আপনারা খাচ্ছেন বলে সালাম দিলামনা, কিছু মনে করবেন না… এরকম কথা আমরা প্রায়ই শুনি! কমন সেন্সে এটাও ভাবেন অনেকে খেতে বসে এত গল্প- কথা বলা গেলে সালাম দেয়া যায়না কেনো?
.
ইসলামে পানাহারের সময় সালাম আদান-প্রদানের ব্যাপারে মুলত কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং হাদিসে সালাম দেয়ার ব্যাপারে যত বক্তব্য এসেছে সেগুলো খাদ্য গ্রহণের সময়কেও শামিল করে।
.
পানাহারের সময় সালাম দেয়া বা উত্তর দেয়া যাবে না মর্মে আমাদের সমাজে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে এবং কোন কোন ফিকহের (মা’সালা ও অযীফার কিতাব) কিতাবে লেখাও হয়েছে তার কোন দলিল বা ভিত্তি নাই। আর দলিল বিহীন ভাবে কোন কিছুকে হারাম বা মাকরুহ বলার সুযোগ নেই।
.
উপরন্তু একাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য গ্রহণের সময় দুনিয়াবি কথা বলেছেন। গল্প করেছেন। একবারে মূখ বন্ধকরে খাওয়া ইহুদীদের আমল বলা হয়েছে। সুতরাং পানাহার রত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া বা এই অবস্থায়ও সালামের উত্তর প্রদান বৈধ হওয়র বিষয়টি আরও অধিকতর যুক্তিযোগ্য। যেখানে দুনিয়াবি কথা বলাও নিষিদ্ধ নয়।
.
শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ কে প্রশ্ন করা হয়, কেউ যদি এমন লোকদের পাশ দিয়ে গমন করে যারা খাদ্য গ্রহণ করছে তাদেরকে কি সালাম দিবে? কারণ আমরা শুনেছি, এটা জায়েজ নাই
“হ্যাঁ, তাদেরকে সালাম দিবে। যে বলেছে সালাম দিবেনা সে ভুল বলেছে। যখন কেউ এমন লোকদের নিকট আগমন করবে যারা খাওয়া-দাওয়া, পড়াশোনা
ও কথাবার্তায় লিপ্ত আছে তখন তাদেরকে সালাম দেবে। বলবে, আসালামু আলাইকুম অথবা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ অথবা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু।
এটা মাকরুহ নয় বরং শরিয়ত সম্মত। আর যাদেরকে সালাম দেওয়া হবে তারাও উত্তর দিবে।
তবে মুখের মধ্যে খাবারের লোকমা থাকলে তৎক্ষণাৎ উত্তর দেওয়া আবশ্যক নয়। বরং তা গিলে খাওয়ার পর উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে।” [Binbaz. Org.sa]
ইমাম নববী বলেন,
إذا كان يأكلُ واللقمة في فمه، فإن سلَّم عليه في هذه الأحوال لم يستحقّ جواباً
“খাদ্য গ্রহণের সময় মুখে লোকমা থাকা অবস্থায় সালাম দিলে জবাব দেয়ার হক রাখে না।” (কিতাবুল আযকার)। ইমাম শাওকানি এ কথাকে সমর্থন করেছেন।
তবে মুখের খাদ্যদ্রব্য গিলার পর সালামের জবাব দিতে হবে। মুখে লোকমা না থাকলে সালামের জবাব দেয়া খানার মাজলিসেও ওয়াজিব।
আল্লাহ তায়ালাই অধিক জ্ঞাত।
Leave a Reply