1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

হুমায়ুন আহমেদ ও একজন বাবাঃ ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ মিলি সুলতানা

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ২২৯ বার
গুলতেকিন খানের গর্ভে হুমায়ূন
আহমেদের ৩ কন্যা এক ছেলে।।নোভা, শীলা, বিপাশা ও নুহাশ। তিনটি কন্যাই অসম্ভব রুপবতী ও গুনবতী। নোভা আমেরিকা থেকে পিএইচডি করা। নোভা বেশ ধার্মিক মাইন্ডের।নিয়মিত হিজাব পরেন। শীলা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অনার্স ও এমএতে ইকোনমিকসে প্রথম শ্রেণী পাওয়া ছাত্রী।
বিপাশা ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ইকোনমিকসে অনার্স এবং এমএতে প্রথম শ্রেণী পেয়ে আমেরিকায় সর্বোচ্চ শিক্ষা গ্রহনে গিয়েছিলেন।
তিন মেয়ের মধ্যে বিপাশা সম্ভবত বেশী মাত্রায় রুপবতী। আর স্যারের ফিলোসফি অনুযায়ী অসম্ভব রুপবতী মেয়েরা বোকা হয়। হুমায়ূন স্যারের ধারনা ছিল, বিপাশা তাকে অপছন্দ করেন। কেন এ ধারনা হয়েছিল, আমার
জানা নেই। তবে স্যারের ভাষ্যমতে, এই মেয়ে তার জিনগত কিছু বৈশিষ্ট্য বয়ে বেড়াচ্ছেন।
মেয়েদের মধ্যে শীলা ছিল স্যারের বেশী অনুগত। গায়ে গায়ে ঘেঁষে থাকা টাইপের। একবার হুমায়ূন স্যার তাঁর পরিবারের সবাইকে নিয়ে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে বেড়াতে যান। শীলার বয়স তখন ১২ কি ১৩। অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতে স্যার হোটেলে না উঠে তাঁর এক পরম কাছের বন্ধু ফজলুল আলমের বাসায় উঠেন। অনেকগুলো শখের কাজের মাঝে হুমায়ূন স্যারের অন্যতম একটা শখ ছিল–ক্যাম্পিং। ফজলুল আলম ক্যাম্পিং এর ব্যাবস্থা করলেন। প্রচন্ড শীত পড়েছিল তখন। তাঁবুর ভিতর জড়োসড়ো সবাই ঘুমিয়ে আছেন।
হঠাৎ মাঝরাতে কান্নার শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙ্গে গেল। জেগে দেখেন তাঁর কলিজার টুকরা শীলা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। স্যার বললেন, “মা কি হয়েছে?”
শীলা বলল, “আমি শ্বাস নিতে পারছিনা বাবা।”
স্যার বুঝতে পারলেন, তাঁর মেয়ের
ক্লস্ট্রোফোবিয়া আছে। আমার ধারনা অনেকেই এই শব্দটা আগে শোনেননি। ক্লস্ট্রোফোবিয়া
নামে একটা শব্দ আছে। যার বাংলায় অর্থ ‘বদ্ধতাভীতি’। যার মাঝে ক্লস্ট্রোফোবিয়া থাকে,
বদ্ধ কোন স্থানে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। প্রচন্ড ভয় ও কাজ করতে পারে। এই ধরনের মানুষ
কখনো চোর-পুলিস খেলতে গিয়ে, আলমারি বা ছোট বদ্ধ কোনো জায়গায় নিজেকে লুকাতে ভয় পায়। এই বদ্ধতাভীতি থেকে হৃদযন্ত্রের
ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
যাই হোক, যা বলছিলাম। যখন
স্যার বুঝতে পারলেন তাঁর প্রিয় শীলার ক্লস্ট্রোফোবিয়া আছে, তখন তিনি বললেন,
“মা তুমি গরম কাপড় গায়ে দাও। আমরা বাইরে গিয়ে বসে থাকব”।
সারা রাত স্যার তাঁর মেয়েকে নিয়ে তাঁবুর
বাইরে বসে রইলেন। এক পর্যায়ে শীলা বাবার
কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে যখন মেয়ের ঘুম ভাঙলো, সে বলল ,
“বাবা, তুমি একজন ভালো মানুষ”। আর তখনই হুমায়ূন স্যার তাঁর বিখ্যাত উক্তিটি করেছিলেন।
” মা! পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই”।
হয়তো ততদিনে শীলা বুঝে গিয়েছিল,
পৃথিবীতে খারাপ বাবাও আছে। যেমন, তার বাবা। বড্ড অভিমানী শীলা। প্রিয় বাবাকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল। মা গুলতেকিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ, এরপর তারই ক্লাসমেট শাওনকে বিয়ে করার অপরাধে। একজন মেয়ের জায়গায়,
শীলা নির্ভুল ছিল হয়তো। আমি হলেও অভিমান হত। এত ভালবাসা এত জনপ্রিয়তা এত
অহংকার যখন শেষ হতে দেখে,কার না অভিমান হবে? হুমায়ূন স্যারও ছিলেন বড্ড জেদী। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তিনিও।
তবে অভিমান আর ঘৃণা যে এক নয়, তা হয়তো আমরা সবাই জানি। তাইতো বাবাকে অন্তিম
শয়নে দেখে অভিমানী আদুরে শীলা পৃথিবীর
বুক ভেঙ্গে দিয়েছিল তার অশ্রুবর্ষনে।
——————————
—————— কার্টিসি~~ ডার্ক এভিল।
May be an image of 2 people and text

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..