1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

ছোট্ট কথার গল্প। – নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। – – – আরিফা রহমান

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৫৯০ বার
বাবা-মার সংসারে থাকার সময় আমাদের পরিবারে জন্মদিন পালন করার প্রথা চালু হয় আমার হাত ধরেই। কবে কিভাবে মনে নেই। তবে আমিই প্রথম খুঁজে খুঁজে বের করি সবার জন্ম তারিখ। মেজো কাকার ট্রান্কে থাকা ছোট্ট ডায়েরিতে লেখা পাই ছোট কাকার হাতের লেখা। যেখানে আমার বড় বোন শরিফা আপা, মেজো কাকার ছেলে রুহুল আমিন, মেজো ফুপুর মেয়ে শিউলি আপা এবং আমার জন্ম তারিখ লেখা ছিল। উৎসাহ ওখান থেকেই শুরু। এরপর খুঁজে খুঁজে বের করলাম ছোট ভাইবোনদের জন্ম তারিখ। অবশ্য অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে সবার জন্মতারিখ স্টাবলিশ করতে।
আর জন্মদিন পালন করা ? সেতো হিন্দু প্রথা, খ্রিষ্টানদের কাজ, আমাদের মতো কনজারভেটিভ মুসলমান ফ্যামিলি তখন এটাই বুঝত। যুগের সাথে কালের সাথে এখন অবশ্য অনেক পরিবর্তন। জন্মদিন সে নিয়ে কত ইতিহাস তৈরি হয়েছে আমার জীবন ডায়েরিতে। মাসে ১ টাকা পাওয়া টিউশনির টাকা দিয়ে ছোট ভাই বোনদের জন্মদিন পালন করার কত ইতিহাস রচনা করেছি। কত বকা ,চোখ রাঙ্গানো দাদা-দাদু আর মা’র কাছ থেকে পেয়েছি। তবুও অভাব অনটনের সংসারে এ আনন্দ টুকু জোর করেই আদায় করে নিতাম।
সবার জন্মতারিখ নিয়ে আমার কৌতুহল , আমার উদ্দীপনা, লাফালাফি-ফালাফালি আর মাতামাতি থাকলেও আমার জন্মদিন নিয়ে কৌতুহল, উৎসাহ কখনো কারো মধ্যে পাইনি। তবে আমি থেমে থাকতাম না ।উৎসাহটা আমি নিজেই তৈরি করতাম। আয়োজন ও করেছি নিজেই। যদিও পরে আয়োজনটা একটা সময় স্পেশালই হয়ে গেছে। ভুলিনি ফুলবাড়িয়ার বন্ধুবান্ধব আর বন্ধু বিশ্বকে। ভুলিনি তাসলিমা- জোসনার নেতৃত্বে এক টাকা দুই টাকা করে চাঁদা তুলে আমাকে একটা ডাইরি উপহার দেওয়ার সেই শুভক্ষণ।
এখন আর আমার জন্মদিন আমাকে আয়োজন করতে হয় না। বিশেষ করে ২০১১ পর থেকে।
ঢাকায় আসার পর Roksana Nupur, Maksuda Begum , Akhi Akter , Mohammad Farhad (আমার বন্ধু) এরা আমার জন্মদিন নিয়ে অনেক স্মৃতি রচনা করেছে। এদের সাথে আমার ধন্যবাদ’র সম্পর্ক না। তাই ধন্যবাদ দিতে বুক কাঁপে।
আমার “প্যাসিফিক আইডিয়াল স্কুল” এবং “পলক কোচিং সেন্টার”শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ তারাও একবার আমাকে বিশাল চমক দিয়েছিলেন। যা হৃদয়ে আজ ও দাগ কাটে। জানিনা আজ তারা কোথায় কেমন আছেন। ভুলিনি আপনাদের সেই ঐতিহাসিক আনন্দ দেওয়ার মুহূর্তের সেদিনের জন্মদিন।
২০১১। নতুন সম্পর্কে আবদ্ধ হই। ভুল বোঝাবুঝি,মান অভিমান, রাগারাগী যত যাই হোক না কেন। আমার জন্ম তারিখ স্পেশাল করেছেন আজ অবধি। জীবনে প্রথম মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটার আনন্দ তার কাছ থেকেই পাওয়া। হা আমি Mosiur Rahman Rubel ” এর কথা বলছি। তাকে ধন্যবাদ দিতে বুক কাঁপে না। একটা অন্যরকম অনুভব কাজ করে নিজের মধ্যে। যে অনুভূতি কোন কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে সাহস খুঁজে পাওয়া যায় না।
তেমনি কর্মব্যস্ত সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়েছিল গতকালের আনন্দটুকু ও। যা রুবেলের কাছ থেকেই পাওয়া। সাথে স্পেশাল ভাবে যোগ হয়ে আমাকে চমকে দিয়েছেন Doctor Nahida Naznin “মেডাম।
রাত আড়াইটা পর্যন্ত সময় দিয়েছেন তিনি আমাকে। রাতের শেষ প্রহরে ছোট ছোট দুটি বাচ্চাকে নিয়ে তিনি যখন আমার বাসা থেকে বের হয়ে যান অজান্তেই চোখে পানি এসেছিল আমার। কে বলে ? রক্তের সম্পর্কই পৃথিবীতে সব?
এছাড়া মেসেঞ্জারে প্রায় 300 জন লোক আমার জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। ফেইসবুকে ট্যাগ করেছেন কেউ কেউ। তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকবেন। সবাই সবার মত করে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..