ডিসেম্বরের রাত,
বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে, সাথে ঠান্ডা বাতাস বয়ে চলেছে। তানজিন নিজের ঘরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে, ওর মাঝে অনুভব করল কেউ ওকে পেছন থেকে আষ্ঠে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। তানজিন অভিমানি গলায় বলল,
– “এতক্ষনে আপনার আসার সময় হলো!”
মানুষটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
– “জানোই তো কত ব্যস্ত থাকি সারাদিন। তারপর বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে, সবমিলিয়ে আসতে দেরি হয়ে গেল।”
তানজিনের অভিমানের পাল্লাটা ভারি হলো, কিছুটা মন খারাপ নিয়ে বলল,
– “আপনার কাছে সবার জন্যই সময় থাকে, শুধু আমি বাদে।”
– “উঁহু তোমার জন্য আমার আলাদা একটা সময় থাকে। আর তাছাড়া তুমি তো সবসময়েই আমার সাথে থাকো, আমার মনে।”
– “কিভাবে বউকে পটাতে হয়,সেটা খুব ভালোই শিখেছেন।”
তানজিনের কথা শুনে মানুষটা হেসে উঠে বলল,
– “ওইটা না শিখলে যে জীবন শেষ, তাই ওইটা আগেই শিখে রেখেছি। তা আমার উপরে কি এখনো অভিমান করে থাকবে!”
– “হু।”
– “আমি আমার বউয়ের রাগ ভাঙানোর জন্য কি করতে পারি?”
তানজিন মজা করে বলল,
– “একশো একটা উঠবস করুন, তবেই আমার রাগ ভাঙাবে।”
– “আহ্ বউ শাস্তিটা একটু বেশি হয়ে গেল না!”
তানজিন আহ্লাদী সুরে বলল,,
– “আমার জন্য এইটুকু করতে পারবেন না! এই বুঝি আমাকে ভালোবাসেন!”
– “ভালোবাসি কিনা তার প্রমান কি দিতে হবে?”
তানজিন উত্তর দিল না, চুপচাপ শুয়ে রইল। মানুষটা আবারো বলল,
– “কি হলো বলো! আমার ভালোবাসার প্রমান চাও?”
তানজিন পেছন ফিরে মানুষটাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
– “দরকার নেয় প্রমান দেবার, আমি এমনিতেই আপনাকে বড্ড ভালোবাসি।”
– “আমিও ভালোবাসি।”
কারোর কর্কশ কন্ঠে দিদি ডাক শুনে তানজিন শোয়া থেকে উঠে বসল। চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখল হ্যাঁ নিজের ঘরেই তো আছে, কিন্তু সেই মানুষটা কোথায় গেল!
তাজরিন বিরক্ত হয়ে বলল,
– “এতক্ষন ধরে ডাকছি, আর ঘুমের ঘোরে কি বিরবির করছিলিস এতক্ষন?”
ছোটবোনের কথা শুনে তানজিন আমতা আমতা করতে লাগল, কিভাবে বোনকে বলবে এতক্ষন না হওয়া বরের সাথে প্রেম প্রেম ঝগড়া করছিল
তানজিন কথা ঘোরানোর জন্য বলল,
– “কেন ডাকছিলিস বল!”
– “মা খেতে ডাকছে, চল।”
ছোটবোন তাজরিন চলে যেতে তানজিন জোরে জোরে দুটো শ্বাস নেয়। কিছুক্ষন আগে কল্পপুরুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে এটা ভাবতেই কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে। তানজিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বিরবির করে বলল,
– “বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, ঠান্ডা আবহাওয়া কি সুন্দর একটা রোমান্টিক ওয়েদার সবকিছুই ঠিকঠাক শুধুমাত্র আপনার অভাব। আর কতদিন এইভাবে কল্পনায় আসবেন! এইবার অনন্ত বাস্তবে আসুন
আপনারাই বলুন তো, তানজিন আর কতকাল তার কল্পপুরুষকে নিয়ে কল্পনার জগতে বসবাস করবে! এইবার তো তার সামনে আসার পালা।
তানজিন ও তার কল্পপুরুষকে নিয়ে খুব শীঘ্রই নতুন কিছু আসবে ইনশাআল্লাহ। অপেক্ষা করুন
আর গল্পটা আপনাদের কাছে কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আসসালামু আলাইকুম।
Leave a Reply