শেখ হাসিনা সরকারের ১১ বছরে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে আন্তরিক কর্মযজ্ঞ দেখা গিয়েছে। ইতোপূর্বে ১৯৯৬ সালে এই আওয়ামী লীগ সরকারই তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এপিসি বাArmoured Personnel Carrier, MIG-29 যুদ্ধ বিমান, অত্যাধুনিক Class-4 -ফ্রিগেট ও অন্যান্য আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করে। পেশাদারিত্ব বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, ওয়ার কলেজ, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, BIPSOT বা Peace Keeping ইনস্টিটিউট BUP বা Science & Technology ইন্সটিটিউট প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জনবল বাড়ানোর জন্য একটি কম্পোজিট ব্রিগেড, একটি পদাতিক ব্রিগেড, স্পেশাল ওয়ার্কস ব্রিগেড ও বেশ কয়েকটি বিভিন্ন ধরনের ব্যাটলিয়ানসহ অন্যান্য উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর নতুন Armoured Personnel Carrier কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ফোর্স কমান্ডার বা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের পদের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সৈনিকদের কল্যাণের জন্য গ্যারিসনে বা তার আশেপাশে পরিবারের সঙ্গে বসবাসের কোটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অফিসারদেরকে হাউজিং প্লট দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ২০০৯ সালে বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় জঘন্যতম ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে যে সব সেনা কর্মকর্তা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের জন্য সরকারের নানাবিধ প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। অন্যদিকে হত্যাকারীদের শাস্তি দেয়ার জন্য ‘দ্রুত বিচার আইনে’ বিচার কার্য সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মেধাবী ও কর্মে নিযুক্ত সেনা কর্মকর্তার প্রতি বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন সম্মানজনকভাবে সমাপ্তি লাভ করেছে।
কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর ঘাটি উদ্বোধন করা হয় ২০১১ সালের এপ্রিলে। ২০১৪ সালের ১১জুন ৩টি গও ১৭ হেলিকপ্টার ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ২৭ জুন ১৬টি এফ সেভেন(বিজিআই) বিমান ক্রয়ে চুক্তি হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সারফেইস টু এয়ার মিসাইল(ঝঐঙজঅউ) সংযোজিত হবার পর পরীক্ষামূলক ফায়ারিং অনুষ্ঠিত হয় সেসময়। বিমান বাহিনী একাডেমিতে ৪তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু ভবন কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সেইফটি সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে বিমান বাহিনী কৃতিত্বের স্বাক্ষও রেখেছে। এছাড়া জাপানের সুনামী দুর্গতদের জন্যে ত্রাণ সামগ্রী জাপানে পৌঁছে দিয়ে বিমান বাহিনী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত এখন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘ফোর্সেস গ্লোল ২০৩০’ চূড়ান্তকরণ ও সাংগঠনিক কাঠামোতে জনবল সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্য যে টেবিল অব অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ইকুইপমেন্টের পরিবর্তন, পরিমার্জন ও আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনীতে চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক-এমবিটি ২০০০, অত্যাধুনিক রাডার, সেল্ফ প্রপেলড গান এবং নতুন হেলিকপ্টার সংযোজন করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে আওয়ামী লীগ সরকার রাশিয়ার সঙ্গে ঋণ চুক্তি অনুযায়ী সমরাস্ত্র ক্রয় করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বৈশ্বিক মানে আধুনিকায়নের লক্ষ যে জুলাই ২০১৩ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে মেডিকেল কোরে মহিলা সৈনিক ভর্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সিলেটে একটি পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩টি পদাতিক ব্যাটালিয়নকে রূপান্তর করে একটি ম্যাকানাইজড পদাতিক ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
Leave a Reply