দীর্ঘদিন লিখালিখি না করায়, মস্তিষ্কে জং ধরে গেছে, গল্প লেখার চেষ্টা করলেও পারছি না, তাই ভাবলাম পেইজে ঘুরে একটু অনুপ্রেরণা নিয়ে আসি।
পেইজে ঢুকার পর, কি মনে করে যেন ম্যাসেজ ইনবক্সে গেলাম। চ্যাটলিস্টের প্রথম ম্যাসেজটা চোখে পড়লো, সিন করলাম।
জৈনক এক ব্যাক্তি লিখেছেন,
‘‘হেই লেখিকা বউ হবেন আমার? আপনি গল্প লিখবেন সারাক্ষণ আর আমি আপনাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো, এতটুকুই ইচ্ছে আমার, চাইলে আপনাকে দুই এক বালতি ঠান্ডা চা বানিয়ে বানিয়ে দিব।’’
এত সুন্দর বিবাহ প্রপোজাল দেখে মনে মনে লাড্ডু ফুটলো, আজ অব্ধি জীবনে কোনো ছেলে প্রেমের প্রস্তাব দিলো না, আর এখানে কেউ আমায় বিয়ের প্রস্তাব দিলো! বয়স তো কম হলো না, যাই এবার বিয়েটা করেই ফেলি। এতো সুন্দর করে বলল ছেলেটা, আমি গল্প লিখবো আর সে সংসার সামলাবে, এমন জামাই কার ভাগ্যে জুটে?
এরপর আমি আর পাঁচ টা মেয়ের মত টাল বাহানা না করে, তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম।
ম্যাসেঞ্জারে আমরা এক রাতেই অনেক বিশাল সংসার পেতে ফেললাম, সে বাজার থেকে কি কি তরকারি আনবে, কোন পুইশাক তরতাজা হবে, কোন ডাটা আনলে রান্নার পর মজা লাগবে, সে পানি দিয়ে ভাল ডিম ভাজতে পারে, সেটা আমাকে রান্না করে খাওয়াবে, আরো কত কত স্বপ্ন বুনলাম।
এরপর হুট করেই আমার মাথায় এলো, আচ্ছা আমি যাকে বিয়ে করবো তার মাসিক ইনকাম কত শুনবো না?
আমি জিজ্ঞেস করলাম,
‘‘আপনার কামাই রুজি কেমন’’
সে আমাকে অবাক করে উত্তর দিলো,
-‘‘কামাই কিভাবে করে সেটাই তো জানি না’’
-তাহলে চলেন কিভাবে?
– সারাদিন শুয়ে বসে বাপের অন্ন ধ্বংস করছি, এভাবেই চলছি।
তার এই কথা শুনে আমার মাথায় বাজ পড়লো, এই ব্যাটা কামাই করে না, আবার
বিয়ে করতে আসছে কোন আক্কেলে? এরপর আরেক বিষয় মাথায় চাপলো, আমি চট করেই তার বয়স জিজ্ঞেস করলাম।
অত:পর তার বয়স শুনে আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেল।
আমার এতো সুন্দর করে সাজানো সংসারটা রাত শেষে ভেঙে গেল!
ছেলেটা আমার চেয়ে ৫ বছরের ছোটো!
এখন আমার হাত পা ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
এমনটা না হলেও পারতো, আমার বিয়ে করাও হলো না,সংসার করাও হলো না।
বিদায় পিতিবি!
Leave a Reply