1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
# আহারে # খোরশেদ ।। সমাজে নতুন অপরাধী চক্র তৈরী হচ্ছে কিন্তু ভবিষ‍্যতে এদের রক্ষা করবে কে??।। – – – আশিক ফারুকী “অতঃপর” __ সালমা আক্তার বীরাঙ্গনা নই আমি মুক্তিযোদ্ধা – – – শাহনাজ পারভীন মিতা জলপাই রঙের স্বাধীনতা – – – আরিফুল হাসান প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে – উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান – – – স্বাধীন আজম –   টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি, স্বপ্নমায়া – – – – মাহজাবীন আহমেদ বুড়ি মরে গেল – – – মোঃ আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম প্রযুক্তির দুনিয়ায় শিক্ষার্থীদের এখন উন্নত জীবন গড়ার দারুণ সময়:– ————–টিপু সুলতান লেখক ও সমাজ চিন্তক ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতাই পারে ডায়াবেটিস রোগ নির্নয় ও রোগের চিকিৎসা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা – – – ডা: সাদিয়া আফরিন 

অনুগল্প গল্পের নাম :– #অবহেলার_পরিণতি – – – লেখিকার নাম :– এ,এন,ছায়া

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ২৪১ বার
___ওইইই শুননা কই আছিস তুই?আমার মনটা আজকে কেন জানিনা বড্ড বিষন্ন লাগছে। প্লিজ তুই একটু আমার বাড়িতে আয় না ( ছায়া )
ছায়ার ফোন পেয়ে এমনিতেই বিরক্ত হয়ে গেছে ছায়ার বেস্ট ফ্রেন্ড সানজিদা। তার উপরে ছায়ার হঠাৎ তাকে তার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলায় আরো বেশি বিরক্ত হয় সানজিদা। বিরক্তিমাখা কণ্ঠে সে বলে উঠে,
___তোর এইসব ফালতু কথা শুনে আমার জাস্ট বিরক্ত লাগে। আমাকে একটু বলবি তোর মন কখনো ভালো থাকে? সারাক্ষন খালি মুড অফ মুড অফ করে বেড়াস যত্তসব আজাইরা নাটক। আর তুই জানিস না আমাকে ফাহিম কিছুতেই যেতে দিবেনা কোথাও। আর এমনিতেও আমি এখন ওকে না বলে তোদের বাড়িতে যেতে পারবোনা। আচ্ছা এখন ফোন রাখ ও কল দিচ্ছে। (সানজিদা)
ছায়াকে ইচ্ছেমতো কথা শুনিয়ে ফোন কেটে দিলো সানজিদা। ছায়ার এই মুড অফ কথাটা শুনলেই ওর বিরক্ত লাগে আর সানজিদার বফ ফাহিম তেমন একটা ছায়াকে পছন্দ করেনা। কারণ ছায়া সবসময় সানজিদাকে বোঝায় যেন তারা এমন কিছু না করে যাতে তাদের পরিবার কষ্ট পায়। কিন্তু সানজিদা ছায়ার কথা কানেও নেয়না। কিন্তু এই সানজিদায় একদিন ছায়ার জন্য পাগল ছিলো ছায়ার প্রতিটা কথা ঠিক ভাবতো। ছায়ার একটু মন খারাপ বললেই সানজিদা দৌড়ে ছায়ার বাড়িতে চলে আসতো। এমনও হয়েছে সকালে বিকালে দুই বেলা সানজিদা ছায়ার বাসায় এসে ছায়ার সাথে সময় কাটাতো। কিন্তু আজ সেই সানজিদা ছায়ার কল পেয়ে বিরক্ত হচ্ছে। ছায়ার মন খারাপ জেনেও যার একবিন্দুও কষ্ট অনুভব হচ্ছেনা। কেউ যদি অনেকটা ভালোবাসা দেওয়ার পর হঠাৎ অবহেলা করে তখন বুকের ভিতর যে কি তোলপাড় হয় তা হয়তো কারোর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। আর ছায়ারও এই মুহূর্তে ঠিক সেই অনুভূতিটাই হচ্ছে।
সানজিদার কথায় ছায়ার চোখের জল যেন বাধ মানছেনা তবুও নিজের চোখের জল মুছে ছায়া তার অনলাইনের ফ্রেন্ডস দের এক এক করে মেসেজ করে শুধু এটুকু দেখার জন্য ওর প্রতি কি কারো একটুও অনুভূতি আছে? কেউ কি ওর কষ্টটা বুঝতে পারবে? কিন্তু ছায়ার সব ইচ্ছেকে মিথ্যে করে দিয়ে সবাই ছায়ার প্রতি বিরক্ত দেখিয়ে চলে যায়। শেষে ছায়া তুহিনকে মেসেজ দেয়।
___ওইইই আছেন আপনি? (ছায়া)
___হ্যাঁ বল…..(তুহিন)
___কি করেন? ( ছায়া )
___কিছুনা জাস্ট বসে আছি । (তুহিন)
___আচ্ছা আপনাকে একটা প্রশ্ন করি? (ছায়া)
___হুম কর (তুহিন)
___আচ্ছা যদি আমি কখনো দূরে কোথাও চলে যায় মরে যায় আপনি কি আমাকে মিস করবেন? (ছায়া)
ছায়ার এমন প্রশ্ন শুনে তুহিন খুবই রেগে যায় আর রেগে বললো,
___তুই মর বাঁচ তাতে আমার কিছুই যায় আসেনা।(তুহিন)
___হুম….. (ছায়া)
___কি হুম হ্যাঁ? ( তুহিন )
___না কিছুনা (ছায়া)
___ঢং করবিনাতো একদম বিরক্ত লাগে এইসব। যা যেখানে ইচ্ছে সেখানে গিয়ে মর। (তুহিন)
তুহিনের কথায় ছায়া কষ্ট পেলেও সেটা তুহিনের সামনে প্রকাশ করেনা। একটু মুচকি হাসার চেষ্টা করে তুহিনকে বলে,
___আচ্ছা চলে যাবো এখন বলুনতো আপনি খেয়েছেন রাতে? (ছায়া)
তুহিন ছায়ার কথায় আরো বেশি বিরক্ত বোধ করে রেগে ছায়াকে বলে,
___তুই যাবি? ধুর আমিই চলে যায়। (তুহিন)
কথাগুলো বলে তুহিন চলে যায়। তুহিনের যাওয়ার পর ছায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে নিজেই বলে,
____সত্যি আমি খুব ভাগ্যবতী তোদের মতো কিছু বন্ধু পেয়েছি। তোরা আমাকে আমার কষ্টের সময় হাসিয়েছিলি তোরা আমার একাকিত্বের সময়ে সঙ্গ দিয়েছিস। তোদের সত্যি কখনো ভুলতে পারবোনা। তোরা আমাকে এখন যতই অবহেলা কর না কেন তবুও তোদের আমি ছাড়তে পারবোনা। জানিসতো তোরা আমাকে এতো ভালোবাসা দেবার পর এই অবহেলা আমাকে বড্ড বেশি কষ্ট দেয়। জানিনা কেন প্রতিবার আমার ভালোবাসার মানুষগুলো আমাকে ছেড়ে চলে যায় অথবা আমাকে অবহেলা করে। কেউ কি আমায় বুঝবেনা কখনো? (ছায়া)
ছায়ার মনে হাজারো কথা লুকিয়ে আছে হাজারো অভিমানের পাহাড় জমে আছে। কিন্তু ছায়া না পারছে কাউকে কিছু বলতে না পারছে কাউকে কিছু বোঝাতে। নিজেরই মনে মনে ঘুমরে ঘুমরে মরছে সে।
_____
_____
_____
এভাবেই কেটে গেলো কিছুদিন এই কিছুদিনে ছায়া আরো বেশি ডিপ্রেসেড হয়ে যায়। কেউ ছায়াকে বোঝার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনা কেউ বুঝতে পারছিলোনা ছায়া দিনদিন ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে। শারীরিক এবং মানসিকভাবে ছায়া খুবই ভেঙে আস্তে আস্তে ছায়া মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
হঠাৎ একদিন ছায়া কাশতে কাশতে রক্ত বমি করা শুরু করে দেয়। প্রচন্ড মাথা ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে সে। মাথা ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে ছায়া তার মাথা চেপে ধরে। অসহ্য যন্ত্রনায় এলোমেলো পায়ে হাঁটতে হাঁটতে সে তার মায়ের রুমের কাছাকাছি গিয়ে পড়ে যায়। কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে ছায়ার আম্মু দৌড়ে বাইরে আসেন। ছায়াকে নিচে পড়ন্ত অবস্থায় দেখতে পান আর ছায়ার নাক মুখ থেকে বের হওয়া রক্ত দেখে ছায়ার আম্মু জোরে চিৎকার করে ছায়ার আব্বুকে ডাকেন। ছায়ার আব্বু আর আম্মু ছায়াকে অনেক্ষন ডাকার পরও ছায়ার কোনো সারাশব্দ না পেয়ে তারা ছায়াকে হসপিটালে নিয়ে যান। ডাক্তার ছায়াকে দেখে তাড়াতাড়ি তাকে এমার্জেন্সি ওয়ার্ড এ শিফট করে দেন। অনেক্ষন পর ডাক্তার এমার্জেন্সি ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসেন। তার মুখে ছিলো বিষন্নতার ছোঁয়া। মুখটা ভার করে মাথা নিচু করে ডাক্তার ছায়ার পরিবারকে বললেন,
___ আই এম সরি আমরা ছায়াকে বাঁচাতে পারিনি শি ইজ নো মোর। অতিরিক্ত টেনশন ডিপ্রেশনের কারণে তার মাথার একটা রক ছিঁড়ে রক্ত বেরিয়ে মাথায় জমাট বেঁধে যায় আর এতেই ছায়ার মৃত্যু হয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু রক্ত উনার মাথার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ায় ওনাকে বাঁচানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। (ডাক্তার )
ডাক্তারের কথা শুনে ছায়ার মা বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ডাক্তার ছায়ার আব্বুর কাঁধে হাত রেখে দুঃখের সাথে বলেন,
____আই এম সরি আমরা আপনাদের মনের অবস্থা বুঝতে পারছি । কিন্তু আফসোস আমরা আপনাদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। ছায়া হয়তো কোনো একটা বিষয় নিয়ে খুবই ডিপ্রেসেড ছিলো। আপনারা যদি একটিবার কেউ ওর কথা শুনতেন তাহলে হয়তো আজ ছায়া বেঁচে থাকতো। মাঝে মাঝে মানুষ কিছু জিনিস নিয়ে অনেক ডিপ্রেসেড থাকে তখন সবার উচিত তাকে হাসানো তার সঙ্গ দেওয়া। কিন্তু হয়তো ছায়ার একজন সঙ্গীর খুব বেশি অভাব ছিলো। যার ফলে সে তার মনের কষ্টটা কাউকে বলতে না পেরে মাত্রাতিক ভাবে ডিপ্রেসেড হয়ে পড়ে যার ফলে ছায়ার ব্রেনে চাপ পড়ে আর তার রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে মাথার নার্ব ছিঁড়ে যায় আর ছায়ার মৃত্যু হয়। আবারো বলছি সরি মাফ করবেন আমাদের আমরা পারিনি আপনাদের সন্তান কে বাঁচাতে । (ডাক্তার )
কথাগুলো বলেই ডাক্তার চলে গেলেন। ছায়ার লাশ ছায়ার মা বাবাকে দেওয়া হয়। সন্তানের লাশ বাবা মায়ের সামনে এমন দৃশ্য যেকোনো মা বাবার জন্যই মারাত্মক যন্ত্রনাদায়ক হয়। ছায়ার মা এই যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞেন হয়ে যান। ছায়ার বাবা একদিকে মেয়ের লাশ অন্যদিকে স্ত্রীর অসুস্থতা কিভাবে সামলাবেন উনি এইসব? কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তিনি তার স্বজনদের ফোন করে ডাকলেন। ছায়ার লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলো। ছায়াকে শেষ গোসল করিয়ে কাফন পরিয়ে তৈরী করানো হলো। ছায়ার পুরো বাড়ি জুড়ে আত্মীয়দের সমাহার সবার চোখে পানি। সবার মাঝে কান্নার রোল পড়ে গেলো। ছায়ার ফ্রেন্ডসরাও এসেছে ছায়াকে দেখতে। সানজিদাও এসেছে আজ ওর চোখেমুখে কোনো বিরক্তি নেই আছে শুধু বোনের মতো একটা বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর যন্ত্রনা । আজকে ছায়াকে দেখতে আসার জন্য সানজিদা তার বফ এর পারমিশন নেয়নি। আজ সানজিদা আত্মগ্লানিতে ভোগছে যদি সে একটু ছায়াকে বুঝতো। ছায়ার একটু আধটু খেয়াল রাখতো। মাঝে মাঝে ছায়ার খোঁজ নিতো তাহলে হয়তো আজ ছায়া বেঁচে থাকতো। সেদিন ছায়ার ফোনে বিরক্ত না হয়ে একটু যদি জানার চেষ্টা করতো ছায়ার মন খারাপের কারণ কি? তাহলে আজ অকালে সবাইকে ফেলে একটা মেয়েকে চলে যেতে হতোনা। ছায়ার বলা শেষ কথাগুলো বারবার সানজিদার কানে বাজছে। সানজিদার মনে হচ্ছে ছায়া ওকে বলছে ” ওইইই শুননা কই আছিস তুই?আমার মনটা আজকে কেন জানিনা বড্ড বিষন্ন লাগছে। প্লিজ তুই একটু আমার বাড়িতে আয় না “। সানজিদা নিজেকে আর সামলে রাখতে না পেরে ছায়ার সামনে থেকে চলে আসে। ছায়ার রুমে এসে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। আর কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে,
____আমাকে ক্ষমা করে দে ছায়া আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে তোর কষ্ট বুঝতে পারিনি। তুই এতটা কষ্টে ছিলি আর আমি তোকে বিরক্তি দেখিয়ে তোর কোনো কথা শুনতে চাইনি। তুই বারবার বলেছিলি তোর মনটা বড্ড বিষন্ন তবুও আমি তোর কথা শুনতে চাইনি। আমি তোর কষ্ট তোর ডিপ্রেসেড হওয়ার কারণ আর তোকে বুঝার একটুও চেষ্টা করিনি। কেমন ফ্রেন্ড আমি আজ আমার ভুলের জন্য আমি আমার সবচেয়ে ভালো ফ্রেন্ড কে হারালাম। ছায়া কই তুই প্লিজ ফিরে আয় আমি আর কখনো তোর কথায় বিরক্তবোধ করবোনা। তুই যখন বলবি আমি তখন তোর বাড়িতে চলে আসবো। প্লিজ ফিরে আয় ছায়া প্লিজ ফিরে আয়। আমার #অবহেলার_পরিণতি এমন ভাবে পাবো আমি ভাবতেও পারিনি। প্লিজজজজ ফিরে আয়য়য়….ছায়া…..প্লিজ…(সানজিদা)
এভাবেই হাজারো কথা বলে যাচ্ছিলো সানজিদা। বারবার ছায়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছিলো সে কিন্তু ছায়াকে হাজার বার ডাকলেও সে যে আর ফিরে আসবেনা। সে যে চলে গেছে না ফেরার দেশে আর সে কারোর ডাকে সাড়া দেবেনা। সানজিদা হঠাৎ দেওয়ালে দেখতে পায় ওখানে রক্ত দিয়ে লেখা আছে ডায়রি, অনলাইন ফ্রেন্ডস। লেখাটা দেখেই সানজিদা তাড়াতাড়ি ছায়ার ডায়রিটা খুললো ওখানে লাস্ট পেজে গিয়ে দেখলো ওখানে কালকে রাতের ডেট আছে। তার মানে ছায়া মারা যাবার আগে কিছু লিখে গিয়েছিলো। সানজিদা ডায়রিটা পড়তে লাগলো ওখানে লেখা আছে,
প্রিয় বেস্টি,
আমি জানি তুই আমার ডায়রিটা নিশ্চই পড়বি হয়তো তখন আমি থাকবোনা। জানিসতো বড্ড যন্ত্রনা করছে মাথায়। খুব কষ্ট হচ্ছে এই কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছিনা মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমি। কিন্তু জানিসতো আমি না মরতে চাইনা আমি তোদের সাথে বাঁচতে চাই। লাইফটা তোদের সাথে খুব করে ইনজয় করতে চাই। কিন্তু দিন দিন আমার যেন খালি মনে হচ্ছে আমি আস্তে আস্তে মৃত্যুর খুব কাছে চলে এসেছি। আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে তোর কথা ইচ্ছে করছে তোকে কল করে একটু কথা বলতে। কিন্তু তুইতো আমার ফোন পেলে বিরক্ত হস তাই আর ফোন দিলাম না। কেন জানিনা মনে হচ্ছে আমার হাতে সময় খুব কম তাই তোকে একটা কথা বলতে চাই আমি তোকে খুব বেশি ভালোবাসি রে….। আচ্ছা আমার একটা কথা রাখবি? আমার মৃত্যুর পর আমার অনলাইনের ফ্রেন্ডস গুলোকে বলবি একটু যে তাদের ফ্রেন্ড ছায়া আর বেঁচে নেই। সে চলে গেছে না ফেরার দেশে। তাদের এটাও বলিস যে আমি তাদের বড্ড বেশি ভালোবাসি….. বড্ড বেশি ভালোবাসি….। আমি তাদেরকে সারাজীবন জ্বালাতে চাই কিন্তু জানিনা মনে হচ্ছে আজই হয়তো তাদের আমি শেষ বার জ্বালালাম। আমার না খুব ইচ্ছে ওদের দেখার কিন্তু জানিনা আদও সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কিনা। আমি না তোদেরকে বড্ড বেশি ভালোবাসি রে…. তোদের ছেড়ে যেতে চাইনা আ………
ছায়ার ডাইরিতে আর কিছুই লেখা ছিলোনা শেষে কিছু রক্তের ছিটেফোঁটা ছিলো যা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো যে ছায়া আর কিছুই লেখার অবস্থায় ছিলোনা। ডাইরিটা পড়ে সানজিদা আরো বেশি চিৎকার করে কেঁদে উঠে। ছায়া তাকে এতটা ভালোবাসতো আর ছায়ার ভালোবাসার এই প্রতিদান দিলো সে। মেয়েটা সব বন্ধু ব্ন্ধব নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলো কিন্তু তাকে অকালেই তার প্রাণটা হারাতে হলো।
ছায়াকে কবর দেওয়া হলো আর কবর দিয়েছেন ছায়ার বাবা নিজেই। বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ এই চেয়ে নির্মম দৃশ্য আর এই দুনিয়াতে আছে বলে মনে হয়না। ছায়ার বাবা ছায়াকে কবর দিয়ে এসে সেই যে রুমে গেছেন। আর বের হননি। এদিকে ছায়ার মায়ের অবস্থাও তেমন একটা ভালোনা। মেয়েকে হারানোর শোকে তিনি পাথর হয়ে গেছেন। আত্মীয় স্বজন সবাই একে একে চলে গেলো। শূন্যতার কালো আঁধারে ঢাকা পড়ে গেলো ছায়ার বাড়িটা।
এদিকে সানজিদা ছায়ার সব ফ্রেন্ডসকে ছায়ার মৃত্যুর খবর জানাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। সবাইকে জানানো হয় ছায়া আর বেঁচে নেই চলে গেছে সে না ফেরার দেশে। সানজিদার কথা শুনে ছায়ার সব ফ্রেন্ডস খুবই মর্মাহত হয়। সবার শেষে সানজিদা তুহিনকে কল করে আর ছায়ার মৃত্যুর সম্পর্কে জানায়। তুহিন প্রথমে বিশ্বাসই করছিলোনা যে ছায়া মারা গেছে। সানজিদা অনেক কষ্টে তুহিনকে সবটা বুঝায়। সবটা শুনার পর তুহিন সম্পূররূপে ভেঙে পড়ে তুহিনের বারবার একটা কথায় কানে বাজছিলো ” আচ্ছা যদি আমি কখনো দূরে কোথাও চলে যায় মরে যায় আপনি কি আমাকে মিস করবেন? ” তুহিন নিজের মাথার চুল টেনে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
___ছায়াযায়য়ায়া…… কেন করলি এমনটা আমার সাথে?কেন চলে গেলি আমাকে ফেলে? তুইতো আমাকে সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলি তাইনা তোর কিছু হলে আমি কি কষ্ট পাবো কি না? দেখ আমার কষ্ট হচ্ছে বড্ড বেশি কষ্ট হচ্ছে। বুঁকের বা পাশটা হাহাকার করছে প্লিজ ফিরে আয় তুই প্লিজ। আমি আর কখনো তোর উপর রাগ দেখবোনা প্লিজ ফিরে আয়। তুই না থাকলে কে আমার খেয়াল রাখবে? কে আমাকে রোজ জিজ্ঞেস করবে খেয়েছি কি না? কে আমাকে জ্বালাবে? বল প্লিজ বল। কেন চলে গেলি এভাবে? আমার #অবহেলার_পরণতি যে এমন ভয়ানক হবে আমি জানতাম না রে। প্লিজ ফিরে আয় আমি আর কখনো তোকে অবহেলা করবোনা প্লিজ ফিরে আয় ছায়া। আমি তোকে ছাড়া কি করে থাকবো বল? কি করে বাঁচবো তোকে ছাড়া প্লিজ আমাকে এতো বড় শাস্তি দিসনা ছায়া প্লিজ ফিরে আয়। ( তুহিন )
ছায়াকে হাজার বার ডাকলেও যে ছায়া আর ফিরবেনা। সে যে চলে গেছে না ফেরার ওই দেশটায়। যেখান থেকে কেউ ফিরে আসেনা। হাজারো কাঁদলেও স্বজনের কান্নার আওয়াজ আর শুনতে পাবেনা ছায়া। সবাইকে কাঁদিয়ে কষ্টের সাগরে ভাসিয়ে ছায়া যে চলে গেছে ওই না ফেরার দেশে। মাটির নিচে আজ ছায়া বড্ড শান্তিতে আছে অনেক শান্তির ঘুম ঘুমোচ্ছে সে। যে ঘুম কখনো ভাঙবেনা কখনোই না।
[ আসলে আমরা কার উপস্থিতিতে তার গুরুত্ব বুঝতে পারিনা কিন্তু যখন তাকে হারিয়ে ফেলি তখন তাকে খুঁজে বেড়ায়। আমাদের ফ্রেন্ডরা যখন বলে সে কষ্টে আছে বা তার মন খারাপ তখন আমরা সেটা হাসি ঠাট্টায় উড়িয়ে দেয়। আসলে আমরা বুঝতেও পারিনা আমাদের এই একটা ভুল আমাদের কাছ থেকে আমাদের প্ৰিয় বন্ধুটাকে কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। নিজের ফ্রেন্ডসদের বুঝুন তাদের গুরুত্ব দিন। নয়তো এমনও হতে পারে আপনার #অবহেলার_পরিণতি এমনও হতে পারে। ]
May be a cartoon of 1 person, sky and twilight

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..