মাস খানেক আগের কথা।সেইফটি পিন কিনবো বলে একটা কসমেটিকস এর দোকানে ঢুকেছি।পাশে দাঁড়ানো মা মেয়ে কাস্টমার কিছু কিনছিলো।কিশোরী মেয়েটির ছলছল চোখ আর মায়ের অসহায়ত্ব দেখে আগ্রহী হলাম।মেয়েটির হাতে একটা টিকলি।দোকানী দুশো টাকা চাচ্ছে।মা একশ টাকাতে চাচ্ছে।মেয়েটি জিদ করছে না।কিছু বলছে না।অসহায় ভাবে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছে।পোষাক ও মার্জিত।খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো টিকলি টা মেয়েটাকে গিফট করি।কিন্তু, মধ্যবিত্ত আত্মসম্মান বোধ নিশ্চয়ই অনাত্মীয় কারো থেকে কিছু নেয়াটাকে মা সায় দেবে না।আমি এসব ভাবতে ভাবতে ওরা চলে গেলো।যাবার বেলায় ও কিশোরী মেয়েটি এমন করুন চোখে টিকলিটার দিকে তাকিয়েছিলো,বার বার মুখটা মনে পড়ে।
ঐদিন আমার হঠাৎ ই মনে হয়েছিলো,,মেয়ের বাপের টাকা থাকা জরুরী।
নাহ! মেয়ে বিয়ে দিতে নয়।মেয়ের মেয়েবেলার শখ পূরন করতে।
মধ্যবিত্ত পরিবারে চার বোনের বড় বোন ছিলাম।চার বোনের শহরের সবথেকে বড় স্কুলে পড়াশোনা,বাকী সব মেইনটেইন করে সব ঈদে হয়ত নতুন জামা জুতা পেতাম না।কখনও জিদ করিনি।চাই নি।তবে এখন যখন ভালোলাগার কোন শাড়ী,থ্রি পিস কিনে এনে বহুদিনে পরি না কিংবা অনলাইনে ওর্ডার করে ভুলে যাই,তখন ছেলেবেলার ঈদের রাতে নতুন নেইলপলিস বা মেহেদী না পাওয়ার ছোট মনের আবেগটা মনে পড়ে!
সাইকোলজিক্যালি ম্যাচিওর হওয়ার আগে মেয়েদের কিউট কিউট কিছু শখ থাকে।
কিশোরী মেয়ের জীবনে ভাত কাপড়ের অভাব টাই কেবল অভাব না।তার ছোট ছোট চাওয়া,পাওয়া,শখ গুলো অপূর্নতার রুদ্ধ দ্বারে মাথা কুটে মরলেও অভাব।
এ অভাব হয়তো কিশোরীর শখ গুলোকে ভুলিয়ে দেবে,,চাওয়াগুলো কে ইম্যাচিওরিটি বলে ভাবাবে।কিন্তু মন নামক বাচ্চাটার বয়স বাড়িয়ে দেবে।শখ গুলো লু হাওয়ায় উড়িয়ে দিবে।
একটা সময় মেয়েটা আর তার শখের ঘুড়ির লাটাই খুঁজে পাবে না।ইচ্ছে গুলো তখন আর নীল আকাশে ডানা মেলবে না।
এক সময়ে অভাবটা কেটে গেলেও শখ টাকে আর সাত সমুদ্র তের নদী খুঁজে ও ফিরে পাওয়া যাবে না।প্রিয় রংয়ের শাড়ীতে আলমারী ভরা থাকলেও ছুঁযে দেখতে ইচ্ছে হবে না।যে রুপোর নুপুরের জন্য বহু রাত কেঁদে কেটেছে কিশোরীর,, তরুনী বা পৌঢ়ে এসে ঐ নুপুর আর ছুঁয়ে দেখতে ও ইচ্ছে হবে না।
আপনার কন্যাকে তাই এটেনশন দিন।সাধ্যমত তার কিশোরী মনের শখ,আহ্লাদ,চাওয়া,পাওয়া পূরন করুন।
আপনার মেয়ের মেয়েবেলাটা বর্নিল করে,তুলুন
Leave a Reply