এমনকি তার ঠিকানা ও অনামিকাকে দিতে পারেনি।নুর তার ঠিকানা ও জানতে পারেনি।বাড়িতে আসার পর তার বাবার মৃত্যু সংবাদ শুনে অসহ্য বেদনায় ওহ্ বলে লুটিয়ে পড়ল মাটিতে।কিছুক্ষন পূর্বে নুরের মনে আনন্দ ছিল,তার পরীক্ষা খুব ভাল হয়েছে।তার প্রিয়ার সম্বন্ধে জেনেছে ……… তার অনুভবে খুব ভালো লাগছে।সেই অনামিকা প্রেম তার হৃদয় জুড়ে বিকশিত হচ্ছে।ভাগ্য প্রতারনায় বড্ড কাঁদছিল নুর।নুরের কান্নায় বাড়ীর সব্বাইকে কাঁদিয়ে ছিল।তাকে অনেকেই সান্তনা দিচ্ছে।বিভিন্ন সমস্যাজনীত কারনে হোস্টেলেই যোগাযোগ করতে পারেনি নুর।সময় পরিক্রমায় দু’মাস অতিবাহিত হয়।অনামিকা ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি বি এস(মেডিসিন) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সে সরকারী খরচে বিলেতে ডঃ ডিগ্রি অর্জন করার সুযোগ পায়।কয়েক মাস পূর্বে ইন্টারভিউ এর মাধ্যমে।অথচ সেই পরীক্ষায় সে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হয়েছে।তার বাবা আর তার আত্মীয় স্বজন অনেকেই বিলেতে অবস্থান করেন এবং অনুমুদন সূত্রে সেই দেশে নাগরিক্ত্ব পেয়ে থাকেন।অনামিকা এক সপ্তাহের মধ্যে বিলেতে চলে যেতে সর্বত্যাগী সিদ্ধান্ত নেয়।অদৃষ্ট সিদ্ধান্ত মানুষকে পুতুলের মত পরিচালিত করে।কিন্তু অনামিকা এখন দ্বিধায় কি করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে সে খুব অসহায়ত্ব।নুরের জন্য অনামিকার মনটা চিন্তায় আচ্ছন্ন।কারণ তার দর্শনীয় একান্ত তার দর্পনে এত কাছে থেকেও ভালোবাসার মানুষটির কোনো ঠিকানা সে জানে না।অনামিকা বাইরে আনন্দের তুফান অন্তরে নুরকে হারানো বিরহের নিঃশব্দ অতিশয় কান্না আকুলে বিব্রত।
নুর তো ভালোবাসে তার বিরহে ওকে কাঁদাবে,সেই বন্ধন ছিড়বে ও কি করে ওর প্রেমের রশ্মিকে আঁকরে ব্বাঁচতে চায় সে।পড়ন্ত বিকেলে ছাদে তাকে দেখান যায় না,আর তার রুমে জানালা বন্ধ থাকে।লাজ-সরম বর্জন করে অনামিকা নুরের হোস্টেলে গিয়ে দেখে তার রুম বন্ধ আছে।নিয়তির ছলনায় প্রতিবন্ধন বেঁধে তাদের কি করে হবে মিলন?হায়রে বিকেলে ঝড়ে যাওয়া ফুলের কান্না কেহ তো কষ্টের অনুভব করে না ঐটাতো রীতি।অনামিকা অন্য একটি রুমে কয়েকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করে নুর কোথায় আর তার ঠিকানা অনুসন্ধেয় একান্তভাবে।কেহই তার প্রশ্নের সমস্যা সমাধান দিতে পারল না।অনামিকা সবার অজান্তে তার অশ্রু ঝড়ে আর কন্ঠ রুধ হয়ে অস্ফুট স্বরে কেঁদে কেঁদে বলে …… নুর।অনামিকা চেহারা বিষন্নশ্রী অবস্থায় আর বিস্ময়ে হতাসায় বিমুর হয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করে।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন,জীবনে মানুষের প্রথম সাধনা দারিদ্রের দ্বিতীয় সাধনা ঐশ্বর্যের।শেষ সাধনা-ত্যাগের বাস্তবে রবীঠাকুরের অমুল্য বানী প্রতিপন্ন।”নুরের অনুভবে সান্তনা-দূরে… বহুদুর অনামিকা আছ তুমি আমার হৃদয় নীড়ে।
তোমার অতুলনীয় প্রেম,আমার অন্তরকে করেছে আলোকিত।
সেই আলোক রশ্মি দিয়ে দেখি আমি
তুমি তোমার হৃদয়ের মধ্যে আমাকে
রেখেছো প্রীতির অর্ঘ্যে ভালোবাসা সাজাতে
আমি তোমারই অপেক্ষায়
অন্তরে অনন্ত বীথিকায় স্বপ্ন নিশিতে
এ আকুলতা জানবে।
– সমাপ্ত –
Leave a Reply