যেমনটা আমি বলছিলাম যে, শুধু রোযা রাখা এবং তারাবীহ পড়াতেই সীমাবদ্ধ থাকা অনুচিত। বরং রমজানের শুরু থেকেই কেউ যদি দুটি কাজ গুরুত্ব সহকারে করে, ইনশাআল্লাহ্ এটা ব্যক্তি জীবনে বড় সুন্দর পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। দু’টি কাজ-
এই রমজান মাসে এ বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করবো যে, এই মাসে ইনশাআল্লাহ্ কোন গুনাহ্ করবো না। বরং আপনি ভেবে দেখুন- রমজান মাসে মানুষ আল্লাহর হুকুমে দিনের বেলায় খাবার খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, পানি পান করা ছেড়ে দিয়েছে। অথচ খাবার-পানি এগুলো কী হারাম ছিল? নাকি হালাল ছিল? হালাল ছিল। শুধু আল্লাহর জন্য তা থেকে বিরত রয়েছে। তাহলে যেসব কাজ পূর্ব থেকেই হারাম (রোজার সময়ও এবং বাহিরেও) সেটা যদি না ছাড়ি তাহলে রোজা কোন কাজের? কেমন হলো সেটি? অর্থাৎ মিথ্যা বলা হারাম ছিল কিন্তু মিথ্যা রোজায়ও ছাড়লাম না (!) গীবত করা হারাম ছিল, কিন্তু রমজানেও গিবত করা বাদ দিলাম না (!) নন-মাহরামের দিকে অবৈধ কামনার দৃষ্টিতে তাকানো হারাম ছিল; তা-ও ছাড়লাম না। কাউকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেয়া, লড়াই-ঝগড়া করা সবসময়ই হারাম ছিল; তা-ও ছাড়লাম না। তো ভাই যেসব জিনিস হালাল জিনিস ছিল তাতো ছেড়ে দিলাম কিন্তু রমজান ও রমজানের বাহিরেও যা হারাম ছিলো সেগুলো যদি না ছাড়া হয় তাহলে এটা কেমন রোজা হলো? এর মাধ্যমে তাকওয়া কীভাবে হাসিল হবে? তাকওয়া তখন-ই হাসিল হবে যখন হালাল বিষয়গুলোর পাশাপাশি আগে থেকেই হারাম বিষয়গুলোও ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন যে, এই রমজান মাসে চোখ গুনাহে লিপ্ত হবে না। জিহ্বা কোন খারাপ কথা বলবে না। কান কোন খারাপ কথা শুনবে না এবং মুখে কোন হারাম লোকমা যাবে না। এটা কেমন কথা হলো যে, সারাদিন তো রোজা রাখলাম আর ইফতার করলাম হারাম খাবার দিয়ে। এমন উপার্জন যা হারাম ছিল, তা দিয়ে ইফতার করলো (!)। ধরা যাক, ধোঁকা দিয়ে উপার্জন করলো, এটা হারাম। সুদ খেয়ে উপার্জন করলো, তা হারাম। জুয়া খেলে উপার্জন করলো অথবা অন্য কোন হারাম পন্থায় / শরীয়ত নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে উপার্জন করলো যা হারাম। তো সারাদিন রোজাতো রাখলো কিন্তু ইফতার করলো হারাম দিয়ে এটা কেমন রোজা হবে? এ রোজা দিয়ে কিভাবে তাকওয়া হাসিল হবে? এজন্য বলছি- এদিকে মনোযোগ দাও। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে নিজ অনুগ্রহে তাওফিক দান করুন। রমজান মাস এভাবে কাটবে যে, কোন গুনাহ্ হবে না। এজন্য দৃঢ় মনোবলের পরিচয় দিতে হবে; যেভাবে প্রবল তৃষ্ণার্ত হওয়ার পরও পানি পান থেকে বেঁচে থাক। একইরকম গুনাহ করা থেকেও বেঁচে থেকে দেখ তাহলে এ রমজান মাস আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক মজবুত করার উত্তম উপায় হবে ইনশাআল্লাহ্। আল্লাহপাক তৌফিক দান করুন।
Leave a Reply