শবনম ফারিয়ার ডিভোর্স ব্যাপারটা নিয়ে মিডিয়া বা আমাজনতা যদি একটু কম লাফালাফি করে এবং একটু কম গালাগালি করে তাহলে মনে হয় ব্যাপারটা কিছুটা শোভন হয়। সেলিব্রিটি মানেই সবাই একরকম হবে, খারাপ চরিত্রের হবে আর তাদের ডিভোর্স মানেই যে তারা আরেকটা বিয়ে করার জন্য করেছে ব্যাপারটা কিন্তু সবসময় এমন নাও হতে পারে। শবনম ফারিয়াকে মিথিলার সাথে তুলনা দিয়ে গালাগালি করাটা কোনো দিক থেকেই সে ডিজার্ভ করে না।
আমি শবনম ফারিয়াকে ফলো করা শুরু করেছি “দেবী” দেখার পর থেকে। তারপরেও আমি তার বিবাহিত জীবনের প্রতিটা খুঁটিনাটি দূর থেকে একজন আমজনতা হিসেবেই ওনার পোস্টের মাধ্যমেই লক্ষ্য করেছি। উনি বরাবরই এই বিয়েতে সুখী ছিলেন না। বিয়েটা সে সম্ভবত করেছিলো তার বাবার শেষ অনুরোধ রাখার জন্যই কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই বরের সাথে তার মনের মিল হয়নি। একজন মানুষ যে বন্ধু হিসেবে পারফেক্ট সেও স্বামী হিসেবে পারফেক্ট নাও হতে পারে। এটা দুজনের কারোরই দোষ না। বিয়ের কয়মাস পরই ফারিয়া তার বিয়ের সব ছবি ডিলিট করে দেন।
এই দিক থেকে ফারিয়া ম্যাচিউর না। অন্যান্য মেয়েদের মতো সব ভুলে বরকে ছেড়ে দিয়ে কে কি ভাবলো পরোয়া না করে নিজের মতো থাকতে সে পারেনি। অনেক চেষ্টা করেছে এডজাস্ট করার। বারবার চেষ্টা করেছে মানিয়ে নেয়ার। তার বিয়ে ভাঙ্গার খবরটা মিডিয়া আজ জানলেও দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরেছে তার অনেক আগেই। সে বারবার তার বরের সাথে মিল করার চেষ্টা করেছে, একসাথে থেকেছে আবার আলাদা হয়ে গেছে এভাবেই বছর কেটে গেছে কিন্তু লোকে কি বলবে এই ভয়ে ফারিয়া ডিভোর্সের চিন্তা করেনি। কারণ সে মিডিয়ার লোক। ডিভোর্স হলে কয়টা কথা তাকে অবশ্যই শুনতে হবে, “মিডিয়ায় এমনই হয়!”, “মিডিয়ার মেয়েদের বর টেকে না”, “নিশ্চয়ই আরেক জায়গায় বিয়ে করবে বলে এটা ছাড়ছে” ইত্যাদিসহ আরো অনেক নোংরা কথা।
বছরখানেক আগে আমি একবার শবনম ফারিয়াকে ইনস্টাতে নক দিয়ে কথা বলেছিলাম,উনি রিপ্লাইও করেছিলেন। ওনার দাম্পত্য জীবনে যে সমস্যা আছে আর উনি প্রানপন চেষ্টা করে চলেছেন এডজাস্ট করে যাবার সেটা সেখান থেকেই আমি ধরতে পারি।
আমার এই স্টাটাস দেবার কারণ শবনম ফারিয়ার দালালি করা না। আমি তার খুব বড় ফ্যান এমনটাও না। অনেকেই হয়তো বলবে, রতনে রতন চেনে। শবনম ফারিয়া খারাপ আর আমিও খারাপ তাই এরকম কথা বলছি। কিন্তু তবুও আমি এই কথাগুলো বললাম একটা কারণেই যে সেলিব্রিটির বিয়ে ভাঙ্গলেই খুশীতে নেচে ওঠা বা সবাই একরকম হয়,সবার চরিত্র খারাপ হয়,সবাই শ্রাবন্তী বা মিথিলা হয় এই জাতীয় ধ্যান ধারণা আমাদের বদলানো উচিত। আমরাই পরিবর্তনের কথা বলি,আমরাই একটা সাধারণ মেয়ে বিবাহিত জীবনে অসুখী হলে বা মানিয়ে নিতে না পারলে তার পাশে গিয়ে দাঁড়াই অথচ সেই আমরাই কোন সেলিব্রিটি বা মিডিয়া জগতের কারো বিয়ে ভাঙ্গলে অগ্র পশ্চাৎ বিবেচনা না করে তাদের গালাগালি দিতে পিছপা হই না। এই অভ্যাস বদলানো উচিত। একটু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং তাদের দিকটা বিবেচনা করেও আমাদের ভাবা উচিত। দিনশেষে সবারই নিজের সুখের জন্য কাউকে কষ্ট না দিয়ে যেকোনো কিছু ত্যাগ করার অধিকার আছে। অবশ্যই আছে।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply