রিসেন্টলি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের নামে গাঁজাখোর এবং ছাগলামির এপিসোডটি বাঙালি কম্যুনিটিকে জোর করে গিলতে হয়েছিলো। তথাকথিত ৫০ গুণীজনকে অ্যাওয়ার্ড দেয়ার যৌক্তিকতা এখন পর্যন্ত খুঁজে বেড়াচ্ছি। চ্যানেল আই’র কর্তাবাবুরা যাদেরকে সিলেক্ট করেছেন, তাদের সবাই কি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্য? কি কারণে লাখ লাখ খরচ করে এমন একটি প্রশ্নবিদ্ধ এবং নিন্দিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল? সাবিনা ইয়াসমিন কিন্তু সেদিন স্টেজে উঠে একটা গানও গাইলেন না। সামিনা চৌধুরী কুমার বিশ্বজিতের বেলায়ও তাই দেখলাম। শুনলাম চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো’র জাজ হিসেবে আছেন বিশ্বজিৎ এবং সামিনা। সেই সুবাদেই নাকি এই অংশগ্রহণ। আরও আছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফেরদৌস আরা, এস আই টুটুল— শুধু তামাশা আর তামাশা। আমার মাথায় ঢুকলো না পল্লীগীতি শিল্পী মনোয়ারা বেগমের ছেলে, ডলি সায়ন্তনির ভাই বাদশা বুলবুলকে কেন অ্যাওয়ার্ড দেয়া হল!! দিলারা আলো এবং দিলরুবা খানের মেয়ে শিমুল খান আমাদের সঙ্গীত জগতের কয় শতাংশ আলোকিত করেছেন বলতে পারেন? আফজাল হোসেনের মত তুখোড় ক্রিয়েটিভ ব্যক্তিত্বকে এমন নির্জীব আর নিস্ক্রিয় দেখা যাবে, ভাবনায় আসেনি। আচ্ছা, আফজাল হোসেন কেন নিউইয়র্ক এসেছেন? বেড়াতে এলে সেটা অবশ্যই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে চ্যানেল আইয়ের স্টেজে উঠে কি করলেন তিনি? সস্তা হাততালির মিনতি করেছেন। আফজাল হোসেনের এমন দৈন্যদশা দেখে খুব দুঃখ হল। এবার আসি ভিসা ক্যাটাগরিতে। শিল্পীদের অধিকাংশই এসেছেন B1 এবং B2 ক্যাটাগরির ভিসায়। B1, B2 হচ্ছে পিউর ভিজিট ভিসা। এই ক্যাটাগরিতে এলে কেউ কনসার্টে অংশ নিতে পারবেন না।
কনসার্ট করার জন্য P3 ক্যাটাগরির ভিসা লাগে। কেবল P3 ভিসায় এলে শিল্পীরা কনসার্টে অংশ নিতে পারবেন। তবে সরকারকে ট্যাক্স দিতে হবে। কিন্তু নিয়ম কানুনের থোড়াই কেয়ার করে সাবিনা ইয়াসমিনের মত গুণী গায়িকাকে নিউইয়র্কে নিয়ে আসা হয়েছে। যে ব্যক্তি এসবের অর্গানাইজার তার নিজেরও কাগজপত্রে ঘাপলা আছে। উক্ত ব্যক্তি সমানে বাংলাদেশ থেকে শিল্পী তারকাদের নিয়ে আসছেন। এসব তাদের সিজনাল বিজনেস। এভাবে ব্যবসা করে তিনি লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিচ্ছেন। অতীতে এই গুণধর আয়োজক সানি লিওন ও সুবর্ণা মুস্তফাকে একই মঞ্চে তুলে গর্বে বুকের ছাতি চওড়া করে ফেলেছেন। নিউইয়র্কে উনি হুমায়ূন মেলাও করেছেন। সেটা নিয়ে প্রচুর কানাঘুঁষা হয়েছে। নিউইয়র্কের মানুষ লেমন কালার জামদানি শাড়ি পরা “বিপুল উচ্চতার অভিনেত্রী”র এক্সট্রা কারিকুলাম দেখে পুলকিত হয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিন এসেছেন ভিজিট ভিসায়। যদিও নিয়ম অনুযায়ী সাবিনা কনসার্ট করার জন্য অ্যালাউড নন। তিনি রীতিমতো ইমিগ্রেশন ল’ ভায়োলেশন করেছেন। ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গ করার কারণে কেউ কেউ ব্ল্যাক লিস্টেড বা কালো তালিকাভুক্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। এই ব্যাপারে সাবিনা ইয়াসমিনের সতর্ক থাকা উচিত। তিনি ইতিমধ্যে কয়েকটি গানের অনুষ্ঠানও করে ফেলেছেন। একটি প্রোগ্রামে গান গেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন পান আড়াই হাজার ইউএস ডলার। যদি তিনটি অনুষ্ঠান করেন তাহলে পাবেন সাড়ে সাত হাজার ডলার। তিনি আসা যাওয়া করেন প্লেনের বিজনেস ক্লাসে। আর অন্যরা যাতায়াত করেন ইকোনমি ক্লাসে। তবে চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের ব্যানারে সফলভাবে প্রচুর আদম ব্যবসা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের নামে আদম ব্যবসার প্রসার ঘটছে।
Leave a Reply