তিঁনি একাই সবটা নন। তবে তাঁর সাহস, নেতৃত্ব ও কৌশল ঘিরেই অগণিত অকুতোভয় মহান প্রাণ মিলিত হয়েছিলেন মূল্যবান জীবন বিলিয়ে দিতে।—
মহান মুক্তিযুদ্ধে যতোগুলি সেক্টর গঠিত হয়েছিল তার সবকটির সদর দপ্তর ছিলো সীমান্ত বা সীমান্তের উপারে।
একমাত্র কাদেরিয়া বাহিনীর সদর দপ্তর দেশের অভ্যন্তরে! শুরুটাই টাঙ্গাইলের সখিপুরের বহেড়াতৈল এলাকায়। বহেড়াতৈল থেকে ঢাকার দুরুত্ব ১১০ কিলোমিটারের বেশি নয়! ভাবা যায় বিষয়টা!
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে এতো বড় একটি বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েই তিঁনি থেমে থাকেননি। অধিকাংশ যুদ্ধেই তিঁনি সরাসরি সম্মুখ সমরে লিপ্ত হতেন। তিনি হিট এ্যান্ড রান কৌশলে বিশ্বাস করতেন না। মরলে বাঘের মতোই মরতে চেয়েছেন। তাই তাঁর যুদ্ধ এলাকার অধিকাংশ যুদ্ধুই সম্মুখ যুদ্ধ।
যা ওই সময় কল্পনাই করা যেত না! এজন্য পাকিস্তান সরকার তাঁর জীবিত বা মৃত মাথার মূল্য নির্ধারণ করেছিলেন ৯৯ হাজার ১ টাকা! কতোখানি মূল্যবান হলে এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়?
শুধু তাই নয় মিত্র বাহিনী তাঁকে চলতেন সমীহ করে।
এমন একটা বাহিনী কাদেরিয়া বাহিনী যারা যুদ্ধই করেছে পাকিস্তানি সৈন্যদের অস্ত্র ছিনিয়ে। জাহাজ মারার ঘটনা তার অন্যতম। এর ফলে আরো দুই বা আড়াই বছর অন্যদের সহযোগীতা ছাড়াই যুদ্ধু চালিয়ে যাবার সক্ষমতা অর্জন করেছিলেন।
ঢাকা আক্রমনের সব পথ যখন কঠিন হয়ে পড়ে তখন একমাত্র আলোর প্রদীপ এই কাদেরিয়া বাহিনীর বিশাল যুদ্ধ অঞ্চল।
মিত্রবাহিনীর ত্রাতা ছিলো তাঁর কাদেরিয়া বাহিনীই। ১০ ডিসেম্বর ছত্রিসেনা অবতরণ, ধনবাড়ী, মুধুপুর, ঘাটাইল শক্রমুক্ত করে ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল স্বাধীন করার পর ঢাকা আক্রমনের অগ্রপথিক এই কাদেরিয়া বাহিনী ও তাঁর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম ।
জীবন্ত কিংবদন্তী বিশাল দেহের এই মানুষটি কোন যুদ্ধই শুয়ে বা বসে শত্রুর দিকে গুলি ছুড়েননি! তিঁনি যুদ্ধু করতেন শক্ত মেরুদণ্ডে ভর করে দাঁড়িয়ে!
তাইতো বর্বর পাকিস্তানি সেনা জেনারেল নিয়াজীর সাথে হাত মেলাননি!
আজ টাঙ্গাইল মুক্ত দিবস। বাংলার জীবন্ত বাঘা, বজ্র, চে ও তাঁর কাদেরিয়া বাহিনীর সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা….।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply