ইউটিউব ব্যবহারকারীদের আপলোড দেওয়া বা দেখার সুযোগ প্রদানসহ তাকে মূল্যায়ন করা, শেয়ার, প্লেলিস্টে যুক্তকরণ, রিপোর্ট, ভিডিওগুলিতেও মন্তব্য করা কিংবা অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাবস্ক্রাইব করার খুবই সুবিধা প্রদান করেছে। এই ইউটিউব ব্যবহারকারী-উৎপাদিত ও কর্পোরেট মিডিয়ায় ভিডিও গুলো যেন একটি বিস্তারিত উপস্থাপন প্রদান করে। উপলভ্য সামগ্রীর মধ্যেই ভিডিও ক্লিপ, মুভি ট্রেলার, টিভি শো ক্লিপ, স্বল্পদৈর্ঘ্য বা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, অডিও রেকর্ডিং, সঙ্গীত ভিডিও, ভিডিও ব্লগিং ও লাইভ স্ট্রিম, স্বল্পদৈর্ঘ্য মূল ভিডিও কিংবা শিক্ষামূলক ভিডিওর মতো অন্যান্য সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত আছে বলে এই ইউটিউবে বেশিরভাগ সামগ্রী ব্যক্তিগতভাবে আপলোড করা যায়। তবে ভেভো, বিবিসি, সিবিএস কি়ংবা হুলুসহ মিডিয়া কর্পোরেশন সমূহ ‘ইউটিউব’ এর অংশীদারিত্বের প্রোগ্রামে অংশ হিসাবেই তাদের কিছু উপাদান ইউটিউব এর মাধ্যমে সরবরাহ করে। এইখানে যিনি ইউটিউব এর নিবন্ধিত বা ব্যবহারকারী তারাই কেবল মাত্র এ সাইটেই ভিডিও দেখতে। তবে তাদেরকে কোনোকিছু আপলোড করার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় নাই। আর যা পারবেন, তা হলো নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদেরও ‘সীমাহীন সংখ্যক’ ভিডিও আপলোড সহ বিভিন্ন ভিডিওতেই মন্তব্য করার অনুমতি। আবার বয়স-সীমাবদ্ধ এমনধরনের বেশকিছু ভিডিওগুলো কেবল নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদের জন্যেই কমপক্ষে ‘১৮ বছর’ বয়সের মানুষদের স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে দেখার অনুমোদন রয়েছে। ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওর মধ্যে থাকা যাকিছু কপিরাইটযুক্ত বিষয়বস্তু তাকে দেখাশুনা কিংবা পরিচালনা করার জন্য যেন ইউটিউব সদাসর্বদা আছে। সেইগুলির রিপোর্ট অনুসারেই অ্যালগরিদম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও মিথ্যাচার প্রচার বিষয়ক কমিটি আছে। এমন ভিডিও গুলিকেই ইউটিউব স্থগিত করে। আবার শিশুদের লক্ষ্য করেই ভিডিও গুলোতে জনপ্রিয় চরিত্র গুলোতে জড়িত সহিংস এবং যৌন পরামর্শদায়ক সামগ্রী, নাবালিকাদের ভিডিও মন্তব্য বিভাগে যেন ‘পেডোফিলিক ক্রিয়াকলাপ’ আকর্ষণ ও বিজ্ঞাপনে নগদীকরণের জন্যেও ‘ইউটিউব’ উপযুক্ত সামগ্রী বা অর্থ প্রদানের একটি বৃহৎ ওঠানামার নীতিমালা রয়েছে। ইউটিউব বা নির্বাচিত নির্মাতা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপন উপার্জন অর্জন করে থাকে, এটি এমন একটি ‘প্রোগ্রাম’ যা সাইটের সামগ্রী ও শ্রোতা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনকে লক্ষ্য করে। এই ইউটিউবের সিংহ ভাগ ভিডিও নিখরচায় দেখার জন্য উন্মুক্ত। তবে একটা কথা যে, এটি “সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক প্রিমিয়াম চ্যানেল”। চলচ্চিত্র ভাড়ার পাশাপাশিও ইউটিউব মিউজিক কিংবা ইউটিউব প্রিমিয়াম সহ সাবস্ক্রিপশন পরিসেবাগুলি যথা ক্রমে প্রিমিয়াম, বিজ্ঞাপন-মুক্ত সঙ্গীত স্ট্রিমিং ও উল্লেখ যোগ্য ব্যক্তিত্ব থেকেই ‘কমিশন যুক্ত একচেটিয়া সামগ্রী’ সহ সমস্ত সামগ্রীতে বিনা মূল্যে প্রবেশযোগ্য। যাক এ আলোচনায় যা বলতে চাই তা হলো, ইউনিসেফ বলছে,- বিশ্বজুড়ে রোজ ১ লাখ ৭৫ হাজার কোমলমতি শিশু নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। এর অর্থ হচ্ছে, প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন শিশু প্রথম বারের মতো ইন্টারনেট জগতে প্রবেশ করে। আর সেই শিশুদের ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করাটাই তাদের মূখ্য কাজে দাঁড়ায়। ইউটিউবের ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর হাত থেকে এই শিশুদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারসহ সকল মানুষের। বলতে দ্বিধা নেই যদি এক্ষেত্রে সরকার, পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না আসে। তবে তাদের ভবিষ্যৎ হবে খুব ভয়াবহ। এই প্রযুক্তি শিল্পগুলোর সাথে তারা ব্যবসায় জড়িত তাদেরও এক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে, তাদের পরিচ্ছন্নভাবেই ভিডিও নির্মাণ করতে হবে। তারা নোংরামিকে বর্জন করলে হয়তো শিশুরা সমাজের বৃহৎ বৃহৎ কাজে লাগার সম্ভাবনা আছে। ক্ষীণবুদ্ধি সম্পূর্ণ যে সকল মানুষগুলো আছে, পর্যবেক্ষণে দেখা যায়- তারাই ইউটিউব চ্যানেলে সুবিধা মতো টাকা উপার্জনের জন্যই কাজ করছে। কোয়ালিটি সম্পন্ন কাজ বেশ কিছু মানুষ করতে পারলেও এই সমাজকে দেখাতে পারেনা। কারণ হলো ‘ভালো মানুষের শত্রু বেশি’ এবং তারা ইউটিউবের মে সাবস্ক্রাইব বিষয়টা আছে সেখানে সাবস্ক্রাইব করতে চাননা। কারো ভালো আজকে এ সমাজে কেউ চায় না।মূঢ়তার পরিচয় দিয়ে আর কাউকে অপমান করতে চাই না। দেশের জন্য, জাতির জন্য হলেও ইউটিউবে ”ভালো কিছু আপলোড করতে হবে। সর্বশেষে একটা কথা বলা যায়, সফলতার জন্য সময় ও শ্রমের যথাযত মুল্যায়নটা জরুরি, তা হতে হবে সৎ উদ্দেশ্যে। অভিভাবকদের ১টা ইউটিউব চ্যানেলে লিংক দেওয়া হচ্ছে-
https://www.youtube.com/watch?v=LqmvxKlqFEQ&feature=share&app=desktop&persist_app=1 সাবস্ক্রাইব করে তাদের ভালো ভালো কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারেন।
লেখক: নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
Leave a Reply