ওলাইকুমুস সালাম। তোমার নাম যেন কি?
স্যার আমার নাম সানজিদা রহমান
আমিতো তোমাদের কোনো ক্লাস নেই না?
জ্বীনা স্যার। তবে আমি আপনার টিউটোরিয়াল গ্রুপে আছি।
তাইতো মনে হচ্ছে তোমাকে দেখেছি।আগামি পরশু তোমাদের টিউটোরিয়াল পরীক্ষা। কোন প্রয়োজন মনে করলে এসো।
এই সানজিদা স্যার তোর সাথে এতক্ষন কি কথা বলল?
আরে তেমন কিছুই না নাম, কোন বর্ষ এসব
হুম জানিতো আরাফ হোসাইন।
বাব্বা নামও জানিস সানজিদা
তুই কি পাগল? জানবো না কেন?তোর আর আমার টিউটোরিয়াল স্যার। স্যার আমাদের দুদিন ক্লাস নিয়েছে। তুই তো ফাঁকিবাজ।ক্লাস করিস না
আরে আমি কালকেই জেনেছি আমি এই স্যারের গ্রুপে। অন্য ক্লাস বাদ দিবো কিন্তু স্যারের ক্লাস বাদ দিবো না।সানজিদা তুই কি জানিস,এই স্যার ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে সুন্দর, স্মার্ট। এখনো বিয়ে করে নি। কত ছাত্রি স্যারের উপর ক্রাশ খেয়ে আছে। আমি নিজেও স্যারের উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছি।
কি বলিস পিংকি! সত্যি ক্রাশ খেয়েছিস। টিউটোরিয়াল ক্লাস নেওয়ার সময় দেখিস, বেহায়ার মত স্যারের দিকে তাকিয়ে থাকিস না। আমাদের লজ্জায় ফেলিস না।
দোস্ত আমার জন্য দোয়া করিস। স্যারের সাথে আমার প্রেমটা যেন হয়ে যায়।
যা দোয়া দিয়ে দিলাম। মধুর কেন্টিনে ভরপেট কিছু খাওয়ায়ে দিস।
কলেজ পর্যন্ত পুর্ব পশ্চিম বুঝতি না। এখন তো দেখি মুখে খই ফুটছে।
এখনো তোর মতো বুঝি না। পিংকি যাইরে।
দোস্ত কিছু সময় থাক । চল রবিনদের সাথে আড্ডা দেই।
তুই তো জানিস আড্ডা আমার ভালো লাগে না।
ক্লাসের ছেলেরা তোর কথা জানতে চায়। তোর উপর ক্রাশ খেয়েছে। সিনিয়র ভাইয়েরাও তোর খোঁজ করে।
কিযে বলিস! আমার উপর কেন ক্রাশ খাবে। ক্লাসে কতো সুন্দর মেয়ে আছে।
আরে দোস্ত তুই যে কত সুন্দর, বাসায় যেয়ে আয়নায় দেখিস। পড়া ছাড়া কিছু বুঝিস না। এই যে ক্লাস করতে এসেছিস মাথার চুল এলোমেলো। এতো বড়লোকের মেয়ে তুই কি জামা পড়ে এসেছিস। আমাকে দেখ কত সুন্দর গুছিয়ে আসি। পড়ার পাশাপাশি এসবেও মনোযোগ দে।
আমি এলো মেলো আসি তারপরেও ক্রাশ খায় আমার উপর ছেলেরা!
ঐ যে আল্লাহ তোকে একখান সুন্দর চেহারা দিয়েছেন।
কি যে আবোল তাবোল বলিস। বাসায় যাই রে।
টেবিলে খাবার দেওয়া আছে । খেয়ে নাও। আমি নামাজটা শেষ করে আসি।
আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি নামাজ শেষ করে এসো। আমরা তিন ভাই এক বোন। আমি সবার ছোট। বাবা ব্যবসায়ি ছিলেন। বড় দুই ভাই ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, ছোট ভাই বাবার ব্যবসা দেখেন। বাবা পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন। বড় দুই ভাবী সরকারি কলেজের শিক্ষক। ছোট ভাই এখনো বিয়ে করে নি। মা ছোট ভাইয়ের পাত্রি দেখছে। কিন্তু ছোট ভাই বিয়ে করতে চাচ্ছে না। কেন বিয়ে করতে চাচ্ছে না তা নিয়ে দুইভাবি চিরুনি তল্লাসি দিচ্ছেন।
সন্জু এসো ভাত খাই। কই তৃমি?
এইতো মা, আসছি। বাহ সবই তো আমার পছন্দের মেনু। মা, ভাইদের পছন্দের মেনুও রান্না করো। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবই করি। বউরা মাঝে মাঝে কিটো ডায়েটে যায়। তোর ছোটো ভাইও ডায়েট করে । তেমন খায় না। সন্জু, তোর ছোট ভাই শুকিয়ে যাচ্ছে খেয়াল করছিস?
মা আমি তো পেট পুরে দুই থাল ভাত খাই তারপরও মোটা হচ্ছি না। আচ্ছা ছোট ভাই কে বলবো বেশি করে খেতে। আমার খাওয়া শেষ। আমি এখন একটু রেস্ট নিয়ে পড়তে বসবো। আগামি কাল পরীক্ষা। তুমি ঘুমাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে পড়া নাকি কমে যায়। তুই তো সেই আগের মতই পড়ছিস।
মা, তুমি তো জানো আমার স্বপ্ন কি?
Leave a Reply