১৯৮৯ সালের এক উজ্জ্বল দুপুরে দৈনিক বাংলা ভবনের পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে মাহবুব তালুকদার, ইমদাদুল হক মিলন, ত্রিদিব দস্তিদার, আনওয়ার আহমেদ আর আমি কথা বলছিলাম। বিখ্যাত আলোকচিত্রী শামসুল ইসলাম আলমাজী আনন্দ বিচিত্রা অফিস থেকে বেরিয়ে এসে একটা গ্রুপ ছবি তুলেছিলেন সেদিন, আমাদের পাঁচজনকে এক সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখে।
গেলো মাসের ২৩ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ফোন করলেন আমাকে। প্রথমেই সেই ছবিটার স্মৃতিচারণ করলেন। তারপর বললেন–তোমার ইমেইল আইডিটা দাও। একটা ছড়া লিখেছি সেই ছবিটা নিয়ে। ছবির দুজন মানুষ ত্রিদিব দস্তিদার এবং আনওয়ার আহমেদ চলে গেছেন ইতোমধ্যে, অন্য ভুবনে।
দীর্ঘ সময় ধরে কথা বললাম আমরা। আমাদের সম্পর্ক চার দশকেরও বেশি সময়ের। তিনি কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার প্রথম আহবায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আমিও সেই একই পদে। কথায় কথায় জানালেন, শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ তিনি। ঘড়ির হিশেবে টানা পৌনে দুই ঘন্টা ধরে আমাদের কথোপকথন চললো। সমাপ্তির আগে তিনি নিজেও অবাক হয়ে বললেন, নির্বাচন কমিশনার হিশেবে শপথ নেবার পর এতো লম্বা সময় ধরে কারো সঙ্গে টেলিফোন কনভার্সেশন এই প্রথম।
(আমি আমার স্মৃতিগদ্যে সেটা ধরে রেখেছি। পরে কোনো এক সময় পোস্ট করবো।)
এরপর মাহবুব ভাই ছবি আর ছড়াটা পাঠিয়ে দিলেন। মাহবুব তালুকদারের হস্তাক্ষর মুক্তোর মতো ঝকঝকে।
ছবিটায় বাঁ থেকে ত্রিদিব দস্তিদার, ইমদাদুল হক মিলন, মাহবুব তালুকদার, লুৎফর রহমান রিটন এবং আনওয়ার আহমেদ।
আমাদের পাঁচজনের ছবি নিয়ে মাহবুব তালুকদারের ছড়াটা পাঠক বন্ধুদের জন্যে তুলে ধরছি–
রইল বাকি তিন
…………………
বাংলাদেশের পাঁচটি ছেলে
কাটছিল বেশ দিন
ওরা সবাই কবি লেখক
জীবনটা রঙিন।
দুপাশ থেকে ঝরল দুজন
রইল বাকি তিন
মাঝখানে যে আছে তারও
সময়টা সঙ্গীন
মিলন-রিটন দুইয়ের কাছে
দেশের আছে ঋণ
একশ বছর বাঁচো দুজন
বাজাও খুশির বীণ।
মাহবুব তালুকদার
২২.১০.২০২০
………………………………………………
অটোয়া ২৮ নভেম্বর ২০২০
Leave a Reply