রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় আসার পর আমি ভয়ে ভয়ে থাকি। কখন না জানি সোহাগ আমার ভিতরে ভিতরে কি চলছে টের পেয়ে যায়। এমনিতেই সারাদিনের কাজের পর শরীর ছেড়ে দেয়। ঘুম চলে আসে কিন্তু এটা ঐটা ভাবতে গেলেই দুইটা চোখে আর ঘুম আসে না।
সোহাগের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে গেলো রমজানে তিন বছর। কাবিন এর অনেকদিন পরে আমাকে সোহাগ তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছে। সোহাগের ইটের ব্যবসা। দুইটা ইট খোলা আছে। আমার শাশুড়ি সহ আমরা তিন জা সবাই একসাথে এক বাড়িতেই থাকি। আমি সবার ছোট জা। বড় ভাসুরের টিনের ব্যবসা। আর মেঝ ভাসুর সিঙ্গাপুরে একটা খাবারের দোকানের ম্যানেজার। মেঝভাবী আর তার একটা ৬বছরের ছেলে দেশেই থাকেন আমাদের সাথেই। মেঝভাই দেশে আসেন বছর দেড়েক পর পর।
আমি বাড়িতে আসার পর থেকেই দেখি মেঝভাবির মুখ কালো থাকে সবসময়। বড়ভাবি ভালো করে কথা বললেও উনি খুব একটা কথা বলেনা আমার সাথে। বললেও কিছুটা খোঁচা দিয়ে বা নেগেটিভ ইঙ্গিতে বলে। আমি প্রথম প্রথম ব্যপারটা এতো পাত্তা দেই নি। পরে ভালো ভাবে খেয়াল করলাম কেন এমন করেন উনি।
এ বাড়িতে সবার সাথেই সবার বন্ডিং অনেক স্ট্রং। কিন্তুু সোহাগ আর মেঝভাবির একটু বেশিই মিল। দেবর ভাবির যে সম্পর্ক নরমালি হওয়া উচিত তার চেয়েও বেশি। এই যেমন ভাবি কোন কাজ করলে সোহাগ সামনে থাকলে কাজে হেল্প করে ও। এটা ওটা আগায় দেয়। সামনে অন্য কেউ থাকলেও মেঝভাবি সোহাগকেই বলে আগায় দিতে।
সেদিন যেমন, ভাবি তালের পিঠা বানাবে তাল চিপতেছে। দুই হাত ই আটকা। আমি চাল বাছতেছিলাম পাশেই। সোহাগকে দেখে ভাবি বলল,
এই সোহাগ আসো তো একটু এইখানটায়!
সোহাগ বলল, কি করতে হবে বলো আমার তাড়াতাড়ি যেতে হবে কাজ আছে। হয়তো সোহাগ আমি আছি দেখেই এরক ভাবে কথা বলেছেন ভাবির সাথে।
সে যাই হোক! মেঝভাবি বললো, কি আর করতে বলবো এখন তো তোমার বউ আছে। ওকেই সব করে দাও।
সোহাগ কিছুটা বিব্রতবোধ করলো মুখে কিছু বলার আগেই ভাবী বললো কপালের চুলগুলা চোখে মুখে আসতেছে একটু সরিয়ে দাও। সোহাগও তাই ই করলো!
সোহাগ চলে গেলে আমি ভাবিকে বললাম, মেঝভাবি আমি তো পাশেই ছিলাম আমাকে বললেই তো পারতে! ও কি আর এসব পারে বলে হাসলাম।
ভাবি আমাকে বলে উঠলো, ওর এসব করার অভ্যাস আছে। বললেই ও আমায় করে দেয়!
ভাবির কথা শুনে আমার মনে অনেক কিছু আসলেও আমি মন কে বুঝাই ভাবিরা মায়ের মতন। ছোট দেবর করতেই পারে। এতো ভাবার কি আছে।পরের পর্ব গুলো আমার টাইম লাইনে আছে পড়ে নিন।তাছাড়া মেঝোভাই থাকে না ভাবির তো অনেক কষ্ট। মানুষ টাকা পয়সা ইনকামের জন্য কত কষ্ট করে
দূরে গিয়ে থাকেন। ছিঃ আজকাল আমার মন চিন্তা ভাবনা কেমন যেনো ছোট হয়ে যাচ্ছে এসব বলে নিজের উপর রাগ করতেছিলাম।
পরদিন সকালে সবাই নাস্তার টেবিলে মেঝভাবি নেই সবার মাঝে। শাশুড়ি মা জিজ্ঞাসা করলো আমাকে, মেঝবউ কোথায়, খাবার টেবিলে যে আসলো নাহ্! শরীর টরির খারাপ নাকি!
আমি বললাম, মা আমি ভাবিকে ডেকে নিয়ে আসছি।
সোহাগ সাথে সাথে বললো, তোমার যেতে হবে না আমি যাচ্ছি!
সোহাগ ডাকতে গেলো ভাবিকে। আমার মন আবার উল্টা পাল্টা ভাবছে। পিছন পিছন আমিও গেলাম।
মেঝভাবির ঘরের সামনে যেতেই দেখি ঘরের দরজা বন্ধ!
.
.
.
চলবে-
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply