আজ খুব বৃষ্টি পড়ছে সেই সকাল থেকে, সকাল ছ’টায় একবার ঘুম ভেঙেছিল অঞ্জলির। কারণ মা কখন এসে গায়ে চাদরটা দিয়ে গেছে, ঠাণ্ডায় কুঁকড়ে ছিল বলে হয়তো বুঝতে পারেনি। আজ কতদিন হলো প্রিয় মানুষটা তাকে ছেড়ে চলে গেছে।সে এখন খুব একা,ছোট ছোট দুটো ছেলে মেয়ে রেখে প্রিয় মানুষটা চলে গেছে না ফেরার দেশে,আজ অঞ্জলির কাঁধে সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়েছে,ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে ওদের মানুষ করতে হবে।অঞ্জলি মনে মনে ভেবে নিয়েছে আজ,তাই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হবে আজ তাকে,বাকি পথটা তাকে একা একা চলতে হবে,অঞ্জলি ভাবলো তাকে আজ শক্ত হতে হবে নইলে চার পাশের এ সমাজে ঘাপটি মেরে বসে থাকা হায়েনারা তাকে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে খাবে কারণ আজ সে বিধবা,অঞ্জলি ঘুম থেকে উঠে বসলো,তারপর ভাবলো মা বাবা ভাই বোনের কথা,হয়তো তার পাশে থেকে তারা তাকে সাহস যোগাবে।
কিন্তুু কিছুদিন যাবার পর অঞ্জলি বুঝতে পারল,আজ আপন জনেরা সব যেন অচেনা হতে শুরু করেছে,তার পাশে আজ কেউ নেই।একদিন তো অঞ্জলি বড় বোন হিসেবে ছোট ভাই বোনদের টাকা পয়সা দিয়ে লেখাপড়ায় সাহার্য করেছে,বাবা মাকে হেল্প করেছে,আজ ভাই বোন তারা সবাই লেখাপড়া করে বড় হয়েছে।অঞ্জলির এই সঙ্কটময় মুহুর্তে তারা আজ কেউ পাশে নেই,এমন কি মা বাবাও যেন অনেক দুরের কেউ।অঞ্জলি আজ বুঝতে পেরেছে এ পৃথিবীতে আসলে কেউ কারো আপন নয়,টিকে থাকতে হলে লড়াই করে টিকতে হবে,এটা বুঝতে পারলো অঞ্জলি তাই মনে মনে সঙ্কল্প নিয়েছে বাদ বাকি পথ তাকে একাই চলতে হবে।সব ভেবে আজ সে নিজেই কঠিন এক লড়াইয়ে অবতীর্ণ হলো,ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে এক কঠিন পথ,স্বামী নেই মা বাবা ভাই বোনও পাশে নেই এক স্বামীহারা বিধবা নারী সে,তবুও একাকিত্বের এ পথ চলা শুরু করলো।ধীরে ধীরে অঞ্জলি কঠিন এক সংগ্রাম শুরু করল,সে বুঝতে পারলো এ সমাজে মেয়ে হয়ে একা একা পথ চলাটা কত কঠিন তবুও ছেলে মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছে।ভোরে ঘুম থেকে উঠে নিজে না খেয়ে বাচ্চা দুটোকে স্কুলে দিয়ে আসে,আবার স্কুল ছুটি হলে তাদের নিয়ে বাসায় ফেরে।
———–
চলবে
Leave a Reply