একদিন শেষ হবে রুমঝুম রিমঝিম
টুপটাপ ঝুপঝাপ বৃষ্টির গিটারের সুর..
নাচশেষে ফেলে যাবে পাহাড়ী নাচের স্মৃতি
বাহারী পালক তার মথুরা ময়ূর।
তারপর শরতের উড়োউড়ো রাঙামেঘ
ভাঙা ভাঙা সুখ এঁকে নাচাবে পরান..
মহামারি লীন হয়ে সোনালিকা দিনে ফের
শুরু হবে মানুষের জীবনের গান।
হাজারো মুখের ভিড়ে চেনাচেনা কত মুখ
কিছুমুখ হয়তোবা যাবেই না দেখা..
আমিও না থাকি যদি দুঃখ কী পড়ে নিও
রেখে যাওয়া থোকাথোকা সুখকর লেখা ।
আমার কিছুই নেই শূন্য মানুষ এক
চাওয়া বা পাওয়ার মতো নেইতো কিছুই..
প্রকৃতির মোহমায়া যেখানে ফেলেছে ছায়া
বিছিয়ে ক্লান্ত কায়া সেখানেই শুই।
আমার কিছুই নেই, সত্যি কি নেই কিছু?
প্রকৃতি উজাড় করে দিয়েছে অপার..
ঝিলমিল রোদমাখা ইমলির নীল শাখা
দুলিয়ে পাতার পাখা ডাকে বারবার ।
শিরীষের ঝুমঝুমি দুপুরের নিঝুমতা
ভেঙে ভেঙে শুনিয়েছে শিঞ্জিনী সুৃর..
ঝাবুকের বন থেকে নিলুয়া হাওয়ার বাঁশি
ভেসে এসে করে মন আবেগমেদুর।..
ঘুঘুদের ডাক শুনে থেমেছি গাঁয়ের পথে
ধুলোর হিমানী মাখা শীতের বেলায়..
পাতাঝরা দিনগুলো কতদিন আমাকে যে
নিমগ্ন রেখেছে এক স্মৃতির খেলায়।
মহামারি লীন হয়ে স্বর্ণালি দিন এলে
আমাকে না পাও যদি খুঁজে কোত্থাও ;
কিসের দুঃখ বলো? মিনজিরি বনে গিয়ে
আমার পাতার ছড়া পেলে পড়ে নাও।
দিনশেষে নীলসাঁঝে যেখানে ছড়িয়ে থাকে অগণিত মউলের কাচরঙা ফুল..
ঝিঁঝিদের গুঞ্জনে গোছাগোছা জুনিপোকা
যেখানে আলোর সুখে থাকে মশগুল..
শটিবনে কুঁচঝোপে বেতসের আবডালে
গুবগুব ডেকে ওঠে ডাহুকের মেয়ে..
খুদে ঝিলমরিচের গন্ধে পাগল হয়ে
ভুরুই পাখির ঝাঁক আসে ধেয়ে ধেয়ে..
যেখানে দুবলা বনে ঝুনঝুন মৃদু হাওয়া
তোলে মিহি কম্পন তসবিদানায়..
সেখানেই আমি রোজ মনের ডানায় চড়ে
উড়ে গেছি কবিতার কল্পমায়ায়।..
শহরের ডামাডোলে কখনো থাকিনি আমি আমাকে ডেকেছে বন, কুমারের ঢেউ;
এমন পাওয়ার সুখ এমন দেখার সুখ
আমার চাইতে বলো পেয়েছ কি কেউ?
মহামারি শেষে যদি অনাবিল দিন আসে
সেদিন আমাকে যদি না-যায় দেখা..
মিঠুয়া হাওয়ায় কাঁপা ইপিল ঘাসের মাঠে
শুয়ে শুয়ে পড়ে নিও আমার লেখা।
—————————
ঢাকা : ১৬.০৫.২০২০
Leave a Reply