পথেঘাটে, চলাফেরার তাগিদে আমরা অনেক অসহায় দরিদ্র মানুষ দেখতে পাই।একটুখানি সাহায্য পাওয়ার তাগিদে তারা আমাদের দিকে হাত বাড়ায়।তাদের এক-একজনের বলার ধরন এক-একরকম।কিন্তু “বেয়াদবী করবেন না” কথাটি একদম অন্যরকম একটা কথা।যেই কথাটি একটি মাদরাসা ছাত্রের কর্ণগোচর হতেই সে থমকে দাড়াঁলো। সাহায্য চাইছে ঠিক আছে, কিন্তু ওই কথাটা কেন বলছে?
ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখা গেলো,ব্যক্তিটির দুটো হাত এবং পা কিছুই নেই।ছোট্ট একটি মেয়ে লোকটির ঠেলাগাড়ি ঠেলছে।মাদরাসার ছাত্রটি সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করলো লোকটির বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য। লোকটি বাড়ি ফিরে যেতেই ছাত্রটি তাকে ডেকে বললেন,,
“চাচা একটা প্রশ্ন করবো?”
” হ্যাঁ বলো কি প্রশ্ন!!”
” চাচা, আপনি ভিক্ষা করার সময় বেয়াদবীর প্রসঙ্গ কেন আনেন, আমাকে বলবেন?”
বৃদ্ধ বলতে শুধু করেন,,,,
” আজ থেকে অনেক বছর আগে,তখন বৃদ্ধটি সবেমাত্র সপ্তম শ্রেনীতে পড়ে।বাবা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় সে ছিলো খুব অহংকারী এবং নির্দয়।যখন যেটা ইচ্ছা হতো তাই করতো।
তেমনি একটি দিন ছিলো ১লা এপ্রিল, যেটাকে এপ্রিল ফুল পালন করা হয়।ছেলেটি ক্লাসের সবার সাথে মিলে বুদ্ধি করলো স্যারকে বোকা বানানোর।স্যার ক্লাসে ঢুকতেই বালকটি বিকৃত মুখভঙ্গি করার সাথে সাথে পুরো ক্লাস হেসে ফেললো।এতে করে স্যার প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বললেন,” কি হচ্ছে এগুলো? যাও জায়গায় গিয়ে বসো”
কিন্তু বালকটি পুনরায় একই মুখভঙ্গি করায় স্যার প্রচন্ড রেগে গিয়ে বালকটিকে আঘাত করলো।বালকটিও উল্টো রেগে পকেটে থাকা টেনিস বল দ্বারা আঘাত করলো।কপাল ফেটে দরদর করে রক্ত বেরিয়ে এলো।
মিটিং ডেকেও এর কোনো বিশেষ বিচার হলো না, কারন সকলেই প্রভাবশালীর পক্ষে।বালকটি মনে মনে ভাবলো,,একদম উচিত শিক্ষা হয়েছে”
সব ঘটনা মিটমাট হয়ে গেছে ভেবে বসে থাকা সকলের নিকট একটা নতুন ঝামেলার আবির্ভাব হলো।হঠাৎ করেই ছেলেটির দুই হাত অবশ হয়ে যেতে নিলো,সঙ্গে তীব্র যন্ত্রনা। ডাক্তার জানালো,,” এখনি অপারেশন করে হাতদুটো কাটতে হবে,নইলে সারা শরীরে পচন ধরতে পারে।
অপারেশনের এক মাসের মাথায় পায়েও ভীষয় ব্যাথা অনুভূত হতে থাকে,ফলশ্রুতিতে পা’ও কেটে ফেলতে হয়”
সেই বালকটি আর কেউ নয়, “আমি ” বাবা। তখন থেকেই আমি বেয়াদবী জিনিসটাকে খুব ভয় পাই এবং সকলকে সতর্ক করে আসছি।
এ জাতীয় আরো খবর..
Leave a Reply