অনেক দিন পরে লিখতে ইচ্ছে হলো।গতো বছর এ সময় বাবা বেঁচেছিলেন।অসুস্থ ছিলেন, যেখানে যাই বুকের ভিতর চিন্তা থাকতো কি জানি কি হয।তবুও শান্তনা ছিল বেচেঁ আছে।বট গাছের মতো মাথার উপর আছে। গতো বছর ঈদের দিন রান্না করে তাকে খাবার দেই।খুব বিশ্বাস, ভরষা করতো আমাকে।অফিসে কোন সমস্যা হলে দৌড়ে এসে বলতাম, কি সুন্দর করে সমাধানের পথ বলে দিতো।সেও একজন প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা ছিলেন। তার কথা শুনে মনে হতো মা নেই তবুও সেতো আছে। দুঃখের সাগরে জীবন
নিমজ্জিত হলেও হতাশ হওয়ার কিছু ছিল না কারণ বাবার হাত আছে মাথার উপর। এবার ঈদে তার অনুপস্থিতি আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে গত ঈদের দিন। আসলে মানুষের বাঁচার আকুতি চিরকালীন। কিন্তু মৃত্যু নামক কঠিন বিষয় জীবনে আসবেই। জুলাই মাসের তের তারিখে বাবা চলে গেল পৃথিবী থেকে। অনেক রাগী মানুষ ছিল কিন্তু দায়িত্ব পালনে সচেতন ছিল। মা চলে যাবার পরে অনেক ভেঙে পড়েছিল। অনেক কথাই হতো তার সাথে আমার।উপকারী মনোভাব তার মধ্যে সবসময়ই চিরসবুজ হয়ে থাকতো।নিঃশব্দে নিঃসার্থভাবে অনেকর উপকার করতে তাকে দেখেছি। গরমে নরমে মিলিয়ে একজন মানুষ ছিলেন। জীবনে অনেক যুদ্ধ করেই আমার বাবা, মা আমাদের তিন ভাই বোন (দুই বোন,এক ভাই) কে মানুষ করেছেন। তিনজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।আমার বাবার একটা অভ্যাস ছিল রাত যতো গভীর হোক না কেন ছাএ জীবনে যদি বলতাম লেখার কাগজ ফুরিয়ে গেছে সাথে সাথে দোকানে চলে যেতো এবং যা দরকার তা নিয়ে আসতো।আজ কতো স্মৃতি, কতো কথা মনে পড়ে তার ইয়ওা নেই। বাবা,মার একটাই কথা ছিল লেখাপড়ার ছাড়া তোমাদের কোন চিন্তা নেই। এবার ঈদে তিন ভাই বোনকে বাবা-মা ছাড়া ঈদের দিন অতিবাহিত করতে হয়েছে। জীবন কি বিচিত্র কালকে যে ছিল আজকে সে নেই। মৃত্যু কে এড়িয়ে চলার কোন উপায় নেই। বেঁচে থাকতে আমরা অনেকেই বাবা -মার কদর বুঝি না।আমি সবসময়ই তাদের পাশে ছিলাম।বুঝতে পেরেছিলাম তাদের অনুভূতি। তাই বলি সকলেই বাবা-মার (যাদের বেচেঁ আছেন) প্রতি যত্নবান হোন।মৃত্যুর শীতল হস্ত, রাজার উপর পতিত।মৃত্যু অনিবার্য। জন্মিলে মরিতে হবে এটাই বাস্তব। তবুও মন মানে না।দুঃখ ছাড়া যেমন সুখ কল্পনা করা হয় না বাবা-মা ছাড়া নিজের জীবন মানা যায় না। মানতে হবে এটা প্রকৃতির নিয়ম। জীবনের পাশাপাশি মৃত্যুর আহবান যেমন অমোঘ সত্য তেমনি বাবা-মা এবং সন্তান এর সম্পর্কে বাধঁন অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। তবুও বাবা-মা চলে যায়, থেকে যায় স্মৃতি যা আমার জীবনে পাথেয় হয়ে আছে।যাদের বাবা-মা বেচেঁ আছেন তাদের সেবা করুন এই অনুরোধ থাকলো। নিরন্তর সাধনা করে যান বাবা-মার সুখের জন্য। কারণ তারাই সন্তানের জান্নাত,জাহান্নাম। তাদের জন্য কিছু করে যদি পৃথিবীতে তাদের সুখী করা যায় তাহলে জান্নাত অবধারিত। আল্লাহ আমাদের সকলের বাবা-মা কে জান্নাতে স্হান দিন।
Leave a Reply