ধরেন আপনার এক বিদেশি বন্ধুর সাথে পরিচয় হলো। বন্ধুটি ইংরেজি জানেনা। আপনি ও তার ভাষা জানেন না। এখন তার সাথে কথা বলতে হলে কি করতে হবে? হাত পা নেড়ে বোবাদের মত বুঝাতে হবে! রাইট?
এটা যে কি কষ্ট তা আমি বুঝেছি আমার এক পাঞ্জাব বন্ধুর সাথে কথা বলতে গিয়ে। আমার পাঞ্জাব বন্ধুটির সাথে পরিচয় ২০১৪ সাল থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে। শুরুতে আমাদের ইংরেজিতে টুকটাক কথা হতো। ও ভালো ইংরেজী বলে আর আমি ইংলিশ বলার চেয়ে বুঝি ভালো। ওকে বললাম আমি হিন্দি ভালোই বুঝি, তো ইংরেজি আর হিন্দি মিলিয়ে কথা বলবো। তাই ই চলতো বরং হিন্দিতে বেশি চলে।
তারপর ওর যখন বিয়ে ঠিক হয় আমাকে দাওয়াত দেওয়ার জন্য প্রথম ফোন করে। রিসিভ করে হাই হ্যালো বলার পর, আমি না ভালো ইংলিশ বলতে পারছি না হিন্দি। হিন্দি আমি মেসেজে লিখে যতটা বুঝাতে পারি, কন্টিনিউয়াসলি বলতে গিয়ে বেঁধে যাচ্ছে।
আমি আমার মনের কথা খুলে মুখে প্রকাশ করতে পারছিনা। আমার দূর্বলতা প্রকাশ করে বললাম, “ম্যায় হিন্দি মে লিককার বাত কার সাকতি হু, লেকিন বলনে মে তাখলিফ হুয়া।” ও ব্যাপারটা বুঝে বারবার বলছে ইটস ওকে, নো প্রবলেম। শেষে আধা ইংলিশ আধা হিন্দিতে কথা শেষ করলাম। তারপর থেকে ও কল দিলে বলি আমার এখানে নেট সমস্যা। কথা হবেনা বাট মেসেজিং করা যাবে। ও হাসে আর বলে, নেট প্রবলেম কাব সলভ হোগি!
ও বাংলা শিখতে চায় বাট আমার অলস লাগে। তবে জাকারবার্গকে অসংখ্য ধন্যবাদ দেই মাঝেমাঝে। ফেসবুকে যদি বন্ধুত্ব হয়ে থাকে তাহলে আমার ঐ ভারতীয় বন্ধুর সাথে হয়েছে। অদূরবর্তী এক বন্ধুর সাথে আমি নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারি আমার মন খারাপের কথা। যা অন্য কারো সাথে করিনা। ও আমাকে সুন্দর করে উপদেশ দেয়। আমার সাথে তাল মেলায়। আমাকে বোঝায়। আমার জন্য দোয়া করে। আমাকে খুশি করতে আমার কোন লেখা না বুঝেই প্রসংশা করে। আমি বাংলাদেশী ও ভারতীয় বলে আমাদের মধ্যে কখনো কোন ইস্যু নিয়ে আর্গুমেন্ট হয়না।
আমি সোশ্যাল মিডিয়ার একদিক প্রসংশা করি। কারন, এখানে ভালো খারাপ দুটোই আছে। আপনি কোনটা গ্রহণ করবেন সেটা আপনিই ডিসাইড করবেন। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে আমরা যেমন সহজেই অনেককিছু করতে পারি। তার পরিণাম স্বরুপ ইতি/নেতি বাচক দুটোই ভোগ করি। আমি যেমন অনেক অসাধারণ মানুষের সান্নিধ্যে পেয়েছি। তাই সোশ্যাল মিডিয়া আমার কাছে শতভাগ পজিটিভ না হলেও বেশিরভাগ পজিটিভ।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply