1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন

অনাঘ্রাত – – – মঈনুর আহম্মদ

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২১০ বার

 

সেতারা মনুর দিকে কাম্যমনে চেয়ে রইলো আর মনে মনে ভাবে এই সুন্দর যুবককে মোছলেমা গ্রহন করে না এই স্পর্ধা দেখে অবাক লাগে।তার রুপ ও গুনের জন্য যে কোন নারী আস্বাদ পেতে কামনা করবে।তৎক্ষনাৎ এই সুযোগে তার সাথে ভাব করা যায় কিনা?এই সময় মোছলেমা সেতারাকে ধাক্কা দিয়ে বলে,কি হয়েছে তোর,কারো প্রেমে পড়লে নাকি?হয়তো তাই।কই তোর প্রিয়তম?কি আমাকে দেখাবি না?সেতারা আর্তভাবে বলে,ক্ষমা কর দেখাতে পারবো না।মোছলেমা দেখলো সেতারার চোখে জল।সেতারাকে প্রশ্ন করা অবান্তর তাই আর কোন প্রশ্ন করলো না সেসময় কপটতা সৃষ্টি না করে,সেই স্থান ত্যাগ করে নিজের কাজে ব্যস্ত হলো সে।সেতারা গাড়ী ড্রাইভিং করে পড়ন্ত বিকেলে ঘুরতে যাচ্ছে এমন সময় মনুকে দেখতে পেল।সেই সময় মনুকে জোর করে গাড়ীতে উঠালো।মনু আনমনা ভাবে বললো,সেতারা আপনাকে একটা প্রশ্ন করবো সঠিক উত্তর দিবেন তো।হ্যাঁ বলুন,তোমার বান্ধবী মোছলেমা কাউকে ভালোবাসে?তোমার কি মনে হয়?মনু গম্ভীর হয়ে গেল।সেতারা অসহায় ভাবে বললো,তোমার স্ত্রী একজন লেখককে ভালোবাসে।সে তাঁকে আজও দেখেনি।সেই লেখকের নাম নইন আহমেদ”মনু চমকে উঠে অশ্রুত ভাবে উত্তর দেয় তাই।মনু সবিনয়ে বললো,বন্ধ থাক এই সব অপ্রিয় কথা।কিছুক্ষণ পর সেতারা বললো,মোছলেমা খুব ভালো মেয়ে সে তোমার অযোগ্য হয়ে যায় নি এখনও সে ঋদ্ধ স্বর্গের অপসরার মতো পবিত্র।মনে মনে উপদ্রুত কষ্ট নিবেন না সহ্য করুন সব ঠিক হয়ে যাবে।আমায় নয় কো ভালবাস, ভালবাস মোর গান অর্থাৎ লেখককে ভালোবাসেনি,ভালোবেসেছে তার পান্ডিত্যকে এই সব মনু মনে মনে ভাবে সে সময়।সেতারা বলে,যদি মোছলেমা তোমাকে গ্রহন না করে,তুমি কি করবে?বলুন তোমার মত কি? মনু বললো,যে আমার না আমি তার হবো কেন?সময় হলে অপরিসর না অপরিসীম?বিবেচিত হলে সিদ্ধান্ত নিবো।যে আমাকে ভালোবাসবে আমিই তার হবো।আমাকে……?তোমার জন্য কত সুন্দর মেয়ে পথ চেয়ে থাকবে …… আমাকে বিশ্বাস হয় না।আমি যে আকিঞ্চন।যে সত্যিকার প্রেমিকা … যে তোমার আকিঞ্চন কে ভালোবাসবে।মনু বললো,অনধিকার চর্চামত,একটি প্রশ্ন করবো রাগ করবেন নাতো।রাগ অভিধানে নেই বলুন।তুমি কাউকে ভালোবাস?হ্যাঁ,তবে তাকে কখনো বলতে পারিনি …… আর বলা ঠিক হবে না।প্রেম তো আলো সে আলোতে থাকে।অন্ধকার এনে কদর্থ করবো না।  Love is mental disease-  ভালোবাসা একটি মানসিক ব্যাধি।মনে হয় সেই অবস্থা আমার হয়েছে।সেতারা অশ্রুপাত অব্বস্থায় বললো!মনু নীরব হয়ে গেল।ইতিমধ্যে গাড়ী মোছলেমার বাড়ীর গেটে এসে পড়লো এবং মনুকে নামিয়ে দিয়ে সে চলে গেল।মনু ভাবছে একই ভাবনা বার বার ভাবছে।মোছলেমা তার স্ত্রী।তার কাছে থেকে স্বামীর অধিকার পায়নি।তাকে না দেখে তার উপন্যাস পড়ে তার পান্ডিত্যকে অন্ধভাবে ভালোবেসে ফেলেছে।সে তাকে এত কাছে পেয়েও চিনতে পারে নি।চিনবে কি করে?সত্য প্রকাশ করতে হলে এর ফল পরিক্ষীত।অপেক্ষাই সুন্দর,মোছলেমা তার কক্ষে প্রবেশ করে দেখে মনু আনমনা অবস্থায় আছে।মোছলেমা হাসি মুখে বলে,কি মিঃ এমন কি ভাবছেন?মোছলেমা দর্শনে চমকে উঠে? কি কিছু বলবেন?কালকে আপনাকে নিয়ে নরসিংদী শিল্পকলা একাডেমীতে যাবো।কবিতার আবৃত্তি উৎসব হবে।সন্ধ্যার সময় তৈরি হয়ে থাকবেন।আচ্ছা- আমার কথা রাখবেন। ভনিতা রেখে বলুন।

 

তুমি যাকে ভালোবাস সে যদি তোমাকে বিবাহিতা ভেবে ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়…… কি করবেন?আমৃত্যু এই অবস্থায় থাকবো।আপনা থেকে তুমি?হঠাৎ …… আহা।আমার প্রেম যদি সত্যি হয় হয়তো তাকে অনন্ত কালের জন্য পাবো। …… আর …… আপনার কাছে ঋণী আপনার প্রাপ্য বঞ্চিত করি… তাই ক্ষমা চাচ্ছি।মোছলেমা হৃদয় স্রোতে চোখ দু’টো জলে পরিপূর্ণ হলো।সেতারা সব সময় আপনার প্রশংসা করে থাকে তাকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন তাতে আপনার স্বস্তি আসবে।সে ও খুব ভালো মেয়ে এবং নিষ্পাপ আপনার যোগ্য হবে।মনু স্মিথ হাসি দিয়ে মনে মনে ভাবলেন …… বোকা মেয়ে।যদি বলি,আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।তোমার মতো অনুরূপ আমি থাকবো।তা হয় না।আমি তো আপনার যোগ্য স্ত্রী নই কেন আমার জন্য আপনার জীবন বিষন্ন করবেন।ছোট সময় থেকে তোমার ছবি দেখে আকুল সৃষ্টিতে প্রেমে পড়েছি Love at First shight।আমি ভিক্ষারী হয়ে এসেছি……তুমি আমার প্রেম,আমার ভালোবাসা আমার হৃদয়ের অনন্ত সময় বেচে থাকার অবলম্বন।আমাকে করুণা করো ও একটু ভিক্ষা দেন।মোছলেমা চোখের পাতা ভিজে গেছে।কান্না …… কান্না কন্ঠে বলে,আমি জানি আপনি অনিন্দ্য প্রেমিক।আমার প্রেম আপনার জন্য অনুকুলের অন্তরায়।মনের অনলে জ্বলে জ্বলে জলন্ত আমি।আপনি ভাস্বর আমার অনুনয় বিবেচিতর জন্য এই প্রার্থনা মনুর দুটো পায়ে পরে কাঁদতে ইচ্ছে করছে মোছলেমা তা পারে নি।আপনি ঘুমান আমার ঘুম পাচ্ছে… এই বলে দ্রুত চলে গেলেন সে।

 

কবিতা উৎসব দিনে মোছলেমা,মনু আর সেতারা শিল্পকলা একাডেমীতে চলে গেলেন।যথা সময় কবিতা আবৃত্তি আরম্ভ হলো।নঈনের একটি কবিতা মোছলেমা গভীর প্রেমেই … সুন্দর ভাবে আবৃত্তি করলেন।সকলেই মুগ্ধ হয়ে মোছলেমাকে প্রশংসা করলেন।মনু ধ্যানে দ্যোতকে মোছলেমার দিকে চেয়ে থাকে।তাকে বুকে নিয়ে চুমু খেতে ইচ্ছা জাগে।সেতারা বললো,মোছলেমাকে এই উৎসবে যদি নঈন থাকতেন তোকে খুব আদর করতেন …….. । মনুর দিকে তাকিয়ে।মোছলেমা বললেন,আমার জন্য ঋদ্ধি নেই।সেতারা মনে রাখিস অতিরিক্ত কথা না বলাই ভালো।মনু হাসি মুখে বললো,মোছলেমাকে তপস্রী হয়ে যান…শাশ্বত মর্মে আতনাস্থ হয়ে নঈনকে আকর্ষনে আহবান হবে অনুভবে ভাগ্যবান লেখককে হয়তো পেয়ে যাবেন।

 

তোমার কি অবস্থা হবে?সেতারা বললো- আকাশের তারার মতো অগনিত প্রদীপ হয়ে জ্বলবো মনুর কাছ থেকে এ উত্তর এলো।মোছলেমা ম্লান মনে হেসে দিয়ে সেই সময় মনুর দিকে তাকালেন।সেতারা বললো,আমি একজনের জন্য যোগীর মতো অপেক্ষাই থাকবো।মোছলেমা বললো,তোকে আমি ঋণ দিবো।সাড়া জীবন সাধনা করেও পাওয়া যায় না,যদি না থাকে অদৃষ্টে …… ঋণ সময় মতো ফেরত দিতে হয়।মনু মোছলেমার দিকে তাকিয়ে এই কথা বললো সেতারা বললো সেই সাধনাই করবো।তোমাদেরকে অনুনয় করে বলছি…… আগুনের খেলা খেলবে না।এতেই কষ্ট কত বাড়বে।তোমার বান্ধবী ভালোবেসে মরে গেলেও গ্রহন করতে পারছি না।দু’হাত জোর করে ক্ষমা চাচ্ছি।সে তোমাকে খুব ভালোবাসে …… সেই প্রেমে খাদ নেই।তাকে বিয়ে করেন …… অনুরোধ করছি।তোমার জীবন …… কিভাবে পরিচালিত করবে সেই অধিকার তোমার আছে …… অথচ আমার জীবন পরিচালনা করার অধিকার ……?এই অভিলাষ নেই এবং সেতারার প্রেমকে আমি সন্মান করি,তার জন্য সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি …… এর চেয়ে বেশি কিছু নয়,মনু সরোষে বললো।

 

অন্যথা ভেবে তারা রাস্তায় কোনো কথা বলার প্রয়োজন মনে করলো না।সেতারাকে বাসায় পৌছিয়ে দিয়ে তারা মোছলেমাদের নীড়ে চলে এলেন।নবারুন সকালে পৃথিবীকে খুব অপরূপ দেখাচ্ছে …… এমন সময় মোছলেমার মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠলো।রিসিভ করতেই সেতারা কথা বলছে,মনুকে দে ওর নাম্বার বন্ধ আছে ও মিঃ আপনার ফোন কথা বলুন।হ্যালো কে? …… আমি …… তোমার সেতারা।সেতারা বাজিয়ে দর্শককে গান শোনান এতে ঙাপ্পি মতো …… তৃপ্ত।আমি এখন ব্যস্ত।বাথরুমে যাবো …… বুঝতে পারছেন তো।রাখি গুডবাই।

 

মোছলেমার জননী তীক্ষ্ণবুদ্ধি ব্যক্তিত্ব।সে মোছলেমাকে বলছে,সেতারার চোখের ভাষা ক্ষুধিত তাই মনুর সাথে সেতারাকে মিশতে দিবে না।তার চাল চলন ভালো মনে হচ্ছে না।তোমার মুর্খ ছেলেকে সে গ্রহন করবে না।জেনে শুনে আগুনে হাত দিবে না।আমার স্বামী হিসেবে করুনা করবে।আঘ্রাণ নিয়ে কদর্য হিসেবে পরিচিত হবে বোকা সে নয়।তাকে গ্রহন করলে এতে অকল্যাণই হবে।তোর বাবা বলেছে সে মোটেই মুর্খ নয়,বরং অনেকের চেয়ে বেশি শিক্ষিত তার কাঞ্চন আচরনে ফুটে উঠে।বাবা তো তোমার ছেলেকে অন্ধের মতো ভালোবাসে বুঝলে আমার মমতাময়ী মা।

 

মনুর চিন্তাশীল মন তাই সে ভাবছে- ভালোবাসা ভরা আঁখি দিয়ে প্রেমের আকর্ষণে অভিনয় করার মতো সেতারার আচরণ নয় …… সত্যিই তার গভীর ভালোবাসা চোখে ভাষা ইতিবৃত্তকার আর মোছলেমার চরিত্র জ্যোতির্ময়ী বিরহিনী প্রেমিকা।বিরহী জলন্ত প্রেম শিখা নইনকে আকর্ষণ করছে গভীরতম হৃদয়ে …… সাধনায় অভিনিবেশ আহত সে।এই সময় এখানে অবস্থান করা তার জন্য ঠিক হবে না।সেতারা তার প্রতিদিন-দিন আশোক পরিনত হচ্ছে।মোছলেমা তার সর্বস্ব ধন তার বান্ধবীকে দান করতে চায়।কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় মোছলেমা জানতে পারবে তার প্রিয়তম স্বামীই নইন।সেই সময় সে উন্মত্ততে পরিনত হবে।পেয়ে হারানোর যন্ত্রনা সইতে পারবে না এবং অসহনীয় কষ্ট অনুভব করবে।হয়তো মানসিক যন্ত্রনা পাগলের মতো তার অবস্থা হবে।নইনের দর্শনীয় না পেয়েও মোছলেমা প্রেমের সঞ্জীবনী প্রয়াস মনুর অন্তরকে সঞ্চালিত করছে।

 

হৃদয়ের প্রেম …… হায়রে ভালোবাসা।মনু তো মোছলেমার প্রেমের মজনু।প্রেমের সম্রাট উন্মোচিত মনুর চরিত্র।সাহিত্যের মনু মোছলেমার জীবনে অক্ষয় রচনা করে … ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দিবে।মোছলেমা দিপ্তীময়ী …… প্রীতির মাঝে আলোর দিশারী।মনুর প্রেমকে আকর্ষণীয় ভাবে হাতছানী দিয়ে তার ছদ্ম নামের চরিত্র …… প্রেমিকাকে বিকশিত করে।সে প্রেমীয় গুনাবলীর জন্য মনু মোছলেমাকে খুব ভালোবাসে।সে তাকে হারাতে পারে না।হুশ অবস্থায় হয়তো জন্মান্তর মোছলেমার স্বর্গীয় প্রেমকে অবমূল্যায়ন করা অন্যায়।

 

চিরাচরিত নিয়মে সামনের মাসে সংসদ …… সদস্য নির্বাচন করার জন্য মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে।সেই সময় নিজ জেলায় অবস্থান করা উচিত।মোছলেমার নিকট মনু গিয়ে বললেন,ছয় মাস অতিবাহিত হতে চলছে অথচ তোমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি।পরিবর্তন প্রয়োজন অনুভবে ভাবোনি।তোমাকে সঠিক সিদ্ধান্ত করার জন্য সময় সীমাহীন প্রেমকে আলোকিত করার সুযোগ দিলাম।তুমি গ্রহনীয় তাই প্রতীক্ষমান আমি।আমায় যদি তোমার প্রিয়তম মনে করে হাতছানি দিয়ে ডাকো-তাহলে আমি তোমার কাছে আসবো।বাড়িতে জরুরি কাজের জন্য আমাকে চলে যেতে হবে।তোমার সিদ্ধান্ত জানার জন্য আমৃত্যু ভালোবাসার ফুল ফোটাবো।তবে আমি জানি … তুমি শুধুই আমার সাড়া জীবন আমারই প্রকারান্তরে ……।আমার চিরমিলনের আকুতির জন্য আমার দরজা অনন্তকাল তোমার জন্য খোলা থাকবে।আমি ছিলাম … আছি …… অনন্তকাল তোমারই-

 

 

মোছলেমা ম্লান আনন্দে বললেন,তা হয়না আপনি কত সুন্দর। … ঔদার্য মনের আশিস … বরং অভিলাষ বাসন্তী অক্ষর রচিত হবে।এ সুন্দরকে নষ্ট করবেন না।আপনি আমাকে ভূলে যান। … অসাদাচর স্মৃতি বিবেচনায় এনে।সেতারা আপনাকে খুবই ভালোবাসে …… তাকে বিয়ে করেন এতে আপনাদের দু’জনেই সুখী…… আমিও সুখী হবো।সত্যি আপনি খুব ভালো ছেলে আপনার মতো স্বামী পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার।আমি পুলকিত তবু পৃষ্ঠপ্রদর্শনে আমি এক হতভাগী।মোছলেমা হৃদয়ে চোখের জলই প্লাবিত হচ্ছে।আপনাকে কিছু দিতে পারলাম না-শুধু কষ্ট দিলাম।আজ ক্ষমা চাওয়ার অধিকার লুপ্ত যদি পারেন নিজের জ্ঞানে আমাকে ক্ষমা করে দিলে উপকৃত হবো।

 

মোছলেমা মনুর চরন বেদী মূলে চোখের জলে পুজা দিলো এই প্রথম।মনুর চোখের জলে পরিপূর্ণ হলো …… মোছলেমাকে আদর করে বল্ল,ছি এমন করে কাঁদতে নেই লক্ষিটি।বাড়িতে পৌছে ফোন করবেন …… কেমন?আমি আপনার ফোনের অপেক্ষায় থাকবো।হয়তো চেষ্টা করবো।আগামীকাল বিকাল ৩টার সময় মনু মিঞা বাসে চলে যাবে… তাই মোছলেমা আর সেতারা মনুকে বিদায় দিতে সিদ্ধান্ত নিলো।আজ পড়ন্ত বিকেলে দত্তপাড়া ঈদগাহ সংযুক্ত মেঘনানদীর তীরে ওরা তিনজন বেড়াতে যাচ্ছে।সেতারা মনুকে উদ্দেশ্য করে বলে, … মানুষ মানুষকে অতিসহজেই ভুলে যায়।তুমি হয়তো সহজে ভুলে যাবে…… তাই না?হয়তো … তাই।তবে এইটুকু জানি প্রকৃত প্রেমিকা সেতারা।সে আমাকে শুধু ভালোবেসেছে …… সে আমার মর্যাদাকে নয়।তাই যতদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন তোমাকে দেবীর মতো ঘনিষ্ঠ ভাবেই স্মরন করবো।মোছলেমা সেতারাকে বললো …… অন্তরঙ্গ …… তা স্বপ্ন মাঝে সংসার সাজিয়ে বসে থাকিস …… আর একটি কবিতা আবৃত্তি তোর প্রিয়তম এর সৌজন্যে।।স্তারা আবৃত্তি করছে ……

 

সুরঞ্জনা, ওই খানে যেয়ো নাকো তুমি

বলোনাকো কথা ওই যুবকের সাথে

ফিরে এসো সুরঞ্জনা

নক্ষত্রের রূপালী আগুন ভরা রাতে

ফিরে এসো এই মাঠে,ঢেউয়ে

ফিরে এসো হৃদয়ে আমার

দূর থেকে দূরে আরো দূরে

যুবকের সাথে তুমি যেয়ো নাকো আর

কী কথা তাহার সাথে।।তার সাথে

আকাশে আড়ালে আকাশ

মৃত্তিকার মতো তুমি আজ

তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে

সুরঞ্জনা

তোমার হৃদয় আজ ঘাস

বাতাসের ওপারে বাতাস

আকাশের ওপারে আকাশ।

সেতারার অশ্রু গদ গদ অবস্থায় আর বলতে পাচ্ছেনা সেই সময়।হৃদয় কাননে অশান্ত ঝটি বন তার।মনু মিঞার চোখেই জল উভয়ই দেখলো।মোছলেমার মনে হলো হয়তো ছিনিমিনি মাঝে তার ভুল হচ্ছে।সেতারার আবৃত্তিই …… আমার হত বুদ্ধির জন্যই মনুর চোখের জল।কত সুন্দর করে আবৃত্তি করহে তুমি চোখে ভরা জল,মোছলেমা বললো।।অন্তরে আছো তুমি হৃদয় ভরা ব্যথা …… পেয়ে হারালে তুমি নিয়ে ছলনা।হে নিষ্ঠুর,সত্যকে ভালোবাসিলাম।মনু শুধালো।সেতারা বললো,অনন্তকাল থাকবো তপস্যায় তোমাকে পাবার আশায়।মনু মিঞা সেতারাকে বললো,এমন করে তুমি স্মৃতি চিহ্ন আখিও না …… তোমার বান্ধবী উদ্বন্ধন সেই দিনে ললাতে আঁকিবে।।একটি গানের বিদ্রোহী কবির।সেই কিছু অংশ উপস্থাপন করি শোন।

 

 

“আমায় নয়গো ভালোবাসো,ভালোবাসো মোর গান” মোছলেমা বিস্মিত আর আনমনা ভাব হয় …… মনু কেন এভাবে বলে, …… তাহলে তার নিজের অজান্তে সে ভুল করেছে …… অপরিচিতা মাঝে কত অপরিচিত সে,মনে হয় অনুভবে নিজের সর্বশ্রেষ্ট ধনকে অবহেলা করে নিজেকে ঠকাচ্ছি।কি আমি এই সব কি ভাবছি ……… আমি তো শুধু নইনের ……।তার জন্যই আমার জন্ম।সন্ধ্যায় …… পৃথিবী কাঁদে …… না হাসে হয়তো নবারুন সকালের জন্য হাসে।তাদের অনেক কথাই ছিলো …… হয়তো বলা হলো না …… বলা অনুচিত তাই বলতে পারে না।সুখের … কষ্ট মাঝে বিড়ম্বনা।সন্ধ্যা হয়ে গেছে তারা বাড়িতে ফিরিল।মোছলেমা ভাবতে লাগলো একই ভাবনা বার বার ভাবছে …… পিতামহ বলতেন,তার স্বামী হবে অদ্বিতীয় প্রেমিক …… অদ্বিতীয় মানুষ।সহস্র প্রলোভনের …… ও নিজের চরিত্রকে কলুসিত করবে না সে।।সেতারার সৌন্দর্য যে অপরুপ ঐশ্বর্যময় অথচ পদ্ম মোহে তার দিকে কত পুরুষ চেয়ে থাকে।কিন্তু মনু সে বিপরিত এবং কত নিখুত মনুর চরিত্র এত সুন্দর।চরিত্রের জন্য আমি চিরদিন বেদিমূলে পুজা দিয়ে তাকে দেবতার মতো সন্মান করি … করবো।মনুর সাথে ছয় মাসে স্মৃতিতে প্রমাণ করবে …… সে দীপ্তময় পুরূষ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..