিনিট কথা বলতে পারি?
-না, পারি না।
-প্লিজ আনাফ?
-আচ্ছা, তবে ওসব রেস্টুরেন্টে বসতে পারবো না৷ আমার সাথে বসতে চাইলে এই যে টং এর দোকানে দাঁড়িয়ে চা খেতে খেতে পাঁচ মিনিট সময় দিতে পারি।
-আচ্ছা, চলো৷
কি অদ্ভুত এই ছেলে একদিন আমার সাথে দু’মিনিট কথা বলার জন্য কতকিছু করতো। আর আজ? আমি এসব কেন ভাবছি ধুর!
‘পাশের একটা বেঞ্চিতে অদিতিকে বসতে বলে চায়ের অর্ডার দিলো আনাফ। দিয়ে অদিতির সামনে দাঁড়াল। ‘
‘ কি ব্যাপার বসা যাবে না বুঝি? ‘
‘তা না, আমার আবার মেয়েদের পাশে বসতে এলার্জি আছে। তুমিই বসো, আমি বেশ আছি। ‘
‘ তাই নাকি? তা বউ এর প্রতিও কি এলার্জি নাকি? ‘
‘ বউ এখনো হয় নি, তবে বউ আর অন্য মেয়ের হিসেব এক নয়। ও হ্যাঁ, বিয়ে করি নি তার মানে আবার এটা ভাবিও না যে তোমার জন্য আমি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেছি বিয়ে করব না। বিয়ে করব চাকরি পেয়েছি নতুন তাই একটু সময় নিচ্ছি মেয়ে খুঁজতে। এই আর কিছু না। ‘
প্রতিটা কথায় অদিতি অপমান আর লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। এখানে বসে থাকাটাই এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘তা অদিতি তোমার স্বামী কই? এত সুন্দরী বউ একা একা ছেড়ে দিয়েছে?’
‘আনাফ, আমি উঠি। আমার ওনি ফোন দিচ্ছে, ভালো থেকো’
অদিতি জেল পলাতক আসামীর মতো তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে আসতে পারলে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। মোড়ের দোকান থেকে এক বোতল পানি কিনে একটা রিকশা ডাক দিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলো৷ এই আনাফকে সে চিনতো না। কি অদ্ভুত পরিবর্তন! ভাবতেই পারছে না। কিন্তু আনাফের কি দোষ, তার জন্য ই এমন হয়েছে। আর এই সবকিছু ই তার ই কর্মের ফল। সেদিন তো এরকম উতলা আনাফ ও হয়েছিলো আমি তো সময় দেই নি তাহলে ও আমাকে দিবে সেটা আমি কিভাবে আশা করছি।
(চলবে)

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..