এ এপ্রিল ফুল উদযাপনের মূল বিষয় হচ্ছে “মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানো”। উৎসবের মূল উপকরণ মিথ্যা এবং ধোঁকা। বিশ্বব্যাপী ইংরেজি বছরের পহেলা এপ্রিল আনন্দ ও মজা করার লক্ষ্যে মানুষকে বোকা বানানোর দিন হিদেবে এপ্রিল ফুল নামে পালন করা হয়। সমাজে প্রচলিত এ এপ্রিল ফুল, কালচার বা সংস্কৃতি ইসলামে বিবেক বর্জিত আদর্শহীন অসুস্থ ও অসুন্দর সংস্কৃতি হিসেবে পরিচিত। অন্য হিসেবে স্পেনে মুসলিম নিধন হিসেবে যদি কেউ এপ্রিল ফুল উদযাপন করে তবে তা হবে সর্বকালের সেরা নিষ্ঠুর সংস্কৃতি। ইসলামের আলোকে এপ্রিল ফুল সংস্কৃতি উদযাপনে তিনটি বড় অপরাধ তথা কবিরা গোনাহ সংঘটিত হয়। যে গোনাহগুলো এপ্রিল ফুল উদযাপনের মূল উপকরণ। তাহলো
★মিথ্যা কথা বলা।
★ধোঁকা দেওয়া বা প্রতারণা করা।
★ইসলাম বিদ্বেষীদের অনুকরণ।
এপ্রিল ফুল উদযাপনের বড় উপাদান হলো মিথ্যা কথা বলা। দুনিয়ার সব ধর্ম এবং সব সভ্যতায় মিথ্যা বলা ঘৃণিত এবং জঘন্য অপরাধ। মিথ্যা ছাড়া এ উৎসব পালন করা সম্ভব নয়।
আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত,
নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে আর নেকি জান্নাতে পৌছায়। আর মানুষ সত্যের উপর কায়িম থেকে অবশেষে সিদ্দীকের দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়, পাপ তাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা কথা বলতে বলতে বলতে অবশেষে আল্লাহর কাছে মহা মিথ্যাচারী প্রতিপন্ন হয়ে যায়। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬০৯৪)
মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিথ্যা কথা মুনাফিকের চরিত্রের অন্যতম আলামত বা চিহ্ন বলেছেন।
মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি,
১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে;
২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে;
৩. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩)
সুতরাং ইসলাম কখনোই মিথ্যা বলাকে সমর্থন করে না।
এপ্রিল ফুল এর আরেকটি প্রধান উপকরণ ধোঁকা। মানুষকে বোকা বানানোর জন্য বিভিন্ন উপায়ে তাকে ধোঁকা দেওয়া হয়। যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় তখন তারা বলে মজা করে ধোঁকা দিয়েছে অথবা মিথ্যা বলেছে মজার ছলে। যদি ধোঁকা খাওয়া মানুষটি এ আচরণে কষ্ট পায় তবে তা আরেকটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
বাহয ইবনু হাকীম রা. থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, আমার পিতা তার পিতার সূত্রে আমাকে হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, মানুষকে হাসানোর জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৯৯০)
প্রতারণাকারী সবসময়ই নিন্দনীয়। প্রতারণা কখনো ইসলাম সমর্থন করে না।
মহানবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করে তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৪৫২)
ইসলাম বিদ্বেষীদের উৎসব অনুকরণ করা মানেই তাদের সংস্কৃতি, তাদের ধর্ম মানা। ইসলাম সমর্থন করে না এমন উৎসব উদযাপন করে যে তার আমলের পথ জাহান্নামের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।
ইবনু ‘উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে তাদের দলভুক্ত গণ্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ্দ, হাদিস নং ৪০৩১)
সুতরাং মুমিন মুসলমানদের জন্য বিজাতীয় অন্যায় ও গোনাহের সংস্কৃতি এপ্রিল ফুল প্রত্যাখ্যান করা, এপ্রিল্ফুল থেকে নিজেদের বিরত রাখা এবং এপ্রিল ফুলকে না বলা ইমানের একান্ত দাবি। আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলিম উম্মাহকে বিজাতীয় ঘৃণ্য মিথ্যা ও ধোঁকার সংস্কৃতি এপ্রিল ফুল থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।
আমিন।
Leave a Reply