1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

আমরা তোমাকে ভুলবো না – – – যুথী কাজী – ২৬/০৩/২০২২

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ মে, ২০২২
  • ২৬৯ বার
যুদ্ধ চলছে সারা দেশে। দেশের জনগন রাস্তায় নেমেছে নিজের দেশকে মুক্ত করতে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। যে যেমন হাতিয়ার পাচ্ছে তাই নিয়েই ঝাপিয়ে পরছে পাকবাহিনী হানাদারদের বিরুদ্ধে।
মুজিবর বিয়ে করেছে প্রায় চার মাস হল। সুন্দরী বউ নিয়ে সে খুব সুখেই ছিল।এর মধ্যে দেশে যুদ্ধ লেগে গেল।দূর চারিদিক থেকে মাঝে মাঝে গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।বাড়ীর যুবক ছেলেরা সব একসাথ হয়ে উপায় খুজতে লাগলো কিভাবে বাড়ীর মানুষদের নিরাপদে রাখা যাবে। বাড়ীগুলির একপাশ দিয়ে খাল। সেই খাল গিয়ে পরেছে বিলে আর সেই বিল ধরে অনেক দূর চলে যাওয়া যায়।
মুজিবদের বাড়ীতে মানুষ ছিল অনেক এবং যুবক ছেলেদের সংখ্যা ছিল বেশী যেমন বাবা-মা, মামা, চাচা, খালাদের পরিবারের সবায় মিলে এক বড় গোষ্ঠী।সব মিলিয়ে বিশটার মত ঘর।
বন্দুকের গুলির শব্দ হলেই
বাড়ীর মহিলা আর বাচ্চাদের সবাইকে কোনার দিকের একটা ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হতো আর যুবকরা অস্ত্রর নিয়ে পাহারায় থাকতো।আশে পাশের বাজীর যুবকরাও ওদের সাথে কখনও যোগ দিতো।
সময়টি ছিলো যুদ্ধ শেষ হওয়ার চারদিন আগের ঘটনা। হঠাৎ শোনা গেল পাকবাহিনী গ্রামে ঢুকে পরেছে। চারিদিকে হইচই পরে গেল।সবাই সাবধানে তৈরি হচ্ছে শত্রুদের মোকাবেলা করতে।
দেখা গেল একটি লন্চ মুজিবদের বাড়ীর পাশের খালে নোংগর ফেলেছে। বাড়ীর যুবকরা সবাই অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত।গাছের আড়ালে, ঘরের চিপায়, খড়ের গাদায় আবার কেউ গলা পর্যন্ত পানিতে নেমে অপেক্ষা করতে লাগলো। একঘন্টা অতিবাহিত হলো কিন্তু কেউ লন্চটির বাইরে এসে দাড়ালো না।
এভাবে দুই ঘন্টা থাকার পর মুজিবর ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললো। চার জনের একটি টীম বানিয়ে ফেললো অভিযানে যাওয়ার জন্য। ওরা লন্চটার পিছন দিকটা দিয়ে আক্রমণ করবে বলে সিদ্ধান্ত হলো। খুব সাবধানে ডুব সাঁতারে ওরা এগুতে লাগলো। লন্চের পিছন দিকটায় পৌছে গেছে ওরা। লন্চের ভিতরে থেকে কোন শব্দ আসছে না। মুজিবর আস্তে আস্তে লন্চে উঠে গেল।যে লন্চের দোতলায় উঠতে গিয়েছে এমনিতেই গুলির শব্দ বেজে উঠলো। যারা পানিতে অপেক্ষা করছিলো তারা আর লন্চে উঠতে পারছিলো না। পানিতে থেকেই ওরা গুলি চালালো।মুজিবর ও আড়ালে থেকে গুলি চালাতে লাগলো।এক সময় লন্চের ভিতর থেকে গুলি আসা বন্ধ হয়ে গেল।মুজিবর ভাবলো পাকসেনারা নিশ্চয় আহত বা নিহত হয়েছে।এক লাফ লন্চের দোতলায় উঠে দেখে কেউ কোথাও নেই।কেবিনের দিকে এগুতেই মুজিবুর থেমে গেল।সামনে এক পাকসেনা তার দিকে রাইফেল তুলে দাঁড়িয়ে আছে। হাত থেকে রক্ত ঝরছে। মুজিবর তার রাইফেলের ট্রিগাররটা চাপার আগেই পাকসেনা গুলি চালিয়ে দিল তার বুকে। মুজিবর ও গুলি চালাতে লাগলো।
মুজিবরের বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেল গুলি বর্ষনে। লন্চের দোতলা থেকে সে খালের পানিতে পরে গেল।
লন্চটির ভিতরে একজন রাজাকার আর পাঁচজন পাকসেনা ছিলো।ছয় জনার মধ্যে পাঁচজন গুলাগুলিতে আগেই মারা গিয়েছিলো।
মুজিবরের রক্ত খালের পানির স্রোতে ভেসে যেতে লাগলো।মৃত্যর আগে সে একটি কথাও বলতে পারেনি। হয়তো সে সময় তার নতুন বধূর সুন্দর মুখটি খুব মনে হয়েছিলো……..। হয়তো দেখেছিল তার নববঁধুর পরনের লাল সবুজ শাড়ির আঁচলটি পতাকার মত উড়ছে……..
তার পরদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হলো।
(একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে আমার লেখা )
May be an image of 1 person and text that says "বিনম্র শ্রদ্ধা সকল শহীদের প্রতি Î..."

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..