1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
# আহারে # খোরশেদ ।। সমাজে নতুন অপরাধী চক্র তৈরী হচ্ছে কিন্তু ভবিষ‍্যতে এদের রক্ষা করবে কে??।। – – – আশিক ফারুকী “অতঃপর” __ সালমা আক্তার বীরাঙ্গনা নই আমি মুক্তিযোদ্ধা – – – শাহনাজ পারভীন মিতা জলপাই রঙের স্বাধীনতা – – – আরিফুল হাসান প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে – উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান – – – স্বাধীন আজম –   টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি, স্বপ্নমায়া – – – – মাহজাবীন আহমেদ বুড়ি মরে গেল – – – মোঃ আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম প্রযুক্তির দুনিয়ায় শিক্ষার্থীদের এখন উন্নত জীবন গড়ার দারুণ সময়:– ————–টিপু সুলতান লেখক ও সমাজ চিন্তক ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতাই পারে ডায়াবেটিস রোগ নির্নয় ও রোগের চিকিৎসা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা – – – ডা: সাদিয়া আফরিন 

# অক্টোবরের_প্রেম # লেখিকা:# তানজিল_মীম # অনুগল্প!’

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১২০ বার
অক্টোবর ২০। বাহিরে ঝুম বৃষ্টি নেমেছে। ঠান্ডায় শীতল পুরো ঢাকার শহর। রাত প্রায় দশটা। নিশান্ত তার ক্লান্ত শরীর নিয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে ফিরছে। চাকরিটা বোধহয় এবারও হলো না তার। বাস ছুটছে তার গন্তব্যে। একলোক ফোনে কথা বলছে, তার মেয়ের জন্য সম্ভবত কিছু একটা আনতে ভুলে গেছে। নিশান্ত নিশ্চুপে খুব মনোযোগ দিয়ে লোকটার কথা শুনছে। সে বোধহয় তার বউকে বলছে,
“শোনা না, আমি না আজও ওর জন্য পুতুল আনতে ভুলে গেছি। মিতা কি ঘুমিয়ে পড়েছে?”
কথা শুনে নিশান্ত বুঝতে পারলো লোকটার মেয়ের নাম মিতা। পুতুল কেনার কথা যখন বলছে তাহলে বয়স খুব কম। নিশান্ত দীর্ঘশ্বাস ফেললো। আর শুনলো না লোকটার কথা। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালো। ক্ষিধে পেয়েছে খুব। পকেটে সম্ভবত পঞ্চাশ টাকা আছে। বাস ভাড়া দেয়া শেষ। বাকি যা আছে তাতে একটা বনরুটি আর চা হয়ে যাবে। সঙ্গে দুটো সিগারেট। রাতটা দিব্বি চলে যাবে। ও একটা মশার কয়েলও কিনতে হবে। রাতে মশায় খুব জ্বালাচ্ছে নিশান্তকে। আজ না কিনলেই নয়। এই এক সমস্যা মাস শেষের দিকে টাকার খুব সংকটে পড়ে নিশান্ত। টিউশন করে যা আয় হয় তাতে তার মাস যায় না। বাড়িতেও টাকা পাঠানো লাগে। জীবনটা বড্ড পানসে লাগে মাঝে মধ্যে। বাহিরের বৃষ্টি একটু থেমেছে। নিশান্ত তার পাশে থাকা জানালাটা হাল্কা খুললো। সঙ্গে সঙ্গে এক ঠান্ডা বাতাস তাকে ছুঁয়ে দিলো। নিশান্ত চোখ বন্ধ করে দিলো। মিনিট দশ সে চোখ বন্ধ করে থাকলো। মাঝে বাস থেমেছে একটু কিন্তু নিশান্ত চোখ বন্ধ করে কিছু ভাবতে থাকায় টের পায় নি। নিশান্ত ভাবলো,“এই টানাপোড়া জীবন নিয়ে আর কতকাল চলতে হবে তাকে। এই কতকালটা, জেনে নিতে পারলে ভালো হতো। মাঝে মধ্যে নিশান্তের ইচ্ছে করে কোনো বিজ্ঞানীর কাছে যেতে। যদিও ভবিষ্যত বলতে পারা কোনো বিজ্ঞানী আছে কি না নিশান্ত জানে না।”
“আপনি কিছু মনে না করলে জানালার পাশের সিটটা কি আমায় দেয়া যায়?”
হঠাৎই কোনো মেয়েলি কণ্ঠ কানে বাজতেই চমকে উঠলো নিশান্ত। তক্ষৎনাৎ সে তাকালো সামনের মেয়েটির মুখশ্রীর দিকে। থমথমে কণ্ঠে বললো,“আমায় কিছু বললেন?”
অবন্তী দোনামনা করলো। বৃষ্টিতে সে খানিকটা ভিজে গেছে। আশেপাশের লোকজন তার দিকে কেমন দৃষ্টি নিয়ে যেন তাকাচ্ছে তার ভালো লাগছে না। অবন্তী থরথর করে বললো,
“আমাকে কি আপনার সিটটা দেয়া যায় প্লিজ! আসলে আমি না জানালার সিট ছাড়া বসতে পারি না।”
নিশান্ত তিন সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে বললো,“ঠিক আছে।”
অতঃপর নিশান্ত তার সিট থেকে উঠে আসলো। নিশান্ত উঠতেই অবন্তী দ্রুত বসে পড়লো। নিশান্ত তার আশেপাশে তাকালো। না তার সিট ছাড়া কোনো সিটই বাসে অবশিষ্ট নেই। নিশান্ত বসে পড়লো পাশে। খুব সাবধানেই বসলো। সে বসতেই অবন্তী তার শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখশ্রী মুছতে মুছতে বললো, “আপনায় অসংখ্য ধন্যবাদ।”
বিনিময়ে হাল্কা হেঁসে বললো নিশান্ত,“ইট’স ওকে।”
সময় চলতে লাগলো। হঠাৎই অবন্তী প্রশ্ন করলো,“কোথা থেকে ফিরছেন?”
নিশান্ত ফের চমকে উঠলো। মেয়েটা কি তাকেই কিছু বললো। নিশান্ত আবার তাকালো মেয়েটার দিকে। একই প্রশ্ন করলো আবার,“আমায় কিছু বললেন?”
অবন্তী হেঁসে ফেললো। নিশান্ত ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো,“আপনি হাসছেন কেন?”
অবন্তী তার হাসি থামিয়ে বললো,“আমি যদি এখানে বসে কারো সাথে কথা বলতে পারি সেটা কি আপনি ছাড়া অন্য কেউ হতে পারে?”
নিশান্ত কি বলবে ভেবে পায় না। অবন্তী আবার বললো,“কি হলো চুপ হয়ে গেলেন যে?”
নিশান্ত এবার মুখ খুললো। ক্লান্ত মুখশ্রী নিয়ে বললো,
“আমি ভেবেছিলাম আপনি বোধহয় ফোনে কথা বলছিলেন।”
“না এমন কোনো ব্যাপার নেই। আসলে আমার একটা সমস্যা হলো আমি বেশিক্ষণ কথা না বলে থাকতে পারি না।”
“ওহ আচ্ছা।”
“জি। তা কোথা থেকে ফিরছেন আপনি?”
নিশান্ত দ্বিধা ছাড়াই বলে ফেললো,
“চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে।”
“ওহ তা কেমন হলো?”
নিশান্ত মাথা নাড়িয়ে বললো,“হবে না বোধহয়।”
অবন্তী থমথমে কণ্ঠে বলে,
“কেন?”
“মনে হলো।”
“ওহ আচ্ছা।”
চুপ হয়ে গেল দুজনেই। বাস এসে থামলো নিশান্তের গন্তব্যের স্থানে। বাসের কিছু যাত্রীরা একে একে নামলো নিশান্ত অবন্তীও নামলো। নিশান্ত মিষ্টি হেঁসে বললো,“আচ্ছা ভালো থাকবেন কেমন।”
অবন্তীও বললো,“আপনিও।”
বিনিময়ে হাল্কা হেঁসে চলে গেল নিশান্ত। অবন্তী নিশান্তের যাওয়ার পানে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রিকশা ডাকলো।’
——
একা মনে আকাশ পথে তাকাতে তাকাতে হাঁটছে নিশান্ত। বৃষ্টি নেই। তবে আশকোনার রাস্তায় পানি জমেছে। বাড়ি এখান থেকে এখনও অনেক দূরে। রিকশা চড়ে যাওয়ার মতো টাকা নেই। যা আছে তা দিয়ে তাকে খেতে হবে। বাকিতে আজ আর কিছু খাওয়া যাবে না। মিন্টু মিয়া দিবে না। নিশান্তের বাড়ির কাছেই মিন্টু মিয়ার ভাতের হোটেল আছে। যেখানে রোজ রাতেই ভাত খায় নিশান্ত। তবে কয়েকদিন যাবৎ খাচ্ছে না। উনি নাকি আর বাকি দিবে না। এমনটা প্রত্যেকবার মাস শেষেই করে। লোকটা একটা হার কিপ্টে। তবুও নিশান্ত ওখানেই ভাত খায়। রাধুনির রান্না দারুণ। আজ আর মিন্টু মিয়ার দোকানে যাওয়া হবে না। তাকে খেতে হবে মিন্টুর পাশেই তার ভাই বল্টুর চায়ের দোকানে। রুটি চা পারলে দুটো বিস্কুট এগুলোই খাবে।
তাই হলো নিশান্ত আধ ঘন্টার মতো হেঁটে চা রুটি খেয়ে একটা মশার কয়েল আর সিগারেট নিয়ে বাড়ি ঢুকলো। সিগারেট নিশান্ত খায় না। তবে মাঝে মধ্যে কিনে আনে। নিশান্তের রুমমেট খায়। নিশান্ত প্রায় রাতেই চেষ্টা করে খাওয়ার কিন্তু পারে না। শেষে তার রুমমেট রাতুলকে দিয়ে দেয়।
গেট দিয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকতেই বাড়িওয়ালার গলা শোনা গেল। তিনি বললেন,
“শান্ত মিয়া যে কেমন হলো আজকের ইন্টারভিউ?”
নিশান্ত ছোট করে বললো,“ভালো।”
নিশান্ত ভালো বললেও বাড়িওয়ালা বিশ্বাস করলো না। তিনি নিশান্তের মুখ দেখেই বুঝেছেন ভালো হয় নি।
দোতলায় উঠে দরজায় দু’বার নক করতেই নিশান্তের রুমমেট দরজা খুললো। মিষ্টি হেঁসে বললো,“কেমন দিলি ইন্টারভিউ?”
নিশান্ত দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পায়ের জুতো খুলতে খুলতে বললো,“ভালো না। মনে হয় এবারও চাকরিটা হবে না।”
রাতুল কিছু বললো না। নিশান্ত ভিতরে ঢুকলো। টেবিলের উপর রেখে যাওয়া বন্ধ বাটন ফোনটা অন করলো। সঙ্গে সঙ্গে একটা কল আসলো। নিশান্ত দেখলো তার মা ফোন করেছে। নিশান্ত ফোনটা তুলে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বললো,“আম্মা আমি মাত্র বাসায় আসছি তোমায় কতক্ষণ পর ফোন দিবো ঠিক আছে।”
উত্তরে নিশান্তের মাও বেশি না ভেবে বললো,“আচ্ছা আব্বো।”
ফোন কেটে জোরে নিশ্বাস ফেললো নিশান্ত। তার কিছু ভালো লাগছে না। নিশান্ত জানে তার মা টাকার জন্যই কল করেছে বাবার ঔষধ বোধহয় শেষ হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে টাকা কই পাবে! নিশান্তের অবস্থাটা যেন বুঝলো রাতুল। কাঁধে হাত দিয়ে বললো,“চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।”
নিশান্ত কিছু বলে না। কতক্ষণ বসে থেকে গামছা হাতে চলে যায় বাহিরে বাথরুমের দিকে। নিশান্তদের বাথরুম বাহিরের নিচতলায়।
রাত প্রায় সাড়ে বারোটা! নিশান্ত শুয়ে আছে খাটহীন তোশকের ওপর। মশারী নেই। তাই তো মশার কয়েল আনা। নিশান্তের নাম্বারে সেই মুহূর্তে একটা মেসেজ আসলো। টুং করে শব্দ হলো নিশান্ত বুঝলো আবারও সেই নাম্বার থেকে মেসেজ আসছে। গত ৫ই অক্টোবর থেকে নিশান্তের নাম্বারে একটা নাম্বার থেকে মেসেজ আসছে। কে দিচ্ছে জানে না। প্রথমে কিছু মনে না করে কোনো রিপ্লাই না করলেও আজ করবে। নিশান্ত লিখলো,“কে আপনি! গত পনের দিন যাবৎ আমায় মেসেজ করছেন। কেন করছেন বলুন তো! কে আপনি?”
মেসেজ দেয়ার দু’মিনিটের মাথাতেই রিপ্লাই আসলো,“ফাইনালি আপনি রিপ্লাই করলেন।”
নিশান্ত কিছু বলে না। কতক্ষণ পর আবার মেসেজ আসে,“আমি কে সেটা কি জানা খুব জরুরি?”
নিশান্ত এবারও রিপ্লাই করলো না। মুখ থেকে অস্পষ্টভাবে “পাগল” বলে শুয়ে পড়লো। চোখ বন্ধ করতেই বাসের সেই মেয়েটার মুখশ্রী মনে পড়লো। মেয়েটা খুব মিশুক টাইপের এটা বুঝে ফেলেছে নিশান্ত। চোখ বন্ধ করেই হাল্কা হাসলো।”
—–
দেখতে দেখতে কেটে গেল এক সপ্তাহ। সেদিনের চাকরিটা নিশান্তের হয় নি। বিষণ্ণতা নিয়ে সে মেসেজ করা ব্যক্তিটির সাথে তিনদিন কথা বলেছিল। এখন মোটামুটি একটা ভালো লাগার মধ্যে চলে গেছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিল নিশান্ত। সেই মুহূর্তে একটা মেসেজ আসলো। একটা অফিসের ঠিকানার মেসেজ সঙ্গে শেষে লেখা। কাল এখানে গিয়ে একটা ইন্টারভিউ দিবেন। বড় কোম্পানি। আশাকরি এবার আপনার চাকরিটা হয়ে যাবে। দোয়া রইলো। অল দা বেস্ট। নিশান্ত তিন মিনিট মেসেজটার দিকে তাকিয়ে রইলো। কি বলবে বুঝতে পারছে না। মেসেজ করা ব্যক্তিটি কে জানতে খুব ইচ্ছে করছে তার।
পরেরদিন। ঠিকানা মাফিক চলে যায় নিশান্ত। ইন্টারভিউ দিয়েই সে জানে তার চাকরিটা হয়ে গেছে। নিশান্ত আজ খুব খুশি। সে দ্রুত কল করে তার আম্মাকে। বলে,
“আম্মা, আমার চাকরি হয়ে গেছে আম্মা।”
ছেলের কথা শুনে অপরপ্রান্তে থাকা নিশান্তের মা বলে উঠল,“সত্যি কইতাছো আব্বা?”
নিশান্ত খুশিমাখা মুখ নিয়ে বলে,“হ আম্মা। এখন আর আমাদের কোনো দুঃখ থাকবে না দেইখো।”
খুশিতে চোখে পানি চলে আসলো নিশান্তের মায়ের। নিশান্ত আরো কিছুক্ষণ তার মায়ের সাথে কথা বলে ফোন কাটলো। মেসেজ করলো সেই নাম্বারে। লিখলো,“চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি।”
দু’মিনিটের মাথায় রিপ্লাই আসলো,
“কংগ্রেস”
“আচ্ছা আপনায় কি দেখা যেতে পারে। যতই হোক আপনার জন্যই চাকরিটা পেয়েছি।সামনাসামনি ধন্যবাদ দিতে চাইছি আর কি।”
তখনই উত্তর আসলো,“ঠিক আছে পিছন ঘুরুন। আমি আপনার পিছনেই আছি।”
নিশান্ত মেসেজ দেখেই পিছন ফিরে তাকালো। সঙ্গে সঙ্গে বাসের সেই মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে বললো,“আপনি।”
অবন্তী এগিয়ে এলো। মিষ্টি সুরে বললো,“জি আমি। ধন্যবাদ দিবেন নাকি।”
নিশান্তের কথা বোধহয় আঁটকে আসলো। সে বিস্মিত গলায় বললো,
“আপনি সেই।”
“জি।”
“কিন্তু আপনি আমার আপনার,,
“সে অনেক বড় গল্প।”
“ছোট করে বলুন।”
অবন্তী অনেকক্ষণ নিশান্তের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে একটা কাগজ নিশান্তের দিকে এগিয়ে দিলো। বললো, “মুখে বলতে পারবো পরে নিন। শুনুন উত্তর যদি ‘হা’ হয় তবে আমার পিছনে আসবেন। যদি ‘না’ হয় তবে উল্টোদিক দিয়ে হেঁটে যাবেন আমি কিছু মনে করবো না।”
অবন্তী কাগজটা হাতে দিয়ে হেঁটে যেতে লাগলো। নিশান্তের যেন সবটা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। নিশান্ত কাগজের ভাজ খুলে পড়তে লাগলো,
“আজ থেকে ঠিক ২৮ দিন আগে মানে পহেলা অক্টোবর। বাসে বসে একটা ছেলেকে দেখি। সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট, গলায় কালো টাই। তাকে দেখেই অদ্ভুত এক ভালো লাগা কাজ করে। তার চেয়েও বেশি ভালো লাগে সে তার নিজের সিট ছেড়ে দিয়ে বৃদ্ধ এক মহিলাকে বসায়। ব্যস প্রথম দেখাই প্রেমে পড়ে যাই। এরপর প্রায় তাকে ফলো করা শুরু করি। সে যে দোকান থেকে মোবাইল রিচার্জ করায় সেখান থেকে নাম্বার নেই। এর পরই ৫ই অক্টোবর থেকে মেসেজ দেয়া শুরু করি। কিন্তু মানুষটা আমার মেসেজের রিপ্লাই দেয় না। হঠাৎ একসপ্তাহ আগে বৃষ্টির মধ্যে বাসে উঠি। আমি যেচেই তার সাথে কথা বলার জন্য জানালার সিটটা চাই। আমি জানতাম সে আমায় তার সিট দিবে। এরপর টুকিটাকি গল্প। মানুষটাকে দেখলেই আমার মাঝে অদ্ভুত অনুভূতি হয়। সে যে চাকরি নিয়ে টেনশনে আছে তাও আমি জানি। তাই তো টেনশনটা একটু দূর করার জন্য দূরসম্পর্কের এক বন্ধুর কোম্পানির এড্রেস দেই। এটা কোনো কৃতজ্ঞতা নয় এটা আমার ভালোবাসা। তাকে পাবার আকাঙ্খা। আপনায় ভীষণ ভালোবাসি। কেন বাসি জানি না। শুধু জানি ভালো বাসি। আপনি আমার অক্টোবরের প্রেম। অক্টোবরের শুরুতে আমি আপনার প্রেমে পড়ি। সেই প্রেম এখনো বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। আপনি কি আমায় ভালোবাসবেন নিশান্ত। পাশে থাকবেন সবসময়।”
ইতি,
অবন্তী.
নিশান্ত হা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। একটা মেয়ে তাকে এভাবে দূর থেকে দেখতো অথচ সে টেরই পায় নি। আচমকাই আপনাআপনি ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো নিশান্তের। সে দৌড়ে এগিয়ে গেল অবন্তীর দিকে। বললো,“আমিও ভালোবাসবো আপনায় অবন্তী। পাশে থাকবো সবসময় দেখে নিয়েন।”
নিশান্তের কথা শুনলো অবন্তী মুচকি হাসলো নিমিষেই।”
আকাশে তখন দুপুরের কড়া রোদ্দুরের আলো। বাতাস ছুটছিল মৃদু মৃদু। চারপাশে বইছিল অক্টোবরের ঘ্রাণ। কে বলতে পারে হয়তো এই অক্টোবর জুড়েই থাকবে দুটো তরুণ তরুণীর প্রেম সূচনার গল্প!’
______________
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!]
May be an image of 1 person and text that says "অক্টোবরের প্রেম লেখিকা: তানজিল মীম"

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..