প্রতি মাসেই কয়েকজন রোগী পাই যাদের আয়ু ক্ষয় হয় নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই। আজকের সকালটাও তেমন একজনকে নিয়ে।
#বিষয় : মুখের ক্যান্সার বা Squamous Cell Carcinoma.
অনেক ডাক্তার দেখিয়ে টেস্ট করাতে করাতে বেশ মোটা ফাইল। তবে একজনও এমবিবিএস / বিডিএস ডাক্তার দেখান নাই। বাঙালীরা আবার জন্মসূত্রেই ডাক্তার!
বয়স ৪৫ বছর। রোগী এসেছেন মুখে দুই মাসের ঘা নিয়ে। খুবই ব্যাথা , জ্বালাপোড়া আর দিন দিন হা ছোট হয়ে আসছে।
পান খাচ্ছেন ২৫ বছর ধরে। যেহেতু পেশায় নরসুন্দর বা চুল কাটেন। খদ্দরের শরীরের বা মুখের গন্ধ হতে বাঁচতেই ছোট বেলায় পান ধরেছিলেন। সেই পান আজ প্রাণ শক্তিই কমিয়ে দিল!
উনার এই রোগের নাম SQUAMOUS CELL CARCINOMA বা সোজা বাংলায় “মুখের ক্যান্সার”
ধীরে ধীরে হা আরো বন্ধ হয়ে আসবে। ব্যাথা বাড়বে। একসময় ঘা মুখের বাইরে ও গলায় ছড়িয়ে পড়বে। এভাবে করে একদিন ছটফট করতে করতে স্রষ্টার কাছে দ্রুত মৃত্যুই কামনা করবে।
রোগীর কোন আত্মীয় নেই। তাই উনাকেই বিষয়টা বলাটা বেশ কঠিন হলেও বলতে হলো।
এই রোগীদের জন্যে আমার হস্পিটালে এবং এমনকি প্রাইভেট চেম্বারেও সেবার দ্বার ফ্রি করে রাখি।
গত এক বছরে কক্সবাজারে মোট ৭ জন মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করেছি চেম্বার ও সরকারি হস্পিটালে। শেষ স্টেজে গিয়ে এই রোগের একমাত্র পরিণতি মৃত্যুই।
এদের মধ্যে এমন একজন বৃদ্ধা আছেন যাঁর মেয়ে এসে বলেছিলেন ” মায়ের মুখ পঁচে দূর্গন্ধে বাসায় থাকা যাচ্ছে না। শুধু আইভি স্যালাইন ছাড়া মুখে খাওয়ার পরিস্থিতি নাই। উনাকে একটু শান্তিতে মৃত্যু দেয়ার জন্যে কিছু করা যায় না , স্যার? “
সেদিন মেয়েটার আবেগঘন কঠিন সিদ্ধান্ত মূলত মাকে শান্তি দেয়াটাই ছিল। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে বাঁচতে তামাক ও পান বিরোধী প্রচারণা অত্যন্ত জরুরী।
মুখে ঘা হলে দ্রুত ওরাল স্ক্রিনিং করেন। সুস্থ থাকেন। তামাক হতে বিরত থাকেন।
Leave a Reply