দূরের ঐ মাঠটাতে ছেলে-মেয়েরা খেলছে।কত্তো দূরন্তপনা তাদের।কেউ কেউ আবার ঝাপাঝাপিও করছে পাশের পুকুরটাতে।কত্তরকম শোরগোল। কারো কারো কিশোরী মনে যে নতুন নতুন বসন্তের আগমন হয়েছে।তা আর কেউ না বুঝলেও দূর থেকে দেখেও মায়াবতী তা দিব্যি ঠাওর করতে পারছে।সেই অনুভূতি গুলো যে তার চোখে স্পষ্ট। বাবার বাড়ির দো’তলার দক্ষিণের দিকটার যে ঘরটা তার জন্য বরাদ্দ করা তারই জানালা দিয়ে প্রত্যহ এসব ভাবাই যেন তার দিন কাটার একমাত্র
উপায়।এসব দেখে ভিতর থেকে বের হয়ে আসে এক দীর্ঘশ্বাস,যা কারোরই দৃষ্টিগোচর হয় না।এসব যে আবারও নতুন করে তাকে তার নিমাইদার কথা মনে করে দেয়।তাদের সেই সব স্মৃতিগুলো আবার তাজা হয়ে ওঠে। এইতো মনে হয় সেদিনকার কথা।
একসাথে জারুল কুড়নো,এর -ওর গাছের ফল-পাকুড় পাড়া,বিকেলে একসাথে খেলতে যাওয়া।ভালোই তো কাটছিলো। কেন যে দুজনে কিশোরী মনের সেই সমাজ নিষিদ্ধ আবেগটা প্রকাশ করতে গেছিলাম।তাইতো এখন ভয় হয় এই ছেলেমেয়েগুলোর জন্য।ইশ!এই বুঝি আবারো কারো মন ভাঙলো সমাজের কঠিনসব নিয়মের বেড়াজালে।হটাৎ, কাজের মেয়ের কথায় ধ্যান ভাঙে মায়াবতীর।চা দিয়ে গেলো মেয়েটা।চা খেতে খেতে আবার অন্যমনস্ক হয়ে যায় মায়াবতী। আজকাল শরীরটাও আর পারছে না।কখন যে ওপারের ডাক এসে যায়। ক’দিন হলো ভীষণ মনে পড়ছে নিমাইদার কথা।কেমন আছে লোকটা? কোথায় আছে?তারও কি আমার মতো চুলে পাক ধরেছে।মরার আগে কি একবারও দেখতে পাবোনা তাকে?একবারও কি শুনতে পাবোনা মায়াবতী ডাকটা।কতো আবেগ মিশিয়েই না ডাকতো! এখন নিজের সুফিয়া নামটাই যে আর মনে আসে না।অন্তরে যে মিশে আছে মায়াবতী ডাকটা।তার নিমাইদার দেওয়া নামটা।আচ্ছা,সমাজ এমন কেন? দুটো মনকে মিলিয়ে দিলে কি এমন ক্ষতি হয় তাদের? এই সমাজটার জন্যইতো তার আর সংসার করা হলো না।কথা গুলো আপন মনে ভাবতে ভাবতেই চোখটা বুজে আসে তার।
Leave a Reply