1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন

২২ জানুয়ারি ভোরে হানিফ ফ্লাইওভারে এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। সেদিনই সন্ধ্যায় তার ছেলে মর্গে গিয়ে বাবার লাশ শনাক্ত করে জানায় ৫০ বছর বয়সি মহির উদ্দিন এক মাছ বিক্রেতা। কিন্তু মারলো কে? – – – ফাহমিদা নুর তানিশা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৩০৫ বার
এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব পান যাত্রাবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই বিলাল আল আজাদ। টানা পাচ দিন লেগুনা চালকের হেল্পার সেজে তদন্ত চালিয়ে সেই খুনের রহস্য উদঘাটন করেন তিনি। ধরা পড়ে হত্যায় জড়িত চার ছিনতাইকারী। মনে হল যেন কোন মুভির কাহিনী।
ফ্লাইওভারে সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করে দেখা যায় চলন্ত এক লেগুনা থেকে মহিরউদ্দিনকে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু লেগুনার কোনো নম্বর না থাকলেও পাদানির লাল রঙ নজর কাড়ে। লাল পাদানির ওই লেগুনা খোঁজা শুরু করেন এসআই আজাদ। খোজ না পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে পরিচয় গোপন করে এক দালালের মাধ্যমে নিজের যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি রুটে একটি লেগুনায় চালকের সহকারীর কাজ নেন। শুরু হয় আজাদের গোয়েন্দাগিরি!
এক পর্যায়ে লাল পাদানির কোন লেগুনার খোজ না পেয়ে হতাশও হয়ে পড়েন। এরপরে নিজেই চালক হিসেবে কাজ করার জন্য লেগুনা আছে কি না, সেই খোঁজ করতে শুরু করেন। জানেন ৭২৮ নম্বরের এক লেগুনা রুটের সিরিয়ালে থাকলেও দুদিন ধরে সেটি দেখা যাচ্ছে না। সেটার খোঁজ নিয়ে দেখা যেতে পারে। অনুসন্ধান করে জানেন লেগুনাটি কদমতলীর একটি গ্যারেজে আছে। সেখানে গিয়ে দেখেন লাল পাদানির লেগুনা বিকল অবস্থায় গ্যারেজে পড়ে আছে।
জানতে পারেন লেগুনার চালক ফরহাদ মাদারীপুর! সেখানে গেলে ফরহাদ জানায় ২১ জানুয়ারি দুপুরে তিনি লেগুনা বুঝিয়ে দিয়ে মাদারীপুরে যান। খোঁজ নিয়ে দেখেন তার দাবি সঠিক।
আজাদ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ফরহাদের পরে লাল পাদানির ওই লেগুনা চালিয়েছিলেন মঞ্জু নামের এক চালক, তার হেলাপারের নাম আব্দুর রহমান।
কিন্তু তাদের কোনো ফোন নম্বর না থাকায় সম‌স্যা হয়। পরে রহমানের বাবার ফোনে লেগুনার চালক মালিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলে তার ছেলে লেগুনার চাকা আর তেল বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি ছেলেকে ডেকে আনেন। বুঝতে না দিয়ে রহমানকে ধরে ফেলে চালক মঞ্জুর খবর জানতে চান। রহমান জানায় শান্ত নামের একজনের মাধ্যমে তাকে পাওয়া যাবে। পরে শান্তকে নিয়েই অভিযানে যায় পুলিশ ও মঞ্জুকে ধরে ফেলে। দুজনকে থানায় নিয়ে গেলে মঞ্জু আর রহমান জানায় সেই রাতে তাদের সাথে রুবেল ও রিপন নামে দুজন ছিল। কদমতলী থেকে তাদেরও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এসআই আজাদ বলেন ২১ জানুয়ারি রাতে লেগুনা নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল চারজন। মধ্যরাতে একজন যাত্রী তাদের লেগুনায় উঠলে পরে বিপদ বুঝে চলন্ত লেগুনা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায় পরে ভোরবেলা মহির উদ্দিন ওঠেন ওই লেগুনায়।
তার কাছ থেকে ৫ হাজার ৯০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় ওরা। পরে সেই টাকার মধ্যে ৭০০ টাকার তেল কেনে। দুই হাজার টাকার ইয়াবা কিনে চারজনে মিলে সেবন করে। আর সকালে এক হাজার টাকার নাস্তা করে বলে জানিয়েছে মঞ্জু!
আজাদ জানান, পাচ দিনে ডেইলি ৩০০ করে ইনকাম হইছে তার! কষ্ট হইছে কিন্তু পুরো চক্রকে ধরতে পেরে খুশী। তবে এমন অভিজ্ঞতা তার এবারই প্রথম নয়! এর আগে ২০১৭ সালে ফেরিওয়ালা সেজে তিনি এক হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করেন! ব্রাভো!!
দমবন্ধ করা এটি কোন মুভির কাহিনী না বাস্তব ঘটনা! সকালে এটি পড়েই ভাল লাগলো খুব।স্যালুট এসআই বিলাল আল আজাদ! স্যালুট বাংলাদেশ পুলিশ ☘️
No description available.

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..