দুঃখিত, বিশ্বাস করি না বললে ভুল হবে। আসলে বদনজরের বিষয়টায় আমি ততটা গুরুত্ব দেই না।
এর পিছনে একটা জেদও আছে। আমার শ্বশুর বাড়িতে এই ব্যাপারটাকে একটু বেশিই গুরুত্ব দেয়।
মানে আমার শাশুড়ির সামনে কোনো ব্যক্তি হোক বা বস্তু হোক তার সম্পর্কে আপনি প্রশংসামূলক কোনো বাক্য বলার আগে অবশ্যই মাশাল্লাহ বলতে হবে। না হয় আম্মা মন খারাপ করেন, তাঁর ধারনা বদনজর লাগতে পারে মাশাল্লাহ না বললে।
তিনি জন্মের দুই, তিন বছর তাঁর নাতি, নাতনিদের নিকট আত্মীয় ছাড়া বাহিরের কারো সামনে নিতে দিতেন না। তিনি বিশ্বাস করেন মানুষের বদনজর পড়বে বাচ্চাদের উপর।
এই ব্যাপারটটায় আমি ভীষণ বিরক্ত ছিলাম। আমার মনে হতো এত অসংখ্য মিষ্টি, সুন্দর বাচ্চা পথে ঘাটে কোথায়, কার নজর লাগে! এসব আম্মার গোঁড়ামি।
অনেক বছর আগে আমার আম্মার একটা মুরগির অনেকগুলো বাচ্চা ফুটেছে। প্রায় বিশটার মতো। সাধারণত দেশি মুরগির একসাথে এতগুলো বাচ্চা ফুটে না। একদিন বিকালে আম্মা মুরগির ছানাদের ফিড খাওয়াচ্ছেন।
এমন সময় আমাদের এক নিকট আত্মীয় এসে একটা মুরগির এতগুলো ছানা দেখে ভীষণ অবাক হলেন। অনেক প্রশংসা করলেন। ধরে সবগুলো ছানাকে দেখলেন।
তিনি মিনিট পনেরো ছিলেন আমাদের বাড়িতে। তিনি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে একটা একটা করে ঘুরতে ঘুরতে ঘন্টাখানিকেরর মধ্যে সবগুলো ছানা মারা গেল।
এটা একদম সত্য ঘটনা।
হুমায়রার কান ফোঁড়াইছি। একটু নাপাও খাওয়াতে হয়নি, তেলও লাগাতে হয়নি। তিনদিনের মধ্যে কান ভালো হয়ে গেছে। সাতদিনের মধ্যে আমি কানে সোনার কানের রিং পরিয়েছি।
সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক সবকিছু। গতকাল সকালে একটা মহিলা হুমাইরার কান দেখে বললেন,
” কান ফোঁড়াইছেন মেয়ের? সুন্দর তো! বেশ মানিয়েছে।”
আমি হেসে হ্যাঁ সূচক সামর্থন করলাম।
হঠাৎ করে কাল স্কুল থেকে আসার পর মেয়ের কান লাল হয়ে ফুলে পুঁজ, রক্ত পড়া শুরু হয়েছে।
কানের দিকে তাকালে মনে হবে দীর্ঘদিন কান পচে এমন পুঁজ, রক্ত জমেছে।
আমি দিশেহারা হয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার এন্টিবায়েটিক দিলেন, ভায়োডিন দিয়ে পরিষ্কার করতে বললেন।
আম্মা সব শুনে বললেন,
” তুমি ঔষধ খাওয়াও সমস্যা নেই। আমি একটু বদনজরের পানি পড়া দেই।”
আমি ঔষধ খাওয়াচ্ছি, আম্মা পানি পড়া খাওয়ালেন।
আলহামদুলিল্লাহ, এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে হুমাইরার কানে কিছুই হয়নি।
সেটা পানি পড়ার কারণে হোক বা ঔষধের কারনে হোক। আমার কেন যেন মন বলছে ঐ মহিলার বদনজর লেগেছে হুমায়রার কানে।
আমাকে কেউ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ মনে করলেও করতে পারেন। তবে আমি সত্যি কুসংস্কার বিশ্বাস করি না। বদনজর অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এই সম্পর্কে হাদিস আছে বলে শুনেছি।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply