কালকে দুপুরে খবর পেলাম এবছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আমি চলচ্চিত্র শিল্পী নই, তাই এই পুরস্কারের ব্যাপারে ব্যক্তিগত আগ্রহের কারণ নেই। তবে আমার বন্ধুদের কেউ গান করেন, কেউ অভিনয়, কেউ ছবি বানান- এসব করণেই আগ্রহ।
এই লেখা চন্দনের কথা বলবার জন্যে। চন্দন সিনহা। আমার বন্ধু, সহকর্মী এবং বিপদে পড়লে ত্রাণকর্তা। ব্যক্তিগতভাবে চন্দন কিছুটা এলেমেলো। কিশোর বয়সে পৈত্রিক রাজত্ব ছেড়ে গানের টানে পাড়ি জমিয়েছিলো মুম্বাইতে। কিন্তু তার গান তখন হয়নি, ব্যর্থ মনোরথ হয়ে দেশে ফিরে জীবন গাঙ্গে নৌকা বাইতে বাইতে হয়ে উঠেছে মার্কেটিং বাণিজ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। বহুদিন এটিএন বাংলার মার্কেটিং বিভাগের প্রধান ছিলো, এখন পরিচালক। তবে গান তার রক্তের মধ্যে যে সুর তুলতো, সেজন্য চন্দনের জীবনটা সুরেলা হয়ে আছে। গানের প্রতি মায়া আর চর্চা কখনো ছাড়েনি সে। যদিও শখের শিল্পী চন্দন, কিন্তু তার সাফল্য যে কোনো পেশাদার শিল্পীর জন্য ঈর্ষণীয়। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে চন্দন।
হৃদিতা ছবিতে তার গাওয়া কবির বকুলের লেখা “ঠিকানাবিহীন তোমাকে লিখবো কোথায় বলো চিঠি” গানটির জন্য এবার জাতীয় পুরস্কার পেলো সে। ছবিতে গানটা দেখার পরেই মুগ্ধ হয়েছিলাম, জাতীয় পুরস্কার সেই মুগ্ধতাকে পূর্ণতা দিলো।
শুরুতে চন্দনের পারিবারিক রাজত্বের কথা বলেছিলাম। সেটা একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয় ওদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। এর প্রতিষ্ঠাতা ওর পিতামহ নূতনচন্দ্র সিংহ একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ। এই নূতন চন্দ্র সিংহ হত্যা মামলাতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারে ফাঁসি হয়েছে সাকা চৌধুরীর।
চন্দনের গানের কথা দিয়ে শেষ করি। শুধু মেধা বা প্রতিভা থাকলে হয় না; ভালোবাসা থাকতে হয়, চর্চা থাকতে হয় এবং লেগে থাকতে হয়।
“হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে…”
Leave a Reply