আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্মবার্ষিকীতে ঐতিহাসিক একটা ছবি হাতে পেলাম। ছবিটা ১৯৯৫ সালের ১৭ মার্চের।
দিন তারিখের হিশেবে ২৭ বছর আগের ছবি এটা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তখন সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী। জাতির জনকের জন্মোৎসব উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছিলো সেবার, কবি-লেখক-শিল্পী-সাংবাদিকদের সমন্বয়ে। আমিও ছিলাম সেই কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য।
জাতির জনকের জন্মদিন উদযাপনের জন্যে আমাদের একদল লেখক-শিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন টুঙ্গিপাড়ায়। ১৯৯৫ সালের ১৭ এবং ১৮ মার্চ দু’দিনব্যাপি বিশাল অনুষ্ঠান হয়েছিলো সেখানে।
সেই সময়, টুঙ্গিপাড়ার উৎসবমঞ্চে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কমিটির সদস্যদের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হক, রশীদ হায়দার, রফিক আজাদ, মহাদেব সাহা, এবং আমাকে অর্থাৎ লুৎফর রহমান রিটনকেও দেখা যাচ্ছে!
আহা কী সব দিন গেছে আমাদের!
পঁচাত্তর পরবর্তী ভয়ংকর বিরুদ্ধ একটা পরিবেশে আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখতাম-গাইতাম-আঁকতাম। রাষ্ট্র-সরকার-প্রতিষ্ঠান সবকিছুতেই তখন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা বিরোধীরা জাঁকিয়ে বসেছে। ছেলেমেয়েদের পাঠ্যসূচী, রেডিও টেলিভিশন চলচ্চিত্র এবং পত্র-পত্রিকাসহ সমস্ত মিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নাম!
ইতিহাস থেকে ‘শেখ মুজিবুর রহমান’কে নিশ্চিহ্ন করতে স্বাধীনতা বিরোধীরা কতো কুৎসিত জঘন্য ‘ইতিহাস বিকৃতি’ই না করেছে বছরের পর বছর! অতঃপর, ক্যালেণ্ডারের হিশেবে দীর্ঘ একুশ বছর পর মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলো ১৯৯৬ সালে।
তারপর ‘ভূতের মতো উলটোপথে হাঁটা বাংলাদেশকে’ একটা দুর্দান্ত ইউটার্ন নেয়ালেন শেখ হাসিনা। ফের আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ তরতর করে হাঁটা শুরু করলো বঙ্গবন্ধুর দেখানো স্বাধীনতার পথে।
একদা যে রাষ্ট্রযন্ত্রের সমস্ত কলকব্জা একযোগে মেতে উঠেছিলো মুজিব নিধনে, সেই রাষ্ট্রযন্ত্রই আজ মুজিবের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে হিরকদ্যুতির ঔজ্জ্বল্যে দীপ্যমান হয়ে ওঠে! আহা কী অপরূপ সেই দৃশ্যসমূহ!
জয়তু শেখ হাসিনা।
শুভ জন্মদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!
আপনার বাংলাদেশ আপনার মতোই চিরজীবী হোক।
জয় বাংলা।
Leave a Reply