অনেক আশা নিয়ে দিন গুনতে থাকা একজন গর্ভবতী মা একটা অসুস্থ প্রতিবন্ধী শিশুকে জন্ম দিয়ে, তাকে অন্যান্য সুস্থ্য শিশুদের চেয়েও বেশি যত্ন আর ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখেন কারন তিনি মা আর প্রতিবন্ধী শিশুটি তার সন্তান।অর্থাৎ তার কাছে এই সম্পর্কটার মুল্য অনেক।অথচ সুস্থ্য, সুন্দর, ফুটফুটে চাঁদেরকণার মতো মুখ নিয়ে জন্মানো শিশুটিকে পড়ে থাকতে হয় কোন ডাষ্টবিনে নয়তো কোন ঝোপঝাড়ে অথবা বাথরুমে কারন ওর মায়ের কাছে এই সম্পর্কটার কোন মুল্য নেই।
আবার হত দরিদ্র পরিবারের যে বাবা মা অনাদরে আর আবহেলায় বড় হওয়া কিশোরী মেয়েটিকে স্বার্থ আর টাকা পয়সার লোভে দ্বিগুণ বয়সী একটা ছেলের হাতে তুলে দেন।সেই মেয়েটি শ্বশুর বাড়িতে অত্যাচারীত হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে এসে সবার অবহেলা পেয়ে পরিবারের কাউকে কোন রকম প্রশ্নবিদ্ধ না করে চোখের কোনে জমা পানিটুকু আড়াল করতে পারে কারন ওর কাছে সম্পর্কের মুল্যটা অনেক বেশি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে আদর আর সকাল বিকাল খুব যত্ন পাওয়া মেয়েটাও একসময় বাবার টাকা পয়সা আর মায়ের দামি অলংকার নিয়ে বখে যাওয়া ছেলেটার হাত ধরে পালিয়ে যেতে দ্বিধাবোধ করেনা।কারন বাবা মার সাথে সম্পর্কের কোন মুল্যই ওর কাছে নেই।
পরিবারের কোন রকম খেয়াল ছাড়া বড় হওয়া ছেলেটা যে কিনা টিউশানি করে স্যান্ডেল খসিয়ে পার করেছে শিক্ষা জীবনটা। সেও এখন সুন্দর করে ধরেছে সংসারের হাল। খোঁজ রাখে বাবা মার সব সময়। অথচ যে বাবা মা ভিটেমাটি সব খুইয়ে ছেলেকে মস্তবড় অফিসার বানিয়েছেন। সেই ছেলেটি এখন সময়ই পায় না বাবা মায়ের খোঁজ নেয়ার।
আবার দিন রাত এক করে কলুরবলদের মত খেটে শ্বশুর বাড়িতে সবার মন যুগিয়ে চলা মেয়েটি স্বামীর ভালোবাসা না পেয়েও কখনো ঘর ছারেনা। স্বামীর ঘর বেহেস্ত মনে করে।অথচ সোকেসে যেমন পুতুল সাজিয়ে রাখে তেমন করে রাখা বউটা, যাকে দিয়ে কাজ করালে নখ নষ্ট হয়ে যাবে বলে শ্বাশুরী আর ননদ মিলে সব সামলায়। সেই বউটাও এক সময় সবাইকে ধোকা দিয়ে অন্যকারো হাত ধরে সুখী হতে চায়।
কথায় কথায় ঝগড়া আর উঠতে বসতে খারাপ কথা শোনা স্বামীও মাস গেলে বেতনের সব টাকা তুলে দেয় বউয়ের হাতে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের গুরুত্ত্ব বুঝেই। কিন্তু চাকরিজিবী একজন স্ত্রী যে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে তার সংসার, তার গায়ে হাত তোলে মাতাল স্বামী। কারন স্বামী স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্কের কথা সে জানেই না।
তবে হ্যা এই পৃথিবীতে এখনো সম্পর্কের মুল্য দেয়া মানুষগুলোর সংখ্যাই অনেক বেশি।আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছি এই মানুষ গুলোকে মুল্যায়ন না করে মুল্যহীন ভেবে ফেলি এবং বোকা ভাবার মতো বোকামো করে থাকি। যা একেবারেই অনুচিত।
আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা এই ধৈর্যশীল মুল্যবান মানুষগুলোর জন্যই টিকে আছে আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ। আছে শান্তি আর শৃঙ্ক্ষলা।
Leave a Reply