নেতাজিকে হত্যা করার জন্য আঁটঘাঁট বেঁধে নেমেছিলেন এক ইংরেজ চাটুকার। ভারতীয় হয়েও হত্যা করতে চেয়েছিলেন সুভাষের মত মহামানবকে। ইংরেজ বাহিনীর পদস্থ অফিসার শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন দাস সেদিন নেতাজিকে চালিয়েছিলেন গুলি। কিন্তু সুভাষের বদলে সে গুলি সেদিন তাঁর গাড়ির চালককে বিদ্ধ করে।
না, জয়রঞ্জন এই হামলা চালিয়ে বাঁচার আর সুযোগ পাননি। আজাদ হিন্দ ফৌজের ’রানি ঝাঁসি রেজিমেন্ট’-এর সদস্যা নীরা আর্য তাকে পেটে বেয়নেট চালিয়ে তাঁকে হত্যা করেন।
কিন্তু জানেন কি, যাকে তিনি হত্যা করেছিলেন সেই শ্রীকান্ত আসলে কে ছিলেন? তিনি ছিলেন নীরা আর্যের স্বামী!
হ্যাঁ। নেতাজিকে বাঁচাতে তিনি নিজের স্বামীকে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করেননি। অভিভূত নেতাজি নীরাকে অভিহিত করেছিলেন ‘নাগিনী’ নামে। কলকাতায় পড়াশুনো করা নীরা ইংরেজি-হিন্দি-বাংলা সহ আরো একাধিক ভাষায় দক্ষ ছিলেন। দেশের প্রতি ছি.ল অগাধ ভালবাসা।
অথচ সেই নীরারই বিয়ে হয়ে ইংরেজ-ভক্ত অফিসার শ্রীকান্ত জয়রঞ্জন দাসের সঙ্গে। যার সঙ্গে নীরার মতাদর্শের কোনো মিলই ছিল না।
শ্রীকান্তকেই ব্রিটিশরা গোপনে নজরদারি চালিয়ে এবং সুযোগ বুঝে নেতাজিকে হত্যার নির্দেশ দেন। কিন্তু শ্রীকান্তর সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন তাঁর স্ত্রী।
নেতাজি নীরাকে ফৌজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। গুপ্তচর হিসেবে ব্রিটিশ বাহিনীর প্রচুর গোপন খবর সংগ্রহ করেছিলেন নীরা।
নীরাকে স্বামী হত্যার কারণে দ্বীপান্তরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। জেলে বন্দীদশায় তাঁর উপর চলেছিল অকথ্য অত্যাচার।
স্বাধীনতার পরে মুক্তি পান তিনি। ফুল বিক্রি করে জীবন কাটিয়েছিলে। শেষে অসহায়-নিঃস্ব নীরার মৃত্যু হয় ১৯৯৮ সালে।
তবে আজাদ হিন্দ ফৌজের এই বীর সেনানী আজও অমর হয়ে আছেন তাঁর অসামান্য কীর্তির জন্য।
Leave a Reply