বিভিন্ন চোরা পথে সহজেই ভারত ও মিয়ানমারে প্রবেশ করছে চীনের তৈরি ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এ অঞ্চলের বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপগুলো চীনের কাছ থেকে এগুলো কিনছে। ফলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকিতে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এ বছর উত্তরপূর্ব ভারতে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযানে ৪২৩টি অস্ত্র উদ্ধার করা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে রয়েছে একে-৪৭, এম-১৬ এবং চাইনিজ পিস্তল। এ অঞ্চলে অবৈধভাবে এসব ভারী অস্ত্রগুলো প্রবেশ অব্যাহত থাকলে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে বলে ভারত সরকারকে সতর্ক করেছে গোয়েন্দা বাহিনী।
গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস) জানিয়েছে, চীন এ অঞ্চলে অবৈধপথে ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। ফলে বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পাচ্ছে চীন।
ভারত সরকারকে সতর্ক করে আইএএনএস জানিয়েছে, আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যাণ্ডের কুখ্যাত বিদ্রোহীগ্রুপগুলো চীনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। ফলে এসব গ্রুপ ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাচ্ছে এবং চীন তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। এতে করে এ অঞ্চলের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ছে। এ বিষয়ে ভারত সরকারকে সতর্ক করেছে গোয়েন্দারা।
ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, এ অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ এবং জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ভারতের বিরুদ্ধে চীনের ‘কূটনৈতিক-সন্ত্রাসবাদের’ একটি কৌশল।
মিয়ানমারে অবস্থান
কৌশলগতভাবে মিয়ানমার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এটি ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক রুটে একটি বিকল্প পথ তৈরি করেছে, যা মালাক্কা উপকূলের ওপর চাপ কমাতে এবং স্থলবেষ্টিত চীনের হুনান প্রদেশে জ্বালানি গ্যাস সরবরাহে চুল্লি হিসেবে কাজ করছে। বলা যায়, চীনের নিয়ন্ত্রাধীন মিয়ানমারের কারণে এ অঞ্চলে ভারতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
সূত্র মতে, থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তে ১ মিলিয়ন ডলারের চাইনিজ একে-৪৭ রাইফেল, মেশিনগান, এন্টি-ট্যাঙ্ক মাইন, গ্রেনেড ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। এ বছরের শুরুতে ৫০০টি রাইফেল, ৩০টি মেশিনগান, ৭০ হাজার রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড, এফ-৬ চাইনিজ ম্যানপ্যাড আনা হয় বাংলাদেশ-মায়ানমার উপকূলে। সেখান থেকে তা আরাকান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দক্ষিণ মিজোরামের পার্ভা কোরিডর ব্যবহার করে চোরাচালানের মাধ্যমে রাখাইনে পৌঁছানো হয়। ওই অস্ত্রসরবরাহের সবগুলো চীনের তৈরি।
আরাকান আর্মিদের সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে দেখে মিয়ানমার। আর চীন ভারতের ট্রান্সপোর্ট এবং ট্রানজিট প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে এ গ্রুপকেই কাজে লাগাচ্ছে। এভাবে চীন অস্ত্র ও গোলাবারুদ এ অঞ্চলে সরবরাহ করছে। ফলে এ অঞ্চলের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে বলে ভারত সরকারকে সতর্ক করা হচ্ছে।
Leave a Reply