1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
“এ খালেক ফাউন্ডেশন” দেশ ও মানুষের কল্যাণে যথাসাধ্য প্রচেষ্টায়…………… মৃন্ময়ীর খোঁজে – – – – নাহিদ সোলতানা নিপা ভালোবাসার বাঁধন – – – – জি জে আফরোজ # প্রিয়_মানুষ(সংক্ষিপ্ত) # নওশিন_তাওছিয়া_তাবাচ্ছুম(লেখনীতে) # বিদর্ভ_নগরী – – – – পাখি রায় প্রভাতী – – – সাফিনা আক্তার # ব্ল্যাকমেইল (সব পর্ব একসাথে) – – – লেখা: আফরিন শোভা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার ————- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ———————– প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন —–

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন —–

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪
  • ১০৫ বার

 

তিনি বলেছেন, ‘নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও লাগে না।’

প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর’ , ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’ ও ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বের করেন। সেখানে তাঁরা ‘তুমি কে, আমি কে/ রাজাকার, রাজাকার’, ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আজ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী কীভাবে দেশে অত্যাচার চালিয়েছে তা তারা জানে না। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাবোধ হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা, তাঁদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে। পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকার বাহিনী যেভাবে এ দেশে অত্যাচার করেছে, সেখানে আমার খুব দুঃখ লাগে গতকাল রোববার যখন শুনি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে, তারা রাজাকার।’ তিনি বলেন, ‘তারা কি জানে ’৭১ সালের ২৫ মার্চ কী ঘটেছিল সেখানে? সেখানে ৩০০ মেয়েকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এই দেশীয় দোসররা। ৪০ জন মেয়েকে পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছিল। তারা সেখানে কী অবস্থায় ছিল? অনেক মেয়ে শাড়ি বা ওড়না দিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল। তাদের কাপড় পরতে দেওয়া হতো না। একটা পেটিকোট পরিয়ে বসিয়ে রাখত। দিনের পর দিন তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাত।’

সরকারপ্রধান বলেন, যখন তাদের উদ্ধার করা হয়, মিত্রশক্তির এক ভারতীয় শিখ সৈন্য নিজের মাথার পাগড়ি খুলে এক মেয়ের গায়ে পরিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এটা কেবল একটা ঘটনা, এ রকম বহু ঘটনা রয়েছে।

শেখ হাসিনা মুক্তিযদ্ধে নারীদের অবদান তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা বসে থাকত না। তারাও কিন্তু কাজ করত। পিরোজপুরে এক মেয়ে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর রান্নার কাজ করত এবং রাতে নদী সাঁতরে পার হয়ে চিতলমারীতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে গিয়ে হানাদারদের খবর পৌঁছে দিত। ধরা পড়ার পর দুটি গাড়ির সঙ্গে তার দুই পা বেঁধে টেনেহিঁচড়ে খণ্ডবিখণ্ড করে ফেলা হয়। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে। এখানে কেউ শান্তি কমিটিতে ছিল, কিন্তু মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু যে বাহিনীগুলো তারা (পাকিস্তানি হানাদারেরা) তৈরি করেছিল, তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল এবং তাদের দিয়ে মানুষের ক্ষতি করত, অত্যাচার, লুটপাট এবং গণহত্যা চালাত। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, তাদের বিচার করে অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি। এর মাধ্যমে তাদের দ্বারা যারা নির্যাতিত, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের, জাতির পিতার একটি ডাকে এই দেশের মানুষ ঘরবাড়ি, পরিবার-পরিজন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে রণক্ষেত্রে চলে গেছে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। আর যারা ওই বাহিনীতে ছিল (রাজাকার-আলবদর-আলশামস) এই দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। সেটা তো ভুলে গেলে চলবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সেই শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে। তাহলেই এ দেশ এগিয়ে যাবে এবং সেটা যে বাস্তবতা তার প্রমাণ ’৭৫–এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল, ২১ বছর এবং পরে আরও প্রায় ৯ বছর, তারা দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। কিন্তু আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি এবং আমরা ভুক্তভোগীরা যখন ক্ষমতায় এসেছি, মাত্র ১৫ বছরে আজ বদলে গেছে বাংলাদেশ। বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ। সেই দরদটুকু থাকতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবদের সম্পাদন করা এপিএ একে একে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এপিএ বাস্তবায়নে সাফল্য প্রদর্শনের স্বীকৃতি হিসেবে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে পুরস্কৃত করেন। সার্বিক মূল্যায়নে বিদ্যুৎ বিভাগ শীর্ষ স্থান লাভ করে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুদ্ধাচারচর্চায় উৎসাহ দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রবর্তিত শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০২৩-২৪ লাভ করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

অনুষ্ঠানে সরকারি কর্ম সম্পাদন ব্যবস্থাপনাবিষয়ক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আবারও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, যেখানেই কোনো অনিয়ম দেখা দেবে, তার বিরুদ্ধে আপনারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি ঘোষণা করেছি। আর এই দুর্নীতি ধরতে গেলে আমাদের সরকারের ওপর দায়টা চাপিয়ে দেওয়া হয়। আমি এটা বিশ্বাস করি না। দুর্নীতি খুব কম লোকই করে, কিন্তু তার বদনাম হয় খুব বেশি।’
প্রধানমন্ত্রী দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সবাইকে নজরদারি রাখার পাশাপাশি চক্রান্ত করে কেউ যেন খাদ্যের দাম বাড়াতে না পারে, সেদিকে সজাগ থাকার জন্যও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..