৪বছর হবে ওদের সম্পর্কের । পরী ও সুকমল ।দুজনের সম্পর্ক আর 5 টা সম্পর্কের মতই রাগ ঝগড়া অভিমান এবং সবার শেষে ভালোবাসায় ভরপুর । পরী একটা প্রাইভেট কলজের guest lacturer । আর সুকমল সরকারী চাকুরীজীবি । দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক । কিন্তু একটা সমস্যা ওদের মধ্যে লেগেই আছে তা হল দূরত্ব । দূরত্ব ভালোবাসার সম্পর্ক । বছরে খুব বেশি হলে 4 কি 5 বার দেখা হয় তবুও সম্পর্কটা ওদের দিনের প্রথম শিশিরের মতই সতেজ । কিন্তু ঐ যে কথায় আছে না কোনো কিছুই সম্পূর্ণ ভালো থাকে না । এদের ক্ষেত্রে ও তাই । সম্পর্ক এবার পরিণতি পাক তাই চায় পরী তাই প্রায় সে সুকমল কে ফোনে বা অনেকবার সামনে ও বলেছে তাদের বিয়ের কথা । কিন্তু সুকমল প্রতিবার কথাটা এড়িয়ে যায় আর বলে
– দাড়া ও সময় হোক ঠিক হবে ।
আর বোকা মেয়ে টাও তা বিশ্বাস করে যে বোধহয় সময় হয়নি ।এদিকে পরীর বাড়ির বড় মেয়ে বিয়ের বয়স হয়েছে তাই বিয়ে দেওয়ার তোড় জোড় আছেই সাথে আছে পারিবারিক মানসিক চাপ ।তাও পরী চারিদিক সামলাচ্ছে শুধু একটা কথা মাথায় রেখে “দাড়া ও সময় হোক ঠিক হবে ।”
দিন মাস বছর সব যাচ্ছে কিন্তু সুকমলের বলা ” ঠিক সময় ” আর বইছেনা ।এবারে পরীর পরিবার একটা ভালো প্রতিষ্ঠিত পাত্রের সন্ধান পেয়েছে । আর পরীকে বলে ও দিয়েছে ।
-সুকমল এর সময় হচ্ছে না যখন আমরা ও আর সময় দিতে পারছিনা তুই এবার ভাব কেমন।
এসব শুনে সে সুকমল কে ফোন করে ।
– হ্যালো বল ।
– বলছি বাড়ির থেকে খুব চাপ দিচ্ছে ।তুমি একটু কথা বল প্লিজ ।নাতো আমি আর সামলাতে পারছিনা ।প্লিজ বোঝ আমার পরিস্হিতিটা ।
-কি বুঝব হ্যা ।তুমি সব কিছুতেই হরবর করো ।বললাম তো সময় হয়নি ।আমি এখন কথা বলতে পারব না বুঝেছ । ঠিক সময় আসুক তার পর ।
– কিন্তু আমার যে মানসিক চাপ সেটা একটু বোঝার চেষ্ঠা কর ।
– বিয়ে করে নাও ।আমি ও তোমার জন্য বসব না । কেউ কারো জন্য আটকায় না ।কিন্তু সময় এখনো হয়নি ব্যস।
– (চুপ করে সব শুনল পরী ,সে কোনো দিন এই ধরনের কথা তাকে বলেনি আর ভাবেও নি ) তাহলে তুমি কি চাইছ ।
– বললাম তো ।ওহ আমি কৈফিয়ত দিতে পারবনা ওকে ।
-( চুপ) শুধু চোখ পরীর কথা বলছে ।মুখ নয়।
– ওকে আমি রাখছি ।
এভাবে সুকমল ফোনটা কেটে দিল ।
পরী ও চুপ শুধু চোখ কথা বলল তার ।
কোনো মেয়ে যদি কোনো ছেলেকে বিয়ে না করে । তাহলে সমাজ মেয়ে টাকে অনেক বাজে কথা বলে ।অনেকে তো চরিত্রহীনার ট্রাগটাও লাগিয়ে দেয় ,কিন্তু কেউ একটু মেয়েটার মানসিক পরিস্থিতে ভেবে দেখেনা । মেয়েটার মানসিক চাপ কে অনুমান করেনা ।
যখন কোনো মেয়ে কোনো ছেলের জন্য অপেক্ষা করতে চায় তখন সমাজ সেই মেয়ের বয়স নিয়ে মাথা ব্যাথা করে দেয় মেয়ের পরিবারকে ।
কেউ সেই ছেলেটার দোষ টা দেখেনা .
একজন প্রতিষ্ঠিত ছেলের জন্য একটা মেয়ের জীবন শেষ হতে পারে ।
প্রতিষ্ঠিত ছেলেদের সুন্দরী ধনবান মেয়ে দের অভাব হবেনা । সে ছেলের বয়স হিমালয় পাহাড় পেড়ালেও কোনো অসুবিধে নেই । কিন্তু সমাজ ঐ মেয়েটাকেই খারাপ বলবে ।
এই কাজ টা একটা ছেলে করলে তুমি যদি ছেলে হও আর তুমি যদি সম্পর্ক ভাঙো কেউ তোমার কাছে কৈফিয়ত চাইবেনা
ত্যাড়া চোখে বাঁকা হাসিতে তোমার দিকে তাকিয়ে হাসবেনা বা রাগের অপমানের তাকে বিদ্ধ করবেনা ।
সমাজের ভয় তার হবেনা
কারণ , সে একটা ছেলে । সেই মেয়েটার মানসিক খুনীর কথা বলবেনা ।
(সমাপ্ত)
Leave a Reply