তার জন্যই আমি ছাদে উঠতাম। গাছে পানি দেবার নাম করে বসে থাকতাম। কিন্তু সে ছিলো নির্বিকার।চোখাচোখি হলেও চোখ নামিয়ে নিত। আমি তাকিয়ে থাকতাম বেহায়ার মত। বুঝতে চাইতাম তার ব্যাথা।কেন সে এমন? কেন চুপচাপ??
এখানে আমরা নতুন এসেছি। কোন এক ভদ্রলোক বাড়িটা বেঁচতেই বাবা কিনে নিলেন। বাবার ব্যবসার সুবিধার্থে।
ছাদে গিয়েই তাকে দেখেছিলাম। এক দৃষ্টিতে আমাদের ছাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এরপর আর তাকাতে দেখিনি। আমাকে দেখেই কি তাকায় না সে?? ছেলেটা কি বুঝে না আমি তার মায়ায় পড়ে গেছি। তার জন্য বুকে চিন চিন ব্যাথা হয়।
কয়েক দিন ধরে ছেলেটা ছাঁদে আসে না। আমার খুব অভিমান হয়। এরপর এলে বলবো এই ছেলে আপনি রোজ ছাঁদে আসবেন। জানেন না আপনার জন্য আমি অপেক্ষা করি?
পরদিন সকালে মা ডেকে তুলে বললো ইতু জানিস পাশের বাসার ছেলেটা আত্নহত্যা করেছে? কি সুন্দর ছেলে। বাড়ির সবাই খুব কাঁদছে। আমাদের এই বাড়িতে আগে যারা থাকতো তাদের মেয়েকে না কি ভালবাসতো ছেলেটা। কিন্তু ছেলেরা তো হিন্দু এজন্য মেয়ের বাবা বাড়ি বেঁচে চলে গেছেন। তারপর থেকেই ছেলেটা না কি চুপচাপ। আহারে ওদের একটাই ছেলে। চল দেখতে যাবি?? একটু পর শশ্মানে নিয়ে যাবে।
মা আরও বকবক করছিলো। আমার হঠাৎ সব অন্ধকার লাগলো। যখন চোখ খুললাম তখন দুপুর গড়িয়েছে। মা কাঁদছিলো। বাবা আর ভাইয়া কিছু বলছিলো আমাকে।
আমার মাথায় তখন কয়েক টা শব্দ ঘুরছিল। পাশের ছাঁদ, আনমনা ছেলেটা, ভালবাসা, আত্মহত্যা, শশ্মান,আর আমার হ্মণিকের ভালবাসা।
আবারও চোখে অন্ধকার দেখছি।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply