পাড়ি দিয়ে একসমুদ্র জীবন তারপর আমি জেনেছি মানুষ একা, আসলেই বড় একা!
তার নিজে ছাড়া নিজের আর কেউ নেই,
কেউই না!
জেনেছি জীবনের সহস্রভাগই পাড়ি দিতে হয় তার
রোগ-শোক জ্বরা-মৃত্যু কিংবা
দুঃখকে সঙ্গী করে একাকীই ;
দিনশেষে তাই আর কেউ পাশে থাকে না, কেউই না!
এই যে জীবন, পরিসমাপ্তিতে রয়েছে যার একরাশ
নিরেট নিখাদ শূন্যতা,
সেই জীবনকেই তো আমরা
টেনে নিয়ে বেড়াই,
টেনে নিয়ে বেড়াই কতো আনন্দ,
কতো রঙিন উচ্ছ্বাস,
কতো অপূর্ব তুমুল মোহনীয়তায় ;
প্রাপ্তির কলসি পূর্ণ করবার
ভীষণতর তীব্র আকাঙ্ক্ষায়!
অথচ সেই জীবন,
সেই জীবনই তো একদিন
দুম করে ফুরিয়ে যায়,
ফুরিয়ে যায় বেহিসেবে ফেলে রেখে
সমস্ত হিসেব-নিকেষ!
পড়ে থাকে কী নির্মম যাতনা,
কী নিদারুণ অপূর্ণতা,
কী দুঃসহ বিভীষিকাময়
ক্লান্তিকর করুণ দীর্ঘশ্বাস!
তারপরও জীবনের ঘোড়া খুঁজে খুঁজে মরে
কারো একান্ত আপন, আরাধ্য সান্নিধ্য;
নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা
কোনো স্বস্তিকর সুরক্ষিত
তুমুলতর এক প্রশান্তিময় যাপন!
খুঁজে মরে মায়াময় নিখাদ পরশ,
একান্ত আপনার কেউ ;
যারে ছুঁয়ে নিশ্চিত নির্ভার
কাটিয়ে দেওয়া যাবে,
কাটিয়ে দেওয়া যাবে
একটা বেপরোয়া বেহিসেবি জীবন
ভীষণতর নির্বিঘ্নেই!
পাশে থেকে বুঝে নেবে সমস্তটা,
বুক পেতে নেবে ব্যথার
খানিক ভাগ, খানিক ভাগ!
অথচ মানুষ বহুকাল একছাদ তলে
কাটাবার পরও থেকে যায় দূরত্বে;
বোঝা হয়ে ওঠে না কিছুতেই তার একে অন্যকে,
ভেতরে পড়ে থাকে তাই এক বিস্তর ব্যবধানের বিভেদ
সবার অলক্ষ্যেই!
নিজেকে সম্পূর্ণরুপে সঁপে দেওয়া যাবে এমন ভরসার
মানুষের দেখা তার আর মেলে না;
অন্যের ভেতর নিজের ছায়াকে দেখবার সাধ
এভাবে চিরকাল তার
অপূর্ণ, অপূর্ণই থেকে যায় আজীবন!
অতঃপর কোনো এক ভরা পূর্ণিমার রাতে
সে উপলব্ধি করে সহস্র মানুষের জনারণ্যে বাস করেও
মানুষ একা, ভীষণ রকমের একা;
নক্ষত্রের মতো একা!
আসলেই তার নিজে ছাড়া নিজেকে বলবার
কিংবা বুঝবার মতো জগতে আর কেউ নেই;
কেউ নেই, কেউ নেই, কেউ নেই;
নাহ কেউই তো নাহ!
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply