1. banglamailnews72@gmail.com : banglamailnews : Zakir Khan
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
# আহারে # খোরশেদ ।। সমাজে নতুন অপরাধী চক্র তৈরী হচ্ছে কিন্তু ভবিষ‍্যতে এদের রক্ষা করবে কে??।। – – – আশিক ফারুকী “অতঃপর” __ সালমা আক্তার বীরাঙ্গনা নই আমি মুক্তিযোদ্ধা – – – শাহনাজ পারভীন মিতা জলপাই রঙের স্বাধীনতা – – – আরিফুল হাসান প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করতে হবে – উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান – – – স্বাধীন আজম –   টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি, স্বপ্নমায়া – – – – মাহজাবীন আহমেদ বুড়ি মরে গেল – – – মোঃ আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম প্রযুক্তির দুনিয়ায় শিক্ষার্থীদের এখন উন্নত জীবন গড়ার দারুণ সময়:– ————–টিপু সুলতান লেখক ও সমাজ চিন্তক ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতাই পারে ডায়াবেটিস রোগ নির্নয় ও রোগের চিকিৎসা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা – – – ডা: সাদিয়া আফরিন 

# শিশুর_চাওয়া ### সোহা চৌধুরী

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩২৮ বার
জানো দাদু! বাবা আজ আমাকে মেরেছে। এর আগে আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম তখনও একবার আমার পিঠে ঠাস ঠাস করে মেরে বাবা নিজেই অনেক কেঁদেছিলো।
-তুমি ব্যথা পেয়েছিলে দাদুমনি?
-হুম! পিঠে ব্যথা হয়েছিলো। তার চেয়ে বেশি ব্যথা বুকের এইখানটায়! দেখো দাদু (হাত দিয়ে বুকের মাঝখান দেখিয়ে) এইখানে কষ্ট পেয়েছিলাম। বাবারও নাকি আমাকে মেরে বুকে কষ্ট হচ্ছিলো।
-তাহলে মারলো কেন?
-বাবা তো আমাকে মারতে চায়নি। মামনির উপর রাগ করে মেরেছে। দেখো (বাথরুমের দরজা দেখিয়ে) এই দরজাটা এখনও এই জায়গায় ভাঙা না! এটা লাথি দিয়ে ভেঙেছিলো।
ওয়াল শোকেজের এই কাঁচটাও বাবাই ঐদিন লাথি দিয়ে ভেঙেছিলো।
-কেন?
-ইসস্ চুপ! আম্মু আসছে। এখন বলা যাবেনা।
-আচ্ছা! ঠিকআছে।
বাবা আসুক! আমার সোনা দাদুকে বাবা কেন মারলো আজ বিচার করবো।
-হুম! ইচ্ছামতো বকা দিবা।
আমি এখন কেজি ২ তে পড়ি। আমি বড় হয়ে গেছি। এখন কি আমি দুষ্টুমি করি! এখন তো আমি কতো পড়াশুনা করি। সব কথা শুনি। তাও আমাকে মারলো। আমি থাকবো না। তুমি আমাকে তোমার সাথে নিয়ে যাবে?
এরা খালি ঝগড়া করে। আমার ভালো লাগেনা।
-বাবন! এ্যাই বাবন!
-কি আম্মু!
-আচ্ছা! তুমি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না?
-না।
-তুমি তো বাবাকে বেশি ভালোবাসো!
-না! আমি দু’জনকেই ভালোবাসি।
-বাবাকে একটু বেশি ভালোবাসো! তাইনা?
তাহলে বাবার কাছে থাকো। আমি চলে যাই?
-না! আমি তোমাদের দু’জনকেই বেশি ভালোবাসি। দু’জনকেই চাই। দু’জনকেই আমার লাগবে। তুমি বিশ্বাস করো আমি তোমার সবকথা শুনবো। বাবাকে বকে দিবো যাতে তোমাকে না বকে।
-বাবা আমাকে বকলে তুমি কষ্ট পাও?
-হুম! অনেক কষ্ট পাই।
জানো আম্মু আমার ভালো লাগেনা তোমাদের ঝগড়া! তোমরা যখন ঝগড়ার সময় চিৎকার কর আমি আমার দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরি। অনেক ভয় পাই। তুমি আগের মতো আমার সাথে খেলোও না। আমার একা লাগে। আমার ভাই বোন কেন নেই? তাহলে তো একটু খেলতে পারতাম।
আগে বাবা আমার সাথে ফুটবল খেলতো,লুকোচুরি খেলতো। এখন কেন খেলেনা?
-বাবা অসুস্থ মা….!
তুমি কষ্ট পাও বুঝি? কিন্তু মামনিরও অনেক কষ্ট মা…!
তুমি আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান একটি মানুষ। যাও! কথা দিচ্ছি তোমার জন্য আর ঝগড়া করবোনা। এবার খুশি?
-ইয়ে্……! হি হি….! অনেক খুশি মামনি…!
আমি জানি মামনি আমার কান্নায় কষ্ট পেয়ে আমায় খুশি করতে এসব বলছে। মামনি বাবা দু’জনই মন ভালো থাকলে আমায় অনেক আদর করে। আমায় বুকে না নিয়ে তারা ঘুমাতে পারেনা। রাতে আমাকে কে আগে বুকে নিবে,গল্প শোনাবে এ নিয়ে তারা ঝগড়া লাগে। এ ঝগড়াটা ভালো ঝগড়া আমি বুঝি। তখন আমার আনন্দ লাগে। আমি তাদের মাঝখানে শুয়ে একবার বাবার বুক যাই, একবার মামনির বুকে ঝাপিয়ে পড়ি।
কিন্তু তারা আবার খারাপ ঝগড়াও করবে আমি জানি। আবারও আমাকে একা করতে চাইবে। আমাকে কষ্ট দিবে। এই ঝগড়াটায় আমার বুক কাঁপে। আমাকে কেন তারা বুঝেনা? আমি একটা শিশুবাচ্চা। আমি টি.ভি. তে দেখেছি, শিশুবাচ্চাদের আদর করতে হয়। এদের মারতে হয়না। মামনিকে, বাবাকে টি.ভি. দেখে অনেক গল্প শুনিয়ে জিজ্ঞেসও করছি,” এ থেকে কি শিখলে?”
মামনি ধমক দেয়। মামনি আর বাবা গল্প থেকে কিছুই শিখেনা যে, শিশুদের মারতে নেই।
এরা কেন বোঝেনা এদের সাথে না খেলতে পারলে আমার ভীষণ একা লাগে! মনটা খারাপ হয়ে যায়।
প্রতিদিন স্কুলে যাবার সময় আমাকে ধমক দিয়ে রেডি করালে আমার স্কুলের বন্ধুদের সাথে আমি খারাপ আচরণ করি। ক্লাসে মন দিতে পারিনা।
আর যেদিন আদর করে স্কুলে নেয়, আমার সারাদিনই ভালো কাটে,হাসিখুশিতে টিফিন পিরিওডে মেতে থাকি আমি।
কেন সবসময় মামনি আর বাবা আদর করতে পারেনা?
কেন তারা নিজেরা ঝগড়া করে আমাকে এত কষ্ট দেয়?
পাশের বাসার আমার এক বন্ধুর সাথে আমি মাঝে মাঝে খেলি। ওর বাবাকে নাকি ওর মা বের করে দিতে চেয়েছিল। ওরও আমার মতো খুব মন খারাপ ছিলো। আমরা তো একসাথে একই স্কুলে যাই। এই যে আমরা কি সুন্দর মিলেমিশে চলি! আমাদের বাবা মা গুলো এমন কেন?
তারা কেন আমাদের মতো মিলেমিশে থাকতে পারেনা?
একবার টি.ভি. তে দেখেছিলাম,বাচ্চাদের জন্য একটা স্বপ্নের পৃথিবী ছিলো যেখানে শুধুই আদর করে বাচ্চাদের খাওয়ানো হত।কোনো জোর করতো না। অনেক রকম রঙ-বেরঙের খেলনায় সে পৃথিবী ভরা থাকতো। শিশুরা তাদের ইচ্ছের ডানা মেলে পাখির মতো আনন্দে খেলতো, ঘুরে বেড়াতো। সেখানে জোর করে পড়ানো হতনা। সবাই যে যা হবার স্বপ্ন দেখতো তাই হয়ে যেত। আমি আমাদের মুন্নি ম্যামের মতো টিচার হতে চাই। সেই স্বপ্নের পৃথিবীতে আমি টিচার টিচার খেলায় নিজেকে সাজাই।
আমি চাই আমাদের এই শিশুবাচ্চাদের জন্য সেই স্বপ্নের একটা পৃথিবী হোক। যেখানে শুধু আদরের উষ্ণতা, যত্ন আর ভালোবাসা থাকবে। নিজস্ব স্বপ্ন থাকবে। বাবা মা পরম বন্ধুর মতো আমাকে ছায়া দিবে,আগলে রাখবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..