বেশ কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে বিদেশি এই ফল চাষ করা হচ্ছে। একটি ড্রাগন ফলে ৬০ ক্যালরি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৯ থাকে। এই ফলে বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও রয়েছে।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে: একটি ড্রাগন ফলে প্রায় ৭ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণের চারভাগের প্রায় একভাগ। এটা অন্ত্রের বর্জ্য দূরীকরণে সহায়তা করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা রয়েছে তারা এই ফল খেলে উপকার পেতে পারেন। সালসা তৈরি করে অথবা ফ্রুট সালাদ বা স্মুদিতে যোগ করে ড্রাগন ফল খেতে পারেন। এই ফলের স্বাদ হালকা।
হার্টের উপকার করে: ড্রাগন ফলের বীজে হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। নিউ ইয়র্কের পুষ্টিবিদ ও দ্য স্মল চেঞ্জ ডায়েটের লেখক কেরি গানস বলেন, ‘ড্রাগন ফলের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। একারণে এই ফল খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি ও জয়েন্টের ব্যথা কমে যায়। ড্রাগন ফল খেলে বিষণ্নতাও কমতে পারে।’
হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে: অধিকাংশ ফলের চেয়ে ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকে। এটা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে ও অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে। অস্টিওপোরোসিসে হাড় এতই দুর্বল হয়ে যায় যে সহজেই ভেঙে পড়তে পারে। এক বাটি ড্রাগন ফলে দৈনিক সুপারিশকৃত ম্যাগনেসিয়ামের প্রায় ১৮ শতাংশ পাওয়া যায়। জার্নাল অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, মাসিক চক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ড্রাগন ফল বিশেষ সহায়ক হতে পারে।
রক্ত চলাচল বজায় রাখে: বিশ্বের একটি অতি পরিচিত পুষ্টি ঘাটতি হলো আয়রনের ঘাটতি। নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। মাংস, মাছ, বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার থেকে আমরা অধিকাংশ আয়রন গ্রহণ করে থাকি। মাত্র কিছু ফলে উচ্চ পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এসব ফলের একটি হলো ড্রাগন ফল। ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১.৯ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার ১০ শতাংশেরও বেশি। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য আয়রন প্রয়োজন, যা শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন পৌঁছাতে লোহিত রক্তকণিকাকে সাহায্য করে।
চুলপড়া প্রতিরোধ করে: আয়রন ঘাটতির কারণে চুলপড়া সমস্যাও হতে পারে। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে চুলপড়া কমতে পারে। এছাড়া নিউ ইয়র্ক সিটির আইকান স্কুল অব মেডিসিনের ডার্মাটোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল প্রফেসর গ্যারি গোল্ডেনবার্গের মতে, এই ফল আয়রন ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতার অন্যান্য উপসর্গও প্রশমিত করতে পারে, যেমন- অত্যধিক ক্লান্তি, ত্বকের বিবর্ণতা, মনোনিবেশে সমস্যা, মাথাব্যথা ও হাত-পায়ে ঠান্ডা অনুভূতি।
ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে: ভাইরাস সংক্রমণে আমরা সাধারণত কমলার মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের দিকে ঝুঁকে পড়ি, কারণ ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। কিন্তু ইমিউন সিস্টেমের কার্যক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটে ড্রাগন ফলকে রাখার কথাও বিবেচনা করতে পারেন। এতেও প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। বেথ ওয়ারেন নিউট্রিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পুষ্টিবিদ বেথ ওয়ারেন বলেন, ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস জনিত ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রয়োজন তা ফল ও শাকসবজিতে রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের একটি প্রাচুর্যপূর্ণ উৎস হলো ড্রাগন ফল।’
Leave a Reply