অহনার চোখে অবাধ্য অশ্রু টলটল করছে, যে কোনো সময় চোখের নদী থেকে সকল কষ্ট, সকল অভিমান ঝড়ো করে উপচে পড়বে।
সে সমস্ত অনুভূতি দিয়ে অশ্রু আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এদের সামনে কোনো ভাবেই লজ্জায় পড়তে চায় না। সকল চেষ্টাকে ব্যর্থ প্রমাণীত করে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল, চোখ থেকে গালে, গাল থেকে সরাসরি বিউটিশিয়ানে হাতে।
” ম্যাডাম কোনো সমস্যা?শরীর খারাপ লাগছে নাতো? বা কোনো কসমেটিক্সে আপনার এলার্জি নেই তো! সেটা আগে বলবেন না! আপনার চোখ থেকে পানি পড়ছে সমানে।”
অহনা কোনো ভাবে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল
” না ঠিক আছে কোনো সমস্যা নেই। আপনার ব্যস্ত হওয়ার কোনো দরকার নেই। কোনো কসমেটিক্সে কোনো এলার্জি নেই।”
“আসলে পুরো সাজটাই নষ্ট হয়ে গেছে আইশ্যাডো, আইলানার, কাজল সব লেপ্টে গেছে।”
মহিলা হতবাক হয়ে অহনার দিকে তাকিয়ে আছে। দেড় ঘন্টা ধরে সাজানো হয়েছে। সাজের প্রায় ৮০% কমপ্লিট। এই অবস্হায় বলছে সাজবে না।
অহনা খুব শান্ত ভাবে বলল
” কোনো সমস্যা নেই। আমি ফুল পেমেন্টই করব আপনাদেরকে। আপনি কষ্ট করে আমাকে ফ্রেশ করে দিন।”
বিউটিশিয়ান বুঝতে পেরেছে বিরাট কোনো সমস্যা হয়েছে। যেভাবে উচ্ছাস নিয়ে একটা মেয়ে সাজতে এসেছে। সে হঠাৎ করে জলন্ত প্রদীপের মত দপ করে নিভে গেল কেন?
এই বিউটিশিয়ানের নাম সিমলা। সে একটা মারাঠি মেয়ে। পাঁচ বছর ধরে সে এই বিউটি পার্লারে কাজ করে। অহনাকে সে ভালো ভাবেই চিনে। এই পাঁচ বছরে অহনা মিনিমাম চল্লিশবার সাজতে এসেছে, বেশির ভাগ তার বিয়ের উদ্দেশ্যে।
প্রথম প্রথম বান্ধবীরা অনেকেই আসত। এখন সে একা একাই আসে।
অহনা মনে মনে রেহানাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে। যদি রেহানা টেক্সট করে না জানাতো, তাহলে এই সং সেজে সে কীভাবে বাসায় ফিরতো!
রেহানা হচ্ছে অহনার ছোট বোন। ওরা তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে রেহানা সবার ছোট।
সে এবার মাস্টার্স দিবে অর্থনীতি থেকে। ভীষণ মেধাবী, এবং দৃশ্যমান সুন্দরী।
সবাই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। বাসায় গিয়ে শুনতে হতো, আজ ওরা আসবে না। ব্যক্তিগত একটা সমস্যায় পড়ে গেছে।
এরপর আর কোনো দিন যোগাযোগ করবে না। লজ্জার মাথা খেয়ে কখনো ফোন করলে জানা যাবে ছেলের অন্য জায়গায় পছন্দ আছে।
অহনা এখন আগ থেকে সব বুঝতে পারে। কারণ, এমন ঘটনা তার সাথে একবার নয় বারবার ঘটেছে।
ওরা যে আসবে না এটা তো দশ মিনিট আগের ডিসিশান নয়। নিশ্চয়ই দশ দিন আগের। দশ দিন আগের না হোক দশ ঘন্টা আগের তো হবেই।
এক বছর ধরে কথা চলছে, বায়োডাটা আদান প্রদান হয়েছে, চৌদ্দ গোষ্ঠীর খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে, ফোনে কথা বলা হয়েছে সব কিছু ঠিক আছে। আজ দেখলেই পাকা কথা। সব ঠিক থাকলে বিয়েও হয়ে যেতে পারে।
একটা হৃদয় কতবার ভাঙবে? কেউ কি কষ্ট করে বুকের ভিতরটা একটু দেখবে?
কষ্টের ক্ষত গুলো কত বিরাট গর্ত হয়ে গেছে।
এই গর্ত থেকে প্রতিদিন রক্তক্ষরণ হয়। কালো রক্ত।
মানুষের কথার বাণে জর্জরিত হয়ে কালো হয়ে গেছে।
সেই গর্তে অহনা বাববার পড়ে, হাজার বার পড়ে, আবার উঠে।
কেন প্রকৃতি তার সাথে এমন কঠিন প্রহসন করছে? সে তো কারো কাছে বিয়ে চায়নি। কারো সাথে কোনো সম্পর্কে জড়ায়নি। কারো মুখে কখনো চুনকালি দেয়নি।
সমস্যা কি এটাই? তার বয়স ৩৪!
আসলেই সমস্যা, কিন্তু প্রশ্ন হলো ৩৪ বছর পর্যন্ত তাকে কেন বিয়ে দেয়া হয়নি?
সে তো দেখতে এখনকার মত এত খারাপ ছিল না। এত হাড় লিকলিকে শুকনো শরীর তার ছিল না। বংশ মর্যাদার ও ঘাটতি ছিল না। বাবার টাকা পয়সার ও কমতি ছিল না।
বিয়ের প্রস্তাবও কম আসেনি। সেই ইন্টার মিডিয়েট থেকে শুনে আসছে তার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসে।
তাহলে তাকে এতগুলো বছর কেন অপেক্ষা করতে হয়েছে?
একটা মেয়ের নাকি ৩০ এর পর মা হওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়, যৌন ইচ্ছে কমে যায়।
যৌন ইচ্ছে বা যৌনতা কখনো তাকে সে ভাবে উথাল পাথাল করেনি। তবে বান্ধবীদের বিয়ের সাথে সাথে একটা সংসার, একটা স্বামী, একটা সন্তানের স্বপ্ন সেও দেখেছে।
এখন আর দেখে না।
অনুভূতিহীন ঝড় পদার্থ হয়ে গেছে। শুধু বাবা মার জন্য তার খারাপ লাগছে। বাবা স্ট্রোকের রোগী, আজ আছে কাল নেই। মা প্যারালাইজড হয়ে হুইল চেয়ারে পড়ে থাকেন, মার থাকা আর না থাকা সমান।
ভাইয়ের বউরা ও ইদানিং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। কথায় কথায় এটাই প্রমাণ করতে চায় সে কতটা অযোগ্য আর অপদার্থ।
অযোগ্য আর অপদার্থ না হলে কী বারবার চাকুরির ইন্টারভিউ দিতে হয়?
বারবার বিয়ের ইন্টারভিউ দিতে হয়?
চাকুরি না হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। আজকের কম্পিটিশানের যুগে চাকুরি পাওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতা থাকার দরকার সেসব কোনোটাই তার নেই।
সার্টিফিকেটের জোর ও নেই, দুটোই থার্ড ক্লাস।নিজেকে ঠিক ভাবে প্রেজেন্ট করতে পারে না ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে।
কেমন ঘামতে থাকে। যখন প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে, তখন অপ্রস্তুত হয়ে যায়, জানা প্রশ্ন ও ভুলে যায়। ফলাফল তার কোনো ভালো চাকুরি নেই।
বিয়ে নেই কেন?
সে কি দেখতে খুব অসুন্দর? তার মতো অসুন্দর মেয়ে কি পৃথিবীতে নেই?
ওরা কি সংসার করছে না?
শুধু মাত্র গায়ের রং টাই কৃষ্ণ বর্ণ!
(২)
অহনা দিঘীর পাড়ে বসে আছে। মাঝে মাঝে মন খারাপ হলেই সে এখনে বসে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে যায়, অথচ ঘরে ফেরার কোনো তাড়া থাকে না।
সে জানে তার জন্য কেউ বসে নেই। পৃথিবীতে তার প্রয়োজন দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে। বাসার কেউ প্রয়োজন না হলে খুব একটা কথা বলে না, মা ছাড়া।
রেহানাও ইদানিং তুই তোকারি করে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয় অহনার জন্যই তার বিয়েটা হচ্ছে না। অদৃশ্য হওয়ার কোনো এ্যাপস থাকলে আজ সে সেটা ব্যবহার করত।
দিঘীর শান্ত জলের মাঝে তাকিয়ে বারবার অহনার মনে হচ্ছে এই জলের মাঝে যদি অদৃশ্য হওয়া যায় মন্দ কী!
সাঁতার ও তো জানে না।
আশেপাশে কত লোকজন, কত কোলাহল অথচ কোনো কিছুই তার কর্ণকুহরে পৌঁছাচ্ছে না।
এখন আর অহনার তেমন বন্ধু – বান্ধব ও নেই। বেশির ভাগ বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে। যে দুই একজন আছে তারাও সবাই ব্যস্ত, হয় চাকুরি নিয়ে, না হয় প্রেম নিয়ে।
একটা সময় তো অনেকেই প্রেম করতে চাইত। কিন্তু প্রেম করলে বাবা মা কী মনে করবে, ভাইয়ারা কষ্ট পাবে। পাড়া -প্রতিবেশীরা, আত্নীয় – স্বজনরা খারাপ ভাববে। এই সব ভেবে আর কিছুই হলো না অহনার।
অহনা মনে মনে ভাবছে একটা প্রেম করলে আসলে মন্দ হতো না।
ব্যাগের মধ্যে মোবাইলটা ননস্টপ বেজেই যাচ্ছে। আজ কার হৃদয়ে এত জায়গা তার জন্য, যে সমানে ফোন দিয়েই যাচ্ছে।
অহনা মোবাইলটা ব্যাগ থেকে হাতে নিয়ে দেখে ৮৮টা কল।
মোবাইল হাতে না নিতেই আবারো কল।
” Jamil is calling.”
অহনা এক মূহুর্ত বুঝতে পারেনি। কে এই জামিল?
পরে হঠাৎ মনে পড়ল।
সবগুলো কলই কি জামিল দিয়েছে? এই অসময়ে সে কেন?
জামিলকে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চিনে। দক্ষিণের জানালা খুললেই দেখা যায়। হয় বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে, না হয় জানালা দিয়ে উঁকিঝুকি মারছে।
এমন কোনো দিন নেই, এই লোকের সাথে চোখাচোখি হয়নি। ইদানিং দক্ষিণের জানালা খোলাই বন্ধ করে দিয়েছে।
ভীষণ বিরক্ত লাগে লোকটা হ্যংলার মত খালি গায়ে বসে থাকে। এভাবে তিন বছর চোখাচোখি হওয়ার পর। একদিন রাতে মোবাইলে একটা টেক্সট আসে।
“জানালাটা একটু খুলবেন, আমার মা আপনাকে একটু দেখবেন।”
অহনা বুঝতে পারেনি কে এই জামিল? আর তার মা ওকে কেন দেখবেন?
কোনো কিছু চিন্তা না করে সে জানালা খুলে দেখে একটা মধ্য বয়স্ক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই।
এই সেই মহিলা নয় তো, যিনি অহনাকে দেখতে চেয়েছেন।
তাহলে লোকটার নাম জামিল।
কিন্তু সন্দেহজনক কিছু চোখে না পড়ায়, আবার সে জানালার পর্দা টেনে চলে আসল।
এরপর প্রায় লোকটার সাথে পথেঘাটে চোখাচোখি হতো। কিছু একটা বলতে গিয়ে ও আর বলত না।
প্রায় মাস তিনেক হবে দক্ষিণের জানালা খুললে আর এই মানুষটাকে দেখা যায় না। বাসা পাল্টিয়েছে হয়ত।
আসলে অহনা কখনোই লোকটাকে নিয়ে ভাবেইনি। আজ অসময়ে লোকটার ফোন কেন?
ফোনটা রিসিভ করবে কি-না ইতস্তত করতে করতে লাইনটা কেটে গেল। আবার রিং বেজে উঠল।
সেই জামিলের ফোন।
অহনা ফোনটা রিসিভ করবে এমন সময় হাঁপাতে হাঁপাতে জামিল এসে সামনে দাঁড়াল।
অহনা কিছু বুঝে উঠার আগেই হাত ধরে টেনে বলল
“চলুন আমার সাথে।”
শাহানা বেগম কান্না করছেন। তার চোখে কেবল অপারগতা আর অপরাধবোধের অশ্রু। কিভাবে মুখোমুখি হবেন তিনি মেয়েটার? কী জবাব দিবেন তিনি মেয়েটার প্রশ্নের!
“মা আমার বিয়েটা কি আবার ও ভেঙে গেছে?”
পাত্র পক্ষ হয় ওকে দেখতে আসছে না, না হয় এসে খেয়ে দেয়ে চলে যাচ্ছে। পরে জানাবে বলে আর কোনো খোঁজ খবর নেয় না।
ইদানিং অহনা আর বিয়ের কথা শুনলে কোনো উৎসাহ দেখাত না। সে কি কোনো ভাবে বুঝতে পেরেছে বাবা – মা তাকে আর বিয়ে দিতে পারবে না?
কাল রাতেই পাত্রপক্ষ নিষেধ করে দিয়েছিল। কিন্তু অহনাকে কীভাবে বলবে, সে জন্য লজ্জায় আর বলা হয়নি।
মেয়েটা এই ছেলেটাকে নিয়ে অনেক বেশি স্বপ্ন দেখেছিল। রুমে গেলে দেখত বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে কিছু দেখছে। মা বুঝতে পারতেন অহনা আলমের ছবিই দেখছে।
আজ এক বছর ধরে ওরাই বেশি আগ্রহ দেখিয়ে বিয়ের কথা বলে আসছিল। মা ওর বিয়ের কথা শুনলেই ভয় পেতেন, মনে হতো আবার ভাঙবে।
অথচ মেয়েটাকে স্বপ্ন দেখাতে ওরাই বাধ্য করল।
অবশেষে তো জানাতেই হলো, কাল রাতে জানালে হয়তো মেয়েটা এত বেশি কষ্ট পেতো না।
রাত দশটা বাঝে অহনা এখনো বাসায় ফিরেনি।
কল করতে ভয় করছে মায়ের, কী বলবেন তিনি?
সীমা, মিতু এরা কথা বলতে আর ছাড়বে না। অনেক বড় গলা করেই মা বললেন
” এবার তোমাদের কাঁধের বোঝা নামবে! আলমের সাথেই এবার অহনার বিয়ে হয়ে যাবে।”
বিয়ের প্রস্তাব তো আর কম আসেনি অহনার জন্য। আরেকটু ভালো, আরেকটু ভালো করতে করতে সময়ের স্রোত যে এতদুর টেনে নিয়ে এসেছে তার নিষ্পাপ মেয়েটাকে তিনি বুঝতেই পারেননি।
কী অপরিসীম কষ্ট আর অভিমান নিয়ে মেয়েটা তার দিন পার করছে,!
বছর দুয়েক আগেও দেখতেন অনলাইনে কী সব ক্রিম ট্রিমের অর্ডার দিয়ে মুখে মাখত।
ইদানিং একদম নিশ্চুপ হয়ে গেছে। কারো সাথে কথা বলে না। একটু সাজে না, ভালো একটা পোষাক পরে না। কোথাও যায় না। ভেতরে ভেতরে মেয়েটা একদম গুটিয়ে গেছে।
আত্নীয়- অনাত্নীয়, বন্ধু – বান্ধব,পাড়া -প্রতিবেশী সবার একটাই প্রশ্ন অহনার এখনো বিয়ে হয়নি?
হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে শাহানা বেগমের চিন্তায় ছেদ পড়ল।
হাতে একটা মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে, মাথায় বড় একটা ঘোমাটা দিয়ে অহনা ঘরে প্রবেশ করল। ওর ঠিক পিছনেই একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।
মুহূর্তে তার মনটা আনন্দে ভরে গেল।
(৪)
ঘর ভর্তি লোকজন। কাছের দূরের সব আত্নীয় – স্বজন এসে জড়ো হয়েছে। অহনা দো-তলার সবগুলো ঘর খুলে দিয়েছে আত্নীয় – স্বজন থাকার জন্য।
এক এক জন এক এক কথা বলছে। শত ব্যস্ততার মাঝে ও অহনা চেষ্টা করছে সবার সব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার।
অথচ সে ভীষণ অসুস্থ। মাইগ্রেনের ব্যাথায় সারা দিন বিছানায় শুয়ে থাকে।
বেশি কথা তার একদম সহ্য হয় না। হঠাৎ হঠাৎ ব্যাথা বেড়ে যায়।
জামিল ভীষণ টেনশান করছে অহনার জন্য। অহনা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়লে তো সব পন্ডু হয়ে যাবে।
আসলে শরীরের জোরের চেয়ে মনের জোর মানুষের শক্তির একমাত্র উৎস।
অহনাকে দেখলে কে বলবে গত সপ্তাহে তিন দিন ও হসপিটালে থেকে এসেছে।
দূরে দাঁড়িয়ে জামিল অহনার হাসি মাখা মুখ দেখছে। অহনার উচ্ছ্বাস দেখে আনন্দে জামিলের চোখে পানি এসে গেছে।
এই বিশ বছর বিবাহিত জীবনে জামিলের একটাই চেষ্টা ছিল অহনার মুখে হাসি ফোটানো।
এক জীবনে মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। জামিল আর কষ্ট দিতে চায়নি।
সুখী করতে পেরেছে কিনা জানে না, তবে জামিল চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি।
মেয়েটার এত ভালো রেজাল্ট এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ গোল্ডেন ফাইভ।
মেডিকেল কোচিং করতেছে। চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
শুধু মাত্র অহনার মুখের দিকে তাকিয়ে, অহনার জিদকে প্রাধান্য দিয়ে জামিল সুমনার বিয়েতে রাজি হয়েছে।
আজ অহনা জামিল দম্পতির একমাত্র মেয়ে সুমনার বিয়ে।
পাত্রও খুব ভালো। মেডিকেল ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে।
অহনা তার ব্যক্তিগত জীবনের কষ্ট দিয়ে বুঝতে পেরেছে সঠিক সময়ে একট মেয়ের বিয়ে না হলে, তাকে নিজের কাছে, পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে কতটা দংশন সহ্য করতে হয়।
মেয়েটা অবশ্যই পড়াশোনা করবে। তাকে অনেক দূর যেতে হবে।
তার অনেক দূর যাওয়ার পথে, পথ চলার একজন সাথী থাকবে। যে সবসময় তাকে আড়াল করে রাখবে বুক দিয়ে।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply